সম্পাদকীয়

আরো একটি নতুন বছর

আর একটি বছর অতিক্রান্ত হয়ে গেল। অতিমারীর কিন্তু ক্লান্তি নেই। তার মধ্যেও এসে গেল অবসর পত্রিকার “শীত – ২০২২” সংখ্যা।
এবারের সংখ্যাতে আমরা জোর দিয়েছি বাংলা শিশু-কিশোর সাহিত্যের ওপর। বাংলা সাহিত্যের এই ধারাটি একই সঙ্গে খরস্রোতা এবং বিস্তৃত। প্রায় সব বিখ্যাত লেখকই এই জগতে পদার্পণ করে তাকে সমৃদ্ধ করেছেন। তবে আমরা আমাদের আলোচনাতে রাখতে চেয়েছি এমন সব লেখক, সম্পাদক, পত্রিকা যাঁদের ওপর হয়তো তেমনভাবে আজ আর আলোকপাত হয় না।

একটি কিশোর পত্রিকার অনন্যতার পিছনে তার সম্পাদকের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। ‘মাসিক আনন্দমেলা’ পত্রিকার যাত্রা শুরু হয়েছিল কবি নীরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তীর সম্পাদনায়। তাঁর প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করে স্মৃতিচারণ করেছেন আমাদের দুই শ্রদ্ধেয় লেখক সুজন দাশগুপ্ত ও শেখর বসু।
আর একটি বিখ্যাত পত্রিকা – ‘কিশোর ভারতী’র লেখক – সম্পাদক দীনেশচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়কে নিয়ে লিখেছেন কলরব রায়।
পুরনো দিনের পত্রিকা নিয়ে দুটি রমণীয় এবং মূল্যবান লেখা পেয়েছি যথাক্রমে দীপক সেনগুপ্ত ও সোমেন দে র কাছ থেকে।

বাংলা সাহিত্যের এক অধুনা বিস্মৃত চরিত্র ‘শার্লক হেবো।’ তার স্রষ্টা নারায়ণ সান্যালের কন্যা অনিন্দিতা বসু লিখলেন তাঁর বাবার কিশোর কিশোরীদের জন্য সৃষ্ট কাহিনিগুলিকে নিয়ে। তিতাস বসুর কলমে রইল জসীমুদ্দিনকে নিয়ে আলোচনা।

সংগ্রামী লাহিড়ীর কলমে রইল ছোটদের গীতিনাট্য নিয়ে আলোচনা। অদিতি ঘোষ দস্তিদার ফিরে দেখেছেন তাঁর গল্প বলা কাজলা দিদিদের।
সার্ধ-শতবর্ষে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুর। তাঁর প্রণীত ‘রাজকাহিনী’কে আবার পড়লেন শেখর মুখোপাধ্যায়। ভাগ করে নিলেন সেই অভিজ্ঞতা।
এবারের বিষয়ের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শমীতা দাশ দাশগুপ্তের কলমে ‘নারী ও সমাজ’ বিভাগে রইল “ইংরেজি রহস্য সাহিত্যে কিশোরী গোয়েন্দার সন্ধানে।”

অন্যান্য বিভাগে শিল্প-সংস্কৃতির জগতের মহীরুহ দিলীপকুমারের বাংলা ছবি নিয়ে লিখেছেন শিবাংশু দে। সাহিত্য বিভাগে রইল সদ্য প্রয়াত সাহিত্যিক, বাংলা ছোটগল্পের রাজপুত্র হাসান আজিজুল হকের সাহিত্য নিয়ে বিভূতিভূষণ মন্ডলের বিস্তারিত আলোচনা।


ব্যক্তিগত গদ্য বিভাগে রইল আরো দুটি লেখা – বাসবী খাঁ ব্যানার্জি ও অমিতাভ বসুর কলমে।
বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগে এক মহীয়সী কিন্তু অনালোকিত নারী হাইপেশিয়াকে নিয়ে লিখেছেন ঊর্মি দত্তগুপ্ত। রম্যরচনা বিভাগে রইল অভিষেক দত্তর একটি লেখা।
আমাদের মতে, বাংলা সাহিত্যের এক উজ্জ্বলতম দিন ছিল সেদিন যেদিন বাংলার প্রথম ওয়েব পত্রিকা ‘পরবাস’ প্রকাশিত হয়েছিল। পত্রিকার সম্পাদক সমীর ভট্টাচার্য এক দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন সেই শুরুর দিনগুলির কথা।


আমাদের পত্রিকার তরফ থেকে পাঠকমণ্ডলীকে জানাই ইংরেজি নববর্ষের প্রীতি ও শুভেচ্ছা। পরবর্তী সংখ্যা বাংলা নববর্ষের দিনে। আশাকরি এই দুই নববর্ষের মাঝখানে আমাদের জীবন আরো শান্তিপূর্ণ হয়ে উঠবে। কেউ কেউ তো এখনই আশার বাণী শোনাতে শুরু করেছেন। তাঁরা নাকি করোনার বিদায় ঘন্টা শুনতে পাচ্ছেন।
আমরাও তাই আশা রাখছি। “দুঃসময়” সম্ভবত অতিক্রম করে ফেলব আমরা – তাই উচ্চারণ করি সেই অতি বিখ্যাত পংক্তিগুলি –

“এখনো সমুখে রয়েছে সুচির শর্বরী,
ঘুমায় অরুণ সুদূর অস্ত-অচলে!
বিশ্বজগৎ নিশ্বাসবায়ু সম্বরি
স্তব্ধ আসনে প্রহর গনিছে বিরলে।
সবে দেখা দিল অকূল তিমির সন্তরি
দূর দিগন্তে ক্ষীণ শশাঙ্ক বাঁকা।
ওরে বিহঙ্গ, ওরে বিহঙ্গ মোর,
এখনি, অন্ধ, বন্ধ কোরো না পাখা।”

 

আশা রাখছি, “দূর দিগন্তে” যে “ক্ষীণ শশাঙ্ক বাঁকা”, তা অচিরেই পূর্ণভাবে প্রকাশিত হবে। তার আলোকে আমরা আবার নবজীবনের গান গাইব। সেই উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আশায় থাকি আমরা সকলে।

জন্ম কলকাতায়, বেড়ে ওঠা দক্ষিণ চব্বিশ-পরগনার রাজপুর-সোনারপুর অঞ্চলে। ১৯৮৩ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রনিক্স ও টেলিকম্যুনিকেশন ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে কর্মসূত্রে ব্যাঙ্গালোরে। শখের মধ্যে অল্প-বিস্তর বাংলাতে লেখা - অল্প কিছু লেখা রবিবাসরীয় আনন্দবাজার, উনিশ-কুড়ি, নির্ণয়, দেশ, ইত্যাদি পত্রিকায় এবং বিভিন্ন ওয়েব ম্যাগাজিন (সৃষ্টি, অবসর, অন্যদেশ, পরবাস ইত্যাদিতে) প্রকাশিত। সম্প্রতি নিজের একটি ব্লগ চালু করেছেন – www.bhaskarbose.com

3 Comments

Avarage Rating:
  • 0 / 10
  • বাসবী খাঁ ব্যানার্জী , January 17, 2022 @ 3:45 pm

    অবসর পত্রিকার “শীত – ২০২২” পেয়ে খুব খুশি।অভিনন্দন জানাই।
    এই সংখ্যার সূচিপত্রে বিভিন্ন ধরণের লেখা দেখছি, লেখকরা বিশ্বের নানা জায়গায় ছড়িয়ে আছেন।
    এই অতিমারীর সময়ে যখন ঘরে বন্দী এবং বিচ্ছিন্ন, পত্রিকাটি বাইরের সাথে যোগাযোগের একটি সেতু সমান। ধন্যবাদ জানাই।

  • Utpal Sengupta , April 8, 2022 @ 9:10 pm

    অবসর – শীত ২০২২ পেয়ে কেমন একটা ‘উম ‘ বোধ হোলো , উষ্ণ আমেজ ! রসিয়ে পড়ব l এই আমেজ টা ছড়িয়ে যান , থামবেন না !

    • admin , April 9, 2022 @ 7:33 am

      অনেক ধন্যবাদ!

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *