সাম্য-
পঞ্চম পরিচ্ছেদ- (১)
(২)

['দাম্পত্য দণ্ডবিধির আইন' নামের লেখায়
দেওয়া প্রতিশ্রুতিমত (বঙ্কিমচন্দ্র হলে লিখতেন 'আমরা পূর্বে
স্বীকার করিয়াছিলাম') সাম্য- শীর্ষক প্রবন্ধের পঞ্চম পরিছেদ,
যাতে স্ত্রীদের অধিকার সম্বন্ধে লিখেছেন' আরম্ভ করলাম। এটি
তিনটি কিস্তিতে থাকবে।
এখানে উল্লেখযোগ্য বঙ্গদর্শনে প্রকাশিত তিনটি প্রস্তাব এবং
বঙ্গদেশের কৃষক নামের কিছু অংশ নিয়ে সাম্য নামে পুস্তক আকারে
প্রকাশিত হয় ১৮৭৯ (1879) সালে। সেই সময়ে নারী সম্বন্ধে সাধারণ
ভাবে সমাজের (যার মধ্যে নারীরাও আছেন) কি রকম দৃষ্টিভঙ্গী
ছিল তা শংকরের 'চরণ ছুঁয়ে যাই' (দ্বিতীয় পর্ব- ২৯৬ পৃষ্ঠা)
থেকে তুলে দিচ্ছি;
'সেই সময় এক ভদ্রলোক ইংলিশম্যান কাগজে পড়ছেন, সম্পাদকীয় স্তম্ভে
জনৈক মহিলার খেদ: তাঁরা স্বীকার করছেন পুরুষের তুলনায় তাঁদের
ব্রেনের ওজন ও আকার কম, কিন্তু মাদ্রাজে তো মেয়েরা পোস্টাপিসে
চাকরি পাচ্ছে। এই বাংলাতেও মেয়েদের চাকরিতে আবেদন করার অধিকার
দেওয়া হোক। বিদেশে যখন বিশ্বধর্মসভায় শাশ্বত ভারতের জয়গান
শুরু হচ্ছে ( Parliament of the World's Religions opened
on 11 September 1893 at the Art Institute of Chicago- Wikipedia)
সেই সময় কলকাতার নাগরিকরা বিরাট মিছিল করে প্রতিবাদ জানাচ্ছেন
সহবাসসম্মতি বিলের বিরুদ্ধে। কিছুদিন আগেই কিন্তু একটি বালিকা
(ফুলমণি- বয়স এগারো) স্বামীর সহবাসপাশবিকতায় প্রাণ হারিয়েছে--
আসামীর (হরিমোহন মাইতি- দয়স ৩৫) যুক্তি বিবাহিতা স্ত্রীর শরীরটি
তার নিজস্ব।' আমি নিজেই কোনও শারদীয়া সংখ্যায় পড়েছি (সম্ভবত
১৯৫৩ বা ১৯৫৪ সালে) একটি রসরচনায় তাতে একটি নারী চরিত্র বলছে,
'মাইয়ামানুষ, হে কি দারোগা অইব?'
দু'রকমের ফুটনোট আছে:
(ক), (খ) ইত্যাদি বঙ্কিমচন্দ্রের নিজস্ব, যা ঐ প্রবন্ধের অন্তর্গত।
কিছু সন্ধি তথা সমাসসমৃদ্ধ তত্সম শব্দের সহজ বাংলা অর্থ করে
দিয়েছি; যা হয়তো প্রয়োজনে আসবে না।--
পুষ্পেন্দু সুন্দর মুখোপাধায়]
মনুষ্যে মনুষ্যে
সমানাধিকারবিশিষ্ট-- ইহাই সাম্যনীতি। কৃষক ও ভূম্যধিকারীতে যে
বৈষম্য, সাম্যনীতিভ্রংশের প্রথম উদাহরণ স্বরূপ তাহার উল্লেখ
করিয়াছি। দ্বিতীয় উদাহরণস্বরূপ স্ত্রীপুরুষে যে বৈষম্য, তাহার
উল্লেখ করিব।
মনুষ্যে মনুষ্যে
সমানাধিকারবিশিষ্ট। স্ত্রীগণও মনুষ্যজাতি, অতএব স্ত্রীগণও পুরুষের
তুল্য অধিকারশালিনী। যে যে কার্যে পুরুষের অধিকার আছে, স্ত্রীগণেরও
সেই সেই কার্যে অধিকার থাকা ম্যায়সঙ্গত। কেন থাকিবে না? কেহ
কেহ উত্তর করিতে পারেন যে, স্ত্রীপুরুষে প্রকৃতিগত বৈষম্য আছে;
পুরুষ বলবান, স্ত্রী অবলা; পুরুষ সাহসী, স্ত্রী ভীরু; পুরুষ
ক্লেশসহিষ্ণু, স্ত্রী কোমলা; ইত্যাদি ইত্যাদি; অতএব যেখানে স্বভাবগত
বৈষম্য আছে, সেখানে অধিকারগত বৈষম্য থাকাও বিধেয়। কেন না, যে
যাহাতে অশক্ত, সে তাহাতে অধিকারী হইতে পারে না।
ইহার দুইটি
উত্তর সংক্ষেপে নির্দ্দেশ করিলেই আপাততঃ যথেষ্ট হইবে। প্রথমতঃ
স্বভাবগত বৈষম্য থাকিলেই যে অধিকারগত বৈষম্য থাকা ন্যায়সঙ্গত,
ইহা আমরা স্বীকার করি না। এ কথাটি সাম্যতত্ত্বের মূলোচ্ছেদক।
দেখ, স্ত্রীপুরুষে যেরূপ স্বভাবগত বৈষম্য, ইংরেজ বাঙ্গালিতেও
সেইরূপ। ইংরেজ বলবান্, বাঙ্গালি দুর্বল; ইংরেজ সাহসী, বাঙ্গালি
ভীরু; ইংরেজ ক্লেশসহিষ্ণু, বাঙ্গালি কোমল; ইত্যাদি ইত্যাদি।
যদি এইসকল প্রকৃতিগত বৈষম্য হেতু অধিকারবৈষম্য ন্যায়সঙ্গত হইত,
তবে আমরা ইংরেজ বাঙ্গালি মধ্যে সামান্য অধিকারবৈষম্য দেখিয়া
এত চীত্কার করি কেন? যদি স্ত্রী দাসী, পুরুষ প্রভু, ইহাই বিচারসঙ্গত
হয়, তবে বাঙ্গালি দাস, ইংরেজ প্রভু, এটিও বিচারসঙ্গত হইবে।
দ্বিতীয়
উত্তর এই, যে সকল বিষয়ে স্ত্রীপুরুষে অধিকারবৈষম্য দেখা যায়,
সে সকল বিষয়ে স্ত্রীপুরুষে যথার্থ প্রকৃতিগত বৈষম্য দেখা যায়
না। যতটুকু দেখা যায়, ততটুকু কেবল সামাজিক নিয়মের দোষে। সেই
সকল সামাজিক নিয়মের সংশোধনই সাম্যনীতির উদ্দেশ্য। বিখ্যাতনামা
জন ষ্টুয়ার্ট মিল্কৃত এত্দ্বিষয়ক বিচারে, এই বিষয়টি সুন্দররূপে
প্রমাণীকৃত হইয়াছে। সে সকল কথা এখানে পুনরুক্ত করা নিস্প্রয়োজন।
(ক)
স্ত্রীগণ সকল দেশেই পুরুষের দাসী। যে দেশে স্ত্রীগণকে পিঞ্জরাবদ্ধ
করিয়া না রাখে, সে দেশেও স্ত্রীগণকে পুরুষের উপর নির্ভর করিতে
হয়, এবং সর্বপ্রকারে আজ্ঞানুবর্ত্তী হইয়া মন যোগাইয়া থাকিতে
হয়।
এই প্রথা সর্বদেশে এবং সর্বকালে চিরপ্রচলিত থাকিলেও এক্ষণে আমেরিকা
ও ইংলণ্ডে এক সম্প্রদায় সমাজতত্ত্ববিদ ইহার বিরোধী। তাঁহারা
সাম্যবাদী। তাঁহাদের মত এই যে, স্ত্রী ও পুরুষে সর্বপ্রকারে
সাম্য থাকাই উচিত। পুরুষগণের যাহাতে যাহাতে অধিকার, স্ত্রীগণের
তাহাতে তাহাতেই অধিকার থাকাই উচিত। পুরুষ চাকরি করিবে, ব্যবসায়
করিবে, স্ত্রীগণে কেন করিবে না? পুরুষে রাজসভায়, ব্যবস্থাপক
সভায় সভ্য হইবে, স্ত্রীলোকে কেন হইবে না? নারী পুরুষের পত্নী
মাত্র, দাসী কেন হইবে?
আমাদের দেশে
যে পরিমণে স্ত্রীগণ পুরুষাধীন ইউরোপে বা আমেরিকায় তাহার শতাংশও
নহে। আমাদিগের দেশ অধীনতার দেশ, সর্বপ্রকার অধীনতা ইহাতে বীজমাত্রে
অঙ্কুরিত হইয়া, উর্বরা ভূমি পাইয়া বিশেষ বৃদ্ধিলাভ করিয়া থাকে।
এখানে প্রজা যেমন রাজার নিতান্ত অধীন, অন্যত্র তেমন নহে; এখানে
অশিক্ষিত যেমন শিক্ষিতের আজ্ঞাবহ, অন্যত্র তেমন নহে; এখানে যেমন
শূদ্রাদি ব্রাহ্মণের পদানত, অন্যত্র কেহই ধর্মযাজকের তাদৃশ বশবর্ত্তী
নহে। এখানে যেমন দরিদ্র ধনীর পদানত, অন্যত্র তত নহে।
এখানে রমণী পিঞ্জরাবদ্ধ বিহঙ্গিনী; যে বুলি পড়াইবে, সেই বুলি
পড়িবে। আহার দিলে খাইবে, নচেত্ একাদশী করিবে। পতি অর্থাত্ পুরুষ
দেবতাস্বরূপ; দেবতাস্বরূপ কেন, সকল দেবতার প্রধান দেবতা বলিয়া
শাস্ত্রে কথিত আছে। দাসীত্ব এতদূর যে, পত্নীদিগের আদর্শস্বরূপা
দ্রৌপদী সত্যভামার নিকট আপনার প্রশংসা স্বরূপ বলিয়াছিলেন যে,
তিনি স্বামীর সন্তোষার্থে সপত্নীগণেরও পরিচর্যা করিয়া থাকেন।
এই আর্য পাতিব্রত্য ধর্ম অতি সুন্দর; ইহার জন্য আর্যগৃহে স্বর্গতুল্য
সুখময়। কিন্তু পাতিব্রত্যের কেহ বিরোধী নহে; স্ত্রী যে পুরুষের
দাসীমাত্র, সংসারে অধিকাংশ ব্যাপারে স্ত্রীলোক অধিকারশূন্য,
সাম্যবাদীরা ইহারই প্রতিবাদী।
অস্মদ্দেশে
(১) স্ত্রীপুরুষে যে ভয়ঙ্কর বৈষম্য, তাহা এক্ষণে আমাদিগের দেশীয়গণের
কিছু কিছু হৃদয়ঙ্গম হইয়াছে, এবং কয়েকটি বিষয়ে বৈষম্য বিনাশ করিবার
জন্য সমাজমধ্যে অনেক আন্দোলন হইতেছে। সে কয়টি বিষয় এই--
১ম) পুরুষকে বিদ্যাশিক্ষা অবশ্য করিতে হয়; কিন্তু স্ত্রীগণ অশিক্ষিতা
থাকে।
২য়) পুরুষের স্ত্রীবিয়োগ হইলে, সে পুনর্বার দারপরিগ্রহ (২) করিতে
অধিকারী। কিন্তু স্ত্রীগণ বিধবা হইলে, আর বিবাহ করিতে অধিকারিণী
নহে; বরং সর্বভোগসুখে জলাঞ্জলি দিয়া চিরকাল ব্রহ্মচর্য্যানুষ্ঠানে
বাধ্য।
৩য়) পুরুষ যেখানে ইচ্ছা, সেখানে যাইতে পারে; কিন্তু স্ত্রীলোকে
গৃহপ্রাচীর অতিক্রম করিতে পারে না।
৪র্থ) স্ত্রীগণ স্বামীর মৃত্যুর পরেও অন্য স্বামিগ্রহণে অধিকারিণী
নহে; কিন্তু পুরুষগণ স্ত্রী বর্ত্তমানেই যথেচ্ছ বহুবিবাহ করিতে
পারেন।
১) প্রথম তত্ত্ব সম্বন্ধে, সাধারণ লোকেরও একটু মত ফিরিয়াছে।
সকলেই এখন স্বীকার করেন, কন্যাগনকে একটু লেখা পড়া শিক্ষা করান
ভালো। কিন্তু কেহই এখনও মনে ভাবেন না যে, পুরুষের ন্যায় স্ত্রীগণও
নানাবিধ সাহিত্য, গণিত, বিজ্ঞান, দর্শন প্রভৃতি কেন শিখিবে না?
যাঁহার পুত্রটি এম-এ পরীক্ষায় উত্তীর্ণ না হইলে বিষপান করিতে
ইচ্ছা করেন, তাঁহারাই কন্যাটি কথামালা সমাপ্ত করিলেই চরিতার্থ
হন। কন্যাটিও কেন যে পুত্রের ন্যায় এম-এ পাশ করিবে না, এ প্রশ্ন
বারেক মাত্রেও মনে স্থান দেন না। যদি কেহ, তাঁহাদিগকে এ কথা
জিজ্ঞাসা করে, তবে অনেকেই প্রশ্নকর্ত্তাকে বাতুল মনে করিবেন।
কেহ প্রতিপ্রশ্ন করিবেন, মেয়ে অত লেখাপড়া শিখিয়া কি করিবে? চাকরি
করিবে না কি? যদি সাম্যবাদী সে প্রশ্নের পত্যুত্তরে বলেন, 'কেনই
বা চাকরি করিবে না?" তাহাতে বোধ হয়, তাঁহারা হরিবোল দিয়া
উঠিবেন। কোন বুদ্ধিমান্ ব্যক্তি উত্তর করিতে পারেন, ছেলের চাকরিই
যোটাইতে পারি না, আবার মেয়ের চাকরি কোথায় পাইব? যাঁহারা বুঝেন
যে, বিদ্যোপার্জন কেবল চাকরির জন্য নহে, তাঁহারা বলিতে পারেন,
"কন্যাদিগকে পুত্রের ন্যায় লেখাপড়া শিখাইবার উপায় কি? তেমন
স্ত্রীবিদ্যালয় কই?"
বাস্তবিক
বঙ্গদেশে, ভারতবর্ষে বলিলেও হয়, স্ত্রীগণকে পুরুষের মত লেখাপড়া
শিখাইবার উপায় নাই। এতদ্দেশীয় (৩) সমাজমধ্যে সাম্যতত্ত্বান্তর্গত
(৪) এই নীতিটি যে অদ্যাপি (৫)পরিস্ফুট হয় নাই-- লোকে যে স্ত্রীশিক্ষার
কেবল মৌখিক সমর্থন করিয়া থাকে, ইহাই তাহার প্রচূর প্রমাণ। সমাজে
কোন অভাব হইলেই তাহার পূরণ হয়--সমাজ কিছু চাহিলেই তাহা জন্মে।
বঙ্গবাসিগণ যদি স্ত্রীশিক্ষায় যথার্থ অভিলাষী হইতেন, তাহা হইলে
তাহার উপায়ও হইত।
সেই উপায়
দ্বিবিধ। প্রথম, স্ত্রীলোকদিগের জন্য পৃথক্ বিদ্যালয়-- দ্বিতীয়,
পুরুষ বিদ্যালয়ে স্ত্রীগণের শিক্ষা।
দ্বিতীয়টির নামমাত্রে, বঙ্গবাসিগণ জ্বলিয়া উঠিবেন। তাঁহারা নিঃসন্দেহ
মনে বিবেচনা করিবেন যে, পুরুষের বিদ্যালয়ে স্ত্রীগণ অধ্যয়নে
প্রবৃত্ত হইলে, নিশ্চয়ই, কন্যাগণ বারাঙ্গনাবত্ আচরণ করিবে। মেয়েগুলো
ত অধঃপাতে যাইবেই; বেশীরভাগ ছেলেগুলাও যথেচ্ছাচারী হইবে।
প্রথম উপায়টি
উদ্ভাবিত করিলে, এ সকল আপত্তি ঘটে না বটে, কিন্ত্তু আপত্তির
অভাব নাই। মেয়েরা মেয়েকালেজে পড়িতে গেলে পর, শিশু পালন করিবে
কে? বালককে স্তন্যপান করাইবে কে? গৃহকর্ম্ম করিবে কে? বঙ্গীয়
বালিকা চতুর্দশ বত্সর বয়সে মাতা ও গৃহিণী হয়। ত্রয়োদশ বত্সরের
মধ্যে যে লেখাপড়া শিখা যাইতে পারে, তাহাই তাহাদের সাধ্য। অথবা
তাহাও সাধ্য নহে-- কেন না, ত্রয়োদশ বর্ষেই বা কুলবধু বা কুলকন্যা,
গৃহের বই হাতে করিয়া কালেজে পড়িতে যাইবে কি প্রকারে?
আমরা এ সকল
আপত্তির মীমাংসায় এক্ষণে প্রবৃত্ত নই। আমরা দেখাইতে চাই যে,
যদি তোমরা সাম্যবাদী হও, তাহা হইলে যতদিন না সম্পূর্ণরূপে সর্ববিষয়ক
সাম্যের ব্যবস্থা করিতে পার , ততদিন কেবল আংশিক সাম্যের ব্যবস্থা
করিতে পারিবে না। সাম্যতত্ত্বান্তর্গত সমাজনীতি সকল পরস্পরে
দৃঢ়ভাবে গ্রন্থিত, যদি স্ত্রী পুরুষ সর্বত্র সমানাধিকারবিশিষ্ট
হয়, তবে ইহা স্থির যে, কেবল শিশুপালন ও শিশুকে স্তন্যপান করান
স্ত্রীলোকের ভাগ নহে, অথবা একা স্ত্রীরই ভাগ নহে। যাহাকে গৃহকর্ম
বলে, সাম্য থাকিলে স্ত্রী পুরুষ উভয়েরই তাহাতে সমান ভাগ। একজন
গৃহকর্ম্ম লইয়া বিদ্যাশিক্ষায় বঞ্চিত হইবে, আর একজন গৃহকর্ম্মের
দুঃখে অব্যাহতি পাইয়া বিদ্যাশিক্ষায় নির্বিঘ্ন হইবে, ইহা স্বভাবসঙ্গত
হউক বা না হউক, সাম্যসঙ্গত নহে। অপরঞ্চ পুরুষগণ নির্বিঘ্নে যেখানে
সেখানে যাইতে পারে, এবং স্ত্রীগণ কোথাও যাইতে পারিবে না, ইহা
কদাচ সাম্যসঙ্গত নহে। এই সকল স্থানে বৈষম্য আছে বলিয়াই বিদ্যাশিক্ষাতেও
বৈষম্য ঘটিতেছে। বৈষম্যের ফল বৈষম্য। যে একবার ছোট হইবে, তাহাকে
ক্রমে ছোট হইতে হইবে।
বঙ্কিমচন্দ্র
চট্টোপাধ্যায়
(চলবে)
(ক)
Subjection of women
(১) অস্মদ্দেশে=
আমাদের (অস্মত্) দেশে
(২) দারপরিগ্রহ= বিবাহ (দার, দারা= স্ত্রী)
(৩) এতদ্দেশীয়= এই (এতত্) দেশের
(৪) সাম্যতত্বান্তর্গত= সাম্যতত্ব+অন্তর্গত> সাম্যতত্তের
মধ্যে
(৫) অদ্যাপি= অদ্য(আজ)+অপি(ও)
(৬) কদাচ= কদা(কখন)+চ(ও)
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)