সংগীত

অগাস্ট ১৫, ২০১৬
গানের ভুবন, প্রাণের ভুবন
ঈশানী রায়চৌধুরী
(আগের অংশ) যখনই আমরা কোনো গানবাজনার মধ্যে ডুবে যাই, নিজেদের অগোচরেই হাতের আঙুলগুলি সচল হয়ে ওঠে তাল দিতে। অর্থাৎ ভারতীয় সঙ্গীতে ছন্দের পদ্ধতিটি বোঝাতে গেলে যে শব্দটি প্রথমেই সজ্ঞানে বা অবচেতনে আমাদের সঙ্গী হয়, তা হল তাল। রাগ সৃষ্টির আগে থেকেই তাল আছে, কারণ স্বর, ছন্দ আর সুরের মেলবন্ধনেই যে সংগীতের জন্ম !
‘তাল’ শব্দটির আক্ষরিক অর্থ তালি। এই তালির জায়গাতেই তবলা ব্যবহার করা হয়। তালের মূল সংজ্ঞায় আছে বিশেষ কয়েকটি শব্দ ... তালি, খালি, বিভাগ, মাত্রা, বোল, ঠেকা, লয়, সম আর আবর্তন।
তালি হল ঠিক যেভাবে আমরা হাততালি দিয়ে থাকি। প্রতিটি তাল নির্দিষ্ট সংখ্যার হাততালির নকশা অনুসরণ করে।
খেয়াল করে দেখলে বোঝা যায় , যখনই আমরা দু -হাতে তালি বাজাই ...হাতদুটি প্রতি দু'বার সংযুক্ত হবার মাঝে একবার করে বিচ্ছিন্ন হয়। সেটিই 'খালি' , অর্থাৎ শূন্যতা বা দুটি তালির মধ্যবর্তী সময়ের বিচ্ছিন্নতা।
বিভাগ অথবা মাপ। প্রতিটি তালিতে বা খালিতে একটি করে মাপ আছে। এই মাপটিই নির্দিষ্ট করে দেয় যে কোন তালে ক’টি মাত্রা থাকবে।
মাত্রা ,অর্থাৎ তালের ক্ষেত্রে স্বরাঘাত বা beat।
যখনই কোনো গানবাজনা শুনি এবং জেনেবুঝে বা অজান্তে তাল দিই, একটু খেয়াল করে দেখলেই বোঝা যায় আমরা কিন্তু সব জায়গায় একইভাবে তাল দিই না। এক একটি গান যেমন ..এক এক তালে বাজে। আমাদের আঙুলও সেই গানবাজনার সুরের সঙ্গে , শব্দ ও যতির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে ওঠাপড়া করে , অর্থাৎ তালি ও খালি সেইমতো নিজেদের জায়গা করে নেয়।
বিভিন্ন তাল ও তার ভিন্ন ভিন্ন মাত্রাবিভাগ। খুব চেনা কয়েকটি তাল ..যেমন দাদরা (৬ / ৩-৩ ),কাহারবা ( ৮ / ৪-৪ ) , তেওড়া /রূপক (৭ / ৩-২-২),ঝম্পক ( ৫ / ৩-২ ) , নবতাল (৯ / ৩-২-২-২), ঝাঁপতাল (১০ /২-৩-২-৩),একতাল /চৌতাল (১২ / ৪-৪ -২-২ /২-২-২-২-২-২), ত্রিতাল (১৬ / ৪-৪-৪-৪ )।
এ ছাড়াও তো আরও কত তালবৈচিত্র্য ! ধামার ,আড়া চৌতাল , সিতারখানি , মত্ত তাল দীপচন্দি , সুরতাল, ঝুমরা , তিলওয়ারা , উপতল ঝম্পক/রূপম , পঞ্চম সাওয়ারী , ষষ্ঠী , খেমটা, চৌতাল, আড়খেমটা ইত্যাদি। আবার দুটি তালকে ইচ্ছেসুখে মিলিয়ে দিয়ে তৈরী হয়েছে , কাওয়ালি ,বিচিত্র ইত্যাদি।
যখনই তবলায় আঘাত করা হচ্ছে, প্রত্যেক আঘাতের সঙ্গে যুক্ত আছে একটি করে syllable ... এইটিই হল বোল।
আর ঠেকা হল বোল আর বিভাগের নির্দিষ্ট নকশা ( তালি, খালি) ... যা মিলিয়ে তালের সংজ্ঞা নির্ধারিত।
লয় অর্থাৎ গতির হার। ধীর লয় বা ধীর গতি অর্থাৎ বিলম্বিত, মাঝারি গতি বা মধ্যম, আর খুব তাড়াতাড়ি বা দ্রুত। এ ছাড়া খুব বেশি ধীর বা অতি বিলম্বিত এবং খুব তাড়াতাড়ি বা অতি দ্রুত লয়ের প্রয়োগও আছে।
বৃত্তের শুরু হয় সম দিয়ে। বৃত্তের প্রথম মাত্রাটিতে বাড়তি জোর দেওয়া হয়।
আর মূল বৃত্তটিকে বলা হয় আবর্তন।
বিষ্ণু নারায়ণ ভাতখন্ডের মত অনুযায়ী প্রতিটি রাগ/ রাগিণী দশটি মূল ঠাট বা সংগীতের স্বরবৈচিত্র্যের ওপর নির্ভর ক'রে সৃষ্টি। এই দশটি ঠাট হল বিলাওল, কল্যাণ, খাম্বাজ, ভৈরব, পূর্বী, মারোঁয়া, কাফি, আশাবরী, ভৈরবী আর টোড়ি। যে কোনো রাগ/ রাগিণী বিচার করলে দেখা যায় সেটি কোনো না কোনো ঠাটের অন্তর্গত, যেমন, শ্রী আর পুরিয়া ধানেশ্রী পূর্বী ঠাটে, মালকোষ ভৈরবীতে, দরবারী কানাড়া আশাবরীতে ইত্যাদি।
একই স্বরের সূক্ষ্ম ওঠাপড়া হল শ্রুতি। ভারতীয় মার্গ সংগীতের তিনটি মুখ্য স্বরলহরী হল মন্দ্র, মধ্য এবং তার। কিছু কিছু রাগ রাগিণীতে অন্তর্বর্তী স্বরলহরী আছে ... যেমন মন্দ্র- মধ্য বা মধ্য-তার।
হিন্দুস্তানি রাগ রাগিণীর দু'টি স্তর।
আলাপ ,অর্থাৎ রাগ/রাগিনীর পরিচিতি ও সূচনা। এটি রাগে প্রাণসঞ্চার আর সেটির চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য নির্ণয় করে। আলাপের পরবর্তী পর্যায়ে আসে দীর্ঘ ও ধীর লয়ের জোড় এবং তারপর ঝালা, বন্দিশ বা গৎ, যেটি প্রতিটি রাগ/ রাগিণীর নিজস্বতা নিয়ে আসে। সঙ্গতে থাকে পাখোয়াজ বা তবলা।
বিভিন্নভাবে সঙ্গীতের অংশগুলিকে ভাগ করা হয় :
স্থায়ী : সূচনা
অন্তরা : দ্বিতীয় ভাগ
সঞ্চারী : তৃতীয় ভাগ
আভোগ : অন্তিম বা শেষাংশ
ধ্রুপদে (চারতুক) এই স্থায়ী , অন্তরা সঞ্চারী ও আভোগ... অর্থাৎ চারটি অংশেরই উপস্থিতি লক্ষ্যণীয়।
হিন্দুস্তানি মার্গ সঙ্গীতের বিভিন্ন প্রধান রূপগুলি হলো ধ্রুপদ, ধামার ,খেয়াল ও তারানা। অন্যান্য রাগসঙ্গীতের মধ্যে আছে টপ্পা, ঠুমরী, দাদরা, ইত্যাদি। এছাড়াও আছে লোকগীতিভিত্তিক লঘু শাস্ত্রীয় সঙ্গীত (ফাগুয়া-চৈতা, কাজরী, হোরি) লঘুসঙ্গীত ( গীত , নজম ভজন, গজল) ইত্যাদি।
ধ্রুপদ : এটি এক প্রাচীন সঙ্গীতরীতি। পুরুষ গায়কদের একচেটিয়া। যন্ত্রানুসঙ্গ হিসেবে ব্যবহার করা হয় তানপুরা ও পাখোয়াজ। কথা আগে ছিল সংস্কৃতে এখন অনেক সময়েই ব্যবহৃত হয় ব্রজভাষা ... উত্তর ও পূর্ব ভারতে মধ্যযুগে বহুল ব্যবহৃত ভাষাগুলির সমন্বয়ে এই ভাষাটি সৃষ্টি হয়েছিল এবং ওই সময়ে পূর্বভারতে এটি বিপুল জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। যন্ত্রসংগীত শিল্পীরা ধ্রুপদ বাজালে প্রাচীন তারযন্ত্র রুদ্রবীণা ব্যবহার করে থাকেন।
ধ্রুপদ মূলত ভক্তিভাব আধারিত ... বিভিন্ন দেব দেবীর উদ্দেশ্যে রচিত। আলাপ পর্যায়টি অপেক্ষাকৃত দীর্ঘ। এরপর পরতে পরতে আলাপ খুলে যায় লয়নির্ভর জোড় ও ঝালায়। এরপর আসে পাখোয়াজ সমেত বন্দিশ। তানসেন গাইতেন এই ধ্রুপদী ঢঙে। ধামার এসেছে এই ধ্রুপদ থেকেই। তবে এটি অপেক্ষাকৃত লঘু চালের। গাওয়া হয় সাধারণত হোরির সময়ে।
দু'শতক আগে পর্যন্তও ধ্রুপদ ছিল হিন্দুস্তানি মার্গসঙ্গীতের একচ্ছত্র সম্রাট। এরপর ধীরে ধীরে জায়গা করে নেয় খেয়াল। এখানে গায়কী হয়ে ওঠে অনেক মুক্তমনা। ধ্রুপদের মূল অনুরাগী ছিলেন রাজা রাজড়ারা। ফলে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে ধ্রুপদ অবহেলিত হতে থাকে। তখন ধ্রুপদের ঐতিহ্য বাঁচাতে শক্ত হাতে হাল ধরেন ডাগর ভাইয়েরা ... নাসির মইনুদ্দিন ও নাসির আমিনুদ্দিন ডাগর এবং তাঁদের অন্যান্য অনুজ ও অনুগামীরা।
শাহজাহানের দরবার থেকে দিল্লী ঘরানার ধ্রুপদ গায়কের শুরু হয় বেতিয়া ঘরানা। আর পশ্চিমবঙ্গে ছিল বিষ্ণুপুর ঘরানা।
মধ্যযুগীয় পারসী সঙ্গীত ও ধ্রুপদের ওপর ভিত্তি করে এসেছিল খেয়াল। এই শব্দটির অর্থ হল চিন্তা বা কল্পনা। অর্থাৎ এই গানে এল চিন্তাশক্তি ও কল্পনার এক নতুন দিগন্ত। দুই থেকে আট পংক্তির গান ... সুরে সুরে ছয়লাপ। প্রেম বা অন্য যে কোনো তীব্র হৃদয়জ অনুভবের সাঙ্গীতিক উন্মেষ হল খেয়াল গানে।
এখানে শিল্পী দেখেন কী রাগে গানটি গাওয়া হচ্ছে, এবং আপন মনের মাধুরী মিশিয়ে তিনি সেটিকে কতখানি ক্রম উত্তরণ ঘটাতে পারেন !
অনেক তর্কবিদ বলেন, খেয়ালের জনক আমির খসরু।
তারানা মধ্য ও দ্রুত লয়ের গান। উল্লাস বা আনন্দসূচক। গাওয়া হয় সাধারণত অনুষ্ঠানের শেষ পর্বে। কয়েক পংক্তি, মিঠে বোলে, সুরে বাঁধা। খুব দ্রুত এটিকে ভিত্তি করে গায়ক/গায়িকা নিজেকে ছড়িয়ে দেন শ্রোতাদের মধ্যে। কর্নাটকী সঙ্গীতের তিল্লানা এই তারানার ওপর ভিত্তি করে তৈরী।
টপ্পাতে আছে দমদার দানাদার কাজ। কখনো ধীর, কখনো দ্রুত, কখনো খুব মৃদু ... ঘন বুনোটে। এটির শুরু পঞ্জাবে উটচালকদের সৌজন্যে, এবং তারপর এটি নিজ গুণে ভারতীয় সংগীতে জায়গা করে নেয়। আঠারো আর উনিশ শতকে বাংলার নিধুবাবুর টপ্পা তো আজও সবার মুখে মুখে। অযোধ্যার নবাব আসফউদ্দৌলা ছিলেন টপ্পার সত্যিকারের সমঝদার ও পৃষ্ঠপোষক|
ঠুমরী শুরু হয় উত্তরপ্রদেশে নবাব ওয়াজিদ আলী শাহের দরবারে। তিনরকম ঠুমরী আছে। পূরব অঙ্গ, লখনৌভি আর পঞ্জাবি। কথা মূলত হিন্দিনির্ভর ব্রজভাষা এবং খুব রোম্যান্টিক।
গজল মূলত পারসী কবিতা। ভারতে অবশ্য এটি উর্দুতেই বহুল প্রচলিত। এই কবিতায় সুর দেওয়া হয়। গজলের নানা রূপ ... আধা-মার্গীয় রূপ ছাড়াও লোক এমনকি পপ গানের মত রূপও আছে।
অত্যন্ত জনপ্রিয় লোকসঙ্গীত কাজরী। এটি বহু মার্গসংগীত শিল্পী গেয়ে থাকেন। কাজরী শব্দটি সম্ভবত কাজলের অপভ্রংশ। দীর্ঘ গ্রীষ্মের পর এসেছে সজল কালো মেঘ, এসেছে তাপহর বর্ষা আর সবুজ শ্যামল শান্তি। তাই কন্ঠে গান। অনেক জায়গাতেই কাজরী গাওয়া হয়, তবে সবচেয়ে বিখ্যাত হল মির্জাপুর। কথিত আছে, এক নারী ... কাজলি। স্বামী পরবাসে। বর্ষা সমাগমে বিরহে অধীর হয়ে তার এই গান ...। কাজরী কখনো গাওয়া হয় মঞ্চে, কখনো একদল নারী বৃষ্টির আনন্দে সন্ধের মুখে মুখে যখন মাতোয়ারা হয়ে ওঠেন। এই গানের সঙ্গে থাকে অর্ধচন্দ্রাকারে ঘুরেফিরে নাচ।
ফাগুয়া-চৈতা গাওয়া হয় ফাল্গুন-চৈত্র মাসে। মূলত শৃঙ্গারবিষয়ক এই লোকগীতি বিশেষভাবে প্রচলিত বেনারস, মির্জাপুর, মথুরা, এলাহাবাদ, ভোজপুর অঞ্চলে ... অর্থাৎ পূর্ব উত্তর প্রদেশ ও পশ্চিম বিহারে। গিরিজা দেবী এই গানের এক উল্লেখযোগ্য নাম।
আর হোরি ? ধামারের সঙ্গে অনেকটাই সাদৃশ্য , প্রধানত চৌতালে গাওয়া হয়, কাফিতে।
আমি যাঁর বা যে গানে ঊষাকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত বুঁদ হয়ে থাকি , যে গান আমার সুখে দু:খে হরষে বিষাদে সঙ্গী হয়ে ওঠে, সমস্ত রকম ঝড় জল রোদ্দুর আর বৃষ্টি থেকে , যন্ত্রণা আর আঘাত থেকে আশ্রয় দেয় , প্রতিটি জাগ্রত ও নিদ্রিত মুহূর্তে মস্তিষ্কের কোষে কোষে , শিরা ও ধমনীর প্রতিটি রক্তবিন্দুতে যার অমোঘ উপস্থিতি .. তা রবীন্দ্রনাথের গান। আর এই মানুষটির সঙ্গে , তাঁর গানের সঙ্গে যত বেশি করে পরিচিত হয়, ততই বিস্ময় জাগে। খুব অল্প কয়েকটি গান ছাড়া রবীন্দ্রনাথ এই ধ্রুপদের শৈলীটিকে আপন মহিমায় আপন করে নিয়েছেন। স্থায়ী , অন্তরা, সঞ্চারী ও আভোগে।
আর তাল ? মনের মধ্যে মাথার ভেতরে গান বেজে যায় অবিরাম , অজান্তে আঙুল থেকে দিয়ে যায় ঠিকঠাক সমে ও ফাঁকে। অবাক হয়ে দেখি কী অজস্র তালবৈচিত্র্য সুরের জাদুকর ব্যবহার করেছেন। এবং ভাবি, এই বিশেষ গান যেন এই সুর আর এই তাল না ব্যবহার করলে এত আলোর মাধুরী দিয়ে আমাদের মননকে প্রতিনিয়ত এত দীপ্তিমান করে তুলত না।
কয়েকটি নমুনা দিই বরং। খুব চেনা কিছু গান। আমাদের সকলের অজস্রবার শোনা। সুরটি মনে মনে গুঞ্জন তুলুক আর আঙুল ঠেকা দিয়ে যাক ….
আজি হৃদয় আমার ( দাদরা ), আকাশ জুড়ে শুনিনু (কাহারবা ), আজ জ্যোৎস্না রাতে ( তেওড়া ), নিবিড় অমা তিমির হতে (ঝম্পক ), নবতাল ( নিবিড় ঘন আঁধারে ), ঝাঁপতাল ( আজু সখি মুহু মুহু ), একতাল ( আজি বিজন ঘরে), ত্রিতাল ( আজি বসন্ত জাগ্রত দ্বারে ) ..এবং এমন আরও অজস্র উদাহরণ। রবীন্দ্রনাথ দুটি তালকে একই সঙ্গে ব্যবহার করে চমৎকার সংমিশ্রণ (তালফেরতা ) করেছেন তাঁর অনেক গানে , যেমন কাহারবা আর দাদরা ব্যবহার করে আমাদের খুব চেনা একটি গান ...আমার নিশীথ রাতের বাদলধারা , ষষ্ঠী আর দাদরায় সেই বিখ্যাত গানটি ..লক্ষ্মী যখন আসবে। কাওয়ালির উল্লেখ করে এই বিষয়ে আপাতত ইতি টানব। রবীন্দ্রনাথ এখানেও তাঁর জাদুতে আমাদের সম্মোহিত করেছেন। দুটি নমুনা রেখে যাই। বিরহ মধুর হল আজি এবং কী সুর বাজে আমার প্রাণে।
রাগ রাগিণী ও বাদ্যযন্ত্র
যদিও হিন্দুস্তানি মার্গসঙ্গীত মূলত কন্ঠনির্ভর, কিন্তু বহু প্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন বাদ্যযন্ত্রে রাগ রাগিণী বাজানো হয়। এখন তো দেখা যায়, বাদ্যযন্ত্রে এর জনপ্রিয়তা বরং বেশি। এর কারণ হয়ত এটাই যে, এতে আবেশ ছড়ায় অপেক্ষাকৃত দ্রুত আর এতে ভাষার সীমাবদ্ধতা থাকে না।
যে বাদ্য বা তারযন্ত্রগুলি হিন্দুস্তানি রাগ রাগিণীর জন্য বহুল ব্যবহৃত, সেগুলির মধ্যে আছে বীণা, সেতার, সরোদ সুরবাহার, সন্তুর, বিভিন্ন ধরনের স্লাইড গীটার। এছাড়া সারেঙ্গী, এস্রাজ, বেহালা, মোহনবীণা, বাঁশি, সানাই আর হারমোনিয়াম তো আছেই।
মার্গসঙ্গীত-সঙ্গতে সবচেয়ে জনপ্রিয় তবলা আর পাখোয়াজ। আর লোকসঙ্গীতে বরং ঢোল, ঢোলক ইত্যাদি সঙ্গত-যন্ত্র হিসেবে বহুল ব্যবহৃত।
(চলবে)
লেখক পরিচিতি - বিজ্ঞানের ছাত্রী । কিন্তু
প্রথম ভালোবাসা সাহিত্য । তিন দশক ধরে ভাষান্তরের কাজে যুক্ত ।
বেশ কিছু অনূদিত বই প্রকাশিত হয়েছে সাহিত্য অকাদেমি, ন্যাশনাল
বুক ট্রাস্ট ইত্যাদি বিখ্যাত সংস্থা থেকে । ভাষান্তরের পাশাপাশি
নিজস্ব লেখালেখির ঝোঁক । তবে খুব নিয়মিত নয় । ভালোবাসেন টুকরো
গদ্য, পদ্য লিখতে । নানা স্বাদের লেখা নিয়ে গত বছর প্রকাশিত হয়েছে
ওঁর আরেকটি বই 'ম্যাজিক লণ্ঠন। এ বছর প্রকাশিত হচ্ছে আরও তিনটি
বই।
(আপনার
মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)
অবসর-এর
লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য
অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।