প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

ছবিতে কামারপুকুর ও জয়রামবাটি (আগে যা প্রকাশিত হয়েছে)

১২. লক্ষ্মীজলা ও ভূতির খাল

কামারপুকুর গ্রাম থেকে তিন কিলোমিটার পশ্চিমে দেরে গ্রাম। শ্রীরামকৃষ্ণদেবের পিতা ক্ষুদিরাম চট্টোপাধ্যায়ের আদি নিবাস এই দেরে গ্রামেই। তখন জমিদার ছিলেন রামানন্দ রায়। তিনি অত্যন্ত অত্যাচারী ছিলেন। একবার ক্ষুদিরামকে তিনি একটি মিথ্যা মামলায় সাক্ষী দেবার জন্য বলেন। ধর্মভীরু ও সদাচারী ক্ষুদিরাম সেই অনুরোধ সঙ্গে সঙ্গে প্রত্যাখ্যান করেন। এতে জমিদার তাকেই মামলায় জড়িয়ে দিয়ে তার বাড়ী ঘর জমিজমা সব অধিগ্রহণ করেন। স্ত্রী, জ্যেষ্ঠপুত্র রামকুমার ও কন্যা কাত্যায়নীকে নিয়ে ক্ষুদিরাম যখন সম্পূর্ণ অসহায় সে সময়ে তারই পরম সুহৃদ সুখলাল গোস্বামী তাকে সাদরে আহ্বান জানান কামারপুকুরে গিয়ে বসবাস করবার জন্য। ক্ষুদিরামকে তিনি কয়েকটি কুঁড়ে ঘর এবং এক বিঘা দশ ছটাক জমি চিরদিনের জন্য দান করেন। এই জমিই লক্ষীজলা। এখানে এত ধান জন্মাত যে পরিবারের প্রয়োজন মিটিয়ে অতিথি সৎকার করেও অনেক উদ্বৃত্ত হত। লক্ষীজলার অনতিদূরেই ভুতির খাল। শ্রীরামকৃষ্ণদেব তাঁর কৈশোরের অনেক সময়েই একা বা সমবয়সীদের সঙ্গে এখানে বেড়াতে আসতেন। ২৯নং চিত্রে দূরে লক্ষ্মীজলা দেখা যাচ্ছে।

২৯নং চিত্র


১৩. বটগাছ ও ভূতির শ্মশান

লক্ষ্মীজলার কাছে একটা প্রকাণ্ড বটগাছ। এই বটগাছের নীচে শ্রীরামকৃষ্ণ বালকাবস্থায় দিন রাত্রির অনেক সময়েই ধ্যান করে কাটাতেন। লীলাপ্রসঙ্গের লেখক স্বামী সারদানন্দ অশ্বত্থ গাছের উল্লেখ করেছেন। হয় ত তিনি এই বট গাছটিকেই ভুল বশতঃ অশ্বত্থ গাছ বলেছেন অথবা সত্যিই তখন একটা অশ্বত্থ গাছও ছিল। যাই হোক, ঠাকুর একটা অদ্ভুত উপায়ে শ্মশানের শিবা ও উপদেবতাদের খাদ্য নিবেদন করতেন। তিনি হাঁড়িতে খাবার ভরে বটগাছের কাছে খোলা জায়গায় রেখে দিতেন এবং উপদেবতারা দল বেঁধে এসে সেগুলি গ্রহণ করত। মাঝে মাঝে খাবার সমেত হাঁড়ি গুলি শূণ্যে উঠে যেত এবং তিনি উপদেবতাদের দেখতেও পেতেন। একবার রাত্রিবেলা তাঁকে খুঁজতে তাঁর দাদা রামেশ্বর সেখানে উপস্থিত হলে তিনি দাদাকে বলেন, "দাদা, তুমি আর এগিওনা। তা হলে এরা তোমার অপকার করবে। "

বটগাছটির অনেকগুলি ডাল এখন নষ্ট হয়ে গিয়েছে। ঐতিহাসিক এই গাছটিকে উজ্জীবিত করে রাখার অনেক চেষ্টা চলছে। পাশেই ভূতির শ্মশান। ঠাকুরের সময়কালীন সেই উদাস করা নির্জনতা ও গাম্ভীর্যপূর্ণ পরিবেশ এখন আর নেই। মৃতদেহ সৎকার স্থানের পাশেই আধুনিক সভ্যতার নিদর্শন বৈদ্যুতিক টাওয়ার। প্রাচীন ও নবীনের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান। ৩০ নং চিত্রে বটগাছটি এবং ৩১ নং চিত্রে সৎকার স্থান ও বৈদ্যুতিক টাওয়ার দেখা যাচ্ছে। ৩২ নং চিত্রে দেখা যাচ্ছে বটগাছটির একটি প্রাচীন রূপ। গাছটি যে ক্রমশঃ জীর্ণ হয়ে পড়ছে ছবিতে সেটা স্পষ্ট।

৩০ নং চিত্র

৩১ নং চিত্র

৩২ নং চিত্র

দীপক সেনগুপ্ত

 

.

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।