তান্ত্রিকের ডায়েরি ও রিপোর্ট

তান্ত্রিকের ডায়েরি ও রিপোর্ট

এ বছর ফেব্রুয়ারির মাঝামাঝি নাগাদ SMS এলো – ২৯.০৪.২০২১ তারিখে প্রিসাইডিং অফিসার হিসাবে ইলেকশন ডিউটি। অর্থাৎ আসন্ন (বর্তমানে বিগত) ‘গণতান্ত্রিক শবসাধনা’র সর্বকনিষ্ঠ ‘তান্ত্রিক’ হব আমি। কর্তব্যকর্ম – উক্ত সাধনযজ্ঞের জন্য প্রয়োজনীয় সমিধ সংগ্রহ ও হোমাগ্নি প্রজ্জ্বলন।

সরকারি চাকরিতে আমার প্রথম পোস্টিং ছিল মালদায়। সেখানে এক সিনিয়র দাদার উপদেশ মেনে চলতাম। ইলেকশন ডিউটি এসেছে শুনে গম্ভীর স্বরে বলেছিলেন, “হুঁ, আজ থেকে বাইরের খাবার খাওয়া বন্ধ, পনেরদিন পর থেকে মাংস ও ডিম, তারপর মাছ। এইভাবে কমাতে কমাতে ভোটের দু’দিন আগে সরকারি অশৌচ, অর্থাৎ শুধু চিঁড়ে, মুড়ি, খই, আর বেশি করে জল। আর ডিউটিতে বেরোবার আগে চাট্টি জল ঢালা ভাত আর পিঁয়াজ, ব্যাস। তারপর ভোট মেটার পর বাড়ি ফিরে প্রথমে স্নান আর তারপরে ওই চাট্টি জল ঢালা ভাত আর পিঁয়াজ। একসপ্তাহ পর থেকে যেগুলো খাওয়া ছেড়েছিলে, সেগুলো সিরিয়ালি বাড়াতে বাড়াতে একমাস বাদে আবার সব নর্মাল।”

তখন আমার মা বেঁচে, তাই অবাক হয়ে প্রশ্ন করেছিলাম, “সরকারি অশৌচ কেন দাদা?”
“যাতে তুমি শো-কজ খেয়েছ শুনে মাসিমা অসুস্থ হয়ে না পড়েন, তাই,” নির্বিকার ভাবে তিনি বলে চললেন, “তাছাড়া ডিউটি পড়বে ব্লকের প্রাইমারি স্কুলে – সেখানকার বাথরুমে ‘কম্মো’ সারা তোমার আমার মতো শহুরে লোকের পক্ষে সম্ভব না। দীর্ঘ অব্যবহারের দরুণ সে ঘর জঞ্জালের ডিপো আর পোকামাকড়, সাপ, বিছের পার্মানেন্ট অ্যাডড্রেস। প্রকৃতির ডাকে সাড়া দিতে গিয়ে সাপের কামড় খেয়ে ফিরে এসেছে এমন ঘটনাও ঘটেছে। ওই একই কারণে খোলা মাঠে ও ‘কম্মো’ করতে যাওয়াটাও রিস্কি। তাই ওই দুদিন সাময়িক ভাবে সিস্টেমকে ইনঅ্যাক্টিভ করে দিতে হবে।”
কিন্তু কিন্তু করে বললাম, “সকালে এক কাপ গরম চা পেটে পড়লেই তো আমাকে…”
আশ্বাস দিয়ে বললেন, “একমাস এ নিয়ম পালন করলে তোমার ব্রেনেও আদর্শ নির্বাচন বিধি কার্যকর হয়ে যাবে, তাই ওই দুদিন ব্রেন কোনো ‘অর্ডার’ ডেসপ্যাচে দেবে না। কিন্তু মনে রেখো, সমস্ত ‘অর্ডার’ পেন্ডিং হয়ে আছে। অতএব দু’দিন বাদে সে এক ধাক্কায় বিস্তর ‘অর্ডার’ ডেসপ্যাচে পাঠাবে। তাই ভালোয় ভালোয় ভোট মিটে গেছে বলে গান্ডেপিন্ডে গিলতে বসবে না। আগে ‘পেন্ডিং অর্ডার’ ক্লিয়ার হবে, তারপরে ফ্রেশ অর্ডার ডেসপ্যাচের জন্য ব্রেনকে তৈরি হওয়ার সময় দিতে হবে। সার্ভিস লাইফে অনেক ইলেকশন ডিউটি আসবে। কিন্তু আমার এই কথা মেনে চললে আর যাই হোক অসুস্থ হবে না। অবশ্য ভোটের ডিউটি কাটানোর মহামন্ত্র জানা থাকলে অন্য কথা।”
সোৎসাহে প্রশ্ন করলাম, “কোথায় পাবো সে মন্ত্র?”
উত্তর এল, “উপযুক্ত গুরুর কাছে!”
আরো উৎসাহিত হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, “তোমার জানা কোনো গুরু আছে?”
দাদাটি আমার দিকে খানিকক্ষণ তাকিয়ে রইলেন। তারপর ফের লিখতে লিখতে বললেন, “এটুকু বুইলে না যে তেমন গুরুর সন্ধান জানা থাকলে কলকাতায় থেকে তোমার বৌদির রাঁধা ঝোল-ভাত খেয়ে রোজ অফিস করতুম, এদ্দূরে পড়ে থেকে তোমার মতো হস্তীমূর্খের সঙ্গে ভ্যাচর ভ্যাচর করতে হত না!”

কানে জল গেল। বুঝলাম বইপত্রে যা পড়ে এসেছি, এবারে তার প্র্যাকটিক্যাল।

সে যাই হোক, ডিউটি যখন এসেছে তখন তা করতেই হবে। তাই যথাসময়ে তিন দফার ট্রেনিং নিলাম। ইতিমধ্যে আবার SMS, অমুক দিন NRS-এ গিয়ে করোনার ভ্যাকসিন নিতে হবে। এটা এবারের নতুন ফ্যাচাং, তাই মনে করে জরুরি জিনিসপত্র নিলাম, যথা: (১) ইলেকশন ডিউটির চিঠি আর ভোটার কার্ড – আমি যে ‘আসল’ তার প্রমাণ! (২) নিজের দুটো হাত – নইলে ভ্যাকসিন দেবে কোথায়!

নার্স দিদিটি খুব যত্ন করে ভ্যাকসিন দিলেন, যদি জ্বর আসে তার জন্যে প্যারাসিটামলও লিখে দিলেন। আঠাশ দিন বাদে আবার দ্বিতীয় দফার ভ্যাকসিন। সবকিছু মিটে গিয়ে অবশেষে ২৮.০৪.২০২১ দিনটা এসে পড়ল।

দাদার সেই উপদেশ অনুযায়ী চাট্টি জল ঢালা ভাত আর পিঁয়াজ খেয়ে সকাল দশটার আগেই নেতাজি ইনডোরে DCRC-তে হাজির হলাম। মোবাইল রেজিস্ট্রেশন করিয়ে জিনিসপত্র নেওয়ার কাউন্টারে গিয়ে শুনলাম, আমার টিমের জন্য নির্দিষ্ট করা ফার্স্ট এবং থার্ড পোলিং অফিসার আসেনি, অতএব রিজার্ভ থেকে ওই দুজনের বদলি অফিসার নিতে হবে।

আহা, কী সুখবর! প্রাণটা একেবারে তর হয়ে গেল।
‘রিজার্ভ কাউন্টারের’ কর্মীরা জানালেন, “পার্টিনম্বর লিখে নিয়েছি, সেক্টর অফিসার এসে যা করার করবেন।”

‘সেক্টর অফিসার’ শুনে আপনাদের মনে হতেই পারে যে মুশকিল আসান করার জন্যেই এনাদেরকে রাখা হয়েছে। কিন্তু ওইখানেই তো ভুল করলেন! তেনাদের (অবশ্যই সবাই নন) আসল কাজ হল নিরীহ ‘ব্রণ’কে প্রাণপণে খুঁটে ‘সেপটিক’ বাধানো!
বিস্তর চিৎকার, চেঁচামেচি, বাকবিতন্ডার পর সেক্টর অফিসার এলেন। তাঁর ভেটকিলোচন-বদনাবদন-গাড়ুগঠন দেখে লোক বিশেষ সুবিধার বলে মনে হল না। অবস্থা বেগতিক দেখে ইতিমধ্যেই রিজার্ভ কাউন্টারের যেসব কর্মীরা গা-ঢাকা দিয়েছিল তারা গুটিগুটি এসে বসল।

ব্যাস, এবারে শুরু হল ব্রিজ খেলার ডাকাডাকি পর্ব। খালি এ পক্ষ টু হার্টস থ্রি স্প্রেডসের বদলে ডাকছে, “অমুক নম্বর পার্টি, প্রিসাইডিং মিসিং” আর ও পক্ষের সেই হোঁৎকা হোঁতোল নো ট্রাম্পের মতো বলে চলেছে, “নেই নেক্সট!” খানিকক্ষণ এরকম ডাকাডাকি চলার পর উপস্থিত আমরা সবাই গেলাম ক্ষেপে!

প্রথমে একটু আধটু গুনগুন, তারপর ভনভন, তারপর খোলাখুলি “দূর দূর!” এমন সময়ে হঠাৎ শুনি বাজখাঁই গলায়, “দেখি একটু সরুন তো, আমাকে যেতে দিন” শুনে চমকে তাকিয়ে দেখি দশাসই চেহারার এক জাঁদরেল, বয়স্কা ভদ্রমহিলা এগিয়ে আসছেন। ঝটাকসে আমাদের মনে হল কিছু করতে পারলে ইনিই পারবেন। ফলে সদ্যজাত কৃষ্ণকে কোলে নিয়ে বসুদেবকে আসতে দেখে যমুনা নদী যেমন সসম্মানে দুভাগ হয়ে পথ করে দিয়েছিল, আমরাও ঠিক সেরকম ভাবে সরে গিয়ে ওনার জন্য ‘গ্রিন চ্যানেল’ করে দিলাম।

কাঁধের শান্তিনিকেতনী ব্যাগটা টেবিলের ওপর রেখে কাংস্যবিনিন্দিত কণ্ঠে তিনি চেঁচিয়ে উঠলেন, “বলি হ্যাঁ গো সেক্টর অফিসার বাছা, তোমাদের এই নাম পাতাপাতি খেলা আর কতক্ষণ চলবে? সেই সকাল থেকে দাঁড়িয়ে থেকে কোমর ধরে গেল। বলি, আমরা কি ষষ্ঠীর উপোস করে তোমার মাথায় জল ঢেলে চন্নামেত্ত খেতে এসেছি!”

এতক্ষণে রোগের ঠিক ওষুধ পড়ল। একটু আগে যার ‘দুঃখেষ্বনুদ্বিগ্নমনাঃ সুখেষু বিগতস্পৃহঃ’ টাইপ অ্যাটিচুড দেখে মনে হচ্ছিল যেন এইমাত্র কৃষ্ণের সঙ্গে হ্যান্ডশেক করে, তার কাছ থেকে ভোকাল টনিক নিয়ে কাউন্টারে এসে বসেছেন, তিনি এবারে নড়েচড়ে উঠে চোখ থেকে চশমাটা খুলে রুমাল দিয়ে ঘাম মুছলেন। বোধহয় মনে মনে ভাবছেন, ‘সর্বনাশ, তবে কি এই বুড়ি আমার মতলবখানা ধরে ফেলেছে!’

কথায় বলে দুর্ভাগ্য কখনও একলা আসে না। এ হোঁৎকার ক্ষেত্রেও তাই ঘটল, ঠিক তক্ষুণি তার এক ব্যাচমেট অফিসার এসে বললেন, “কী রে, আর কতক্ষণ লাগবে! তোর শেষ না হলে তো আমি শুরু করতে পারছি না!” ব্যাস, এবারে দুই অফিসারের মধ্যে লেগে গেলো ধুন্ধুমার ঝগড়া! আর তাদের সে গালাগালিরঞ্জিত সংলাপ শুনে উপস্থিত আমরা সবাই বাপ বাপ বলে কানে আঙ্গুল দিলাম। হে পাঠিকাগণ, এ অধম আপনাদের কাছে সে ‘কথামৃত’ প্রকাশ করতে অক্ষম! ভদ্রভাবে ঈষৎ উদাহরণ দিচ্ছি, বাকিটা নিজ দায়িত্বে ভেবে নিন।

হোঁৎকার বক্তব্য, “ওরে ও গাড়ুড্ডুম ইস্টুপিড, এতগুলো রিজার্ভ থেকে একে মিলিয়ে ওকে আর ওকে মিলিয়ে একে দিতে গিয়ে যে হিমশিম খাচ্ছি সেটা কি তোর চোখে ব্যালট পেপার গুঁজে দেখিয়ে দিতে হবে? ওরে ও… বিইইইইইইইইইইইপ (কটুবাক্য)!”
দ্বিতীয়জন দাঁত খিঁচিয়ে জবাব দিল, “ওরে ও মর্কটস্য মর্কট, ব্যাপারটা ওদের মধ্যেই ছেড়ে দে না, ওরা নিজেরাই টিম করে নিক! শুধু পার্টিনম্বরগুলো নোট করে নিলেই তো আপাতত হয়ে যাবে! এই পুঁটিমাছের ঘিলু নিয়ে ইলেকশন সামলাতে এসেছিস, তার চেয়ে দেশে গিয়ে ঠাকুমার চুলের উকুন বাছ গে যা! ওরে ও হামানদিস্তের থ্যাঁতলামুখো… বিইইইইইইইইইইইপ (পুনরায় কটুবাক্য)!” তারমধ্যে সেইসব ছাপিয়ে ঘন ঘন মাইকে ঘোষণা, ‘অমুক নম্বর পোলিং পার্টি তমুক নম্বর বাসে গিয়ে উঠুন।’

সব কান্ডকারখানা সামলে, পোলিং পার্টি ফর্ম হয়ে, ভোটিং মেটিরিয়াল নিয়ে যখন বাসে উঠে গুছিয়ে বসলাম তখন আমার মনের মধ্যে নিম্নলিখিত চিন্তাগুলো ঘুরপাক খাচ্ছে:

এক: আমি ছাড়া বাকি তিনজনের এই প্রথম ইলেকশন ডিউটি;
দুই: ফার্স্ট পোলিং অফিসার হিন্দি ছাড়া আর কোন ভাষা বোঝে না। আর সে ভাষায় আমার দক্ষতা শেকসপিয়ার-তুল্য;
তিন: যে এলাকায় ডিউটি করতে যাচ্ছি, সেটা বহু কুখ্যাত গন্ডগোলের মাতৃভূমি;
চার: আমাদের বুথটি অতি স্পর্শকাতর বলে Webcamএর আওতায় আছে। অর্থাৎ ইলেকশন কমিশনের কর্তাব্যক্তিরা সর্বক্ষণ CCTVর মাধ্যমে নজরদারি চালাবে। নিয়মের সামান্য এদিক ওদিক হলেই…;
সর্বশেষ: ইতিমধ্যে আমার মাথা টিপটিপ করতে শুরু করেছে – এই মাথাযন্ত্রণা ব্যামোটা মাতৃদেবীর কাছ থেকে উত্তরাধিকার সূত্রে পেয়েছি।

যখন দেখলাম সবকটি পয়েন্টই আমার বিরুদ্ধে তখন ভাবনা চিন্তাগুলোকে মন থেকে ঝেড়ে ফেলে আওড়াতে লাগলাম, “স্বধর্মমপি চাবেক্ষ্য ন বিকম্পিতুমর্হসি। / ধর্ম্যাদ্ধি যুদ্ধাচ্ছ্রেয়োহন্যং ক্ষত্রিয়স্য (এক্ষেত্রে ‘রাজকর্মচারীস্য’) ন বিদ্যতে।।” অবশেষে নির্দিষ্ট বুথে গিয়ে উপস্থিত হলাম। পৌঁছনো মাত্রই কাছাকাছি কোথাও বিকট শব্দে দুটি বোমা ফাটল। হৃৎপিন্ডটা ধড়াস করে চমকে উঠে গলার কাছে এসেই আবার স্বস্থানে ফিরে গেল। পিছন ফিরে দেখি আমার টিমের বাকি তিনজনের মুখ ভয়ানক ফ্যাকাসে হয়ে গেছে। সাহস দিয়ে বললাম, “ও কিছু না, আমাদের সম্মানার্থে তোপধ্বনি মাত্র!”

তাদের সাহস তো দিলাম বটে, কিন্তু মনে মনে ভাবছি, আজ যারা বোমা ছুঁড়ছে, কাল তারা ভোট দিতে এসে গোলাপ ফুল ছুঁড়বে কি? বিশেষত বাজারে গোলাপ যখন দুর্মূল্য! এমন সময়ে আমার স্বর্গগত পিতৃদেবের Offense is the best defence উপদেশটা মনে পড়ে গেল। অতএব বিকট গলায় হাঁকলাম, “সিকিউরিটি!”
দশাসই চেহারার এক জওয়ান এসে সসম্মানে স্যালুট ঠুকে বলল “জি সাব!” তার কাঁধে ঝোলানো স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্রটা দেখে বেশ ভরসা পেলাম। একবার সে শুনে অস্ত্র থেকে ‘To whom it may concern’ বলে কিছু একটা করলে বিপক্ষের রথী-মহারথীরা রণে ভঙ্গ দেবে। গম্ভীরভাবে বললাম, “আপনাদের কমান্ড্যান্ট সাহেবের সময় হলে একবার দেখা করতে চাই।”
পুনরায় স্যালুট ঠুকে, “জি সাব” বলে সে প্রস্থান করল।

এরপর নিজের কাজে মন দিলাম। প্রথমেই জিনিসপত্রগুলো রেখে ভালো করে হাতমুখ ধুয়ে নিলাম। তারপর জরুরি কাগজপত্র বের করে কাজ শুরু করে দিলাম। এখানেও আমার সেই দাদার মূল্যবান পরামর্শ, “আগেরদিন যত বেশি কাজ করে রাখবে, ভোটের দিন তত কম ঝামেলায় পড়বে।” অর্থাৎ সেই ভুবনবিখ্যাত সামরিক উপদেশ – “The more you sweat in peace, the less you bleed in war!”

কাজ বেশ খানিকটা এগিয়েছে এমন সময়ে সেই জওয়ান এসে স্যালুট ঠুকে বলল, “কমান্ড্যান্ট সাব’নে সেলাম ভেজা হ্যায়।”
তার হাতে কিছু নেই দেখে প্রশ্ন করলাম, “সেটা কোথায়?”
সে কী বুঝল কে জানে! তবে ফার্স্ট পোলিং অফিসার প্রাঞ্জল ভাষায় জানাল, “কমান্ড্যান্ট সাহেব আপনার সঙ্গে দেখা করতে চান।”
প্রাণ জল হয়ে গেল, বেঞ্চি থেকে উঠে সেই জওয়ানের সঙ্গে যেতে যেতে বুঝলাম, সত্যিই হিন্দি ভাষায় আমার দক্ষতা শেকসপিয়ার তুল্য!

কমান্ড্যান্ট সাহেবকে দেখে ভরসা পেলাম। বৃষস্কন্ধ, শালপ্রাংশুমহাভুজের অধিকারী, বলিষ্ঠদেহী, দীর্ঘকায় এক সামরিক অফিসার। উর্দিতে খোদাই করা নামের পদবীটা দেখে বুঝলাম সে ব্যক্তি জাতিতে রাজপুত। পাশের টেবিলে রাখা অস্ত্রটা ওঁর থেকেও ভয়ানক, আন্দাজ করলাম তা থেকে যুগপৎ গুলি ও গোলা ছোঁড়া যায়। হ্যান্ডশেক করে সামনের চেয়ারটা দেখিয়ে বললেন, “বৈঠিয়ে।” তারপর সেই জওয়ানের দিকে তাকিয়ে বললেন, “সাব’কে লিয়ে চায় লে আও।” আমি ভদ্রতা দেখিয়ে, “থাক না,” বলায় হেসে জানালেন, তিনিও খাবেন।

জওয়ানটি চলে যেতেই সরাসরি প্রসঙ্গে চলে এলাম। জানালাম, “আপনাদের ভরসায় এখানে এসেছি, যদি পাশে থাকেন তাহলে আমি নিয়মের এক ইঞ্চিও বাইরে যাবো না, আর নইলে…”
প্রথমে নিজের উর্দিতে তারপর টেবিলে রাখা অস্ত্রটায় আঙ্গুল ঠেকিয়ে দৃঢ়কণ্ঠে যা বললেন তা এইরকম – “নিশ্চিন্ত থাকুন, আমাকে ভরসা করতে না পারলে এই দুজনের ওপর ভরসা রাখুন। কারণ এরা নিজেদের ডিউটি কখনও ভোলে না। কেউ যদি আপনাদের কেশাগ্র স্পর্শ করতে চায় তবে তা আমাদের লাশ মাড়িয়ে তবেই করতে পারবে। আপনি নিশ্চিন্তে নিজের কাজ করুন।
দার্ঢ্যকণ্ঠের সে আশ্বাস মনে যথেষ্ট সাহস জোগাল। ‘পণরক্ষা’ কবিতার লাইনদুটো মনে পড়ে গেল, “প্রভুর আদেশে বীরের ধর্মে বিরোধ বাধিল আজ, দুর্গ দুয়ারে ত্যাজিয়াছে প্রাণ দুর্গেশ দুমরাজ।”

ঘরে ফিরে নিবিষ্ট মনে কাজ করছি এমন সময়ে একটা মৃদু গলা খাঁকরানি শুনে তাকিয়ে দেখি ছুঁচো প্যাটার্নের একটা লোক দাঁড়িয়ে আছে। মুখ তুলতেই দাঁতকপাটি দেখিয়ে বলল, “আগামীকাল স্যারেদের জন্য…”
গম্ভীর স্বরে, “ওনাদেরকে জিজ্ঞেস করুন,” এই বলে টিমের বাকি তিনজনকে দেখিয়ে আবার কাগজপত্রের মধ্যে ডুব মারলাম। ঝোলভাত, টোস্ট-অমলেট এইসব কানে আসছিল। সবশেষে আমার কাছে এসে জানতে চাইল, “তাহলে স্যার এবার আপনার জন্যে…”
আবারও গম্ভীর গলায় জিজ্ঞেস করলাম, “পার প্লেট কত করে?”
এবারে একেবারে ‘বিগলিত করুণা জাহ্নবী যমুনা’ স্টাইলে উত্তর দিল, “এজ্ঞে ‘মেহমান’দের কাছ থেকে টাকা নিলে ‘ধম্মে’ সইবে না!”

সর্বনাশ, ব্যাটা বলে কী! যতদূর মনে পড়ছে এ সংক্রান্ত কোনো নির্দেশ তো Presiding Officer’s Manual এ লেখা নেই। অতএব তড়িঘড়ি আমার চার পাতার সাজেশন কাম টুকলি বার করে দেখতে বসলাম। এবারে শুধু সর্বনাশ নয়, সাড়ে সর্বনাশ! কারণ সেখানে পরিষ্কার করে লেখা আছে, “NEVER receive anything (food, beverage etc.) without price – try to avoid those & depend upon own ration.”
পত্রপাঠ তাকে বিদেয় করে কাজে মন দিলাম। সেসব শেষ করে যখন শুতে গেলাম তখন ঘড়ি ‘হাতজোড়’ করে নমস্কার জানিয়ে সেই দিনকে বিদায় দিচ্ছে।

ঘণ্টা চারেক ঘুমিয়েই উঠে পড়তে হল। তারপর নিত্যকর্মাদি সেরে সারাদিনের জন্য প্রস্তুত হলাম। ঠিক সাতটার সময়ে ভোট শুরু করিয়ে প্রিসাইডিং অফিসারের নির্দিষ্ট Paperwork শুরু করলাম। ইতিমধ্যে বাইরে তুমুল বোমাবাজি শুরু হয়ে গেছে, বিস্ফোরণের বিকট আওয়াজে জানলার শার্সিগুলো ঝনঝন করছে।এসব অভিজ্ঞতা আমার আগেই হয়েছে, তাই সেদিকে মাথা না ঘামিয়ে নিজের কাজ করে যেতে লাগলাম।

বেশ তরতর করে কাজ এগিয়ে যাচ্ছে দেখে মনটা বেশ খুশিয়াল ছিল। হায়, তখন কি এই নটবর জানত, যে তার ‘মনটা যদি সিরাজ সাজে, তবে ভাগ্য মীরজাফর!’ অতএব বেলা সাড়ে এগারোটা নাগাদ পলাশীর প্রান্তরে ক্লাইভের আবির্ভাব হল! যান্ত্রিক বিভ্রাটে EVM বিকল!

 
ভোট দেওয়ার চিহ্ন (ছবি অন্তর্জাল থেকে সংগৃহীত)

তৎক্ষণাৎ সেক্টর অফিসারকে খবর দিলাম, সিকিউরিটিকে ডেকে ভোটারদের লাইন আটকে জানিয়ে দিতে বললাম যে যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে আপাতত ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হল। ইতিমধ্যে ছোকরা থার্ড পোলিং অফিসার ভোটিং কম্পার্টমেন্টের ভেতর উঁকি মেরে দেখতে যাচ্ছিল, এক ধমকে তাকে নিজের জায়গায় বসে থাকতে বললাম। আর মনে মনে ভাবতে লাগলাম, ‘ফিন রাম’সে,’ অর্থাৎ সব কাজ আবার প্রথম থেকে…

মিনিট পনেরোর মধ্যেই সেক্টর এবং অ্যাসিস্ট্যান্ট সেক্টর অফিসার টেকনিকাল টিম নিয়ে উপস্থিত হলেন। ভাগ্যক্রমে এই দু’জন সহৃদয় অফিসারকে পেয়েছিলাম। সবসময়ে যোগাযোগ রেখেছেন, সাহস দিয়ে বলে গেছেন, “চিন্তা করবেন না, আমরা আছি।” এঁদের সাহায্যেই শেষ পর্যন্ত সবকিছু ভালোয় ভালোয় উৎরে গিয়েছিল। নিজেরা দাঁড়িয়ে থেকে EVM Replacement, Mock Poll এবং Machine Seal করে তারপর গেলেন।

যাই হোক, আবার ভোটগ্রহণ শুরু হল। এরপর বলার মতো আর একটি ঘটনাই ঘটেছিল। দুই বোন ভোট দিতে এসে জানালেন, ছোটো বোনটি তাঁর যাবতীয় পরিচয়পত্র ‘শ্বশুরালে’ ফেলে এসেছেন, মোবাইলে ভোটারকার্ডের ফটো রয়েছে, এখন ‘সাহেব’ যদি মেহেরবানি করে…
গম্ভীরস্বরে বললাম, “Virtual card allowed নয়!”
দিদিটি বলল, “সাহেব আমার তো কার্ড আছে, আর এ সত্যিই আমার ছোটো বোন!”
হেসে বললাম, “আপনারা বোন কিনা সেটা আমার জানার প্রয়োজন নেই, কিন্তু ভোট দিতে গেলে আসল পরিচয়পত্রই লাগবে!”
বেজার মুখ করে দিদিটি ভোট দিতে গেল আর বোনটি দরজার বাইরে গিয়ে দাঁড়াল। তারপর দুই বোনে একসাথে আমার মুণ্ডপাত করতে করতে বিদায় নিল।

সারাদিন খাওয়া বলতে শুকনো বিস্কুট আর জল। অবশ্য মস্তিষ্কও পুরোপুরি প্রস্তুত ছিল – শুধু তেষ্টা ছাড়া সেদিন অন্য কোনো সিগনাল দেয়নি। এইসব সামলে অবশেষে ভোট শেষ হল। কন্ট্রোল ইউনিট ‘ক্লোজ’ করে পাওয়ার অফ করে সমস্ত ইউনিট গালা সিল করে দিলাম। তারপর লটবহর গুছিয়ে বাসে উঠে সোজা নেতাজি ইনডোর।

ভোট চলাকালীন বুদ্ধি করে অনেকগুলো 17C Form তৈরী করেছিলাম। এখানে সাধারণ পাঠক-পাঠিকাদেরকে জানিয়ে রাখি, সমস্ত ভোটপ্রক্রিয়াতে 17Cকে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ নথি হিসাবে ধরা হয়। কারণ এর ওপর ভিত্তি করেই সেই কেন্দ্রের বিজয়ী প্রার্থীকে সার্টিফিকেট দেওয়া হয়। DCRCতে গিয়ে প্রথমেই সমস্ত প্রয়োজনীয় কাগজ (17C ছাড়া) ধরিয়ে দিলাম। কাউন্টারের ভদ্রলোক সেগুলোতে চোখ বুলিয়ে একটা রেজিস্টারে টিক দিতে থাকলেন। কোনও পয়েন্ট বাদ পড়েনি দেখে বুঝলাম, মারেঙ্গোর যুদ্ধ জয় হয়েছে, এবারে ওয়াটারলু!

এবারে জলদগম্ভীর স্বরে, “17C দিন,” শোনা মাত্রই দুটো খাম ধরিয়ে দিলাম।কাগজগুলো বার করে দেখে নিয়ে আবার খামে ভরে নিয়ে বললেন, “ওহ, আপনাদের তো আবার মেশিন খারাপ হয়েছিল, তাই আরও দুটো…”
শোনা মাত্রই বাকি 17C কটা ওনার হাতে ধরিয়ে দিলাম। একটি ছাড়া বাকিগুলো নিজের কাছে রেখে বললেন, “এটা Statutory খামে ভরে গালা সিল করে দিন, ততক্ষণে আপনার release অর্ডার রেডি করছি।”

পাঠক/পাঠিকা, বললে বিশ্বাস করবেন না, পনেরো মিনিটের মধ্যে সবকিছু করে release নিয়ে বেরিয়ে এলাম। কাউন্টারের সেই ভদ্রলোক তখন সিন্ধ্রি বলদের মতো ফোঁস করে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে বললেন, “সবচেয়ে disputed পার্টি, সবচেয়ে পরিষ্কার কাগজ!”

ছাড়া পেয়ে আমি তখন ঊর্ধশ্বাসে ছুটছি বাড়ির দিকে! ঘড়ি প্রায় রাত্রি সাড়ে বারোটা ছুঁয়ে ফেলেছে।

লেখাটা হয়তো এখানেই শেষ করে দিতে পারতাম, কিন্তু একটা ছোট্ট উপসংহার আছে; আশা করি সেটা আপনাদের খারাপ লাগবে না।

ছুটছি তো বাড়ির দিকে, কিন্তু সমস্যা হল এতো রাতে যাওয়ার উপায় কী! কড়া পুলিশ পাহারা, তাই স্টেডিয়ামের সামনে কোনো যানবাহন নেই। নিরুপায় হয়ে হাঁটতে শুরু করেছি। ধর্মতলার মোড়ে হয়তো কিছু পাওয়া গেলেও যেতে পারে। রাজভবনের কাছে যেতেই বরাত খুলে গেল। সামনে হঠাৎ করে উদয় হয়েছে একটি শেয়ারের ট্যাক্সি। পঞ্চাশ টাকায় শিয়ালদা নিয়ে যাবে। অগ্রপশ্চাত না ভেবে ঝট করে ড্রাইভারের পাশের সিটে বসে পড়েছি। শিয়ালদা অবধি তো যাওয়া যাক, তার পরে দেখা যাবে!

পিছন থেকে কথাবার্তার আওয়াজ। বোঝা গেল যাত্রীরা পরস্পরের পরিচিত এবং থাকেনও একই জায়গায়। অনুরোধ এল ডানলপ অবধি পৌঁছে দেওয়ার। সঙ্গে বেশ মোটা অঙ্কের টাকার অফার। কিন্তু পত্রপাঠ সে প্রস্তাব খারিজ হয়ে গেল। শত অনুরোধ উপরোধেও ড্রাইভার ভদ্রলোক শিয়ালদা ছাড়া অন্য কোথাও যাবেন না। ব্যাপার দেখে মাথায় উপস্থিত বুদ্ধি খেলল! যাত্রীসুলভ গাম্ভীর্য বজায় রেখে শুধোলাম, “ওহো, আপনার কাছে পাঁচশো টাকার ভাঙ্গানি হবে তো?”
ভদ্রলোক ঘাড় নেড়ে সম্মতি জানালেন, আমারও প্ল্যানের প্রথম ধাপ চুকল।

শিয়ালদা আসতেই পিছনের তিনজন ভাড়া চুকিয়ে নেমে গেল। টাকা বার করার অছিলায় আমি চাপা স্বরে বললাম, “আমাকে বেলেঘাটায় পৌঁছে দিতে পারেন? বড্ড উপকার হত!”
“আলোছায়া অবধি যেতে পারি, একশো টাকা দেবেন”, ভদ্রলোক নির্বিকার ভাবে বললেন।
খুশি হয়ে বললাম, “থ্যাঙ্কস, আমার বাড়ি তার আগেই!”
বাড়ির সামনে এসে টাকা বের করে বললাম, “সাড়ে তিনশো ফেরত দিন। অনেক উপকার করলেন, তাই এই পঞ্চাশ টাকা আমার তরফ থেকে!”

সামান্যই কৃতজ্ঞতার প্রকাশ। ওটুকুতেই কী যে খুশি হলেন! বড় আনন্দভরা দৃষ্টিতে আমার দিকে তাকিয়ে রইলেন। হঠাৎ মনে হল এই দৃষ্টি আমার খুব চেনা, আগেও দেখেছি। সেই প্রাচীনকালে, যখন অনেক সাধনার পরে মানুষ বিরাট বিপুলকে জানতে পারার আনন্দে বলে উঠেছিল,”শৃণ্বন্তু বিশ্বে…!”

এক মুহূর্তের জন্য ভুলে গেলাম আমি একজন উচ্চশিক্ষিত সরকারি চাকুরে, একটু আগেই প্রিসাইডিং অফিসার হয়ে সাফল্যের সঙ্গে কর্তব্য পালন করে এসেছি, আমার সামনের মানুষটি হয়তো স্কুলের গন্ডিটুকুও পার করতে পারেননি, আর্থিক কৌলীন্যে আমার থেকেও নীচে…।

ওঁর কথায় চমক ভাঙ্গল, হাসিভরা মুখে বললেন, “ভালো থাকবেন স্যার!” ডানহাতটা বাড়িয়ে ওনার হাতে মৃদু ঝাঁকুনি দিয়ে বললাম, “আপনিও!”

নিশুতি রাত, নিস্তব্ধ জনশূন্য চরাচর আর মাথার ওপর অজস্র নক্ষত্র খচিত আকাশ ছাড়া দুজন অপরিচিত, নিঃস্বার্থ মানুষের এই শুভেচ্ছা জানানোটা আর কেউ জানতে পেল না।গত দু’দিন ধরে রাজনৈতিক দলাদলি, জান্তব হিংস্রতা, নীচতা দেখতে দেখতে তিতকুটে মেরে যাওয়া মনে হঠাৎ করেই যেন একঝলক ঠান্ডা তাজা বাতাস এসে জানিয়ে দিল, এখনও সব কিছু ধ্বংস হয়ে যায়নি। এই মালিন্য, কলুষতাকে পিছনে ফেলে শত শত সাম্রাজ্যের ভগ্নস্তূপের ওপরে দাঁড়িয়েও একদল মানুষ এখনও নির্বিকারভাবে কাজ করে চলেছে।

না হলে এই তথাকথিত মানবসভ্যতা আজ অবধি টিকে আছে কী করে!

To be added

Related Articles

8 Comments

Avarage Rating:
  • 0 / 10
  • DEBASIS SUR , July 15, 2021 @ 12:07 pm

    BEAUTIFUL

    • অভিষেক দত্ত , July 15, 2021 @ 4:04 pm

      Thank you, Debasishda .
      Aponjonder niye valo thako, sustho thako…

  • কল্যানী মিত্র ঘোষ , July 16, 2021 @ 11:10 pm

    দারুণ অভিজ্ঞতা ও লেখনী। অপেক্ষায় ছিলাম।

    • অভিষেক দত্ত , July 17, 2021 @ 5:44 am

      অসংখ্য ধন্যবাদ, কল্যাণীদি !

  • Santanu Sinha Chaudhuri , July 17, 2021 @ 5:02 am

    চমৎকার লেখা। ধন্যবাদ।

    • অভিষেক দত্ত , July 17, 2021 @ 5:44 am

      অসংখ্য ধন্যবাদ !

  • Dulal Sarkar , September 4, 2021 @ 1:57 pm

    এসব গালাগালি কোথায় পেলেন! চুঁইয়ে পড়ছে রস। আপনার যথেষ্ট পাণ্ডিত্য, কিন্তু বেশ বিচ্ছু ধরনেরও। নতুবা এমন লেখা সম্ভব নয়। অভিজ্ঞতা আমারও কম-বেশি এমনই, কিন্তু লেখাটা পড়তে গিয়ে এতবার হেসে উঠেছি যে আমার স্ত্রী মনোরোগ বিশেষজ্ঞার দৃষ্টিতে জরিপ করে গেছে একবার। গীতার উক্তিগুলোর প্রয়োগ তো মারকাটারি।
    উতকৃষ্ট রম্য রচনা। আপনাকে যিনি খাবার তালিকা ঠিক করে দিয়েছিলেন -লা জবাব।
    এবং শেষটা, এজন্যই সমাজ তবু টিঁকে আছে, জীবনে বাঁচার মধুর স্বাদ পাওয়া যায়, মায়া বাড়ে।

    • অভিষেক দত্ত , September 4, 2021 @ 2:35 pm

      ধন্যবাদ
      আপনাকে ‘যিনি’ মনোরোগ বিশেষজ্ঞার দৃষ্টিতে একবার জরিপ করে গেছেন তাঁর পাঠপ্রতিক্রিয়া পেলে আরও ভালো লাগবে।
      হাজার হোক আমি আপনি সাধারণ মানুষ আর ‘তাঁরা’ সবাই বিশেষজ্ঞা।
      সেক্ষেত্রে তাঁদের মূল্যবান মতামতের গুরুত্ব অনেক বেশী !

Leave a Reply to Santanu Sinha Chaudhuri Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *