গুন্টার গ্রাস, কলকাতা, ও এক বঙ্গললনা

গুন্টার গ্রাস, কলকাতা, ও এক বঙ্গললনা

নোবেল পুরস্কারজয়ী গুন্টার গ্রাস

সাহিত্যের আকাশে গুন্টার গ্রাস নিঃসন্দেহে গত দুই শতকের প্রথম সারির অন্যতম লেখক। তরুণ গ্রাস তাঁর প্রথম উপন্যাস Die Blechtrommel লিখে পৃথিবী জুড়ে সাড়া ফেলেন। লম্বা চওড়া এই জার্মান ভদ্রলোক, শুধু আন্তর্জাতিক খ্যাতিপ্রাপ্ত লেখকই ছিলেন না, একাধারে সাংবাদিক, কবি, শিল্পী, ও একজন ভালোমন্দে মেশানো সংবেদনশীল বিরাট মাপের মানুষ। কলকাতার সঙ্গে ছিল তাঁর আত্মিক যোগ।

১৯৭৫ সালে গুন্টার গ্রাস প্রথম কলকাতায় যান সরকারী অতিথি হয়ে এবং ওঠেন গভর্নর হাউসের গেস্ট হাউসে। ওইখানে থাকাকালীন তিনি der Butt/The Flounder বইটির কিছু অংশ লেখেন। এই সময় তার কলকাতার সঙ্গে পরিচয় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে একটা প্রেম-বিদ্বেষের মিশ্র সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আর কোনো শহর কলকাতার মত এক সময়ের ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রাসাদ নগরী থেকে স্বাধীনোত্তর ভারতের দীন নোংরা নগরীতে পরিণতি পায়নি। ক্ষোভে অসহায়তায় তিনি কলকাতাকে “ভগবানের বিষ্ঠা” নামাঙ্কিত করে জগত জুড়ে প্রচণ্ড সমালোচনার কেন্দ্র হন। নানা কাজে যুক্ত থাকায় বিতর্ক তাঁর নিত্য সাথী ছিল। আপাতকঠিন কোমল হৃদয়ের এই মানুষটি কিন্তু সেই ১৯৭৫ সাল থেকে ২০১৫ সালে মারা যাওয়া পর্যন্ত কলকাতার সঙ্গে মানসিকভাবে যুক্ত ছিলেন।

১৯১২ সাল পর্যন্ত কলকাতা দক্ষিণ এশিয়ায় ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের কেন্দ্র ছিল। ঔপনিবেশিক নাম ক্যালকাটা ২০০১ সাল পর্যন্ত আনুষ্ঠানিকভাবে বিলুপ্ত হয়নি। তাই শহরের দৃশ্যপটে ভিক্টোরিয়া মেমোরিয়ালের মতো অনেক ভবন ও প্রাসাদ আর অট্টালিকার পাশাপাশি বস্তি এবং জরাজীর্ণ ঘরগুলি এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব নয়। রাজপথের অনতিদূরে সর্পিল গলি-রাস্তার সহাবস্থান গ্রাসকে একই সঙ্গে চমকিত ও বিরক্ত করেছে। নানা সাক্ষাৎকারে উনি এই বৈপরীত্য সম্পর্কে বারে বারে বলেছেন। স্বভাবতই নাগরিকদের কথা উঠেছে। অভিজাতদের উদাসীনতার সমালোচনা যেমন করেছেন, অন্যদিকে বারবার তিনি শহরের সাধারণ বাসিন্দাদের প্রশংসা করেছেন। উদাহরণস্বরূপ বলেছেন, যেভাবে সবচেয়ে নোংরা খারাপ বস্তিতেও তারা তাদের ঘরবাড়ি পরিষ্কার এবং সুশৃঙ্খল রাখে তা অকল্পনীয়।

“দ্য ফ্লাউন্ডার”-এ তিনি কলকাতার বিষয়ে লিখেছিলেন, “এই ক্ষয়িষ্ণু, খসখসে, উচ্ছল শহর যা নিজের মলমূত্র খায়, তা প্রফুল্ল হতে বাধ্য। এটি বোধহয় চায় তার দুর্দশাও দুর্দান্ত চরম হোক।” একজন কলকাতাবাসীর মনে এই কথাগুলি আঘাত করবে এ তো আশ্চর্যের নয়। আসলে তাঁর সমাজের নীচু স্তরে কোনরকমে ইঁদুরের মত বেঁচে থাকা সরল, অভিযোগহীন, হাসিমুখের গরিব মানুষগুলির জন্য প্রাণ কাঁদত – তাই এক অসহায়তা থেকে এই কঠোর কথাগুলির জন্ম। কিন্তু সেটা বাঙালিদের পক্ষে অনুধাবন করা সহজ তো হলই না, তাঁরা একদম খাপ্পা হলেন।

যাই হোক, প্রথম কলকাতা দর্শনের প্রায় এগারো বছর পরে ১৯৮৬ সালে উনি সস্ত্রীক কলকাতায় আসেন এবং টানা ছ‘মাস থাকেন। কলকাতার উপকণ্ঠে বারুইপুরে একটি বাড়ি ভাড়া নেন। বেশ কিছু মাস সেখানে কাটিয়ে পরে এক পরিচিতের বাড়িতে থাকেন। তখন কলেজ স্ট্রিটের কফি হাউসে ছিল তার নিত্য আনাগোনা। বাংলার বুদ্ধিজীবী ও লেখক সমাজের সঙ্গে নিবিড় করে পরিচিত হন। কিন্তু তিনি প্রখ্যাত বিশিষ্ট বাঙালিদের সঙ্গে, যেমন সত্যজিৎ রায় প্রমুখ, দেখা করায় তেমন আগ্রহী ছিলেন না। বরং জনাকীর্ণ লোকাল ট্রেনে চেপে কলকাতায় এসে উত্তর কলকাতার পথেঘাটে ঘুরে বেড়াতেন, যেখানে ঐশ্বর্য, প্রতিপত্তি ও মহিমার সঙ্গে গা ঘেঁষাঘেঁষি করে অকল্পনীয় পূতি গন্ধময় বস্তি। সাধারণ লোকজনের সরল সহজ জীবনযাপন, তাদের অতিথিপরায়ণতা তাঁর মনে প্রভাব ফেলেছিল। তিনি একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, কলকাতাকে জানতে হলে রাজপথগুলো পেরিয়ে অলিগলিতে যেতে হবে। সেখানেই এই শহরের আসল সত্তা লুকিয়ে আছে।

কুমারটুলির পটুয়াদের আসাধারণ মূর্তি নির্মাণ, শোলার কাজ ও অন্যান্য হাতের কাজে তিনি একাধারে মুগ্ধ, বিস্মিত, ও আবার তাদের প্রতি সমাজের ওপরতলার নির্দয়তায় ক্রুদ্ধ হয়েছেন। অনেক মাস তিনি কুমোরটুলির অলিগলিতে মৃৎ শিল্পীদের কাজ এবং জীবন খুব কাছ থেকে দেখেছেন। তাঁর এই দেখা ও অনুভবের প্রকাশ দেখা যায়, অগুন্তি হিন্দু দেবদেবীর ছবিসহ, Zunge zeigen / ‘কলকাতার ডায়েরি, জিভ কাটো লজ্জায়’ বইতে। এক সময় লোকাল ট্রেনের দীর্ঘ যাত্রা খুব ক্লান্তিকর হওয়ায়, দীপাবলির সময় সল্টলেকে এক বন্ধু, শিল্পী শুভাপ্রসন্নর শ্বশুরবাড়িতে তিনি সস্ত্রীক চলে যান ও বাকি সময়টুকু ওখানেই কাটান। দীপাবলির প্যান্ডেল, মূর্তি, এবং আলোকসজ্জা তাঁকে মুগ্ধ করেছিল।।

কলকাতার উপকণ্ঠে যে Arts Acre, তার সূত্রপাত সেই ১৯৮৭ সালে, যেখানে ভূমিপ্রস্তর স্থাপন করেন গুন্টার গ্রাস। প্রবেশদ্বারের কাছে আরও অন্যান্য অতিথিদের ওঁর সঙ্গে সেই অনুষ্ঠানের একটি সাদাকালো ফটোগ্রাফ ঝুলছে। গুন্টারের একটি ছবি শুভাপ্রসন্ন আঁকেন যেখানে গুন্টার গ্রাস দাঁড়িয়ে, হাতে একটি ড্রাম, পিছনে দুটি মুখহীন শিশুর অবয়ব। ছবির নাম, “অস্কারের খোঁজে কলকাতায়।”

কলকাতার সঙ্গে গুন্টার গ্রাসের পাঁচ দশকের সম্পর্কের একাধিক স্তর ছিল। ভালবাসা যেমন গভীর, ঘৃণাও তেমনই তীব্র। ‘জিভ কাটো লজ্জায়’ / Zunge zeigen, ৯৭ পাতার জার্নাল ফর্মে, একটি বারো স্তবকের পদ্য এবং ১১২ পাতা ভর্তি Expressionist drawings সহ সেই দলিল ১৯৮৮ সালে প্রকাশিত হয়। স্বাভাবিকভাবেই কলকাতাকে নির্মমভাবে দেখানোর জন্য ভারতে এবং পশ্চিমবাংলায় এটি নিদারুণ ঝড় সৃষ্টি করেছিল। বুদ্ধিজীবী এবং রাজনীতিবিদরা তাঁকে কঠোর ভাষায় আক্রমণ করেছিলেন। কিন্তু উনি কলকাতাকে ভালবাসতেন বলেই সেই প্রাসাদ নগরীর জরাজীর্ণ দারিদ্র তাঁকে ব্যথিত করেছে, মানুষের অসহনীয় কষ্টে ক্রুদ্ধ হয়েছেন। যাদের অর্থ এবং ক্ষমতা আছে, তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন মনোভাব তাঁকে কষ্ট দিয়েছে। আশির দশকে যখন রাজীব গান্ধী কলকাতাকে মুমূর্ষু নগরী আখ্যা দেন, গুন্টার গ্রাস কিন্ত তার তীব্র প্রতিবাদ করে বলেন, “কলকাতা মুমূর্ষু শহর হলে, পৃথিবীর সব শহরই ডাইং সিটি।”

Calcutta Social Project (CSP)-র এক কর্মীর কথায়, ‘বারুইপুরে থাকাকালীন গুন্টার নিয়মিত ধাপার মাঠে আবর্জনা ডাম্পিং গ্রাউনডে গিয়ে র‍্যাগপিকার শিশুদের নিয়ে তাদের যে প্রজেক্ট চলছিল, তা মন দিয়ে দেখতেন। বস্তিতে গিয়ে শিশুদের সঙ্গে সাবলীলভাবে খোলা মনে মিশতেন, কথা বলতেন মেট্রো রেলের জন্য আনা পাইপের মধ্যে বসবাসকারী গরীব মানুষের সঙ্গে।’ পরবর্তী সময়ে Zunge zeigen বইটি তিনি যে শুধুমাত্র Calcutta Social Project-এর Mr. and Mrs. Karlekar-কে উৎসর্গ করেছিলেন, তা নয়। তিনি প্রতি বছর তাঁর প্রাপ্ত রয়্যালটি থেকে মোটা টাকা পাঠাতেন। কখনও তা তিন/চার লাখ টাকাও ছাড়িয়ে যেত। অর্থাৎ এই বঞ্চিত বাচ্চাদের জন্য, মানুষদের জন্য তাঁর প্রাণ কাঁদত।

১৯৮৮ সালে আমি তরুণী অধ্যাপিকা। ‘জিভ কাটো লজ্জায়’ রূপকাশ্রিত নাম। বাংলা অনুবাদ পড়ে আমি রেগে জ্বলে উঠেছিলাম। এক বিদেশির এত বড় স্পর্ধা যে আমার প্রাণের শহর নিয়ে আজেবাজে সব লিখেছে। আমি প্রকাশকের ঠিকানায় প্রতিবাদ করে চিঠি লিখেছিলাম। কিন্তু কোনো উত্তর পাইনি। পথশিশুদের জন্য তাঁর মমতা ও আর্থিক অনুদান, এসব তথ্য আমি আর তখন কোথায় জানি! ভাল কাজগুলো কেউ তো সচরাচর উল্লেখ করে না! পরে ১৯৯১ এ উনি নোবেল প্রাইজ পান। সে সময় এপার ওপার দুপার বাংলায় আনন্দের ঢেউ খেলে গেছিল, যেন আমাদের দেশের এক প্রিয়জন সম্মানিত হয়েছেন। সে সময়কার এক সাক্ষাৎকারে উনি বলেন, ‘আমি ইচ্ছা করেই কঠোর ভাষায় Zunge zeigen লিখেছি, নির্বিকার, অলস কলকাতাবাসীদের ও তাবৎ বাঙালিদের একটা ঝাঁকুনি দেওয়া দরকার ছিল।’ ২০০৫ সালে ম্যাক্স ম্যুলার ভবনের আমন্ত্রণে শেষবার দশ দিনের জন্য কলকাতায় এসেছিলেন। এই শেষ। কিন্তু সে যেন নোবেল পুরস্কার বিজয়ীর স্বদেশে প্রত্যাবর্তন।

অনেক বছর পরে আমি গুন্টার গ্রাসের দেশে সংসার পাতলাম। এই দেশে মানুষজনের সম্মান দেখে, সমাজের সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান, তাদের সুরক্ষিত অধিকার, সবার জন্য সুলভে স্বাস্থ্য পরিষেবা, মানুষের নিয়মানুবর্তিতা ও শ্রমের প্রতি অনুরাগ, দায়িত্ববোধ এবং সামগ্রিক সচেতনতা দেখে অবাক হয়েছিলাম। তখন বুঝতে পেরেছিলাম, এই ধরণের দেশ থেকে গিয়ে, সরল সাধারণ মানুষের নর্দমায় কীটের মত জীবনযাপন গুন্টারকে ক্ষুব্ধ করেছিল। কী করে এক দল মানুষ অথবা সরকার, আর এক দল মানুষের সম্পর্কে এরকম নির্বিকার থেকে আনন্দে দিন কাটায়? এক টিপিক্যাল জার্মানের মত, তিনি ছিলেন মনে আর মুখে এক। যা ঠিক মনে করেছেন, সেটাই লিখেছেন। তিনি কলকাতায় যে ভণ্ডামি দেখেছিলেন তা ঘৃণা করতেন। অন্ধভাবে রাজনৈতিক বা অন্য লিডারের তোষণ ও পোষণের যে সংস্কৃতি তিনি দেখেছিলেন, তা পছন্দ করতেন না।

শুভাপ্রসন্ন বলছেন, “কলকাতায় যে ভণ্ডামি দেখেছেন তা তিনি ঘৃণা করতেন। বীরপূজার সংস্কৃতি তার পছন্দ হয়নি। তিনি বলেছিলেন, ‘আপনারা আপনাদের হিরোদের অন্তর্ভেদী বিচার করেন না।’” গরীব মানুষের প্রতি তাদের ‘ অসীম বঞ্চনা এবং উদাসীনতায়…’ শাসক কম্যুনিস্ট পার্টিগুলো ‘ভণ্ডে ভরা।’

২০১২ সালে সাউথ এশিয়া ইন্সিটিউটে একটা বক্তৃতা দিতে গেছি। সে রাতটা ওখানে থাকা। পরের দিন রোদমাখা সকালে শহরের রাস্তা দিয়ে অলস ভাবে হেঁটে বেড়াচ্ছিলাম। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বোমার হাত থেকে বেঁচে যাওয়া বড় সুন্দর এই শহর। তেষ্টা পেতে কফিশপের খোঁজে এদিক ওদিক দেখছি। রাস্তার ধারের একটি ক্যাফের দিকে চোখ পড়তে থমকে দাঁড়ালাম। মোটা ফ্রেমের চশমা পরা এক প্রৌঢ় মন দিয়ে Der Spiegel পড়ছেন। খুব চেনা। কোথায় দেখেছি… বিদ্যুতের মত খেলে গেল, আরে, ইনি তো গুন্টার গ্রাস! কত ফটো দেখেছি। আমি ধীর পায়ে এগিয়ে গিয়ে অভিবাদন জানিয়ে বললাম, “বসতে পারি?” চোখ তুলে সামনে একজন বিদেশিনীকে দেখে একটু অবাক। উঠে দাঁড়িয়ে বসতে বললেন। একটা চেয়ার টেনে বসে প্রাথমিক আলাপ পরিচয় হল। একথা সেকথার পর আমি বললাম, “আপনার সঙ্গে আমার অনেক দিনের এক ঝগড়া বাকি আছে।” অচেনা এক বিদেশিনীর মুখে এমন অদ্ভুত কথা শুনে ভ্রু কুঁচকে তাকালেন।  

বললাম, “আপনার ‘জিভ কাটো লজ্জায়’ বইটি পড়ে খুব রাগ হয়েছিল। সেকথা আপনাকে চিঠিতে লিখেছিলাম। উত্তর পাইনি। আমাদের শহরকে এতই যদি খারাপ লাগত, তাহলে একাধিকবার গেছেন কেন?”

গ্রাস একটুক্ষণ চুপ করে বসে রইলেন। তারপর জিগ্যেস করলেন, “আপনি এদেশে কত বছর?” বললাম। চোখে চোখ রেখে জিগ্যেস করলেন, “এখন যখন দেশে, আপনার শহরে যান, কী মনে হয়? খুব মিথ্যে কি লিখেছিলাম?”

আমি চোখ নামিয়ে নিলাম। তারপর এক দীর্ঘশ্বাস নিয়ে চেয়ার ঠেলে উঠে দাঁড়িয়ে বললাম, “খুব কষ্ট হয়. তীব্র রাগ হয়, ক্ষোভ হয়।” উনি একটু শ্রাগ করে Der Spiegelএ ফিরে গেলেন, আমিও হাত নেড়ে বিদায় জানিয়ে আমার পথে চললাম। ২০১৫ সালের ১৩ই এপ্রিল, ৮৭ বছর বয়সে কর্মক্ষম অবস্থায় নিজের বাড়িতে গুন্টার গ্রাস পরলোক যাত্রা করেন। শেষ সময় পর্যন্ত কলকাতা তাঁর হৃদয়ের মাঝে থেকেছে।

আসলে আমরা যখন একটা বৃত্তের ভিতরে থাকি, তখন আংশিকভাবে বৃত্তটিকে দেখতে পাই। সম্পূর্ণ চিত্রটি কিন্তু অধরা থেকে যায়। দূর থেকে সম্পূর্ণ চিত্রটি ভাল মন্দ মিলে মিশে দেখা দেয়। এখন দেশে গিয়ে আমারও মাঝে মাঝে নানা ব্যাপারে দারুণ রাগ হয়, ক্ষুব্ধ হই। অসহায় লাগে। কিন্তু সে কথা বলার উপায় নেই, লোকে তেড়ে আসবে। সবাই তো আর গুন্টার হয়ে বলে উঠতে পারে না, “Was gesagt werden muss”/What must be said, should be said।

যা বলা প্রয়োজন, তা তো বলতেই হবে।

——–

তথ্যসূত্র

“In 1975, he told film-maker Mrinal Sen that Calcutta was “God’s excrements.” Available at: https://www.livemint.com/Leisure/nwD8COvUZ3wL6dtlyIWL1N/Gnter-Grass-Calcutta.html;
In “The Flounder” he wrote of Kolkata: “This crumbling, scruffy, teeming city that eats its own excrement is determined to be cheerful. It wants its misery to be terribly beautiful.” Sub Para: ‘Beauty among Slums and Palaces.’ Available at: https://www.dw.com/en/g%C3%BCnter-grass-and-kolkata/a-39827370

“But Shuvaprasanna has no doubts that Grass loved Kolkata…” “He always hated hypocrisy. He hated the hypocrisy he saw in Kolkata. He did not like the culture of hero worship. He said you don’t dissect the qualities of your heroes;” “…The sheer volumes of deprivation and the apathy…ruling Communist Parties…full of hypocrites.” Available at: https://www.ndtv.com/kolkata-news/gunter-grass-and-kolkata-a-four-decade-of-love-hate-tale-7547

অন্যান্য: প্রিন্ট, অন্তর্জাল, ও ব্যক্তিগত যোগাযোগ সূত্রে সংগৃহীত।

ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহীত। 

জার্মানির লোয়ার স্যাক্সনি রাজ্যের ব্রান্সউইক শহরের বাসিন্দা। জার্মান নাগরিক। পড়াশুনো কর্ম জীবনের শুরু কলকাতায়। পেশায় শিক্ষাবিদ, অধ্যাপিকা, ও লেখিকা। লেখার শুরু স্কুল ম্যাগাজিনে। পরবর্তী সময়ে ভূগোল, সমাজতত্ত্ব, ও শিক্ষাতত্ত্ব নিয়ে আনন্দবাজার, উত্তরবঙ্গ সংবাদ, এশিয়ান এজ, কালান্তর, ইত্যাদি নানা পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত হয়েছে। অবসরের পর আবার বাংলায় লেখালেখির শুরু।

1 Comment

Avarage Rating:
  • 0 / 10
  • আশফাক স্বপন , June 28, 2022 @ 7:34 am

    বাসবী খাঁ ব্যানার্জি-এর ‘গুন্টার গ্রাস, কলকাতা, ও এক বঙ্গললনা’ পড়ে বেশ ভালো লাগল। কলকাতার ব্যাপারে নাগরিকদের গভীর ভালোবাসা আমাকে মুগ্ধ করলেও বাড়াবাড়ি – যেটা যুক্তির ধার ধারে না – আমার পছন্দ নয়। Dominique LaPierre আর Larry Collins-এর City of Joy বইটির চিত্রায়ণের সময়ও খুব হইচই হয়, মনে আছে। তখন সত্যজিৎ রায় থেকে শুরু করে অনেক বিশিষ্ট বাঙালি Hollywood-এর ওপর ক্ষেপে গিয়েছিলেন, এমনই শুনেছিলাম।
    কলকাতা অথবা আমার শহর ঢাকা নিয়ে এরকম বাড়াবাড়ির বিপক্ষে আমি। উদ্দ্যেশ্যপ্রণোদিত ছিদ্রান্বেষণ হলে এক কথা, কিন্তু আমার বরাবরই মনে হয়েছে গুন্টার গ্রাসের কড়া কথাগুলো কলকাতার মানুষের প্রতি ভালোবাসা থেকেই উৎসারিত। বাসবীর লেখায় এই সম্বন্ধে আরো বিস্তারিত জানলাম, এবং শহুরে কলকাতার বাঙালির সাথে গ্রাসের জটিল অম্লমধুর সম্পর্কের টানাপোড়েন সম্বন্ধে অবহিত হলাম। সুপাঠ্য লেখাটি পড়ে সমৃদ্ধ হলাম। লেখিকাকে অভিনন্দন।

    আশফাক স্বপন
    আটলান্টা, যুক্তরাষ্ট্র

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *