প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

উটি - প্রথম ভাগ

উটি দাক্ষিণাত্যের নীলগিরি পর্বতমালার গভীরে একটি সুন্দর শহর। নীলগিরি পর্বতমালার নাম হয়তো নীল রং থেকেই এসেছে। দূর থেকে এটিকে সত্যই নীল দেখায়। (ছবি নং ১)। ঊটির আদি নাম ছিল উধাগামান্দলাম। এর থেকে কালক্রমে হয়ে গেল উওটোক্যমুন্দ। পরে হল উটাকামান্দ এবং তার থেকে সংক্ষেপে উটি।

নং ০১ - নীলগিরি পর্বতমালা - দূর থেকে এটিকে সত্যই নীল দেখায়

নীলগিরি পর্বত উপরে এখনকার ঊটির আদি বাসিন্দা টোডা ও অন্যান্য উপজাতি যেমন কোটা, বাদাগা, আলুকুরুম্বা ঊটির আশে পাশে ১১১৭ সালের আগে থেকে বসবাস করতেন। নীলগিরি এলাকা হোসলা রাজাদের অধীনে ছিল। পরে এই এলাকা টিপু সুলতানের অধীনে চলে যায়। ইংরেজদের আমলে ঊটির একটি অংশ টোডারা কইম্বাটোরের গভর্নর সুলিভানের হাতে তুলে দেন। সুলিভান এখানে চা, সিঙ্কোনা, টিক প্রভৃতির আবাদ শুরু করেন। অবশেষে ১৭৯৯ সালে শ্রীরঙ্গপত্তমে টিপু সুলতানের সঙ্গে এক সন্ধির ফলে এই এলাকা পাকাপাকি ভাবে ইষ্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির হাতে চলে যায়।

অন্য হিল স্টেশনের মত ঊটির শীতল আবহাওয়া সারা বছরই বেশ মনোরম শুধু জানুয়ারি ও ফেব্রুয়ারির রাতের বেলা ছাড়া। এই আবহাওয়ার জন্যে এখানে প্রচুর পরিমাণে “ইংলিশ” ফল ও “ইংলিশ” সবজীর চাষ হয় । (ছবি নং ২)। টুরিসমের তুলনায় এই ফল ওসবজীর উৎপাদন মূল্য অনেক বেশি। এছাড়া এখানে পাশ্চাত্য ফুলের চাষও হয়। (ছবি নং ৩)।

নং ০২ – নানা ধরনের বিলিতি সবজির ক্ষেত – দেখতেও সুন্দর লাগছে।

নং ০৩ - পাশ্চাত্য ফুলের বাগান। এই রকম আরও ফুলের এখানে হয়।

ঊটির আশে পাশে বিখ্যাত নীলগিরি চা-এর অনেক বাগান আছে।(ছবি নং ৪, ৫)।

নং ০৪ - নীলগিরি চা বাগান।

নং ০৫ – লাল রাস্তাটা চলে গেছে চা বাগানের ভিতরে।

এই সব বাগানের চা পাতা থেকে চা বানানর কারখানা (টি ফ্যাক্টরি) এখানেই আছে – ডোড্ডাবেট্টা টি ফ্যাক্টরি। এটাই দাক্ষিণাত্যের সব থেকে উঁচু চা-এর কারখানা (ছবি নং ৬,৭)।

নং ০৬ - নীলগিরি চা বাগানের চা এখানে চলে আসে প্রসেসিং করার জন্য।

নং ০৭ - এটাই দাক্ষিণাত্যের সব থেকে উঁচু চা-এর ফ্যাক্টরি।

এই দোতলা কারখানাতে অর্থোডক্স ও সিটিসি দুরকম চাই তৈরি হয়। চা এর পাতা প্রথমে হাল্কা শুখিয়ে (উইদারিং) পাতায় জলের পরিমাণ খানিকটা কমিয়ে নরম করে নেওয়া হয়। তার পর ছোট ছোট টুকরো করে কেটে ফার্মেন্ট করে নেওয়া হয়। এই ফার্মেন্ট করা চা গুলটি পাকিয়ে ড্রাইয়ারে শুকিয়ে নিলেই সিটিসি চা তৈরি প্যাকিং এর জন্যে। অর্থোডক্স চা বানানর পদ্ধতি একটু আলাদা। অর্থোডক্স চা শুকানোর আগে গুলটি পাকান হয়না। এখানে গরম হাওয়া দিয়ে চা শুকানোর জন্য লম্বা ফ্লুয়িডাইজড বেড ড্রাইয়ার ব্যাবহার করা হয়। এখনে সাধারণ চা ছারাও চকোলেট চা ও এলাচি চা তৈরি হয়। পর্যটকরা এখান থেকে একটু সস্তায় চা কিনতে পারেন। ডোড্ডাবেট্টা টি ফ্যাক্টরিতে একটা টি- মিউজিয়াম আছে।

টি ফ্যাক্টরিতে যাওয়ার পথে উঁচু জায়গা থেকে উটি শহরটিকে সুন্দর ছবির মত দেখায়। বাড়ী গুলকে খেলনা বাড়ীর মত দেখায়। (ছবি নং ৮, ৯)।

নং ০৮ - উঁচু জায়গা থেকে উটি শহরটিকে সুন্দর ছবির মত দেখায়।

নং ০৯ - বাড়ী গুলকে খেলনা বাড়ীর মত দেখাচ্ছে।

ডোড্ডাবেট্টা পিকও খুব সুন্দর। এটা পূর্বঘাট ও পশ্চিমঘাট পর্বতমালার সংযোগ স্থলে এক অপরূপ জায়গা। এখানে টেলিস্কোপ দিয়ে অনেক দুরের দৃশ্য দেখের ব্যবস্থা আছে। এখান থেকে চারদিকের দৃশ্য ও আশে পাশের জায়গাটা খুব সুন্দর (ছবি নং ১০)।
ঊটির আদিবাসী ডোড্ডারা মাটির তৈরি এক রকম কুঁড়ে ঘড়ে থাকত। যদিও সরকার থেকে এদের থাকার জন্য বেশ কিছু পাকা ঘড় তৈরি করে দিয়েছে তবুও ডোড্ডা-হাট এখনও ঊটির কিছু কিছু জায়গায় আছে। সরকার ডোড্ডা-হাটের মডেল কিছু জায়গায় তৈরি করে রেখেছেন পর্যটকদের আকর্ষণ করার জন্যে। এই রকম একটা মডেল দেখা যাবে ডোড্ডাবেট্টা পিকে যাওয়ার পথে (ছবি নং ১১)।
আজ এই পর্যন্তই। পরের বার আরও দর্শনীয় স্থান নিয়ে আলোচনা করা যাবে।

নং ১০ - চা-এর ফ্যাক্টরির সামনের দৃশ্য খুব সুন্দর। জায়গাটা বিক্রির জন্য – কিনবেন নাকি?

নং ১১ - ডোড্ডা-হাটের মডেল।

(পরের অংশ)

বিমল কুমার বসাক

 

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।