প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

ছবিতে কামারপুকুর ও জয়রামবাটি (আগে যা প্রকাশিত হয়েছে)

৫. শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির, আমগাছ ও যুগীদের শিব মন্দির

শ্রীরামকৃষ্ণের জন্ম ঢেঁকিশালে। জন্মস্থানের ঠিক উপরেই তৈরী হয়েছে শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির। নির্বাচিত ভাস্কর মূর্তিটি নিখুঁত ভাবে তৈরী করার জন্য ঠাকুরের দৈহিক উচ্চতা জানতে চান । যে কোটটি পরে শ্রীরামকৃষ্ণ রাধাবাজারে অধুনা লুপ্ত " বেঙ্গল ফটোগ্রাফার " নামক ষ্টুডিওতে ফটো তুলিছিলেন, সূর্য মহারাজ ( স্বামী নির্ব্বাণানন্দ ) বেলুড় মঠে সংরক্ষিত সেই কোটটি থেকে ঠাকুরের উচ্চতা মোটামুটি ৫ ফুট ৯ ইঞ্চি অনুমান করেন । সেই অনুপাতেই মূর্তিটি গড়া হয় । এই মন্দিরটির শিল্প পরিকল্পনা করেন প্রখ্যাত চিত্রশিল্পী নন্দলাল বসু এবং নির্মান দেখাশোনার ভার ন্যস্ত হয়েছিল মার্টিন বার্নের ইঞ্জিনিয়ার গোপেন্দ্রনাথ সরকারের উপর । পাথর খোদাই-এর কাজ করেছিলেন সুদক্ষ নৃসিংহ হাজরা । ঠাকুরের মূর্তি এবং বেদী তৈরি করেন তখনকার প্রখ্যাত শিল্পী মণি পাল । মন্দিরটির প্রতিষ্ঠা হয় ১৯৫১ সালের ১১ই মে । জন্ম গ্রহণের সময়টির স্মারক রূপে শ্বেতপাথরের বেদীর সামনে ঢেঁকি, চুল্লী ও প্রদীপ খোদাই করা রয়েছে। এখানে সকাল-সন্ধ্যা পূজা, আরতি ও ভোগ হয় এবং প্রতি সন্ধ্যায় স্তোত্রপাঠ ও সঙ্গীতানুষ্ঠান হয়। মন্দিরের কাছেই ঠাকুরের নিজের হাতে পোঁতা আম গাছটি আজও বিদ্যমান। প্রতি বছরই এতে ফল ধরে।

কুটীরের কাছেই একটি প্রাচীন শিব মন্দির। ঠাকুরের মা চন্দ্রামনি দেবীর একটো অদ্ভুত দর্শনলাভ ও অনুভুতির কথা অনেকেই জানেন। একদিন তিনি মন্দিরের সামনে দাঁড়িয়ে ধনী কামারিনীর সঙ্গে কথা বলার সময় দর্শন করেন যে মন্দির থকে একটি জ্যোতি এসে তাঁর শরীরের ভিতর প্রবেশ করল। তিনি মুর্ছিত হয়ে পড়লেন এবং পরে অনুভব করলেন যে তাঁর গর্ভসঞ্চার হয়েছে। পরমপুরুষ শ্রীরামকৃষ্ণদেবের জন্মলাভ।

শ্রীরামকৃষ্ণদেবের বাবা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়ের প্রতিবেশী ও সুহৃদ মধু যুগী ছিলেন অত্যন্ত সজ্জন ও ধার্মিক ব্যক্তি। বালক গদাধরকে অত্যন্ত স্নেহ করতেন তিনি। মধু যুগীর পিতা রামানন্দ যুগী সংসারের অনিত্যতা উপলব্ধি করেন এবং তীর্থ ভ্রমণে বের হন। ফিরে এসে একটি শিবমন্দির প্রতিষ্ঠা করেন; শিবের নাম শান্তিনাথ। এই মন্দিরটিই যুগীদের শিবমন্দির নামে খ্যাত। আগে এই মন্দিরটি জনসাধারণের যাতায়াতের রাস্তার পাশেই ছিল। কিন্তু বর্তমানে সমস্ত জায়গাটিই রামকৃষ্ণ মঠ কর্তৃক অধিগৃহিত ও সুরক্ষিত এবং প্রাচীর দিয়ে ঘেরা। বিশেষ অনুমতি ছাড়া এখানে ছবি তোলা নিষিদ্ধ।

১১নং চিত্র

১২নং চিত্র

১১নং ছবিতে দেখা যাচ্ছে প্রবেশ পথের ডানদিকে ঠাকুরের নিজের হাতে পোঁতা আমগাছ। তার পাশেই যে কুঁড়ে ঘরটি দেখা যাচ্ছে সেটি বৈঠকখানা হিসাবে ব্যবহৃত হত। ১২নং চিত্রের মন্দিরটিই যুগীদের শিবমন্দির।

১৩নং চিত্র

১৩নং চিত্রে রামকৃষ্ণ মঠের মূল প্রবেশ দ্বারটি দেখা যাছে। কিছু দূরে সাদা রঙের শ্রীরামকৃষ্ণ মন্দির, প্রবেশ পথের বাঁ দিকে প্রথম কুঁড়ে ঘরটিতেই ঠাকুর বাস করতেন। দেয়ালের কাছে গাছের ফাঁকে যুগীদের শিবমন্দির।

১৪নং চিত্র

১৪নং চিত্রে দেখা যাচ্ছে একই জায়গার একটি প্রাচীন রূপ। সামনের জলাশয়টি ছিল লাহাদের একটি ছোট পুষ্করিণী। এখন আর এটি নেই এবং শিবমন্দির সহ সব জায়গাটিই প্রাচীর দিয়ে ঘেরা।

১৫নং চিত্র

১৫ নং চিত্রে ঠাকুরের বাসস্থান ও শিব মন্দিরটি সহ একটি ফলকে শ্রীশ্রীরামকৃষ্ণ লীলাপ্রসঙ্গ গ্রন্থ থেকে উদ্ধৃত ঠাকুরের মা চন্দ্রমণিদেবীর অভিজ্ঞতার বর্ণনা।


৬. লাহাবাবুদের রাসমঞ্চ

লাহারা এক সময়ে কামারপুকুর অঞ্চলে খুবই বর্ধিষ্ণু ও সম্পন্ন পরিবার ছিলেন। তাদের একটি রাসমঞ্চ ছিল এবং এখানে রাসপর্ব দেখতে বহুদূর থেকে মানুষ আসত। বহু মাটির মূর্তি দিয়ে মন্দিরের চারপাশ সাজান হত। যাত্রা, পালা, কীর্তন ও আমোদ প্রমোদের ব্যবস্থা ছিল। কিন্তু সময়ের সঙ্গে লাহাদের অবস্থার অবনতি হয় এবং রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে রাসমঞ্চটি ধবংস হয়। বর্তমানে এখানে একটি নতুন রাসমঞ্চ নির্মান করা হয়েছে এবং প্রতি বছর রাস উপলক্ষ্যে রাধাকৃষ্ণ মূর্তি স্থাপন, মেলা ও উত্সবের আয়োজন করা হয়। ১৬নং চিত্রে রাসমঞ্চের সম্মুখ ভাগ এবং ১৭ নং চিত্রে মঞ্চের ভিতরে ঠাকুর, শ্রীমা ও রাধাকৃষ্ণের ছবি দেখা যাচ্ছে।

১৬নং চিত্র

১৭নং চিত্র

 

.

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।