বনজ্যোৎস্নার গান
সেদিন ছিল বাংলা নববর্ষ। আমি সেই বছর পাকেচক্রে কলকাতায় ছিলাম আর কলকাতায় থাকলে বাবার সঙ্গে নতুন বছরের প্রথম দিনে কলেজ স্ট্রিটের বইপাড়ায় যাওয়া ছিল আবাল্যের পুরোনো এক অভ্যস্ত নিয়ম। বইয়ের দোকানে ঢোকার মুখে চোখ তুলে তাকালেই ওই দেবদারু পাতা আর অল্প ফুলের বাহার আর ভেতরে পা রাখামাত্র সদ্য বাঁধাই হয়ে আসা নতুন বইয়ের গন্ধ খুব সহজেই ম্লান করে দিত গরম শিঙাড়া আর সদ্যপাকানো দরবেশের উচাটনী আর জিভে জল আনা সুবাসকে। উপরি পাওনা হিসেবে জুটে যেত কোনও জনপ্রিয় লেখকের উপস্থিতি। আমার নিতান্ত মধ্যবিত্ত জীবনযাপনে বই ছাড়া তেমন সঙ্গী ছিল না কেউ। কাজেই লেখক-লেখিকাদের চিনতাম নামে আর ছবিতে। তাই সেদিন যখন দে’জ পাবলিশিং-এ একজন দীর্ঘদেহী, উজ্জ্বল গৌরবর্ণ পুরুষকে নিজের বর্ণময় উপস্থিতির ঝিলিক ছড়িয়ে জারুলরঙা পাঞ্জাবী আর ধবধবে সাদা পায়জামায় সেজেগুজে ঢুকতে দেখলাম, বাবার পাঁজরে খোঁচা মেরে বলেছিলাম, ‘বুদ্ধদেব গুহ।’
আলাপ হল। অটোগ্রাফ চাইনি আমি; কারণ সই না জমিয়ে বই জমানোতেই আগ্রহী ছিলাম। উনি নিজেই দুটো বই আনিয়ে সই করে দিলেন। বিনিময় হল ঠিকানা আর ফোন নম্বরের। বারবার বললেন, কলকাতায় এলেই যেন ফোন করি, দেখা করি।
আমারই বরং খানিক সঙ্কোচ ছিল। খ্যাতিমান মানুষজন অমন অনেক কিছুই সৌজন্যের খাতিরে বলে থাকেন; কিন্তু সে সব হল কথার কথা। হয়ত পরের দিনই আর চিনতে পারেন না!
পরেরবার যখন কলকাতায় এলাম, মনে হল একবার ফোন করে দেখাই যাক। নাম বলামাত্র চিনতে পেরে খুশির গলায় বললেন অফিসে আসতে। সেই প্রথমবার কোনও দোকানে বা মেলায় নয়, সভাসমিতিতে নয়; ব্যক্তিগত পরিসরে মুখোমুখি গল্প হল আমাদের। প্রথমবার, তবে শেষবার নয়। এরপর অসংখ্যবার অফিসে দেখা হয়েছে, গল্প হয়েছে, ফোনে কথা হয়েছে। সানি টাওয়ার্সের বাড়িতেও গেছি বেশ কয়েকবার। ঋতু গুহ আমার খুব ভালোবাসার কণ্ঠশিল্পী ছিলেন। তাঁর সঙ্গে সময় কাটিয়েছি। বুদ্ধদেব গুহ-ঋতু গুহর স্নেহ, আতিথেয়তায় মুগ্ধ হয়েছি। এত কথোপকথন, এত নিজস্ব মতামত বিনিময়ের স্মৃতি সে সব, যে লিখতে গেলে গোটা একটা বই হয়ে যাবে। টুকরোটাকরা একটা দুটো কথা ভাগ করে নিই আজ।
আমি তখন ব্যাঙ্গালোরে, সকালবেলায় ফোন এল।
‘শোনো ঈশানী, তোমাকে একটা বই উৎসর্গ করব ভাবছি। আসলে দুটো বই বেরোবে দে’জ থেকে। একটাই বক্স সেটে। ছয়টি উপন্যাস আর সাতটি উপন্যাস। তোমার কোনটা পছন্দ?’

আমি বলেছিলাম, ‘এমন হুট করে বলা যায় নাকি? আগে শুনি, কোন বইয়ে কী কী উপন্যাস আছে! তবে তো বেছে নেব! যেটার লেখাগুলো আমার একটু বেশি পছন্দের, সেটা আমার।’
‘সাতটি উপন্যাস’কে বেছে নিয়েছিলাম। তারপর কলকাতায় গেছি। কয়েকদিন পেরিয়ে গেছে, বই তখনও বেরোয়নি। আমার ফেরার কথা যেদিন ভোরবেলাতে, আগের দিন প্রায় মাঝরাতে অপু এসেছিল বাড়িতে। ছাপাখানার গন্ধমাখা প্রথম বক্সসেট হাতে তুলে দিয়ে বলেছিল, ‘জেঠুর হুকুম ছিল প্রথম সেটটা যেন তোমার হাতে পৌঁছে দেওয়া হয়; তা সে যত রাতই হোক!’
ঠিক তার পরের বইমেলাতেই আবার কলকাতায় গেছি। ওঁর অফিসে গেলেই যে যে নতুন বই বেরোত, সই করা অবস্থায় রাখাই থাকত আমার জন্য। হাতে তুলে দিয়ে অমলিন হাসি হাসতেন। তা সেইবারও গোটা চার-পাঁচ বই রাখা ছিল। দেখি সবগুলোতেই সই আছে, একটা ছাড়া। আমি বললাম, ‘এটাতে লিখে দিলেন না?’
মুচকি হেসে বললেন, ‘ভুলে গেছি মনে হয়! যাক গে, ওটা সইবিহীনই থাকুক না হয়।’ আমি আর তর্ক করিনি। ফেরার পথে ট্যাক্সিতে বসে পাতা উলটিয়ে দেখি, ওই সইছাড়া বই আমাকেই উৎসর্গ করা। ‘আন্ধারপানি ও অন্যান্য গল্প,’ প্রকাশক পুনশ্চ। সঙ্গে সঙ্গে মুঠোফোনে বললাম, ‘এ তো আমাকে দিয়েছেন! তাই বুঝি সই ছাড়া?’
বললেন, ‘হ্যাঁ, সব কপিতেই তোমার নাম।’
সঙ্কুচিত হয়ে বলেছিলাম, ‘গত বছরেই তো “সাতটি উপন্যাস” আমাকে দিয়েছেন!’
উত্তর এসেছিল, ‘এমন কোনও নিয়ম আছে কি, যে একবার দিলে আর দেওয়া যাবে না?’
একবার আমার হাতে তুলে দিলেন নিজের একটি ঝর্না কলম। ফার্স্ট জেনারেশন মঁ ব্লাঁ। মেরুন রঙের, রুপোরং নিব আর ক্যাপ। খুব ইতঃস্তত করছিলাম গ্রহণ করতে। বলেছিলেন, ‘এটা দিয়ে বহু লেখা লিখেছি। মাধুকরীও। তুমি রাখো। আমি যখন থাকব না, এটা দিয়ে লিখলে হয়ত আমার কথা মনে পড়বে।’
পরে একবার সানি টাওয়ার্সে গেছি, হাতে তুলে দিলেন একটা নতুন পার্কার ঝর্না কলম। ঋতুদি দিলেন নিজের গানের অনেকগুলো সি ডি। তারপর দেখি তার সঙ্গে একটা কালির শিশি। অবাক হয়ে জানতে চাইলাম, ‘এটা কী?’ ঋতুদি একগাল হেসে বলেছিলেন, ‘আমি জানতাম তো, বেভুল ধরনের মানুষ উনি। কলম দেবেন, কিন্তু কালি দেবার কথা মনে থাকবে না। তাই যখনই আমাকে কলমটা এনে দেখিয়েছেন, ড্রাইভার পাঠিয়ে কালির শিশি কিনে আনিয়ে রেখেছি।’ মনে পড়ে, একবার আড্ডার মাঝখানে ঋতুদি বলেছিলেন, ‘তোমাদের লালাদার খুব “ঋ” অক্ষরে ঝোঁক, আমি খেয়াল করেছি। লেখায় ঋজু, ঋতি, ঋভুদের ছড়াছড়ি।’
নিরীহ মুখে বুদ্ধদেব সাফাই গেয়েছিলেন, ‘সে তো সেই যবে থেকে তোমাকে প্রথম দেখেছি! কই, সেটা বুঝি চোখে পড়েনি?’
একবার ঋতুদিকে বলেছিলাম, ‘এক কাজ করলে হয় না? আপনি বরং নিয়ম করে সপ্তাহে দু-দিন ওঁর ক্লাস নিন; রবীন্দ্রসঙ্গীতের।’
ঋতুদি বললেন, ‘খেপেছ? দু-চার লাইন শিখিয়ে গানঘরের চৌকাঠ পেরিয়ে রান্নাঘরে যাব; অমনি শুনব স্বরলিপি না মেনে নিজের ইচ্ছেমতো গাইছে!’
বুদ্ধদেব অমনি বলে উঠলেন, ‘আমি তো জর্জ বিশ্বাসের ছাত্র! স্বরলিপি দেখে গাই না, মনপ্রাণ এক করে গাই।’
আমার ‘আবছা অ্যালবাম ইস্টম্যানকালার’-এর মুখবন্ধ লিখেছিলেন বুদ্ধদেব। একটি কারণেই তাঁকে লেখার অনুরোধ করেছিলাম। যে বয়সের স্মৃতিনির্ভর কথকতা, সে বয়সে আমার মতো মধ্যবিত্ত মানসিকতায় বেড়ে ওঠা যুবক-যুবতী, কিশোর-কিশোরীরা অনেকেই বুদ্ধদেব গুহর কিছু কিছু লেখার হাত ধরে প্রথম রোম্যান্টিক হতে শিখেছিল, প্রেমে পড়ার সাহস করতে পেরেছিল।
সেই কথা ওঁকে বলেওছিলাম একবার, ‘আপনিই আমাদের মতো সরলমতি কিশোর-কিশোরীদের প্রেমট্রেম করতে শিখিয়েছেন।’
খুব হেসে বলেছিলেন, ‘শেষ পর্যন্ত এইজন্যই তাহলে আমি তোমাদের অনেকের মনের ভেতরে রয়ে যাব বলছ?’
এমন সব অজস্র গল্পে, কথায় ভরপুর হয়ে আছে আমার স্মৃতি। বুদ্ধদেব গুহ কেমন লিখতেন, তাঁর লেখা পঞ্চাশ বছর পরে টিকে থাকবে কিনা, সে সব তর্কে যাব না। একটিই কারণে, যে আমার এ নিয়ে আলোচনা বা সমালোচনা করার কোনোরকম যোগ্যতাই নেই। প্রশ্ন উঠতে পারে, আমি কি ওঁর লেখা সব বই পড়েছি? হ্যাঁ, অন্তত নিরানব্বই শতাংশ লেখা তো পড়েছি বটেই! এরপর জানি পরের প্রশ্ন উড়ে আসবে, সব লেখাই কি দারুণ ভালো লেগেছে? না, লাগেনি আর সেটাই স্বাভাবিক; কারণ কারও লেখার ক্ষেত্রেই আমি হলফ করে বলতে পারিনি আজ পর্যন্ত যে সেই লেখকের প্রতিটি লেখাই আমার ভালো লেগেছে। আর এই কথাটা যে কোনও সৃজনশীল মাধ্যমের ক্ষেত্রেই অন্তত আমার কাছে সত্যি।
আমি বুদ্ধদেবের চাটুকার বা অন্ধ ভক্ত ছিলাম না। তাঁর কাছ থেকে স্নেহ যেটুকু পেয়েছি, দু-হাত ভ’রে নিতে কুণ্ঠিত হইনি; কিন্তু কোনও অন্যায্য দাবিদাওয়া জানানো বা সুযোগসুবিধা নেওয়ার কথা মনে আসেনি কখনও। আর তিনি আর ঋতুদি সেটা জানতেন বলেই হয়ত এই গুণী দম্পতির সঙ্গে আমার সম্পর্কের মাঝে কোনও মালিন্য বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি কখনও। প্রত্যেক মানুষের কিছু না কিছু নিজস্ব গুণ থাকে; বুদ্ধদেবেরও তেমন অনেক গুণ ছিল। আর সেই গুণের অনুরাগী ছিলাম আমি; বিশেষ করে এই কারণেই, যে সেইসব গুণের এক শতাংশও আমার আয়ত্তে ছিল না। যখন যে লেখার যেটুকু ভালো লেগেছে, বলেছি। যা ভালো লাগেনি, তাও বলতে কুণ্ঠিত হইনি। কিন্তু লেখক হিসেবে, মানুষ হিসেবে তাঁর উপস্থিতি নস্যাৎ করে দিতে পারিনি কখনও।
বুদ্ধদেবের লেখনীর জাদু কি এমন ছিল যে নিজেকে সেই প্রেক্ষাপটে বসিয়েছি কখনও? হ্যাঁ, একটা বয়সে তো অবশ্যই! তখন নয়নার ওপরে রাগ করে ভেবেছি, কেন সে ঋজুকে প্রত্যাখ্যান করেছিল! আমি হলে তো কখনও এত নিষ্ঠুর হতেই পারতাম না! বুলবুলিকে ঈর্ষা করেছি; বারবার মনে হয়েছে আমাকে কেন কেউ এমন আকুল হয়ে ভালোবাসেনি? পৃথুর জন্য মায়া হয়েছে, বিষণ্ণতা জেগেছে মনে এবং ভগাদার মতো বর্ণময় পুরুষের সঙ্গে পরিচয়ের আকাঙ্ক্ষা ছিল খুব। আমার এক তরুণ প্রেমিক আমাকে যখন লোকচক্ষুর অন্তরালে ‘ছুটি’ বলে সম্বোধন করত, সেও এক অদ্ভুত রোমাঞ্চ ছিল। এমন অনেক অনেক চরিত্র তাদের নানা রং নিয়ে আমার মনের দরজায় কড়া নেড়ে গেছে যখন তখন।
প্রকৃতি ভালোবাসি। কিন্তু বিভূতিভূষণের সঙ্গে বুদ্ধদেব গুহর তুলনা করি না, কারণ তা হাস্যকর। ওঁরা নিজেদের মতো করে জঙ্গলের ছবি এঁকেছেন। একজনের লেখায় সেই সবুজ-সুন্দরী আটপৌরে করে পরা ধনেখালি শাড়িতে, সিঁদুরের টিপে, কোনোরকম মহার্ঘ অলঙ্কারবিহীন হাতে শুধুই একগোছা কাচের চুড়ি পরে রিনঠিন সুর তোলে আর অন্যজনের লেখায় সে আসে জড়িপাড় রেশমি শাড়িতে, কনেচন্দনে আর জড়োয়া গয়নায় সেজে। আমি এই দুই রূপেরই কাঙাল। কারণ শহরের যান্ত্রিক কোলাহল অগ্রাহ্য করে বধির থেকে, চোখধাঁধানো কৃত্রিম সোডিয়াম আর মার্কারি ভেপার ল্যাম্পের আলোয় আর ইট-কাঠ-সিমেন্টের কবুতরখানায় বাস করে বনজ্যোৎস্নার শ্রী আর বিচিত্র বাঙময় নৈ:শব্দ্য অন্য কোনোভাবে তো স্পর্শ করতে পারি না!
বই পড়ি কেন? গান শুনি, সিনেমাই বা দেখি কেন? এ নিয়ে অনেক চিন্তাভাবনা করে বুঝেছি, আমার মতো সীমিত মেধার মানুষ এইসব নিয়ে বেঁচে থাকে, কারণ সে দৈনন্দিন চেনা জীবন আর গতানুগতিক যাপন থেকে কিছুটা মুক্তি চায়। বই, গান, ছবি, ভাস্কর্য, চিত্রকলা, হল আমাদের সেই মুক্তির জানলা, নিজের সঙ্গে একার মনে ভরদুপুরে বা চাঁদনি রাতে এক্কাদোক্কা খেলার উঠোন। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে জানলাগুলোর মাপ বদলে যায়, দিক পালটে যায় …ব্যস, এইটুকুই। আমার ক্ষেত্রেও তাই। যত বয়স বেড়েছে, পরিণতমনস্ক হয়েছি… ভালো লাগার বা ভালোবাসার চরিত্ররা বদলে বদলে গেছে। অল্পবয়সে মনে আলোড়ন তোলা বই, গান, ছবি, মানুষজন ধীরে ধীরে একটু একটু করে অনেকটাই হয়ত পেছনের সারিতে চলে গেছে, আবছা হয়ে গেছে – সেই জায়গা দখল করেছে অন্য কোনও বই, ছবি, গান, বা নতুন মানুষ। ঠিক যেমন করে ভোরবেলার প্রথম মিঠে রোদ্দুর গড়িয়ে যেতে যেতে মিশে যায় সন্ধে পেরিয়ে তমসায়। কিন্তু সবটাই তো সত্যি! রাতের অন্ধকার যেমন আছে, ভোরের আলোটুকুর অস্তিত্বও তো ছিল! কোনোটিকেই তো অস্বীকার করতে পারি না! তাহলে তো নিজের এই বোধের যাত্রাপথ, এই অনুভূতির বিবর্তনকেই অস্বীকার করতে হয়!
বুদ্ধদেব গুহ একবার আমাকে বলেছিলেন, ‘জানো, আমার মা আমাকে শিখিয়েছিলেন কেউ যদি তোমাকে এক গ্লাস জলও দেয়, সেই ঋণ স্বীকার করতে যেন কুণ্ঠাবোধ না হয় কখনও।’
আর সেই কারণেই আমি সুদূর অতীতের সেই ভালো লাগার, ভালোবাসার, রোমাঞ্চ অনুভবের অজস্র খণ্ড-মুহূর্তের একটিকেও অস্বীকার করতে পারি না। ফেলে আসা প্রথম যৌবনের ক্যালাইডোস্কোপে চোখ রাখি আমার আয়ুষ্কালের এই গোধূলিবেলায়। ফিরে ফিরে দেখি ছাইরঙা ঘাস, জলজ গন্ধভরা রাজহাঁস ঝাঁক উড়ে আসছে, শীতের বিবাগী রুখু শালবনে ঝরা পাতা দৌড়োদৌড়ি করছে, নিঃশব্দ হলুদ রোদে নিঃশর্তে কেউ কেউ লিখে দিচ্ছে আত্মসমর্পণের মুচলেকা।
গাঢ় হয়ে ওঠে অপ্রকাশ্য ভালোবাসা। এবং সেইসঙ্গে যন্ত্রণাও গাঢ়তর হয়।


8 Comments