প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

ছবিতে কামারপুকুর ও জয়রামবাটি (আগে যা প্রকাশিত হয়েছে)

২৩. গড় মান্দারণ
গড় মান্দারণ একটি ঐতিহাসিক স্থান। শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গে আছে "কামারপুকুরের দক্ষিণ-পূর্ব বা অগ্নিকোণে মান্দারণ গ্রাম। চতুষ্পার্শস্থ গ্রাম সকলকে শত্রুর আক্রমণ হইতে রক্ষা করিবার নিমিত্ত পূর্বে কোন কালে একটি দুর্ভেদ্য দূর্গ প্রতিষ্ঠিত ছিল। পার্শ্ববর্তী ক্ষুদ্রকায় আমোদর নদের গতি কৌশলে পরিবর্তিত করিয়া উক্ত গড়ের পরিখায় পরিণত করা হইয়াছিল।" বিস্তীর্ণ এলাকা জুড়ে বড় বড় স্তূপের ধ্বংসাবশেষ এখনও দেখা যায়। গেট থেকে ২ কিলোমিটার হাঁটা পথে গেলে এখানে গৌড়াধিপ হোসেন শাহের সেনাপতি ইসমাইল গাজির সমাধি মন্দির আছে। এখানের দুর্গটি মোগল আমলের এবং দুর্গের অনেকটাই মাটির নীচে চাপা পড়ে রয়েছে বলে অনুমান করা হয়। বঙ্কিমচন্দ্র রচিত 'দুর্গেশনন্দিনী' গ্রন্থে এই দুর্গের উল্লেখ আছে।


চিত্র ৬৭


চিত্র ৬৮


চিত্র ৬৯

৬৭ ও ৬৮ নং চিত্রে গড়ের ভিতরের দুটি ছবি এবং ৬৯ নং চিত্রে পরিখার একাংশ দেখা যাচ্ছে। যদিও শ্রীরামকৃষ্ণের সঙ্গে গড় মান্দারণের প্র্ত্যক্ষভাবে কোন যোগাযোগ আছে বলে কোথাও উল্লেখ করা নেই, তবুও কামারপুকুরের নিকটবর্তী ঐতিহাসিক স্থান হিসাবে অনেকেই এটার উল্লেখ করেছেন।

২৪. মায়ের মন্দির ও পুণ্যপুকুর
শ্রীশ্রীমায়ের পিতা রামচন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের আদি বাস্তুভিটা ছিল এখন যেখানে মায়ের নতুন মন্দির তৈরী হয়েছে তার থেকে সামন্য দূরে দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে। সারদা মা এই পুরান বাড়ীতে ৫০ বছরেরও বেশী সময় বাস করেছেন। তারপরে ভক্তের ভিড় ক্রমশঃ বাড়তে থাকলে স্বামী সারদানন্দ ১৯১৬ খৃষ্টাব্দের মে মাসে পুণ্যপুকুরের পাশেই একটি নতুন বাড়ী তৈরী করান। শ্রীশ্রীমা এই বাড়ীতে প্রায় ৪ বছর বাস করেছেন। এই নতুন বাড়ী সম্বন্ধে শ্রীশ্রীসারদাপুঁথিতে বলা হয়েছে -

পুণ্যপুকুর গায়ে পশ্চিমের দিকে
নির্মান করিতে মাতা বলে গৃহটিকে।
নির্মিত হইলা বাড়ি মায়ের কথায়
কমবেশি দু'হাজার টাকা লাগে তায়।।

তিনি নিজেই তাঁর জন্মস্থানটি বেলুড় মঠ কর্ত্তৃপক্ষের হাতে দিয়ে যান। এই জন্মস্থানের উপরেই নির্মিত সুদৃশ্য মন্দিরটিই মায়ের মন্দির নামে অভিহিত। মন্দিরের অভ্যন্তরে মায়ের পবিত্র দেহাস্থি রক্ষিত আছে। ১৯২৩ খৃষ্টাব্দের ১৯শে এপ্রিল স্বামী সারদানন্দ অক্ষয় তৃতীয়ার দিন মাযের তৈলচিত্র স্থাপন করেন। পরে জন্মশতবর্ষ উপল্ক্ষ্যে স্বামী শ্ঙ্করানন্দ কর্তৃক বারানসী থেকে নির্মিত শ্রীশ্রীমায়ের শ্বেত পাথরের তৈরী মূর্তিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। মায়ের মন্দিরের সামনেই বৃহৎ পুষ্করিণীটি পুণ্যপুকুর নামে খ্যাত। মা দীর্ঘ দিন এই পুকুরের জল ব্যবহার করেছেন। একবার মা ১৯১৮ সালের এপ্রিল মাসে সম্ভবতঃ শেষ বারের মত জয়রামবাটিতে এলে শরৎ মহারাজ ( স্বামী সারদানন্দ ) পুণ্যপুকুরে জাল ফেলে বড় বড় মাছ ধরে মঠের এবং মায়ের বাড়ীর সবাইকে সেই মাছ পরিবেশন করে তৃপ্তি দান করেন। বর্তমানে মন্দির এবং পুকুর এবং মায়ের পুরান বাড়ী প্রাচীর দিয়ে ঘেরা এবং মঠ কর্তৃপক্ষ দ্বারা সংরক্ষিত।


চিত্র ৭০


চিত্র ৭১


চিত্র ৭২

৭০ নং চিত্রে পুণ্যপুকুর ও ডানদিকে গাছের ফাঁকে মায়ের মন্দিরটি দেখা যাচ্ছে। ৭১ ও ৭২ নং চিত্রে পুণ্যপুকুরের আরও দু'টি ছবি।

দীপক সেনগুপ্ত

.

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।