নারী
নভেম্বর ১৫, ২০১৬
নারী ও ভোট
শমীতা দাশ দাশগুপ্ত
আমেরিকায় ভোট শেষ হল নভেম্বরের ৮ তারিখ। মধ্যরাতে নির্বাচনের
ফলাফল শুনে দেশের সকলেই সচকিত। পরের দিন আমেরিকায় এক আশ্চর্য দৃশ্য।
রাস্তাঘাটে নারী পুরুষ হাউ হাউ করে কাঁদছে; বন্ধুরা নিজেদের জড়িয়ে
ধরে জানাচ্ছে আমি তোমার পাশে আছি। ১১ সেপ্টেম্বর ২০০১ সালের পর
এমনটি আর দেখিনি। প্রাইমারি স্কুলের পড়ুয়া থেকে কলেজের ছাত্রছাত্রী
সকলে খোলাখুলি ভীত, সন্ত্রস্ত। স্কুল কলেজে প্রধান শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের
অধ্যাপকেরা মিটিং ডেকে সকলকে আশ্বস্ত করছেন, শান্তির বাণী ছড়াচ্ছেন।
দিনের শেষে আমার ছোট্ট দুই নাতি-নাতনি স্কুল থেকে ফিরল প্রিন্সিপালের
চিঠি হাতে নিয়ে। প্রিন্সিপাল অভয় দিচ্ছেন তাঁর স্কুলের কোন ছাত্রছাত্রীর
সামান্য ক্ষতিও তিনি প্রাণ থাকতে হতে দেবেন না। প্রতি ছাত্রছাত্রীর
অভিভাবকের কাছে এই চিঠি গেছে।
নভেম্বরের ৯ তারিখ বহু শহরে কোন কাজ হয় নি – তার বদলে হয়েছে শোক
জ্ঞাপন করতে জনসমাবেশ। সন্ধ্যে হতে স্বতঃস্ফূর্ত মিছিল বের হয়েছে
দেশের রাজধানী ওয়াশিংটন ডি.সি.তে, রাষ্ট্রপতি ভবন হোয়াইট হাউসের
সামনে। তারই অনুরণন ঘটেছে ম্যানহ্যাটান, সিয়্যাটল, পোর্টল্যান্ড,
শিকাগো, এমন কি টেক্সাসের অস্টিন শহরে। মিছিলের যোগদানকারীদের
হাতে প্ল্যাকার্ড – ‘এ রাষ্ট্রপতি আমার নয়’; ‘ভোটের ফল মানি না’।
৯ তারিখে ভোর না হতে সামাজিক মাধ্যমে দরখাস্তপত্র ছড়িয়ে পড়ল আমেরিকার
ভোটের পদ্ধতি পরিবর্তনের জন্যে এবং নব্য-নির্বাচিত রাষ্ট্রপ্রধানকে
বাতিলের দাবি নিয়ে। যদি জনপ্রিয়তা অনুসারে নির্বাচন হত তা হলে
হিলারি ক্লিন্টন আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতেন তাতে
সন্দেহ নেই। কিন্তু আমেরিকার রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন
করে রাজ্যের প্রতিনিধিরা, নির্বাচিত ইলেক্টার বা নির্বাচনকারীর
দল। প্রথাটি বেশ জটিল।
আমেরিকায় প্রতি রাজ্যের ইলেক্টরেট কলেজ (রাজ্য-প্রতিনিধি নির্বাচনকারী
সমষ্টি) গঠিত হয় সেখানকার জনসংখ্যার ওপর ভিত্তি করে। প্রতি ৭০০,০০০
মানুষের জন্যে তৈরি হয় একটি কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট আর প্রতি ডিস্ট্রিক্ট
থেকে নির্বাচিত হয় একজন ইলেক্টর বা নির্বাচনকারী। এই সমষ্টির সঙ্গে
যোগ হয় রাজ্যপ্রতি আরও দুজন ইলেক্টর। অর্থাৎ ইলেক্টরের পূর্ণসংখ্যা
সব কংগ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্টের সমতুল (৪৩৫), সঙ্গে যোগ হয় আরও দুজন
করে নির্বাচন প্রতিনিধি যা সেনেটারের সংখ্যার সমান (১০০), আর তিন
জন ডিস্ট্রিক্ট অফ কলাম্বিয়ার প্রতিনিধি - মোট ৫৩৮। যে প্রার্থী
২৭০টি ইলেক্টরাল ভোট পাবেন তিনিই হবেন রাষ্ট্রপতি। ফলে কোন রাজ্যের
ভৌগলিক এলাকা যদি কম হয় কিন্তু জনসংখ্যা বেশি, সেখানকার নির্বাচনকারীরা,
যে রাজ্য এলাকায় বড় কিন্তু লোকসংখ্যা কম, তার চেয়ে সংখ্যায় বেশি।
যেমন ওকলাহোমার তুলনায় নিউ জার্সি আয়তনে বেশ ছোট, কিন্তু ওকলাহোমার
ইলেক্টারের সংখ্যা হল ৭ আর নিউ জার্সির ১৪। মোটামুটি ভাবে, জনপ্রিয়
ভোটে যে প্রার্থী জেতে সেই রাজ্যের সব ইলেক্টরাল ভোট তিনিই পান।
এর সামান্য হেরফের আছে। তাই জনতার ভোটে হিলারি ক্লিন্টন জিতলেও
ইলেক্টোরাল ভোটে তিনি হেরে গেলেন।
প্রায় দেড় বছরের নির্বাচনের ক্যাম্পেনে বোঝা গেছিল রিপাব্লিকান
রাজনৈতিক দলের প্রার্থী ট্রাম্পের বিকৃত চিন্তাধারা, অসভ্য ভাষা,
নীচ মনোবৃত্তি, বিভেদমূলক পরিপ্রেক্ষিত, এবং তাত্ত্বিক অন্তঃসারশূন্যতা।
কিন্তু আশ্চর্য, এসব “গুণ”ই তাকে সাধারণ খেটে খাওয়া, সংরক্ষণশীল,
শ্বেতাঙ্গ দেশবাসীর কাছে প্রিয় করে তুলল!
আমেরিকার মূল শক্তি হল তার অভিবাসী সমাজ। বিভিন্ন মানুষের সহাবস্থান
দেশের একটি মূল্যবান চরিত্র। অভিবাসনের ফলে আমেরিকার জনসমাজ
পালটে যাচ্ছে একটু একটু করে। শ্বেতাঙ্গপ্রধান থেকে সমাজ
ধীরে ধীরে বাদামী হয়ে চলেছে; ক্রিশ্চানপ্রধান থেকে বিভিন্ন ধর্মের
মিশালে গড়ে উঠছে এক চমৎকার মিশ্র সমাজ; পুরুষ প্রাধান্য থেকে সরে
নারীর সমানাধিকারের পথ পরিষ্কার হচ্ছে; আর সমকামী এবং লিঙ্গ পরিবর্তনশীল
মানুষের পূর্ণ সামাজিক অধিকার স্বীকৃতি পাচ্ছে। গত কয়েক বছর ধরে
এই পরিবর্তনের গতি দ্রুত হয়েছে। প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ রাষ্ট্রপতি, বারাক
হুসেন ওবামা, নির্বাচিত হয়েছেন আট বছর আগে; আট বছরে তাঁর জনপ্রিয়তা
বেড়েছে বৈ কমেনি। এর মধ্যে প্রাইভেট বীমা কম্পানির বিরুদ্ধে গিয়ে
তৈরি হয়েছে সর্বজনীন স্বাস্থ্যবীমা নীতি; আইনগত হয়েছে সমকামী বিবাহ;
পাল্টেছে লিঙ্গ পরিবর্তনশীলদের জন্যে স্কুল কলেজে বাথরুম ব্যবহারের
নিয়ম - এমনি অনেক প্রগতিশীল সামাজিক পরিবর্তন। এবারে আশা ছিল দেশ
প্রথম মহিলা রাষ্ট্রপতিকে বরণ করে নেবে। হয় নি। হিলারি ক্লিন্টন
কেন হেরে গেলেন তা নিয়ে অনেক বিশ্লেষণ, দোষারোপ, আর লেখালেখি চলছে।
আমি সে দিকে ঘেঁষব না। কিন্তু হিলারির পরাজয়ের বীজ যেখানে সত্যিই
লুকিয়ে রয়েছে তাই নিয়ে একটু আলোচনা করি।
হিলারি ক্লিন্টন মহিলা এবং অভিজ্ঞ রাজনীতিবিদ হলে কী হবে, তাঁকে
বিনা দ্বিধায় ভোট দিতে অনেকেই অসুবিধে বোধ করছিলেন। এমনকি হিলারি
সমর্থকেরা অনেকেই খুঁতখুঁত করেছেন মহিলা যেন ঠিক সহজ নয়, খোলামেলা
নয়; যেন অভিনয় করছে, মেপেমেপে কথা বলছে; বড্ড চতুর, হাসিটা যথার্থ
নয়। এমন একজনকে কি সম্পূর্ণভাবে বিশ্বাস করা চলে? ফলে অনেকেই হিলারিকে
আধা উদ্যমে স্বীকার করেছেন। কিন্তু কেন? হিলারির ব্যক্তিত্ব কি
সত্যিই মেকি? একটু ভাবা যাক।
ঐতিহাসিকভাবে নারীর ভূমিকা যে কন্যা, স্ত্রী, এবং মায়ের গণ্ডিতে
বেঁধে দেওয়া সে নিয়ে আর বিতণ্ডার অবকাশ নেই। নারী হাসিমুখে সেবা
দেবে, স্বামীর সহচরী হবে, সন্তান পালন করবে। নিঃসন্দেহে নারীবাদী
আন্দোলনের ফলে এই ভূমিকার কিছু পরিবর্তন হয়েছে। এখন মেয়েরা “অফিস
কাছারি” করবে তা প্রায় সকলেই মেনে নেন। কিন্তু কোন মেয়ে যদি বলে
বসে আমি বিয়ে করতে চাই না; আর বিয়ের পরে বলে আমি সন্তান চাই না,
কারণ আমি নিজের বৃত্তিকে ভালবাসি, তাতেই সফল হতে চাই, আমরা চোখ
কপালে তুলি। মেয়েদের জীবনের এই নিয়ম শুধু আমাদের দেশে নয়, পাশ্চাত্যেও
যথেষ্ট প্রচলিত। হিলারি যে সময়ে জন্মেছেন, বড় হয়েছেন, তখন এই রীতির
প্রভাব ছিল প্রচণ্ড।
হিলারি রডহামের জন্ম মধ্যবিত্ত ঘরে। ওয়েলসলি কলেজ থেকে বি.এ.
পাশ করে ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি আইন পড়েন। তাঁর প্রফেসারদের
মতে এত প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন ছাত্র সহজে পাওয়া যায় না। ১৯৬৯ সালের
সমাবর্তনে ওয়েলসলি কলেজের ইতিহাসে প্রথম কোন ছাত্রীকে ভাষণ দিতে
বলা হয় – হিলারি সেই ভাষণটি দেন। ভিয়েতনাম যুদ্ধের পরিপ্রেক্ষিতে
নির্ভীক সেই ভাষণ স্মরণীয় হয়ে রয়েছে।
এরপর জীবনের চাহিদায় বিল ক্লিন্টনকে বিয়ে করে হিলারি মধ্য আমেরিকার
সংরক্ষণশীল আর্কানসা রাজ্যে পৌঁছন। বিয়ের পর হিলারি পদবী পরিবর্তন
করতে অস্বীকার করেছিলেন। বিল আরকানসার রাজ্যপাল নির্বাচিত হওয়ার
পর হিলারি স্বতন্ত্রভাবে রাজনৈতিক কাজ আরম্ভ করেন – তাঁর লক্ষ্য
মহিলা এবং শিশু মঙ্গল। সেই সময়ে ধরে নেওয়া হত আমেরিকার রাজ্যপালের
স্ত্রী একটি বিশেষ ভূমিকা পালন করবে – প্রধানত স্বামীর সহচরী আর
অতিথি সৎকারের কাজ। হিলারি দ্বিধাহীন স্বরে মন্তব্য করলেন ‘তিনি
পড়াশুনা করেছে বাড়িতে বসে বিস্কুট বানাতে নয়! তাঁর কাজের বিশাল
জগত রয়েছে’। শুরু হল নিন্দাবৃষ্টি। হিলারি কেন স্বামীর পদবী গ্রহণ
করেন নি; বাড়িতে থেকে স্ত্রী-ধর্ম পালন না করে তিনি দেশের সব গৃহিণীদের
অপমান করেছেন; কেন তিনি রূপচর্চা সম্পর্কে উদাসীন, তাঁর ব্যক্তিত্ব
কট্টর, তিনি হাসেন না, বড্ড বেশি প্রফেশনাল, এমনি অনেক কিছু। পরের
দফার নির্বাচনে বিল ক্লিন্টন হেরে গেলেন এবং গুজব ছড়াল এই হারের
জন্যে দায়ী হিলারি।
কিছুদিনের মধ্যে দেখা গেল হিলারি পদবীতে ক্লিন্টন জুড়ে দিয়েছেন।
সত্তর দশকের গোল চশমা ছেড়ে কন্টাক্ট লেন্স পরছেন, চুলের রঙ পালটে
ব্লন্ড হয়েছে, মুখে মেকাপ লেপছেন। এমনকি বাড়িতে তাঁকে রান্নাবান্না
করতেও দেখা যাচ্ছে। আর সবচেয়ে চোখে পড়ার মত পরিবর্তন, মুখে এক
খণ্ড বিশাল হাসি নিয়ে হিলারি নরম সুরে কথা বলছেন। পরের নির্বাচনে
বিল ক্লিন্টনের জয় হল। এরপর বিল আরও দুবার আর্কানসার রাজ্যপাল
হয়েছেন; তারপর দুবার আমেরিকার রাষ্ট্রপতি। বিল প্রথমবার রাষ্ট্রপতি
হওয়ার পর হিলারি একটি গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব নিলেন – সর্বজনীন স্বাস্থ্যনীতি
গঠন। কাজটি দক্ষতার সঙ্গে শেষ করলেও বিপরীত পক্ষের প্রতিরোধে সেটি
আইন করা গেল না। এই নেতৃত্বের জন্যে হিলারির কপালে জুটল বহু গঞ্জনা।
হোয়াইট হাউসে থাকতে স্বামীর পরকীয়ার জন্যে হিলারিকে নানান নিন্দা-দোষারোপ
সহ্য করতে হয়েছে - তাঁর স্বামীকে ছাড়া উচিত অথবা স্বামীকে বশে
রাখা উচিত।
এর পরেও হিলারি দু-দুবার নিউ ইয়র্কের সেনেটার নির্বাচিত হয়েছেন;
একবার রাষ্ট্রপতি পদের জন্যে প্রার্থী হতে বিফল হয়েছেন; চার বছর
রাষ্ট্রের সেক্রেটারি পদে কাজ করেছেন। এত দায়িত্বশীল কাজ করেও
তিনি মানুষের কাছে বিশ্বাসযোগ্য হয়ে উঠলেন না কেন?
ঐতিহ্যগত ভাবে মনে করা হয় নারীর চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য রাজনৈতিক
নেতৃত্বের পক্ষে অসংগত। সফল নেতা হতে গেলে মানুষকে হতে হবে প্রতিযোগিতাপ্রিয়,
আগ্রাসী, প্রভাবশালী, তীক্ষ্ণ উদ্দেশ্য প্রণোদিত, সু-বিশ্লেষক,
যুক্তিবাদী। এ সবই পুরুষালি ধর্ম। নারীত্বের সহজাত গুণ হল স্নেহ,
আবেগপ্রবণতা, সহজে প্রভাবিত হওয়া, পর-নির্ভরতা, ইত্যাদি। অর্থাৎ
নেতা হওয়ার যোগ্য গুণাবলী তার নেই। যদি কোন মহিলা নেতা হওয়ার উপযুক্ত
চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য প্রকাশ করে, সে নন্দিত না হয়ে নিন্দিত হয়।
২০০৩ সালে নিউ ইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয়ের স্টার্ণ কলেজ অফ বিজনেসে
স্নাতকোত্তর ছাত্রছাত্রীদের এক কাল্পনিক নেতার চরিত্র বিশ্লেষণ
করতে দেওয়া হয়। নেতার নাম হয় কখনো হাইডি, কখনও হাওয়ার্ড। দেখা
যায় পুরুষ ও নারী, দুজনেই হাওয়ার্ডকে অনেক বেশি মনোগ্রাহী মনে
করছে, তার নেতৃত্বের তারিফ করছে। হাইডিকে তারা স্বার্থপর, ধান্দাবাজ,
চালাকি সর্বস্ব মনে করে বেশ অপছন্দই করেছে। দশ বছর বাদে, সেই একই
নিরীক্ষায় নেতার নাম পালটে হয় ক্যাথরিন ও মার্টিন। এবারে ছাত্র-ছাত্রীরা
ক্যাথরিন ও মার্টিনের নেতৃত্বকে প্রায় সমমূল্য দিলেও ক্যাথরিনকে
তারা মার্টিনের চেয়ে অনেক কম বিশ্বাসযোগ্য মনে করল।
বহু অনুসন্ধানে দেখা গেছে ক্ষমতা ও নেতৃত্ব সমৃদ্ধ মহিলারা মানুষের
মন জয় করতে পারেন না। সেই একই নেতার লিঙ্গ পালটে গেলে কিন্তু ব্যাপারটা
ঘুরে দাঁড়ায়। বেশির ভাগ মানুষ মহিলা উপরওয়ালার অধীনে কাজ করতে
চান না কারণ তাদের হিংসুটে, পরশ্রীকাতর, বিদ্বেষপরায়ণ ভাবেন। অর্থাৎ
জনপ্রিয়তা এবং ক্ষমতা – নারীর বেলায় দুটি বিপরীত মেরুতে বাস করে।
কর্মজগতে একই ব্যাপারে নারী ও পুরুষকে কি ভাবে ভিন্ন বিচার করা
হয় তার একটা ছোট্ট তালিকা নিচে দেওয়া হল।
পুরুষ |
নারী |
সব দিকে নজর রাখেন |
বড্ড খুঁতখুঁতে |
কাজ শেষ না করে ছাড়েন না |
কখন থামতে হয় জানেন না |
দৃঢ়চেতা |
নাছোড়বান্দা |
অবিচল |
অনমনীয় |
ওয়াকিবহাল |
গুজবে কান দেন |
মত প্রকাশে দ্বিধা করেন না |
মুখফোঁড় |
বাজে কথা বলেন না |
মুখচাপা |
নিজের ক্ষমতার ওপর বিশ্বাস আছে |
অন্যকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে চান |
অযথা হাসি ঠাট্টা করেন না |
অহংকারী, অমিশুক |
ক্ষমতার জোরে পদোন্নতি হয়েছে |
উপরিওয়ালার সঙ্গে যৌন সম্পর্কের জোরে পদোন্নতি ঘটেছে |
নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন |
আত্মসর্বস্ব |
ভাল পরিকল্পনা করেন |
ফন্দিবাজ |
শক্ত হাতে কাজ আদায় করেন |
একসঙ্গে কাজ করা অসম্ভব |
এই বিশ্লেষণের সঙ্গে যাঁরা পরিচিত, তাঁদের অনেকেই হিলারি ক্লিন্টনকে
অবিশ্বাসের মূল কারণ সঠিক ধরেছেন। রাষ্ট্রের নেতা নির্বাচনে পশ্চিম
এশিয়া এবং অন্যান্য বহু দেশ আমেরিকার চেয়ে এগিয়ে আছে। বহু তাত্ত্বিকের
মতে মহিলাদের দ্বিতীয় শ্রেণীর মানুষ ভাবার প্রবৃত্তি যতদিন না
পাল্টাচ্ছে, আমেরিকায় মহিলা রাষ্ট্রপতির অস্তিত্ব এখনও দূর অস্ত।
লেখক পরিচিতি - লেখক একজন শিক্ষক, গবেষক ও
সমাজকর্মী। তিন দশকের অধিককাল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে দক্ষিণ এশিয়
সমাজে নারী নির্যাতনের বিরুদ্ধে সচেতনতা গড়ে তোলা ও তাঁদের ক্ষমতায়নের
প্রচেষ্টায় নিযুক্ত। উত্তর আমেরিকার প্রথম দক্ষিণ এশিয়পারিবারিক
নির্যাতন বিরোধী সংস্থা মানবী-র অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অবসর-এর জন্মলগ্ন
থেকে উপদেষ্টা মণ্ডলীতে যুক্ত।
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
অবসর-এর
লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য
অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।