বরষার ভরসা

বরষার ভরসা

সারা বিশ্ব জুড়ে তুমুল যুদ্ধের দামামা বেজেই চলেছে, তাতে কোন বিরতি নেই। রাশিয়া-ইউক্রেন, ইজরায়েল-প্যালেস্টাইন তো ছিলই, এর সঙ্গে বিগত দু’মাস ধরে জুড়ে গেছে পহেলগাঁও আক্রমণোত্তর ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাকি বিশ্বের রপ্তানি-আমদানি শুল্ক সংক্রান্ত তর্জন-গর্জন। সব মিলিয়ে সেই চর্বিত চর্বণ প্রবাদ বাক্যের কথাই মনে পড়ে যায়, ‘বাতাসে বারুদের গন্ধ’।

এর মধ্যে অবশ্য বর্ষা ঋতুর সমাগম হয়েছে। ‘বহু যুগের ওপার হতে আষাঢ়’ এসে ধরণীকে সিক্ত করেছে। এবারের মরশুমের বৃষ্টিপাত আশাতীত রকমের ভালো।

এর মধ্যেই চলে এল অবসর পত্রিকার ‘বর্ষা সংখ্যা’। সে সম্পর্কে বলতে গেলে প্রথমেই আমরা মনে করতে পারি দুটি বিখ্যাত মানুষের প্রয়াণের কথা।

প্রথম জন প্রখ্যাত বৈজ্ঞানিক জয়ন্ত বিষ্ণু নারলিকার। তাঁর উদ্দেশে আমাদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন সৌম্যকান্তি জানার একটি লেখা দিয়ে।

দ্বিতীয় জন আমাদের খুবই প্রিয় সাহিত্যিক শ্রী প্রফুল্ল রায়। তাঁকে শ্রদ্ধা জানাতে আমারা পেয়েছি একগুচ্ছ লেখা তাঁর প্রিয় পাঠক মণ্ডলীর কাছ থেকে। লিখেছেন যথাক্রমে, সোমা কুশারী, জয়তী রায়, রুমি বন্দ্যোপাধ্যায়, মধুমিতা রায়, নন্দিতা মিত্র এবং অদিতি ঘোষ দস্তিদার।

আগামী ২০শে জুলাই আন্তর্জাতিক দাবা দিবস। ‘চতুরঙ্গ’ খেলার জন্ম ভারতে হলেও তাতে ভারতের পারদর্শিতা একসময় কমে গিয়েছিল। কিছুদিন হল ভারতের প্রাক্তন গ্র্যান্ডমাস্টার বিশ্বনাথন আনন্দের অনুপ্রেরণায় ভারত আবার এই খেলায় জগৎসভায় শ্রেষ্ঠ আসনের দাবিদার। সেই উপলক্ষে রয়েছে বেশ কিছু লেখা, লেখকেরা হলেন, আবীর ভট্টাচার্য্য চক্রবর্তী, পারমিতা আইচ, আনন্দিতা চৌধুরী, বিজয় লক্ষ্মী মুখার্জী, দোয়েল নাগ, বুমা ব্যানার্জী, পরমার্থ বন্দ্যোপাধ্যায়, রুমি বন্দ্যোপাধ্যায় এবং নয়ন বসু। ‘দাবা’ কীভাবে ভারতীয় ক্রীড়া সংস্কৃতিকেই নয়, এমনকি চলচ্চিত্র বা জীবনকেও রঞ্জিত করেছে এই লেখাগুলি থেকে তার বিশদ পরিচয় পাওয়া যাবে।

এছাড়াও ভ্রমণ বিভাগে রইল আরও কয়েকটি লেখা, লিখেছেন সংযুক্তা রায়,  তপন রায়চৌধুরী এবং সৌমী আচার্য্য ।

বর্তমানে ভারত – ইংল্যান্ড টেস্ট ক্রিকেটের সিরিজ এক উত্তেজক অবস্থায়। কিছুদিন আগেই শেষ হয়েছে বিশ্ব টেস্ট ক্রিকেট ফাইন্যাল। ক্রিকেট নিয়ে তিনটি লেখা লিখেছেন কলরব রায়, পার্থ প্রতিম রায় ও সপ্তক সান্যাল।

‘বইটই’ বিভাগে আরও একটি বই নিয়ে আলোচনা করেছেন সঞ্চলিতা ভট্টাচার্য। মনোজ মিত্রের নাটকের অনুবাদ সংক্রান্ত ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখেছেন সঙ্গীতা ঘোষাল।  আনন্দিতা চৌধুরী লিখেছেন আমেরিকার গ্রন্থাগার নিয়ে।

খুব আনন্দের সঙ্গে আরও একটি ঘোষণা করছি। আজ ষোলোই জুলাই স্বাধীনতা সংগ্রামী অগ্নিকন্যা অরুণা আসফ আলির জন্মদিন। ১৯০৯ সালে গাঙ্গুলি পরিবারে জন্মেছিলেন ভারতরত্ন অরুণা, ইতিহাসের পাতার ‘Grand Old Lady of Indian Independence.’ তাঁর ভ্রাতুষ্পুত্র ও পুত্রবধূ অমিত ও নীনা গাঙ্গুলির তথ্যসহায়তায় অরুণার জীবন ও তৎকালীন সমাজের প্রেক্ষাপটটি ধরার প্রচেষ্টায় ব্রতী হয়েছে অবসর পত্রিকা। পরপর কয়েকটি সংখ্যায় প্রকাশিত হবে লেখাগুলি। এবারের সংখ্যায় প্রথম পর্ব। কলম ধরেছেন সংগ্রামী লাহিড়ী।

এবারের বর্ষার অবসর সংখ্যায় সত্যিই ‘শ্রাবণের ধারার মত’ লেখা ঝরে পড়েছে। বাইরে বৃষ্টিতে ঘরবন্দি হয়ে গেলেও ক্রমাগত চোখ বুলিয়ে যান পত্রিকার পাতায় পাতায়। সঙ্গে সঙ্গে মতামত দিতেও ভুলবেন না যেন লেখাগুলিতে। আপনার পছন্দের মানুষদেরও পড়িয়ে আনন্দ দিন।

বর্ষার মাতাল হাওয়ায় আমাদের মনের ম্লানতা কেটে যাক। আমরা শ্যামল সুন্দরের সাধনায় ব্রতী হই। ‘বরষা ভরসা’ দিক ‘আর ভয় নাই।’ 

জন্ম কলকাতায়, বেড়ে ওঠা দক্ষিণ চব্বিশ-পরগনার রাজপুর-সোনারপুর অঞ্চলে। ১৯৮৩ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রনিক্স ও টেলিকম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে কর্মসূত্রে ব্যাঙ্গালোরে। শখের মধ্যে অল্প-বিস্তর বাংলাতে লেখা - অল্প কিছু লেখা রবিবাসরীয় আনন্দবাজার, উনিশ-কুড়ি, নির্ণয়, দেশ, ইত্যাদি পত্রিকায় এবং বিভিন্ন ওয়েব ম্যাগাজিন (সৃষ্টি, অবসর, অন্যদেশ, পরবাস ইত্যাদিতে) প্রকাশিত। সম্প্রতি নিজের একটি ব্লগ চালু করেছেন – www.bhaskarbose.com

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *