নারী
এপ্রিল ১৫, ২০১৫
আমার স্বাস্থ্য, আমার সত্তা
নিজের যত্ন (৪)
(আগের অংশ)
পরিবেশ এবং কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য
আমরা কোথায় থাকি আর কোথায় কাজ করি তার ওপর আমাদের স্বাস্থ্য নির্ভর করে। পরিবেশ দূষণ কী ভাবে আমাদের স্বাস্থ্য ধবংস করে তা আমরা ধীরে ধীরে বুঝতে পারছি। পরিবেশ বলতে বোঝায় আমাদের খাদ্য, জীবনযাত্রার ধরণ, এবং বাসস্থানের আবহাওয়া। প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যা, জন্মরোগ, ক্যানসার ও আরও বিভিন্ন অসুখের জন্যে পার্শ্বিক ভাবে দায়ী করা যায় পরিবেশকে। বাতাস, মাটি, খাদ্য, ও জলের মধ্যে দিয়ে কলকারখানার রাসায়নিক বস্তু, কীটনাশক, এবং অন্যান্য বিষাক্ত বর্জ্য পদার্থ আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। আমাদের ঘরে ব্যবহৃত নানান কেমিক্যাল, ই-কোলাই জাতীয় জীবাণু, এবং কর্মক্ষেত্র ও বাড়ির চাপ আমাদের অসুস্থ করে তোলে।
আমাদের ক্রমবর্ধমান দৈনন্দিন প্রয়োজন মেটাতে কল-কারখানা বাড়ছে। সেই সব কারখানায় বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কে বহুকাল পর্যন্ত তেমন ভাবনা-চিন্তা করা হয় নি। এখন অবশ্য সবদেশেই কল-কারখানার দূষিত বর্জ্যের বিষয়ে বিভিন্ন নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। আমাদের দেশও তার ব্যতিক্রম নয়। তবে সেই নিষেধাজ্ঞা আমাদের দেশে অক্ষরে অক্ষরে কতটা মানা হচ্ছে তা একটা বড় প্রশ্ন। জীবনযাত্রার ঢঙ পরিবর্তনে অনিহা, পরিবেশ দূষণ সম্পর্কে ঔদাসিন্য ও অজ্ঞতা, মুনাফাবাজি, বিভিন্ন কর্মী ইউনিয়নের বাধা সৃষ্টি, রাজনৈতিক সদিচ্ছার অভাব, ইত্যাদি মিলে দূষণ মুক্তি এক বিশাল সমস্যায় দাঁড়িয়েছে। এর একটি সহজ উদাহরণ হল কলকাতায় গাড়ির ধোঁয়ার দূষণ। কলকাতায় বায়ু-দূষণ ভয়াবহ মাত্রায় পৌঁছলেও বহু বছর এটি বন্ধ করার কোন উদ্যোগ নেওয়া হয় নি। অবশেষে এক পরিবেশকর্মীর নিরন্তর প্রচেষ্টায় বহু বছর বাদে আইনী নির্দেশে দূষণযুক্ত গাড়ি বন্ধ করার প্রচেষ্টা করা হচ্ছে। এই নির্দেশের পরেও বহু দূষণ সৃষ্টিকারী গাড়ি এবং অটো তা মানতে রাজি নয়। তবু আশা করা যায় কলকাতাতে বায়ু দূষণ বন্ধ হয়ে আবহাওয়া পরিষ্কার হবে। তবে যেখানে পুলিশী ব্যবস্থা শিথিল সেই শহরতলীতে এ নিয়ম কবে কার্যকরী হবে তা কে জানে!
দূষণের জন্য ব্যক্তিগত ভাবে আমরা সকলেই অল্প-বিস্তর দায়ী। প্লাস্টিকের ব্যাগ নিকাশী নালাগুলি বন্ধ করে দিচ্ছে জেনেও আমরা সেগুলো ব্যবহার করি আর যত্রতত্র ফেলি; যে দূষণ সৃষ্টিকারী অটো বেআইনী ভাবে রাস্তায় চলছে তাতে চড়ি; জলাভূমি সংরক্ষণ না করে তা ভরাট করে বাড়ি করি; পারদের থার্মোমিটার ব্যবহার করি; নিজেদের জঞ্জাল যেখনে সেখানে ফেলি – অর্থাৎ নিজেদের আপাতসুবিধা ছাড়া অন্য কিছু সম্পর্কে ভাবি না। এই ব্যবহার সবসময়ে সচেতনতার অভাবে হয় তা নয়। সচেতনতার অভাব অনেক ক্ষেত্রে রয়েছে ঠিকই তবে অনেক সময়ে জেনে বুঝেও আমরা এ রকম ব্যবহার করি এই ভেবে যে 'আমি না করলেও অন্যেরা করবে' বা 'আমার একার ব্যবহারে কি আসে যায়'। তবে আমরা যদি স্পষ্ট বুঝতে পারি আমাদের আচরণ বাস্তবিকই সকলের স্বাস্থ্যের হানি করছে তা হলে হয়ত অনেকেই এমন যথেচ্ছ দূষণ করব না। এমনকি অন্যদের সঙ্গে এক জোট হয়ে এ বিষয়ে কিছুটা সামাজিক চাপও সৃষ্টি করতে পারি।
কল্যাণীতে স্বাস্থ্য উদ্যোগ
কলকাতার কাছেই কল্যাণী শহরের বড় সমস্যা ছিল আবর্জনা অপসারণ। কল্যাণীর ৫২-টি বস্তিতে প্রধানতঃ বাংলাদেশের উদ্বাস্তু ও হরিজনদের বাস। এই বস্তিগুলি থেকে আবর্জনা পরিষ্কার করা বহুকালের সমস্যা। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল আবাসিকদের যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগের অভ্যাস। কল্যাণী মিউনিসিপ্যালিটির কর্তৃপক্ষ অনেক চেষ্টার পরে বুঝতে পেরেছিলেন মানুষের ব্যবহারের জন্যে শৌচাগার তৈরি করলেই তার ব্যবহার সুনিশ্চিত করা যায় না। তাই তাঁরা একটি নতুন প্রয়াস নেন। কয়েকটি বস্তি চিহ্নিত করে সেখানে যত্রতত্র মলমূত্র ত্যাগ করার অপকারিতা এবং নিজেদের বাসস্থান পরিষ্কার রাখার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কে আবাসিকদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে আরম্ভ করেন। এই প্রয়াসের মূলে ছিল একটি বিশ্বাস - মানুষ অবুঝ নয়। ধৈর্য ধরে সহজ কথায় বোঝালে তারা বুঝতে পারবে। দারিদ্র্য মানুষকে বোধবুদ্ধিহীন করে না তার প্রমাণ কল্যাণীর এই প্রকল্প। কল্যাণীর এই দরিদ্র বস্তিবাসীরা নিজেরাই অর্থ ব্যয় করে নিজেদের শৌচাগার বানিয়েছেন। কল্যাণী মিউনিসিপ্যালিটির তদানীন্তন স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধানের কথায়, 'আমরা ধরে নি ওরা পারবে না, ওরা গরীব। ওদের জন্যে কিছু করতে আমাদেরই এগিয়ে যেতে হবে। কিন্তু এই প্রকল্পে আমরা দেখেছি এই দরিদ্র মানুষও নিজেদের স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্যে টাকা খরচ করতে পিছপা হন না। এর জন্যে দরকার হল মানসিকতার পরিবর্তন। শৌচাগার ব্যবহার করার ইচ্ছে না জাগাতে না পারলে, টয়লেট বানিয়ে কোনও লাভ নেই।'
কর্মক্ষেত্র ও পরিবেশ - স্বাস্থ্য-সংকটে এ দুটির যোগাযোগ
স্বাস্থ্যের ওপর কর্মক্ষেত্র ও পরিবেশের প্রভাব আমরা আলাদা ভাবে দেখি। বহু দেশেই জীবনের এই বিশেষ দুটি অঙ্গ দেখভালের দায়িত্ব দুটি ভিন্ন সরকারী দপ্তরের ওপর থাকে। ভারতে কর্মক্ষেত্রে স্বাস্থ্য বা অক্যুপেশানাল হেলথ তদারকির জন্যে আলাদা কোন দপ্তর নেই। ভারতীয় সংবিধানে অবশ্য লেখা রয়েছে 'রাষ্ট্র খেয়াল রাখবে যাতে কাজের ক্ষেত্রে সুষ্ঠু এবং মানবিক পরিবেশ বজায় থাকে'। এ ব্যপারে নজর রাখার দায়িত্বে যেসব সরকারী সংস্থা রয়েছে সেগুলি হল: ডিরেক্টর জেনারেল অফ দ্য ফ্যাক্টরি অ্যাডভাইসরি সার্ভিস এণ্ড লেবার ইনস্টিট্যুট (কারখানা আর বন্দর কর্মীদের জন্যে), ডিরেক্টর জেনারেল অফ মাইনস এণ্ড সেফ্টি (খনি শ্রমিকদের জন্যে), শ্রম মন্ত্রণালয় (নির্মাণকার্যে যুক্ত কর্মীদের জন্যে), ইত্যাদি। প্রসঙ্গত, অসংগঠিত কাজে নিয়োজিত শ্রমিকদের স্বাস্থ্যের দেখভালের জন্যে কোন সুনির্দিষ্ট দপ্তর নেই। পরিবেশ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য রক্ষার বিষয়ে অবশ্য একটি সংস্থাই রয়েছে: পরিবেশ ও বন সংরক্ষণ মন্ত্রণালয়ের অধীনে কেন্দ্রীয় পরিবেশ দূষণ বা পল্যুশন বোর্ড।
কর্মক্ষেত্র ও পরিবেশ সংক্রান্ত স্বাস্থ্য সংস্থাগুলি পৃথক হলেও অনেক ক্ষেত্রে দূষণ জনিত সমস্যা শুধু কর্মক্ষেত্রেই আবদ্ধ থাকে না, পরিবেশেও ছড়িয়ে পড়ে। যে বিষাক্ত বস্তু কারখানায় তৈরি হচ্ছে বা বর্জ্য হিসেবে বেরোচ্ছে, তার প্রভাব শুধু কারখানার অভ্যন্তরেই সীমাবদ্ধ থাকে না। সেই বিষাক্ত বস্তু জল, বাতাস, ও মাটির মাধ্যমে চারিদিকের স্কুল-কলেজ, ঘর-বাড়ি, রাস্তা-ঘাট, ও নদী-নালাতে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৮৪ সালে ইউনিয়ন কার্বাইড কীটনাশক তৈরির কারখানা থেকে বিষাক্ত গ্যাস বেরিয়ে ভূপালে হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু ঘটায়। পঁচিশ বছর পরেও সেই গ্যাসের প্রভাবে উত্তর প্রজন্ম ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। সেই সঙ্গে পরিত্যক্ত কারখানা থেকে ক্রমাগত কীটনাশক বেরিয়ে স্থানীয় জল সরবরাহ দূষিত করে চলেছে।
কর্মী, স্থানীয় অধিবাসী, এমন কি স্থানীয় হাসপাতালের স্বাস্থ্যকর্মীরাও অনেক সময়ে জানেন না তাঁদের বাড়ির কাছে যে কারখানা চলছে তাতে কি ধরণের রাসায়নিক বস্তু তৈরী হচ্ছে বা ব্যবহার করা হচ্ছে এবং সেগুলির জন্যে সেই অঞ্চলে কী কী সমস্যা হতে পারে। উৎপাদন বাড়ানোর জন্যে কৃষিজমিতে রাসায়নিক কীটনাশক ব্যবহার চাষী, স্থানীয় লোকজন, এমন কি যাঁরা সেই ফসল কিনে খাচ্ছেন - তাঁদের স্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব ফেলছে সে বিষয়ে আমাদের সচেতনতা এখনও খুবই কম। সুতরাং কোন কারখানা বা শিল্প প্রতিষ্ঠা করার আগে তার সুফলের সঙ্গে সঙ্গে এই সমস্ত কুফলগুলিও বিবেচনা করে দেখতে হবে। সেই আলোচনায় প্রশাসন, সবুজায়নের কর্মী, বাণিজ্যিক কর্মী, স্বাস্থ্যকর্মী সবাইকেই অংশগ্রহণ করে একটি সমঝোতায় আসতে হবে।
ভুল না ঠিক?
জীববিজ্ঞান অনুসারে পরিবেশ দূষণে মেয়েরা বেশি আক্রান্ত হয়।
ঠিক । গবেষণায় দেখা গেছে ছেলেদের চেয়ে মেয়েদের শরীরে প্রায় ১০ শতাংশ বেশি চর্বি বা ফ্যাট থাকার দরুণ মেয়েদের শরীরে বিষাক্ত বস্তু বেশি পরিমাণে সংরক্ষিত হয়। এইসব বিষাক্ত বস্তু স্তনের ক্যানসার এবং জরায়ুর রোগ, যেমন এণ্ডোমেট্রিওসিস-এর জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়।
দূষণ রোধ করতে সক্ষম হলে আর চিন্তার কিছু নেই।
ভুল। প্রথমতঃ, সরকারী আইন থাকলেই যে তা বাস্তবায়িত হবে তা নয়। কলকাতায় বেশ অনেক বছর ধরেই আইনজারি করে মোটর গাড়ি থেকে বায়ু দূষণ বন্ধ করার চেষ্টা চলছে। কিন্তু এখনও আইন ভঙ্গ করা হচ্ছে। তাছাড়া সমস্ত গাড়ির বায়ু দূষণ বন্ধ করলেও পুরোন দূষণের জের বহু বছর ধরে চলবে। এখানে বলা যায় ডি ডি টি-র সঙ্গে ক্যানসারের যোগ লক্ষ করে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বহু বছর আগেই এর ব্যবহার বন্ধ করা হয়েছে। কিন্তু বহু মার্কিন মহিলাদের শরীরে এখনও ডি ডি টি-র রেশ পাওয়া যায়। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই ডি ডি টি ব্যবহার এখন বন্ধ। প্রসঙ্গতঃ, ২০০৭ সালে ভারতে সরকারী ভাবে ডি ডি টি ব্যবহার বন্ধ করা হলেও এ3খনও তার ব্যবহার সম্পূর্ণ রোধ করা যায় নি। তাছাড়া বিভিন্ন কারখানার দূষণ মানুষ, জমি, ও জলকে কলুষিত করে চলেছ। আমাদের দেশে দূষণ বিরোধী আইন রয়েছে কিন্তু মুনাফার স্বার্থে সেই আইন সঠিকভাবে প্রয়োগ করা হচ্ছে না।
জনসাধারণের স্বাস্থ্য এবং দায়িত্ব - যৌথ দায়িত্ব কিন্তু অসাম্য বোঝা
আজকের পরিবেশ এমন অবস্থায় পৌঁছেছে যে তার কুফল থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকার কোন সম্ভাব্য পথ নেই। একটি বিষাক্ত রাসায়নিক পদার্থ, পলিক্লোরিনেটেড বাইফিনাইল বা পি সি বি আঠা, রঙ, ইলেকট্রিক ইন্সুলেটর, ছাপার কালি, যন্ত্র তৈলাক্তকরণ, ইত্যাদিতে বহুদিন ধরে ব্যবহার করা হয়েছে। এই পদার্থ ব্যবহারের ফলে শ্বেতী, যকৃতের রোগ, ও ক্যানসার হতে পারে এবং শিশুদের স্বাভাবিক বিকাশ ব্যাহত হয়। এছাড়া পি সি বি বন্যপ্রাণীও ধবংস করে। পরীক্ষায় দেখা গেছে মেয়েদের স্তন্যদুগ্ধে এবং পুরুষের বীর্যে অল্প পরিমাণ পি সি বি এখনও পাওয়া যায়।
এক সময়ে জলের পাইপ ঝালাই করতে, রঙে, পেট্রল ও অন্যান্য নানান নিত্য ব্যবহারিক জিনিষে সীসা যোগ করা হত। কিন্তু দেখা গেল এতে আমাদের স্নায়ুপ্রণালী ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই সব বিষাক্ত পদার্থগুলি প্রকৃতিতে এতটাই ছড়িয়ে পড়েছে যে দক্ষিণ-মেরুর মতো সুদূর জনবসতিহীন বরফেও এগুলির রেশ পাওয়া গেছে!
পরিবেশ দূষণ থেকে কতটা আত্মরক্ষা করতে পারবো তা নির্ভর করে আমাদের সামাজিক সচেতনতা এবং অর্থনৈতিক ক্ষমতার ওপর। অনেকে বোতলের পরিস্রুত জল কিনে পান করেন, জৈবিক উপায়ে তৈরি খাদ্য ছাড়া খান না, দামী চিকিৎসা কেন্দ্রে স্বাস্থ্য-পরিষেবা পেয়ে অপেক্ষাকৃত নিরাপদ জীবনযাপন করেন। দরকার হলে এঁরা অপেক্ষাকৃত কম দূষিত পরিবেশে ভালোভাবে বাস করতে পারবেন। কিন্তু বেশির ভাগ মানুষের পক্ষে এ ভাবে বাঁচা সম্ভব নয়।
সাধারণত আমাদের দেশে গ্রামবাসীরা বেশি দূষণের শিকার হন। জলের স্তরে আর্সেনিক বেড়ে যাবার ফলে এবং বোতলের জল কেনার আর্থিক সংগতি না থাকায় তাঁরাই জল খেয়ে বেশি অসুস্থ হন। বাড়ির পাশের ক্ষেতে কীটনাশক ব্যবহৃত হওয়ায় তাঁরাই এই সব বিষাক্ত পদার্থের সংস্পর্শে বেশি আসেন। কাছাকাছি স্বাস্থ্যকেন্দ্র না থাকায়, থাকলেও সেখানে ভালো ডাক্তার বা ওষুধপত্র না থাকায় তাঁরাই সুষ্ঠু স্বাস্থ্য-পরিষেবা থেকে বঞ্চিত হন। এছাড়া পয়ঃপ্রণালী, জলসরবরাহ, শৌচাগারের এবং স্বাস্থ্য বিষয়ক সচেতনতার অভাবে এঁরা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন।
পরিবেশ দূষণ কমানোর জন্যে উন্নয়নশীল দেশে আরেকটি সমস্যা হল শক্তিশালী ব্যবসায়ীরা তাঁদের কারখানা বা কাজে দূষিত পদার্থ তৈরি ও ব্যবহার বন্ধ করতে চান না এবং অন্য কিছু ব্যবহার করার ব্যাপারে ঘোরতর আপত্তি করেন। এই আপত্তির মূলে রয়েছে মুনাফা কমার ভয়। যেমন ভারতের রসায়ন শিল্প নিজেদের স্বার্থ রক্ষা করতে জনগণের স্বাস্থ্যর পক্ষে ক্ষতিকারক বিষাক্ত পদার্থ উৎপাদন বন্ধ করার বিরুদ্ধে বহুদিন থেকে আপত্তি জানিয়ে চলেছে। প্রশাসনও কলখারখানার প্রসারের গতি রুদ্ধ করতে চান না। ফলে পরিবেশ দূষণ মুক্তির ব্যাপারে অগ্রগতি হচ্ছে খুব ধীর গতিতে।
(পরের অংশ)
২০০৯ সালে ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্কের অনুদানে শমীতা দাশ দাশগুপ্তের সম্পাদনায় 'মানবী' ও 'সংলাপ'-এর যৌথ উদ্যোগে 'আমার স্বাস্থ্য, আমার সত্তা' বইটি প্রকাশিত হয়। অনুবাদে সহযোগিতা করেন সুজন দাশগুপ্ত ও অলোক গোস্বামী, আলোকচিত্রে সুবীণ দাশ ও চিত্রাঙ্কনে সাগরিকা দত্ত । ১৫০০ কপি ছাপা হয়েছিল বিভিন্ন এনজিও-র মাধ্যমে বিনামূল্যে বিতরণের জন্যে, এখন এটি দুষ্প্রাপ্য। বইটিতে অবসর-এ পূর্ব-প্রকাশিত কিছু কিছু লেখাও অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। বইটি প্রকাশ করার অনুমতি আমরা পেয়েছি। এর আগে মেয়েদের যৌন স্বাস্থ্য বিষয়ক অলোচনার একাংশ প্রকাশিত হয়েছিল। এই সংখ্যা থেকে পুরো বইটিই ধারাবাহিক ভাবে প্রকাশিত হবে।
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
অবসর-এর
লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য
অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।