উর্দু
সাহিত্যের এক দিকপাল সাদাৎ হাসান মাণ্টো (১৯১২-১৯৫৪)
বিংশ
শতাব্দীর প্রথমার্ধে উর্দুসাহিত্য সমৃদ্ধ হয় বেশ কিছু কবি ও কথাশিল্পীর
অবদানে। এঁদের কথা উর্দুভাষী নন এমন পাঠকরা জানেন না বললেই চলে।
ব্যতিক্রম মুন্সী প্রেমচাঁদ; সত্যজিৎ রায় যে তাঁর দুটি কাহিনী
ভিত্তি করে ছবি করেছিলেন সেই কারণে বোধহয়। এবার উর্দুসাহিত্যের
কিছু দিকপালদের সঙ্গে পরিচিত হবার সময় এসেছে, আমরা এই পর্যায়ে
তাতেই চেষ্টিত হবো।
আমাদের এই প্রথম রচনাটির
নায়ক সাদাৎ হাসান মান্টো। পাকিস্তানের উর্দু গল্পলেখকদের মধ্যে
তিনি যে সবার উপরে, সে বিষয়ে মতদ্বৈধ নেই বললেই চলে, এ ছাড়াও অনেকে
মনে করেন যে সারা ভারত উপমহাদেশের উর্দু সাহিত্যের পরিপ্রেক্ষিতেও
এ কথা বলা যেতে পারে। মান্টো যেমনটি দেখতেন তেমনটি লিখতেন। মানব
চরিত্র, আবেগ আর যন্ত্রণার বর্ণনায় অপ্রতিহত ছিলো তাঁর ক্ষুরধার
লেখনী। তাঁর পাঠকদের তিনি পৌঁছে দিয়েছেন স্থূল রাজনীতি, ধর্মীয়
ভণ্ডামি আর তথাকথিত সামাজিকতার খোসা-ছাড়ানো মানবিকতার মর্মস্থলে,
সেখানে অনুভূতির গভীরতা অদৃষ্টপূর্ব, সেখানে পদে পদে শিহরণ। মান্টো
ছিলেন এক বিদ্রোহী। কী লেখা যাবে বা যাবে না এ বিষয়ে কারুর নিষেধ,
কোনো নিষেধ মানতে চান নি, মানেন নি-- তা সে হোক না সামাজিক বা
রাজনীতিক মঞ্চে অথবা দেশভাগ, মারণযজ্ঞ, মানুষের দুর্বলতা বা যৌনতা
সংক্রান্ত কোনো বিষয়ে।
নিজের সমাধিলিপির খসড়া নিজেই
লিখে গিয়েছিলেন। "সাদাৎ হাসান মান্টো এখানে শয়ান। তার বুকে
গুপ্ত রইলো গল্প লেখার শিল্পের গুহ্য তত্ত্ব। মাটি চাপা পড়েও সে
ভাবে: শ্রেষ্ঠতর কথাশিল্পী কে, ঈশ্বর, না সে নিজে?" আকাশচুম্বী
আত্মম্ভরিতা আর দুর্জয় সাহসের পরিচায়ক এই সমাধিলিপি আভাস দেবে
মান্টো কী ধরণের বিদ্রোহী ছিলেন। আরো অনেক শিল্পস্রষ্টার মতো তাঁর
জীবনও ছিল অসঙ্গতিতে ভরা। দুঃসহ দারিদ্রের মধ্যে নিবার মদ্যপান
করে তিনি মারা যান। এখন তাঁর জন্মশতবার্ষিকী পালিত হচ্ছে ভারত
ও পাকিস্তানে। যেসব সাহিত্য সংস্থা তাঁর জীবৎকালে তাঁর লেখাকে
নস্যাৎ করে তাঁকে অবমাননা করেছে, তারাই আজ তাঁকে সর্বকালের সেরা
উর্দু গল্পকার আখ্যা দিতে চাইছে। যে সরকার মান্টোকে জীবদ্দশায়
নানাভাবে জ্বালাতন করে হয়রান করেছিল, সেই সরকারই আজ তাঁর শিল্পকৃতি
স্মরণে ডাকটিকিট ছেপে প্রচার করছে। ভাগ্য চক্র এমনই চমৎকার!
প্রস্তুতি
পর্ব
মান্টোর প্রাক্-যৌবন খুবই
সাদাসিধে, ভবিষ্যতের মহাকৃতির কোনো ইঙ্গিতই দেখা যায় না। জন্ম
পাঞ্জাবে ১৯১২ সালের এগারোই মে, শহর সামরালা, জেলা লুধিয়ানা। পড়াশোনায়
কোনো মতি ছিলো না, ছিলো ফিল্মে আর নাটকে, বিশেষত আগা হাশর্ কাশ্মীরির
(ভারতের শেক্সপিয়ার বলা হয় এঁকে) নাটকে। নাটক করাটা সহজসাধ্য হয়নি,
বাবা রাগ করে নাটক করার সব সাজসরঞ্জাম ছিঁড়ে ফেলে দিয়েছিলেন। এর
থেকে কর্তৃত্ব-ফলানো "আপ্তগরুজে"দের প্রতি মান্টো বরাবর
কেন বিদ্রুপ-মেশানো বিতৃষ্ণা দেখিয়ে এসেছেন তা অনুমান করা কঠিন
নয়। ম্যাট্রিকে দুবার ফেল (বিষয় আবার উর্দু!), অমৃতসরের হিন্দু
সভা কলেজে প্রথম বর্ষের পরীক্ষাতেই দুবার-- মান্টোর প্রথাগত পড়াশোনার
সেখানেই ইতি। বরাতক্রমে এক গুরু জুটে গেল-- আবদুল বারি আলিগ, এক
তর্কচতুর সাংবাদিক ও কবি। তিনি মান্টোর সঙ্গে বিদেশী সাহিত্যের
পরিচয় করালেন-- ওয়াইল্ড, চেকভ, পুশকিন, মপাঁসা, হুগো। সম্পূর্ণ
অভিভূত মান্টো, উত্তেজিত হয়ে হুগো আর ওয়াইল্ডের দুটো লেখা উর্দুতে
অনুবাদও করে ফেললেন।
এর পর আলিগড় মুসলিম কলেজে
নাম লেখানো, ডাক্তারের ভুলে যক্ষ্মা স্যানাটোরিয়ামে বাস আর লাহোরে
কিছু বদ্ সাংবাদিকতা করে মান্টো একদিন মুম্বাই পৌঁছে গেলেন, 'মুসাওভীর'
নামের এক ফিল্মী কাগজের সম্পাদনা করতে। সেখানে বলিউডের একেবারে
গোড়ার যুগের লোক আর্দেশর ইরানীর ছিল ইম্পিরিয়াল ফিল্ম কোম্পানী,
তার নাট্যকার হিসেবেও কিছু দিন কাটলো। ফিল্মের জগৎ মান্টোর খারাপ
লাগতো না, তবে সেখানে জীবন কাটাতে তিনি রাজী ছিলেন না, সাহিত্যজগতে
যে আশু পরিবর্তন আসতে চলেছে, এই বার্তা তাঁকে ডাক দিয়েছিলো। ১৯৪১
সালে দিল্লীর অল ইণ্ডিয়া রেডিয়োতে যোগ দেবার পর মান্টোর সাহিত্যিক
জীবনে জোয়ার এলো। দেড়বছরের মধ্যে মান্টো প্রকাশ করলেন চারটি বেতার-নাটকের
এবং কয়েকটি ছোটো গল্প ও প্রবন্ধ সংকলন। অল ইণ্ডিয়া রেডিয়োর তৎকালীন
প্রধান, কবি এন.এম রশিদের সঙ্গে তাঁর বনিবনা হোলো না, ১৯৪২ সালে
ফিল্মে কাজ করার জন্য আবার মুম্বাই ফেরৎ এলেন।
দেশবিভাগ
ও অন্তর্দ্বন্দ্ব
এখানে থাকতেই ঘটলো কলঙ্কিত
সেই দেশবিভাগ ও সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-- মান্টোর জীবনের মোড় গেল
ঘুরে। তিনি মানুষের উপর হারালেন আস্থা, হত হোলো তাঁর আত্মবিশ্বাস।
মান্টো ছিলেন মজ্জায় মজ্জায় ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদী, দেশবিভাগজনিত
এই হত্যাকাণ্ডের বীভৎসতা আঘাত হানলো তাঁর মর্মে। তিনি আর মুম্বইতে
থাকতে পারলেন না, তাঁর প্রিয় ফিল্ম জগৎ ও সেই জগতের বন্ধুদের ডাক
উপেক্ষা করে এক ঘোরের মধ্যে মুম্বাই ছাড়লেন লাহোরে তাঁর পরিবারের
সঙ্গে থাকার জন্য। এই দুর্যোগ তাঁর মন ভেঙে যে "গভীর হৃদয়ক্ষত"
রেখে গেলো তা বহুদিন তাঁকে তাড়া করে ফিরেছে।
লাহোর পৌঁছে সপরিবার মান্টো
স্থিতু হলেন লক্ষ্মী ম্যানশনে-- লাহোর মলের কাছেই। জায়গাটা ভালো,
মোটামুটি সবকিছুর কেন্দ্রস্থ। তাঁর ফ্ল্যাটের ধারেকাছেই সামাজিক,
রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে নামকরা অনেক লোকেরা থাকতেন। কিন্তু
মান্টোর তখন সমস্যা দাঁড়ালো তাঁর পরিবারের অন্নসংস্থান করা। সেই
সময়ের লাহোরে তার সুযোগ ছিলো অতি দুর্লভ।
লাহোর --
জীবন ও মৃত্যু
মান্টো আবার লেখা শুরু করলেন,
প্রথমে কিছু সাহিত্যপত্রিকায়। তাঁর বিতর্কিত গল্পগুচ্ছের-- যথা
'খোল দো,' 'ঠাণ্ডা গোশ্ত্'-- অনেকগুলির প্রকাশ এই সময়। তখনকার
রক্ষণশীল সমাজ তাঁর রচনার ঝাঁজ সহ্য করতে পারলো না, লেখক তিরস্কৃত
হলেন , সম্পাদক আর প্রকাশকদের ওপর চাপ আসতে থাকলো এধরণের লেখার
প্রচার বন্ধ করার। প্রকাশকদের উদ্দেশ্য অর্থোপার্জন, মান্টোর জন্য
তাদের দরজা বন্ধ হতে দেরী হোলো না। এর পর মান্টো লিখতে আরম্ভ করলেন
সংবাদপত্রের সাহিত্য বিভাগে; পত্রিকার মালিকেরা মান্টোকে নির্দেশ
দিলেন এইসব বিতর্কিত প্রসঙ্গ নিয়ে না লিখতে। সংবাদপত্রে মান্টোর
কলাম ফাঁকা যেতে লাগলো। একমাত্র দৈনিক 'আফাক' পত্রিকা নিয়মিত তাঁর
লেখা প্রকাশ করতো। সেখানে মান্টো নকশা লেখার এক নতুন পদ্ধতি চালু
করলেন -- যদ্দৃষ্টং, তল্লিখিতম্। "হশর্ কাশ্মীরির মুখের বসন্তের
দাগ মুছে দেবার মতো কোনো ক্যামেরা আমার নেই; নেই তার মুখনিঃসৃত
অশ্লীল কথা পরিবর্তন করার ক্ষমতা" -- লিখলেন মান্টো।
এসময় পরিবারের খাবার আর নিজের
মদের জোগাড় দেবার জন্য মান্টো লিখে গেছেন বল্গাছাড়া ভাবে। অগ্রিম
দক্ষিণা না পেলে লিখতেন না। 'ডাইরেক্টর' পত্রিকার দপ্তরে যেতেন,
কাগজ কলম চেয়ে নিয়ে লেখা শেষ করতেন, জমা দিয়ে, টাকা নিয়ে বিদায়
হতেন। ১৯৪৮ সালে যে মান্টো লাহোরে এসেছিলেন সে মান্টো এই মাণ্টোকে
দেখলে চিনতে পারতেন না। জীবিকা অর্জনের সংগ্রামে বিধ্বস্ত হয়ে
তিনি বোতলবাসিনীর শরণ নিলেন -- অবশ্যই সস্তা। অধঃপতনের শুরু। এক
বন্ধুর জবানীতে জানা যাচ্ছে লাহোরে এক সভায় তাঁর 'টোবা টেক সিং'
কাহিনী পাঠের কথা। তাঁর গায়ের রঙ গেছে জ্বলে, তাঁর চুল পাকা, চোখের
দৃষ্টি নিষ্প্রভ। তবে নাটকীয় পঠনরীতিটি তখনো হারান নি। পাঠের শেষে
প্রেক্ষাগৃহে শ্মশানের স্তব্ধতা।
লক্ষ্মী ম্যানশনে মান্টো
কাটিয়েছিলেন সাত বছর-- বেঁচে থাকার নিরবকাশ লড়াই আর ব্যক্তিগত
নরকের অতলে তলিয়ে যাওয়া। পরিবারকে উপোসী রেখে নিজের জন্য মদ কিনছেন--
এ ঘটনা বহুবার ঘটেছে। কিন্তু এই সময়ের এই যন্ত্রণার জাতক তাঁর
শ্রেষ্ঠ রচনাসম্ভার-- 'ঠাণ্ডা গোশ্ত্', 'খোল দো', 'টোবা টেক সিং',
'ইশ মাঁজদার মেঁ', 'মোজেল', 'বাবু গোপীনাথ'। সস্তার মদ, অনিয়ম,
উচ্ছৃঙ্খলতা-- সব মিলিয়ে তাঁর শরীর ভেঙে পড়ছে, যকৃৎ পচনশীল, মান্টো
আটকে পড়ে গেছেন তাঁর মরণ আবর্তে, সেখান থেকে কেউ ফেরে না। ১৯৫২
সালে পাগলা গারদে কাটাতে হোলো কয়েক মাস। ১৯৫৫ সালের পনেরোই মে
মৃত্যু এসে তাঁকে নিয়ে গেলো। রেখে গেলেন স্ত্রী সফিয়া আর তিন কন্যা,
নিঘাৎ, নুঝাৎ আর নুসরাৎকে। আর চার মাস পরে তাঁর বয়স হোতো তেতাল্লিশ।
প্রাক্-দেশবিভাগ কৃতি: ১৯৩৬-৪৭
আমরা বলেছি যে ১৯৪১ সালে
অল ইণ্ডিয়া রেডিয়োতে যোগ দেবার পার মাণ্টোর ফলনের কাল শুরু। আঠারো
মাসে চারটি বেতারনাটকের সংগ্রহের প্রকাশ: 'আও' (এসো), 'মাণ্টো
কে ড্রামে' (মাণ্টোর নাটকগুচ্ছ), 'জনাজে' (অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া)
আর 'তিন আওরতেঁ' (তিন নারী)। ছোটো গল্প লেখাও চলেছে, প্রথম সংগ্রহ
'ধুয়াঁ'-র পরেই প্রকাশ 'মাণ্টো কে আফসানে' (মাণ্টোর গল্পসংগ্রহ)
তার সঙ্গে কালোপযোগী প্রবন্ধ সংগ্রহ 'মাণ্টো কে মাজামিন' ( মাণ্টোর
প্রবন্ধাবলী)। রেডিও কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ঝগড়া করে ১৯৪২ জুলাইতে
বোম্বে গেলেন, ফিল্ম জগতে আবার কাজ করতে। এবার তাঁর উৎকর্ষপ্রকাশের
বাহন চিত্রনাট্য: 'আঠ দিন', 'চল চল রে নওজোয়ান', 'মির্জা ঘালিব'।
এ সময়ের রচনা তিনটি সর্বোৎকৃষ্ট ছোটো গল্প: 'কালি সালওয়ার', 'ধুয়াঁ',
আর 'বু' (গন্ধ)। 'চুগদ' ( গণ্ডমূর্খ) গল্পসংগ্রহের প্রকাশ ১৯৪৫।
মাণ্টোর এই সময়ের রচনায় আমরা
পাচ্ছি রোমাণ্টিকতা, পাচ্ছি ব্যঙ্গ। চরিত্ররা সব বর্ণবহুল, জীবন্ত।
'Green Sandals' এক অকারণ দাম্পত্যকলহের চাপান-উতোরের মজার কাহিনী,
বহবারম্ভে লঘুক্রিয়া। ' The Price of Freedom'-এ এক তরুণ প্রণয়ীযুগল
শিখছে যে লক্ষ্যে পৌঁছনোর পুরস্কারটি পথের ক্লেশ আর বেদনা তুলনায়
অতি নগণ্য হতে পারে, তা সে লক্ষ্য যতোই মহৎ হোক না কেন। 'A Woman
for All Seasons' তখনকার বিশেষ খ্যাতনাম্নী অভিনেত্রী দেবিকারানীর
উত্থানপতনের এক নলচে আড়াল দেওয়া ইতিকথা।
মাণ্টোর এসময়ের রচনা 'বু'
(গন্ধ), এক ঝড় বইয়ে দিয়েছিলো। মাণ্টোকে এই গল্পের জন্য অশ্লীলতার
দায়ে কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হয়। যদিও আজকের দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেখলে এটি
নরম তুলির এক সূক্ষ্ম কাজ বলে গ্রহণ করা যায়। বিবাহের রাত্রে রণধীর
তার সুন্দরী, শিক্ষিতা, সুরুচিষ্মতী স্ত্রীর সঙ্গে মিলনে তৃপ্ত
হতে পারলো না। কাঞ্চনবর্ণা স্ত্রীকে সম্ভোগের কালে তার কেবলই মনে
পড়তে থাকলো কিছুদিন আগে এক সম্পূর্ণ অপরিচিতা এক কৃষ্ণার সঙ্গে
মিলনের কথা, সেই কন্যার পরিমলে মত্ত হবার কথা। বিচার চলার কালে
উদ্ধত মাণ্টোর ব্যবহারে কোনো অনুতাপের ছায়াও ছিলো না। শেষ পর্যন্ত
অবশ্য মামলা প্রত্যাহৃত হয়।
এই সময়ে লেখা 'কালি শালোয়ার'
গল্পটি আমার নিজের ভালো লাগে। কালো যে শুধু শোকের রঙ তাই নয়, কালো
রঙ কিন্তু সব রঙের, সব কিছুর শোষক। কাহিনীটি সুলতানার, সে পতিতা
এন্বং তার আশু প্রয়োজন মুহরমের জন্য একটি কালো শালোয়ারের। দ্বিতীয়
মহাযুদ্ধের কালের কাহিনী, শঙ্কর নামের একটি কপর্দকহীন লোকের মোহে
পড়ে সুলতানা তাকে বিনা পারিশ্রমিকে আনন্দ দান শুধু নয়, তার কানের
নকল সোনার দুল খুলে পর্যন্ত দিয়েছে। প্রতিদানে অবশ্য শঙ্করের কাছ
থেকে সে পেয়েছে কালো শালোয়ার। এ গল্পে মাণ্টো সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ,
নারীবাদের কোনো ধ্বজা ওড়াননি (যদিও তার উপস্থিতি অগ্রাহ্য করা
যায় না), শুধু তখনকার চলিত রীতিনীতিতে আঘাত হেনেছেন। একটি পুরুষ
ও একটি নারীর স্বতঃপ্রণোদিত মিলন সহজ মিলন-- তার মধ্যে হিংসা,
শোষণ বা অবমাননার কোনো উপাদানই থাকার কথা নয়, এই হোলো মাণ্টোর
বক্তব্য।
(পরের
অংশ)
সমর
সাহা
সুমিত রায়ের সৌজন্যে
উৎস:
Stephen Alter, "Madness and Partition", J. of Comparative
Poetics, vol.14
Ayesha Jalal, "Curator of Hollowed Conscience", The
Hindu, May 11,2012
Ayesha Jalal, Pity of Partition, Princeton U. Press.
Mumtaz Shirin, Manto - Noori Na Nari, Dawn, 1985.
M. Umar Memon, "The Historian of the Individual",
Herald, May 2012.
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)