প্রথম
পাতা
শহরের তথ্য
বিনোদন
খবর
আইন/প্রশাসন
বিজ্ঞান/প্রযুক্তি
শিল্প/সাহিত্য
সমাজ/সংস্কৃতি
স্বাস্থ্য
নারী
পরিবেশ
অবসর
|
পুনর্নবীকরণ
শক্তি উৎসের চালচিত্র-
১
২
৩
৪
[বর্তমানে
পুনর্নবীকরণ শক্তি-উৎগুলি বর্ধিত গুরুত্ব
লাভ করেছে বিশ্বের শক্তি উৎপাদন ও ব্যবহারে
প্রচলিত শক্তি-উৎগুলির (যথা কয়লা, প্রাকৃতিক
গ্যাস ও তেল এবং পারমানবিক) তুলনায়।
২০০৯ খ্রী-তে পুনর্নবীকরণ শক্তি দিয়েছে
বিশ্বের মোট শক্তি-ধারকত্বের ২৫ শতাংশ
এবং বিশ্ব বিদ্যুৎ-যোগানের ১৮ শতাংশ।
বোঝা যাচ্ছে, বিশ্বে শক্তির প্রয়োজন
প্রসঙ্গে পুনর্নবীকরণ শক্তি একটা 'বিপ্রতীপ
অবস্থায়' ( টিপিং পয়েণ্ট ) পৌঁছে গেছে
২০১০ খ্রী নাগাদ।]
একবিংশ
শতাব্দীতে পুনর্নবীকরণ শক্তি উৎসগুলির
বিকাশে মানুষের যে আগ্রহ ও উদ্দীপনা আশা
করা গিয়েছিল ( দেখুন 'পুনর্ণবীকরণ শক্তি
উৎস ও একবিংশ শতাব্দী ), তা' পূর্ণ হতে
চলেছে | ২০০৭ / ২০০৮ খ্রী-তে বিশ্বজোড়া
অর্থনৈতিক মন্দা, ভরতুকি-হ্রাস এবং প্রাকৃতিক
গ্যাসের মুল্য নিম্নমুখী হওয়ার ফলে পুনর্নবীকরণ-শক্তি
( এখন থেকে আমরা 'সবুজ শক্তি' কথাটি ব্যবহার
করবো ) উৎসগুলির বিকাশ বিষয়ে সন্দেহ দেখা
দিয়েছিল | ২০০৯ খ্রী-তে 'প্রাথমিক (Primary)
শক্তি' ( 'পরিশিষ্ট ১' দেখুন ) কমেছিল
১.১ শতাংশ ( ১৩০ Mtoe ), কিন্তু সুখের
কথা, এর প্রভাব সবুজ শক্তির বিকাশের উপর
খুব একটা পড়েনি, বরং বিদ্যুৎশক্তি, তাপ
এবং পরিবহন, সব কটি ক্ষেত্রেই সবুজ শক্তির
ব্যবহার বেড়েছে গভীরভাবে |
সবুজ-শক্তির বাজার, লগ্নী, শিল্প ও কৃৎকৌশল,
এবং রূপায়ণের নীতি ইত্যাদির বিকাশ বিগত
কয়েক বৎসরে এত দ্রুত হয়েছে যে সে বিষয়ে
আলোচনা কোনও সময়েই ঘটনার সঙ্গে তাল মেলাতে
পারবে না | তাই আমাদের এই আলোচনা মূলতঃ
তথ্যভিত্তিক, কি ঘটেছে তার উপর ভিত্তি
করে, কোনও বিশ্লেষণের মধ্যে যথাসম্ভব
না গিয়ে |
বিভিন্ন
ঘটনার গতিধারা প্রতিফলিত করছে সবুজশক্তিগুলির
বর্ধিত গুরুত্ব বিশ্বের শক্তি উৎপাদন
ও ব্যবহারে প্রচলিত শক্তি-উৎসগুলির (
যথা কয়লা, প্রাকৃতিক গ্যাস ও তেল এবং
পারমানবিক ) তুলনায় | বোঝা যাচ্ছে, বিশ্বে
শক্তির প্রয়োজনের প্রসঙ্গে সবুজ শক্তি
একটা 'বিপ্রতীপ অবস্থায়' ( টিপিং পয়েণ্ট
) পৌছে গেছে ২০১০ খ্রী নাগাদ | আজ পৃথিবীর
অনেক বেশি মানুষ পূনর্নবীকরণ-শক্তিতে
আগ্রহী, ব্যবহার বাড়ছে আগের তুলনায় অনেক
বেশি | সঙ্গে চলছে, নিরলস গবেষণা, উন্নত
প্রযুক্তির সন্ধান এবং ক্রমবধমান লগ্নী
| এই তিনের সম্মিলিত ফলশ্রুতি হল প্রতিটি
উৎসেরই মূল্য হ্রাস এবং অভিক্ষেপ : আগামী
বৎসরগুলিতে আরও কমার সম্ভাবনা |
গুণগতভাবে,
আমরা বিগত ১০০ বৎসরাধিক সবুজ-কৃৎকৌশলদের
তিনটি কালে ভাগ করতে পারি :
-
প্রথম কাল-এর কৃৎকৌশল উঠে এসে ছিল
ঊনবিংশ শতাব্ধীর শিল্পবিপ্লবের মধ্য
থেকে যার মধ্যে ছিল জলবিদ্যুৎ, বায়োমাস
দহন এবং ভূতাপীয় শক্তি ও তাপ ; কিছু
কিছু আজও চালু আছে উন্নতমানের প্রযুক্তিসহ
|
-
তৃতীয়
কালের কৃৎকৌশল এখনও উন্নয়নের পথে-
যার মধ্যে আছে সমকেন্দ্রিক সৌর শক্তি(concentrating
solar power ), মহাসাগর-শক্তি ( ocean
energy ) বর্ধিত ভূতাপীয় পদ্ধতি এবং
সম্পূরিত জৈবশক্তি প্রনালীগুলি ;
আর হাইড্রোজেন প্রযুক্তি।
-
দ্বিতীয় কালের কৃৎশলগুলিতে আছে সৌর
উষ্ণতা
ও শীতলীকরণ, বায়ু শক্তি, বর্তমানের
জৈবশক্তি, এবং সৌর ফোটোভোল্টায়িক
(পি. ভি.)। এগুলি বর্তমানে চালু।
আমাদের
উদ্দেশ্য হল সবুজ-শক্তির
বিকাশকে যতদূর সম্ভব
বিষয়মুখী (objectively)
করে বর্ণনা করা। দেশগত
এবং সংস্থাগত ভাবে বিভিন্ন
শব্দের সংজ্ঞা বিভিন্ন
হওয়াতে সব পরিসংখ্যানকে
একটা ছাতার নীচে আনা
শক্ত। কিছু অসঙ্গতি থেকে
যেতেই পারে।
কিভাবে
এই বিকাশ সংঘটিত হল- বিভিন্ন দেশের নীতি
বা পলিসির কথা বলবো, নূতন কর্মসংস্থানের
হিসাব দেবো আর সবুজ শক্তির কতটা গ্রামীণ
প্রেক্ষাপটে উপছিয়ে পড়েছে তা' জানাবো।
একটা বিষয় স্মরণে রাখতে হবে যে কিয়োটো-প্রোটোকল
(যা' দিয়ে বিশ্বের বেশ কিছু দেশকে দায়িত্ব-বদ্ধ
করা গিয়েছিল এবং যার বিরোধিতা করেছিল
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অস্ট্রেলিয়া)-এর
মেয়াদ শেষ হয়ে যাচ্ছে আগামী বছর অর্থাত্
২০১২ খ্রীষ্টাব্দে। গ্রীণহাউস-গ্যাস নিঃসরণ
ও বিশ্ব-আবহাওয়া পরিবর্তন ঠেকাতে এটা
ছিল একটা বড় এবং সুদৃঢ় পদক্ষেপ। কিন্তু
দুঃখের বিষয় ২০১২ খ্রী-র পরবর্তী কার্যক্রম
স্থির করতে বহুবার রাষ্ট্রপতিরা সম্মিলিত
হয়েছেন, কোনও ফল হয়নি- উন্নত এবং উন্নয়নকামী
রাষ্ট্রগুলির মধ্যে মতানৈক্যের ফলে।
তবে হতাশার কারণ নেই ; বিভিন্ন রাষ্ট্র
বিষয়ের গুরুত্ব অনুধাবন করে সবুজ শক্তির
নীতি বা পলিসি ইতিমধ্যে গ্রহণ করেছে যার
ফলে আমরা সাহসের সঙ্গে আজ পূর্বাভাস করতে
পারছি।
সংযুক্ত
রাষ্ট্রপুঞ্জ দ্বারা প্রতিষ্ঠিত আবহাওয়া-পরিবর্তন
বিজ্ঞানের সংস্থা (IPCC) মে, ২০১১ খ্রী-র
এক প্রতিবেদনে জানাছেন যে, বিশ্বের প্রয়োজনীয়
শক্তির ৮০ হবে সবুজ-শক্তি আগামী চার দশকের
মধ্যে, অবশ্য যদি রাষ্টগুলি সঠিক পলিসি
বা নীতি
গ্রহণ করেন।
(ক)
১৯৭১ থেকে ২০০৪ খ্রীষ্টাব্দ
বিশ্বে
শক্তি যোগানে নির্বিঘ্নতা সুনিশ্চিত করা,
জীবাশ্ম-জ্বালানির উপর নির্ভরতা এবং গ্রীন-হাউস
গ্যাস প্রশমিত করার জন্য সবুজ-শক্তির
ব্যবহার যে একান্ত জরুরী সেটা আজ সকলেরই
জানা। এ বিষয়ে সারা বিশ্বের পরিপ্রেক্ষিতে
বিশদ সঠিক আলোচনার অবকাশ কম বিভিন্ন রাষ্ট্র
থেকে সঠিক তথ্য পাওয়ার অসুবিধা এবং সংজ্ঞার
বিভিন্নতার জন্য। আমরা আন্তর্জাতিক শক্তি
সংস্থা IEA প্রবর্তিত সংজ্ঞা ব্যবহার
করবো।
চিত্র
১-এ ১৯৭১ খ্রী থেকে ২০০৪ খ্রী পর্যন্ত
সময়ে গড়ে মোট প্রাথমিক শক্তি যোগান-সহ
সবুজ-শক্তির বিভিন্ন উৎসগুলির বার্ষিক
বৃদ্ধির হার (শতাংশে) দেখানো হয়েছে। এই
৩৩ বৎসরে সবুজ শক্তির বাৎসরিক গড় বৃদ্ধি
হয়েছে ২.৩ শতাংশ যেখানে প্রাথমিক শক্তি-উৎসগুলির
(সবুজ এর একটা অংশ- চিত্র পরিশিষ্ট ১)
গড় বৃদ্ধি হয়েছে ২.২ শতাংশ। চিত্রে দেখানো
'অন্যান্য' শ্রেণীর (অনেক সময 'নূতন'
বলে আখ্যা দেওয়া হয়- যার মধ্যে আছে ভূতাপীয়,
বায়ু, সৌর ও জোয়ার-ভাঁটা উৎসগুলি) গড়
বাৎসরিক বৃদ্ধি হল অনেক বেশি- ৮.২ শতাংশ।
বায়ু এবং সৌর-এর গড় বৃদ্ধি যথাক্রমে ৪৮
ও ২০ শতাংশ- এত বেশি যেহেতু শতাংশের হিসাবের
ভিত ১৯৭১ খ্রী-তে খুবই কম এবং একবিংশ
শতাব্দীতে এদের বিকাশ উত্তম।
এই
৩৩ বত্সরে সবুজ-শক্তির ভূমিকা পর্যালোচনা
করলে [সারণী ১] দেখা যায় যে ২০০৪ খ্রী-তে
সবুজ-শক্তি ব্যবহারে মূখ্য ভূমিকা নিয়েছে
OECD-অঞ্চলের বাইরের এশিয়া, আফ্রিকা এবং
ল্যাটিন আমেরিকা মহাদেশগুলি- বায়োমাসের
প্রাচুর্য থাকায়। বেশির ভাগটাই ব্যবহৃত
হচ্ছে রান্নার কাজে ও বাসস্থান গরম রাখার
জন্য। যখন জলবিদু্যত্ ও 'নূতন' সবুজ শক্তি-উত্সগুলির
(যথা বায়ু, সৌর ইত্যাদি) কথা ওঠে, তখন
দেখতে পাই OECD-অঞ্চলের অন্তর্গত রাষ্ট্রগুলি
সবুজ শক্তি ব্যবহার করেছে হাইড্রো ৪৫
ও ,নূতন'- ৬৬ শতাংশ।
সারণী
১
উত্স
: IEA Energy Statistics
২০০৪
খ্রী-তে সবুজ শক্তি উৎসের স্থান বিশ্ব
বিদ্যুৎ উৎপাদকদের তালিকায় তৃতীয়
(প্রায় ১৮ শতাংশ যখন কয়লা- ৪০ শতাংশ
এবং প্রাকৃতিক গ্যাস- ২০ শতাংশ) ;
পারমানবিক- ১৬ এবং তেল- ৭ শতাংশের
তুলনায় ভালো অবস্থয়। সবুজ শক্তি উৎসের
মধ্যে জলবিদ্যুৎ ৯০ শতাংশ, আর প্রায়
৬ শতাংশ আসছে দাহ্য সবুজ শক্তিগুলি
ও বর্জ। ভূতপীয়, সৌর এবং বায়ুর- তিনটি
মিলে দিয়েছে প্রায় ৪.৫ শতাংশ [চিত্র
২]।
এই
৩৩ বত্সরে সবুজ-শক্তির বিকাশে সব
থেকে বড় প্রতিবন্ধক হল এদের মূল্যমান
(চিত্র ৩)। বৃহৎ জলবিদ্যুৎ এবং দাহ্য
বায়োমাস (তাপ-এর জন্য) ও বড় ভূতাপীয়
প্রোজেক্ট (৩০ Mwe-র বেশি) বাদ দিলে
সবুজ শক্তির গড় মূল্য বিদ্যুতের পাইকেরী
মূল্য ও জীবাশ্ম-জ্বালানির মূল্যের
সঙ্গে প্রতিযোগিতামূলক নয়, যদিও কিছু
কিছু সবুজ উত্স যেমন সৌর গরম জল ও
ক্ষুদ্র জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এর মধ্যে
স্থান করে নিয়েছে।
গ্রীনহাউস-গ্যাস
নিঃসরণ কমানো এবং জনচেতনার সঙ্গে
সঙ্গতি রাখতে মূল্যমান হ্রাসের একমাত্র
উপায় প্রযুক্তি উন্নয়ন ও বাজার-প্রসারণ
বিষয়ে গবেষণা। 'প্রয়োজন নব-প্রবর্তনের
জন্মদাতা'- এই আপ্তবাক্য এখানে কাজে
লাগিয়ে পরবর্তী বিকাশে উত্তরণ।
২০০৪
খ্রীষ্টাব্দে সবুজ শক্তির নানা ব্যবহার
দেখানো হল চিত্র ৪-এ।
১.
প্রাথমিক (প্রাইমারি) এবং অন্ত্য (ফাইনাল)
শক্তি
প্রাথমিক
(প্রাইমারি) শক্তি হল একটি শক্তি-উৎস
যা' অপরিবর্তিত অবস্থায় পাওয়া যায় প্রকৃতি-তে।
এই শক্তি উৎস অ-নবীকরণ-যোগ্য হতে পারে
বা নবীকরণ-যোগ্যও হতে পারে। উদাহরণ, বায়োমাস,
কয়লা, সৌর-শক্তি ইত্যাদি ;
প্রাথমিক শক্তি-উৎসকে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির
কৃৎকৌশল দিয়ে মানুষের উপকারার্থে সহজ
ব্যবহারার্থে রূপান্তর করে নিলে পাওয়া
যায় ফাইনাল বা অন্ত্য শক্তি।
শিল্প-বিপ্লবের পর থেকে শক্তি ব্যবহারের
প্যাটার্ণ বিষ্ময়করভাবে পালটিয়ে গেছে
শক্তির পরিমাণে এবং গুণে। শিল্পে উন্নত
ও উন্নয়নশীল উভয় দেশগুলিতেই জনসংখ্যা
বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক বিকাশ ঘটেছে এবং ঘটছে,
যার মূলে আছে উত্ততোত্তর বেশি শক্তির
ব্যবহার। সাথে থাকছে কার্যদক্ষতার উন্নয়ন'
কি শক্তি-ব্যবহারে, কি শক্তির গুণগত অবস্থায়।
অদ্যাবধি
শক্তির কোনও সুবিধাজনক মাপ-করণ করা যায়নি
যা' বিভিন্ন শক্তি-উৎসের উৎপাদনকে তাদের
বিভিন্ন ব্যবহারে নিয়ে রচিত। এ বিষয়ে
কিছু যে হয়নি তা' নয়, তবে সেটা হয়েছে
প্রাথমিক শক্তির সঙ্গে অন্ত্য শক্তির
ব্যবহারকে ধরে।
দেয়
ও ব্যবহার্য শক্তিদের যদি অন্ত্য শক্তিতে
ব্যক্ত করা হয়, তা' হলে একটা যথাযথ তুলনা
করা যেতে পারে ; উদাহরণস্বরূপ হাইড্রলিক
শক্তি এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের ব্যবহার।
এখনও অন্ত্য-শক্তি রূপে প্রাকৃতিক গ্যাস
জল গরম করার জন্য ব্যবহার হচ্ছে বিদু্যত্-এর
সঙ্গে প্রতিযোগিতা করে, এদের কার্যদক্ষতার
(efficiency)
কথা না ভেবে। বস্তুতঃ 'অন্ত্য
শক্তি'র প্রত্যয় কার্যদক্ষতা-গুণনীয়ক-কে
উন্নত করে প্রতিটি শক্তি-উৎসের কার্যদক্ষতাকে
হিসাবের মধ্যে এনে।
'শক্তি'-কে প্রকৃতির মধ্যে পাওয়া যায়
'কাঁচা' অথবা 'প্রাথমিক' ভাবে, যেমন মাটির
তলা থকে নিষ্কাশন করে ( পেট্রোলিয়াম,
প্রাকৃতিক গ্যাস এবং খনিজ কয়লা ) অথবা
প্রকৃতি থেকে প্রাপ্ত, যেমন জ্বালানি
কাঠ, সৌর ও হাইড্রলিক শক্তি। প্রাথমিক
শক্তি হয় সোজাসুজি ব্যবহৃত হয়; অথবা কোনও
ভাবে রূপান্তরিত হয় 'দ্বিতীয় পর্যায়'-এর
( সেকেণ্ডারি ) শক্তি রূপে। উদাহরণ, রিফাইনারিগুলি
যার দ্বারা পেট্রোলিয়াম থেকে গ্যাসোলিন,
ডিজেল তেল, জ্বালানি তেল এবং অন্যান্য
শক্তি-রূপে রূপান্তর হয়' সেটা হল 'দ্বিতীয়
পর্যায় '। প্রায়শঃই কোনও একটি 'দ্বিতীয়
পর্যায়'-শক্তিকে অন্য কোনও শক্তিতে রূপান্তরিত
করা হয়, যেমন জ্বালানি তেল থেকে বিদ্যুতে
তাপ-বিদ্যুৎ কেন্দ্রে। পরিশেষে প্রাথমিক
বা 'দ্বিতীয় পর্যায়' -শক্তিকে গ্রাহকের
কাছে নিয়ে যাওয়া হয় 'অন্ত্য শক্তি' হিসাবে।
শক্তি-সমতা thermal balance)-র গঠনবিন্যাসকে
এইভাবে দেখানো যায়:
প্রাথমিক
শক্তি => রূপান্তরকালে ক্ষয় + অন্ত্য-শক্তি
যখন,
অন্ত্য শক্তির মধ্যে আছে প্রাথমিক শক্তির
একটা অংশ যা' সরাসরি ব্যবহৃত হয এবং 'দ্বিতীয়
পর্যায়'-এর শক্তি। প্রকৃয়াটিকে দেখানো
হল চিত্র পরিশিষ্ট-১ মারফত্। চিত্র আরও
দেখাচ্ছে যে, অন্ত্য শক্তির নানা ব্যবহার
আছে যার রূপান্তরকে গণনার হিসাবে ধরা
হয়নি যেমন, গ্যাসোলিন-এর রাসায়নিক শক্তির
ব্যবহার পরিবহনে, বৈদু্যতিক শক্তির ব্যবহার
ল্যাম্পের মাধ্যমে আলোকিতকরণে বা বয়লারে
জল গরম করতে। এই সব ব্যবহারের প্রত্যেকটির
ভিন্ন কার্যদক্ষতা আছে ব্যবহার-অনুসারে।
চিত্র
পরিশিষ্ট-১
চিত্র
২ -এ ১৯৭৩ খ্রীষ্টাব্দে বিশ্বে শক্তি
উৎপাদনে (ক) প্রাথমিক এবং (খ) অন্ত্য
-শক্তির নমুনা দেওয়া হল।
(২)
পরিভাষা
[উত্স: IEA ENERGY STATISTICS]
(ক)
দাহ্য সবুজ এবং সবুজ বর্জ - হল কঠিন বায়োমাস,
তরল পুনর্নবীকরণযোগ্য বায়োমাস, বায়োগ্যাস,
শিল্প এবং মিউনিসিপালিটি-র বর্জ। বায়োমাস
ও তার বর্জ মানে হলো কোনও উদ্ভিদ / পাদপ,
যা' জ্বালানি হিসাবে বা যাকে জ্বালানিতে
( যথা, কাঠকয়লা ) অথবা সোজাসুজি বিদ্যুতে
/ তাপ-এ পরিবর্তন করা যায়। এর মধ্যে অন্তর্ভূক্ত
করা হয় কাঠ, শাক-সবজির বর্জ ( কাঠের বর্জ
এবং নানা ফসল যা থেকে শক্তি উত্পাদিত
হয় ), ইথানল, পশু বর্জ এবং গন্ধক-জাত
ক্ষার জল। মিউন্সিপ্যালিটির বর্জ তৈরি
হয় বসতবাড়ী, ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ও জনসাধারণের
পরিষেবা থেকে, যা স্থানীয়ভাবে সংগ্রহ
করা হয় তাপ বা বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য।
(খ)
'অন্যান্য' হল সৌর, বায়ু, ভূতাপীয়, জোয়ার-ভাঁটা
/ ঢেউ / সাগর- শক্তি থেকে বিদু্যত্ ও
তাপ।
ভূতাপীয় পদ্ধতিতে যদি প্রকৃত কার্যদক্ষতা
(efficiency) জানা না যায় তবে ভূতাপীয়-শক্তি
কতটা প্রয়োজন হচ্ছে বিদু্যত্ উত্পাদনে
তা' হিসাব করতে গড় তাপীয় কার্যদক্ষতা
(thermal efficiency) ধরা হয় ১০ শতাংশ।
সৌর, বায়ু, জোয়ার-ভাঁটা / ঢেউ / সাগর-
শক্তির বেলায় বিদ্যুৎ শক্তি উৎপাদনের
জন্য প্রয়োজনীয় শক্তি হল কতটা শক্তি উৎপাদিত
হয়েছে। এখানে ভূতাপীয় এবং সৌর-তাপ-এর
সোজাসুজি ব্যবহারও ধরা হয়েছে। বিদ্যুৎ
হিসাব করা হয় সম-পরিমাণ তাপীয় মানের অন্ত্য
ব্যবহারের (final consumption) বিদ্যুৎ
দ্বারা, অর্থাত্ ১ গিগা-ওয়াট-ঘণ্টা (Gwh)*
= ০.০০০০৮৬ Mtoe। 'তাপ'-এর মধ্যে আছে
যে তাপ বিক্রয়ার্থে ব্যবহৃত।
শঙ্কর
সেন
উৎস:
IEA ENERGY STATICS ; Renewables
2010 Global Status Report
Copyright
© 2014 Abasar.net. All rights reserved.
|
অবসর-এ প্রকাশিত
পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।
|