ছবিতে
কামারপুকুর ও জয়রামবাটি (আগে
যা প্রকাশিত হয়েছে)
২১.
শিহর গ্রামে হৃদয়রামের বাড়ী
শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণদেবের
জীবনে হৃদয়রাম মুখোপাধ্যায়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ
ভূমিকা রয়েছে। ঠাকুরের পিসতুতো দিদি হেমাঙ্গিনী
দেবীর চার পুত্র - রাঘব, রামরতন, হৃদয়রাম
ও রাজারাম। তৃতীয় পুত্র হৃদয়রামের জন্ম
১৮৩৮ খৃষ্টাব্দে কামারপুকুরের ৫ মাইল দূরে
শিহড় গ্রামে। পিতার নাম কৃষ্ণচন্দ্র মুখোপাধ্যায়।
শ্রীরামকৃষ্ণের জন্ম ১৮৩৬ খৃষ্টাব্দে, অর্থাৎ
তিনি হৃদয়ের প্রায় সমবয়সী। সম্পর্কে মামা
হলেও হৃদয় শ্রীরামকৃষ্ণকে অত্যন্ত ভালবাসতেন
এবং কিছুটা শ্রদ্ধার চোখেও দেখতেন। তিনি
বর্ধমানে ভাগ্যান্বেষণে বিফল মনোরথ হয়ে
আনুমানিক ১৮৫৫ খৃষ্টাব্দে দক্ষিণেশ্বরে
আসেন এবং রাণী রাসমণির জামাতা মথুরমোহন
বিশ্বাসের অনুরোধে শ্রীরামকৃষ্ণ ভবতারিনীর
মন্দিরে বেশকারীর পদ গ্রহণ করলে হৃদয়রাম
তাকে সাহায্য করবার কাজে নিযুক্ত হন। ১৮
বছর বয়সে হৃদয়রাম যখন দক্ষিণেশ্বরে আসেন
তখন শ্রীরামকৃষ্ণের বয়স ২০ বছরের কিছু বেশী।
ঠাকুর হৃদয়কে আদর করে "হৃদু"
বলে ডাকতেন এবং হৃদয়রামও ছায়ার মত ঠাকুরের
সঙ্গে সঙ্গে থাকতেন। শ্রীরামকৃষ্ণ নিজেই
বলেছেন ,"হৃদয় না থাকলে সাধনকালে আমার
শরীর রক্ষা অসম্ভব হত।" ১৮৫৫ থেকে
১৮৮১ খৃষ্টাব্দ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৬ বছর হৃদয়
ঠাকুরের কাছে ছিলেন এবং শেষে তিনি আগত ভক্ত
এবং মাঝে মাঝে ঠাকুরের সঙ্গেও দুর্ব্যবহার
শুরু করলে দৈব রোষের শিকার হন এবং একটি
ঘটনাকে কেন্দ্র করে মথুরমোহনের পুত্র ত্রৈলোক্যনাথ
বিশ্বাসের আদেশে দক্ষিণেশ্বর থেকে বিতাড়িত
হন। ১৮৯৯ খৃষ্টাব্দে ৬১ বছর বয়সে হৃদয়রামের
দেহাবসানের পূর্ব পর্যন্ত তার শেষ জীবন
খুব কষ্টে কেটেছিল।
শিহড়
গ্রামে হৃদয় একবার তার বাড়ীর কাছে দুর্গমণ্ডপে
দুর্গাপূজার আয়োজন করে ঠাকুরকে পূজার সময়
উপস্থিত থাকতে অনুরোধ করেন। এদিকে মথুরমোহনও
ঠাকুরকে পূজার সময় দক্ষিণেশ্বরে উপস্থিত
থাকতে বলায় ঠাকুর স্থূল শরীরে দক্ষিণেশ্বরে
উপস্থিত থাকলেও পূজার কয়দিন আরতির সময়ে
সূক্ষ শরীরে হৃদয়ের দুর্গমণ্ডপে প্রতিমার
পাশে উপস্থিত ছিলেন। কথা ছিল, একমাত্র হৃদয়ই
ঠাকুরকে দেখতে পাবেন। শিহড় গ্রামে সেই দুর্গামণ্ডপটি
জীর্ণ অবস্থায় এখনও আছে। হৃদয়ের প্রপৌত্র
(?) বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায় সেই আদি বাড়ীতে
এখনও বাস করছেন। তবে বাড়ীটির কাঠামোর পরিবর্তন
ও পরিবর্ধনও হয়েছে।
৫৫
নং চিত্র
৫৬
নং চিত্র
৫৭
নং চিত্র
৫৮
নং চিত্র
৫৫
নং চিত্রে শিহড় গ্রামে হৃদয়ের বাড়িতে যাবার
একটি রাস্তা, ৫৬ নং চিত্রে প্রাচীন দুর্গামণ্ডপ,
৫৭ নং চিত্রে বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়ের বর্তমান
বাসস্থান (হৃদয়রামের আদি বাড়ী ), এবং ৫৮
নং চিত্রে মন্দিরের সামনে উপবিষ্ট বিশ্বনাথ
মুখোপাধ্যায়কে দেখা যাচ্ছে।
৫৯
নং চিত্র
৬০
নং চিত্র
৫৯
নং চিত্রে মন্দিরের ভিতরে মা দুর্গার ছবি
এবং ঠাকুর, মা ও ঠাকুরের ভাবাবস্থার একটি
ছবি দেখা যাচ্ছে। ৬০ নং চিত্রে দেখা যাচ্ছে
একটি ফটো যেখানে ভাবাবস্থায় ঠাকুরকে ধরে
হৃদয়রাম দাঁড়িয়ে রয়েছেন। হৃদয় দীঘদেহী,
বলিষ্ঠ ও সুপুরুষ ছিলেন। তার শারীরিক গঠনের
সঙ্গে বিশ্বনাথ মুখোপাধ্যায়ের সাদৃশ্য অতি
স্পষ্ট।