(৪) সবুজ শক্তির বাজার
আগের অংশগুলিতে ১৯৭৩ থেকে
২০১০ খ্রী-তে বিভিন্ন সবুজ শক্তি-উৎসের উৎপদনের বিকাশ
বিষয়ে আলোচিত হয়েছে। দেখা গেছে, ২০১০ খ্রী-তে ২০১০ খ্রী-তে
বিশ্বে আনুমানিক ১৩২০ গিগা-ওয়াট উৎপাদিত হয়েছে যা ঐ
বছরের মোট শক্তি উৎপাদনের ( ৪৯৫০ গিগা-ওয়াট ) প্রায়
২৭ শতাংশ ; আর বিদ্যুৎ উৎপাদন হয়েছে বিশ্ব-উৎপাদনের
প্রায় ২০ শতাংশ। বেশিরভাগ উত্পাদন হয়েছে জল-শক্তি থেকে,
তার পরেই আছে সৌর পি.ভি.। সারণী ৬ (ক) ও (খ)-এ কতকগুলি
বিশেষ বিশেষ সূচকে ২০১০ খ্রী-তে বিশ্বের বিভিন্ন রাষ্ট্রের
অবস্থান ( উপর থেকে প্রথম ৫ টি ) দেখানো হল।
২০১০ -খ্রী : বাৎরিক
সংযুক্তি (উপর থেকে ৫টি দেশ)
২০১০ -খ্রী শেষ
: বর্তমান ক্যাপাসিটি (উপর থেকে ৫টি দেশ)
[ দ্রষ্টব্য :
পদ-বিভাগ করা হয়েছে শক্তি বা জৈব-জ্বালনির উৎপাদনের
মূল (absolute)
পরিমাণ থেকে, জন-প্রতি পরিমাণ ভিন্ন হবে ;
জলবিদ্যুত্-এর বেলায় শক্তি-ধারকত্ব (গিগা-ওয়াট) নেওয়া
হয়েছে, উত্পাদিত ইউনিট (টেরা-ওয়াট-ঘণ্টা) নয় ;
রাষ্ট্রের 'ফিড-ইন' পলিসি হিসাবে ২০১০ খ্রী-তে ২০১১
খ্রী-র প্রথম কয়েক মাস ধরা হয়েছে ]
সারণী ৬ : কয়েকটি বিশেষ
সূচকে দেশগুলির অবস্থান, ২০১০ খ্রী।
২০১০ খ্রী-তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যত বিদ্যুত্-শক্তি
প্রয়োজন হয়েছে তা'র ২৫ শতাংশ এসেছে সবুজ শক্তি থেকে
; গার্হস্থ্য প্রাথমিক শক্তি উত্পাদনের প্রায় ১০.৯ শতাংশ
(তুলনায় পারমানবিক-শক্তির অংশ ১১.৩ শতাংশ) এসেছে সবুজ
শক্তি থেকে।
বায়ু-টারবাইন ও সৌর তাপীয়
সিস্টেম সংস্থাপনায় নেতৃত্বে রয়েছে চীন ; আর ২০১০ খ্রী-তে
জলবিদ্যুত্ উত্পাদন করেছে সব রাষ্ট্রের থেকে বেশি। রাষ্ট্র
মোট ২৬৩ গিগা-ওয়াটের মধ্যে গ্রিড-সংযুক্তি করেছে ২৯
মেগা-ওয়াট।
২০১০ খ্রী-তে চীনের সংস্থাপিত
মোট বিদ্যুত্-ক্যাপাসিটির ২৬ শতাংশ এসেছে সবুজ শক্তি
থেকে- যার ১৮ শতাংশ উত্পাদিত এবং ৯ শতাংশের বেশি অন্ত্যশক্তি
ব্যবহার।
ইয়োরোপীয় ইউনিয়নে সবুজ শক্তির
ভাগ প্রায় ৪১ শতাংশ ২০১০ খ্রী-র নূতন সংস্থাপিত বিদ্যুত্-এর
; সৌর পি.ভি,-র অংশ প্রায় অর্ধেক। মোট বিদ্যুত্ উৎপাদনে
সবুজ শক্তির অংশ ২০০৯ খ্রী-তে ছিল ২০ শতাংশ যার ৪২ শতাংশ
হল জলবিদ্যুত্ শক্তি।
জার্মানি ২০১০ খ্রী-তে তার
মোট অন্ত্যশক্তি ব্যবহারের ১১-শতাংশ নিতে পেড়েছে সবুজ
শক্তি থেকে, যার ১৬.৮ শতাংশ বিদ্যুত্, ৯.৮ শতাংশ তাপ
(মোটামুটি বায়োমাস থেকে) এবং ৫.৮ শতাংশ পরিবহনের জ্বালানিতে।
বায়ু- শক্তির (১০২ টেরা-ওয়াট-আওয়ার) অংশ মোট সবুজ-শক্তি
উত্পাদনের ৩৬ শতাংশ ; তারপরেই আছে বায়োমাস, জলশক্তি
এবং পি.ভি.।
স্পেন-এ অন্ত্যশক্তি উত্পাদনের
১৩.২ শতাংশ হল সবুজ-শক্তি, বিদ্যুত্ উত্পাদিত হয়েছে
৩২.৩ শতাংশ (তুলনায় ২০০৯ খ্রী-তে যথাক্রমে ৯.৩ এবং ২৬
শতাংশ)।
ভারত যুক্ত করেছে আনুমানিক
২.৭ গিগা-ওয়াট গ্রিড-সংযুক্ত শক্তি, ২০১০ খ্রী-তে, বেশিরভাগটাই
বায়ু-শক্তি থেকে ; তা' ছাড়া আছে মোট প্রায় ১৯ গিগা-ওয়াট
(জানিয়ারি, ২০১১) বায়োমাস, ছোট জলবিদ্যুত্ ও সৌর শক্তি।
তা'ছাড়া গ্রিডের বাইরে আছে বেশ কিছু সবুজশক্তি। বড় জলবিদ্যুত্
প্রকল্পগুলি উত্পাদন করেছে ২০১০ খ্রীর চাহিদার এক-চতুর্থাংশ,
অন্যান্য সবুজ-শক্তি যেখানে উৎপাদন করেছে ৪ শতাংশ।
(ক) বায়ু শক্তি
আগেই উল্লেখ করা
হয়েছে যে বিশ্বে ২০১০ খ্রী-তে মোট বায়ু-শক্তির ক্যাপাসিটি
হয়েছে ১৯৮ গিগা-ওয়াট। অন্ততঃ ৫১টি দেশ তাদের বর্তমান
ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি করেছে ২০১০ খ্রী-তে ; ৮৩টি দেশ বাণিজ্যিক
ভিত্তিতে এখন বায়ুশক্তি ব্যবহার করছে। ২০০৫ খ্রীর শেষ
থেকে ২০১০ খ্রীর শেষের মধ্যে বার্ষিক বিকাশ-বৃদ্ধি হয়েছে
গড়ে ২৭ শতাংশ।
যাহ হোক, ২০১০ খ্রী-তে বায়ু শক্তি বাজার মোটামুটি সুস্থির
ছিল ২০০৯-এ যুক্ত ক্যাপাসিটির একটু উপরে। এর কারণ নিরবিচ্ছিন্ন
অর্থনোতিক মন্দা মাঃ. য়ুক্তরাষ্ট্র এবং ইয়োরোপে এক অনিশ্চয়তা
এনে দিয়েছিল অর্থের যোগানে ও অনেক উন্নত রাজ্যে বিদ্যুতের
চাহিদা কমে গিয়েছিল। এর ফলে, এই প্রথমবার বায়ুর পরম্পরাগত
বাজার ত্যাগ করে নূতন বায়ু-প্রকল্প ধাবিত হয়েছিল উন্নয়নশীল
দেশগুলির দিকে।
অবশ্য এই অবস্থাতেও মার্কিন যুকত্রাষ্ট্রে ২০১০ খ্রী-র
শেষভাগে চালু হয়েছে বিশ্বের সর্ববৃহত্ বায়ু-ফার্ম- ০.৮
গিগা-ওয়াট।
সারণী ৭-এ বাজারের কয়েকটি উল্লেখযোগ্য বিকাশ দেখানো
হল।
সারণী
৭ : কয়েকটি উল্লেখযোগ্য রাষ্ট্র- বায়ু শক্তির বাজারের
বিকাশে।
বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রে বায়ুশক্তির বাজার খুলতে শুরু
করেছে। ল্যাটিন আমেরিকা ও কারিব্বীন-এ ২০১০ খ্রী-তে
মোট সংস্থাপিত ক্যাপাসিটি বেড়েছে ৫৪ শতাংশ ; ব্রাজিল
ও মেক্সিকো প্রত্যেকে যুক্ত করেছে প্রায় ০.৩ গিগা-ওয়াট।
তবে, বিশ্ব বায়ু-মানচিত্রে ল্যাটিন আমেরিকার অবস্থান
এখনও অনেক নীচে।একই অবস্থা আফ্রিকা ও মধ্য প্রাচ্যে
; এই অঞ্চলের অন্ততঃ ১১টি রাষ্ট্র ব্যবসায়িক ভিত্তিতে
বায়ুবিদ্যুত্ উত্পাদন শুরু করেছে। ঈজিপ্ট ২০১০ খ্রী-তে
যুক্ত করেছে ০.১ গিগা-ওয়াট, মোট স্থাপনা হয়েছে ৫৫০ মেগা-ওয়াট
; মরক্কো উদ্বোধন করেছে ডার সাডানে বায়ু প্রকল্প (১৪০
মেগা-ওয়াট) ; ইরান এখনও কিছু যুক্ত করেনি, তবে অনেকগুলি
প্রোজেক্ট (মোট ০.৯ গিগা-ওয়াট) হাতে নিয়েছে।
সৈকত-অঞ্চলে সমুদ্রে
বায়ুবিদ্যুত্ প্রকল্প
চিত্র ১৪ : সৈকতাঞ্চলে
সমুদ্রে বায়ু-বিদ্যুৎ।
যদিও এখনও পর্যন্ত মোট বায়ু
বিদ্যুত্ উৎপাদনের মধ্যে সৈকত-অঞ্চলের বায়ু-বিদ্যুত্-এর
দান সামান্য, তবে ২০১০ খ্রী-র শেষভাগে ১.২ গিগা-ওয়াট
থেকে বেড়ে হয়েছে ৩.১ গিগা-ওয়াট। বেশিরভাগই স্থাপিত হয়েছে
ইয়োরোপে (৩ গিগা- ওয়াট), সঙ্গে আছে চীন (০.১ গিগা-ওয়াট),
জাপান (০.০২ গিগা-ওয়াট)।
ইওরোপে নেতৃত্বে আছে যুক্তরাজ্য (১.২ গিগা-ওয়াট), তারপর
ডেনমার্ক (০.৯) এবং নেদারল্যাণ্ড (০.২)।
ছোট বায়ুবিদ্যুৎ প্রকল্প
[ (১) ছোট বায়ুবিদ্যুত্
পদ্ধতি বলতে বুঝায় ছোট ছোট টারবাইনের ব্যবগার যার দ্বারা
একটি গৃহ বা একটি ফার্ম বিদ্যুতায়িত হতে পারে।
(২) মার্কিন বায়ুশক্তি অ্যাসোসিয়েশন AWEA)
'ছোট বায়ুবিদ্যুত্' -কে ব্যাখ্যা করেছে ১০০ কিলো-ওয়াট
বা তার কম ক্যাপাসিটির। ]
দেখা যাচ্ছে ইতিমধ্যে
বহু দেশে (যেমন, কানাডা) কম্যুনিটি বায়ু বিদ্যুত্ প্রকল্প
বিষয়ে ঔত্সুক্য দেখা দিয়েছে। গ্রামীণ এলাকায় বিদ্যুতের
চাহিদা মেটাতে ছোট ছোট টারবাইন এবং গ্রিড-সংযুক্ত 'ইনভার্টার'
ব্যবহার বাড়তে শুরু করেছে, সঙ্গে আছে সরকারী অনুদান।
২০১০ খ্রী-তে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র যুক্ত করেছে প্রায়
০.০২ গিগা-ওয়াট ছোট বায়ু বিদ্যুত্ , যুক্তরাজ্যের ছোট
বায়ু বিদ্যুত্ বেড়ে হয়েছে ০.০৪ গিগা-ওয়াট ; আর চীনে
আনুমানিক ১.৫ মিলিয়ন গ্রামীণ মানুষ পাচ্ছে ছোট টারবাইন
থেকে বিদ্যুত্।
উপরের আলোচনা থেকে দেখা যাছে যে পুনর্নবীকরণ শক্তি উত্সগুলির
মধ্যে বায়ু শক্তি একটি বিশেষ স্থান করে নিচ্ছে। ২০১১
খ্রী-র প্রথমে বিশ্ব বিদ্যুত্ চাহিদার প্রায় ২.৫ শতাংশ
মেটাচ্ছে বায়ু বিদ্যুত্ ; তার মধ্যে ইয়োরোপীয় ইউনিয়নের
অবস্থা বিশেষভাবে উল্লেখ্য : ই. ইউ.-র মোট চাহিদার ৫.৩
শতাংশ ; ডেনমার্ক- ২২, পোর্তুগাল- ২১, স্পেন- ১৫.৪,
আয়ারল্যাণ্ড- ১০.১ এবং জারমানি- ৬ শতাংশ। আর, জার্মানির
৪টি প্রদেশ তাদের চাহিদার ৪০ শতাংশেরও বেশি মেটাচ্ছে
বায়ু শক্তি থেকে।
২০১১ খ্রী-র প্রথম দিকে
বেশ কিছু চালু প্রকল্প রূপায়ণের বিভিন্ন স্তরে রয়েছে।
যেমন,
চীন প্রকল্প নিয়েছে ২০১১ ও ২০১২ তে ৩০ গিগা-ওয়াটেরও
বেশি স্থাপনা করবে ;
মাঃ. যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্যে ২০১১ খ্রী-তেই কাজ
শুরু হয়ে গেছে যথাক্রমে ৫.৬ ও ১.৯ গিগা-ওয়াট যুক্ত করার
;
বসনিয়া (প্রথম বায়ু-ফার্ম) ও রুমানিয়া ২০১০ খ্রী-তে
তৈরি শুরু করেছে যা' হয়ে দাঁড়াবে ইয়োরোপের সব থেকে বড়
বায়ু-ফার্ম ;
উত্সাহজনক সংকেত পাওয়া যাচ্ছে ল্যাটিন আমেরিকা (বিশেষতঃ
আর্জেণ্টিনা, ব্রাজিল, চিলি, কোস্টারিকা, মেক্সিকো,
নিকারাগুয়া ও উরুগুয়ে) এবং আফ্রিকা (যেখানে অনেক প্রজেক্টের
কাজ শুরু হয়ে গেছে বা পরিকল্পনা-স্তরে রয়েছে যেমন, ঈজিপ্ট,
ইথিয়োপিয়া, কিনিয়া (০.৩ গিগা-ওয়াট লেক তুর্কানা প্রকল্প),
মরক্কো (০.৭ গিগা-ওয়াট), নাইজেরিয়া, টিউনিসিয়া ও তানজানিয়া)।
(খ) সৌর পি. ভি.
সৌর পি. ভি. কোম্পানীগুলি
২০১০ খ্রীষ্টাব্দে উত্পাদন করেছে রেকর্ড ২৪ গিগাওয়াট
পি. ভি. কোষ যা, ২০০৯ খ্রী-র দ্বিগুণ। ২০০০ খ্রীস্টাব্দে
উত্পন্ন হয়েছিল মাত্র ২৭৭ মেগাওয়াট, যার থেকে এটা ১০০
গুণেরও বেশি। এইসব কোষ সংস্থাপিত হয়েছে ২০১০ খ্রী-তে
১০০-টির বেশি দেশে, উত্পাদিত হচ্ছে ১৬ গিগাওয়াট (এটাও
একটি রেকর্ড)। সব মিলিয়ে সারা বিশ্বে সৌর পি. ভি. সংস্থাস্পনা
হল ৪০ গিগাওয়াটের মতো (চিত্র ১৫)- যা উন্নত দেশের ১৪
মিলিয়ন গৃহতে বিদ্যুত্-শক্তি যোগাতে পারে।
চিত্র
১৫ ; সৌর পি. ভি. ক্যাপাসিটি ২০০৪-২০১০ খ্রী।
২০১০ খ্রী-তে পি.
ভি. মডিউল নির্মাণ হয়েছে ২০ গিগা-ওয়াটের মতো। মডিউলের
মূল্য কমে গিয়েছে (@#$* ১.৮-১.৩ প্রতি পিক ওয়াটে) এবং
কেলাসিত কোষ (@#$*) বাজারে আধিপত্য লাভ করে। অবশ্য পাশাপাশি
পাতলা-ফিল্ম কোষ রেকর্ড উত্পাদন করেছে (৩.২ গিগা-ওয়াট)।
২০০৫ খ্রী-র পর এই প্রথম বাজারে 'পাতলা ফিল্ম' @#$*-এর
অংশ কমের দিকে (২০০৯-এ ১৭ শতাংশ থেকে ২০১০-এ ১৩ শতাংশ),
যদিও বিক্রী বাড়তির দিকে। পি. ভি.-র বাজার বৃদ্ধির কারণগুলি
হল মূল্য-হ্রাস, নূতন নূতন ব্যবহার, শক্তিশালী লগ্নী-বাজার,
এবং শক্তপোক্ত রক্ষণ-পলিসি ; অবশ্য সঙ্গে আছে কোনও কোনও
দেশে ক্রমবর্ধমান মাশুলের ব্যবস্থা।
বিশ্ব পি. ভি. বাজারে আধিপত্য করছে ইয়োরোপিয় ইউনিয়ন,
বিশ্বে নূতন ১৩.২ গিগা-ওয়াট সংযুক্তির ৮০ শতাংশ অংশ
নিয়ে ; তারমধ্যে জারমানি (৭.৪ গিগা-ওয়াট), ইতালি (২.৩),
চেক রিপাবলিক (১.৫), ফ্রান্স (০.৭) গিগা-ওয়াট উল্লেখযোগ্য।
২০১১-র প্রথম তিন মাসে জারমানি উত্পাদন করেছে ২.৭৫ টেরা-ওয়াট-আওয়ার
যা ২০১০-এর ঐ সময়ের থেকে ৮৭ শতাংশ বেশি।
২০১০ খ্রী-তে ইয়োরোপের বাইরে বড় বড় বাজার হল- জাপান
(প্রায় ১.০), মাঃ. য়ুক্তরাষ্ট্র (০.৯), চীন (০.৬) ও
অস্ট্রেলিয়া (০.৩) গিগা-ওয়াট। ২০০৯ খ্রী-র তুলনায়
জাপান ও মাঃ. যুক্তরাষ্ট্রের বাজার বেড়েছে প্রায় দ্বিগুণ
; আর অস্ট্রেলিয়ার বাজার চারগুণ।
সুবিধাজনক সোজাসুজি পি. ভি প্ল্যাণ্ট
(utility
scale p. v.
)
[ চীন-এ সুবিধাজনক সোজাসুজি
পি. ভি প্ল্যাণ্টের নির্ধারিত পরিমাপ হল ২০০ কিলো-ওয়াটের
বেশি। ]
সুবিধাজনক সোজাসুজি পি. ভি প্ল্যাণ্টগুলির ব্যাবহার
২০১০ খ্রী-তে অব্যাহত ছিল ৫,০০০-এর বেশি প্ল্যাণ্ট (৩
গিগা-ওয়াট) নিয়ে (২০০৯-এ ছিল ৩,২০০), ২০১০-এর শেষে এর
মোট ক্যাপাসিটি হল ৯.৭ গিগা-ওয়াট। এক্ষেত্রেও ই. ইউ.
নেতৃত্বে রয়েছে বছরের শেষ অবধি, মোট বিশ্ব ক্যাপাসিটির
৮৪ শতাংশ নিয়ে, তার মধ্যে স্পেন-এর অংশ হল ৩২ শতাংশ,
জার্মানি ২৬, ইতালি ১৬, মাঃ. য়ুক্তরাষ্ট্র ৭ এবং চেক
রিপাবলিক ৬ শতাংশ।
সুবিধাজনক সোজাসুজি পি. ভি প্ল্যাণ্টগুলির ব্যাবহার
দেখা যাচ্ছে (২০১১ খ্রী-র গোড়ায়) বুলগেরিয়া, চীন, ঈজিপ্ট,
ভারত, ইজরায়েল, মালি, থাইল্যাণ্ড ও আবু ঢাবি- সহ অন্ততঃ
৩০টি রাজ্যে।
২০১০ খ্রী-র শেষে বিশ্বের সবথেকে বড় পি. ভি. প্ল্যাণ্ট
চালু আছে কানাডা-র অণ্টারিয়ো-প্রদেশের সারনিয়া প্রোজেক্ট
যার দ্বারা ১২,০০০ গৃহ বিদ্যুতায়িত করা যাচ্ছে।
(গ) কেন্দ্রীভূত সৌর পি.ভি. প্রকল্প
কেন্দ্রীভূত সৌর পি.ভি.
(CPV)-র প্রতি ঔত্সুক্য ক্রমবর্ধমান- ২০১১-র শুরুতে
০.০২ গিগা-ওয়াট গ্রিডে সংযুক্তি দিয়ে। ঔত্সুক্য বাড়ছে
অনেকগুলি একত্রীভূত গৃহে পি. ভি. ব্যবহারের প্রোজেক্ট-এ,
যার মধ্যে অদ্যাবধি সবথেকে বড় প্রোজেক্ট হল চীন-এ।
আজ সংস্থাপিত পি.
ভি. ক্যাপাসিটির বেশিরভাগটাই গ্রীড-সংযুক্ত। প্রতিনিয়তই
গ্রীড-মুক্ত ক্যাপাসিটি কমছে, যদিও উন্নয়নশীল দেশগুলিতে
এই বিষয়ে যথেষ্ট ঔত্সুক্য রয়েছে। অস্ট্রেলিয়ায় প্রায়
৭০ শতাংশ পি.ভি হল দূরদূরান্তের গৃহ, ফার্ম, ইত্যাদিতে
যার মধ্যে আছে দেশের সর্ববৃহত্ পি. ভি. নজরদারী-যন্ত্র
(Tracker) রয়েছে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ায়।
(ঘ) জলবিদ্যুত্
২০১০ খ্রী-র শেষভাগে জলবিদ্যুত্
প্রকল্প চালু আছে ১৫০টির মতন রাজ্যে- আনুমানিক ৩০ গিগা-ওয়াট
ক্যাপাসিটি যুক্ত হয়েছে ২০১০ খ্রী-তে, যার ফলে বিশ্ব
ক্যাপাসিটি দাঁড়িয়েছে ১,০১০ গিগা-ওয়াট।
উপর সারির প্রথম ৫টি রাষ্ট্র হল চীন, ব্রাজিল, মাঃ.
য়ুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও রাশিয়া- সকলে মিলে বিশ্ব-ক্যাপাসিটির
৫২ শতাংশ দিচ্ছে। ২০১০-এ চীন যুক্ত করেছে ১৬ গিগা-ওয়াট
(মোট জলবিদ্যুত্ ক্যাপাসিটি ২১৩ গিগা-ওয়াট),
ব্রাজিল (৫ গিগা-ওয়াট)- মোট ক্যাপাসিটি ৮০.৭, কানাডা
০.৫ (মোট ৭৫.৬) গিগা-ওয়াট।
কানাডা-তো 'বেস-লোড' হিসাবে জলবিদ্যুত্কে ব্যবহার করে।
অঞ্চল হিসাবে বিশ্বে নেতৃত্বে আছে এশিয়া, তারপরে ইয়োরোপ,
উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকা, আর আফ্রিকা আছে পঞ্চম স্থানে।
(ঙ) একাগ্রীভূত সৌর তাপীয় শক্তি
(CSP)
বেশ কয়েক বছর চুপচাপ
থাকার পর, ২০০৭ থেকে ২০১০ খ্রী-র শেষ পর্যন্ত একাগ্রীভূত
সৌর তাপীয় শক্তি বাজারে যুক্ত করেছে ৭৪০ মেগা-ওয়াট।
এর মধ্যে প্রায় ৪৭৮ মেগা-ওয়াট যুক্ত হয়েছে ২০১০ খ্রী-তে
; ফলে মোট বিশ্ব- ক্যাপাসিটি হল ১.০১ গিগা-ওয়াট। অধিবৃত্তাকার
পাত্র (parabolic trough
)ব্যবহৃত
হয়েছে সব থেকে বেশি (শতকরা ৯০ প্রোজেক্টে)। সৌরশক্তির
মূল্য বিষয়ে বিশেষ সরকারী ডিক্রীর ফলে স্পেন-এর ব্যবসায়ে
সজীবতা দেখা যায় এবং ২০১০ খ্রী-তে ৪০০ মেগা-ওয়াট যুক্ত
হয় (মোট ক্যাপাসিটি দাঁড়ায় ৬৩২ মেগা-ওয়াট।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২০১০ খ্রী শেষ করলো মোট ক্যাপাসিটি
৫০৯ মেগা-ওয়াট নিয়ে ; ২০১০-এ ফ্লরিডায় একটা কয়লা খনির
সংযুক্তি হিসাবে ২ মেগা-ওয়াট এবং ৭৫ মেগা-ওয়াট- একটি
সম্পুরিত-গ্যাস মিলিত চক্র প্ল্যাণ্ট।
স্পেন-এ ২০১১-র প্রথম দিকে উদ্বোধন হল একটি ৫০ মেগা-ওয়াট
প্ল্যাণ্ট ; মরক্কো ও ঈজিপ্ট-এ যথাক্রমে ২০ মেগা-ওয়াট
CSP/ প্রাকৃতিক গ্যাস সংকর প্ল্যাণ্ট ও ২০ মেগা-ওয়াট
CSP/সংকর প্ল্যাণ্ট।
মনে করা হচ্ছে, CSP-র বিকাশ আরও দ্রুতগতিতে ঘটবে। এপ্রিল
২০১১-তে স্পেন-এ নির্মাণ-পর্যায়ে রয়েছে একটি ৯৪৬ মেগা-ওয়াট
প্ল্যাণ্ট যাকে নিয়ে মোট ১,৭৮৯ মেগা-ওয়াট চালু হবে ২০১৩
খ্রী-তে। ২০১১ খ্রী-র গোড়ার দিকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে১.৫
গিগা-ওয়াট অধিবৃত্তাকার পাত্র-সহ বিদ্যুত্কেন্দ্র স্থাপনার
কাজ শুরু হয়েছে এবং আরও ৬.২ গিগা-ওয়াট ক্যাপাসিটির জন্য
চুক্তি সাক্ষরিত হয়েছে। শেষোক্ত প্রজেক্টের জন্য ফেডারেল
জমি ও ঋণ পাওয়া যাচ্ছে, রাজ্যের নানা সাহায্য ছাড়াও।
ঔত্সুক্য দেখা যাচ্ছে উত্তর আফ্রিকা ও মধ্য প্রাচ্যে।
সংযুক্ত আরব এমিরেট-এর ১.২ গিগা-ওয়াট প্রকল্প ছাড়াও
২ গিগা-ওয়াট সৌর-শক্তির প্রস্তাব রয়েছে আলজেরিয়া, ঈজিপ্ট,
জরডন, তিউনিসিয়া, এবং মরক্কো-তে ।
সৌর পি. ভি-র মূল্য নাটকীয়ভাবে কমে যাওয়াতে (অন্ততঃ
মাঃ. যুক্তরাষ্ট্রে) CSP-র বাজার চ্যালেঞ্জের সামনে
পড়েছে। অবশ্য অনেকের মতে তাপীয় ভাণ্ডার এবং সত্বর সম্পাদনের
ক্ষমতার জন্য CSP-র চাহিদা কমবে না।
(চ) ভূতাপীয় শক্তি
২০১০ খ্রী-র শেষাশেষি মোট
বিশ্ব সংস্থাপনা দাঁড়িয়েছিল ১১ গিগা-ওয়াটের কিছু বেশি
(২০০৯-এ ছিল ২৪০ মেগা-ওয়াট) এবং সে বছর ভূতাপীয় শক্তি
উৎপন্ন হয়েছিল ৬৭.২ টেরা-ওয়াট-আওয়ার। ভূতাপীয় শক্তির
যথার্থ বিকাশে অন্তরায় হল 'গর্ত করার যন্ত্র ও তার পরিকাঠামো'
(ড্রিলিং রিগ) এবং সুযোগ্য কর্মীর অভাব। হিসাব করে দেখা
গেছে যে শুধুমাত্র মাঃ. যুক্তরাষ্ট্রেই ২০১৩ খ্রী-তে
ড্রিলিং রিগ-এর প্রয়োজন হবে দেড়গুণ। ছোট ক্যাপাসিটি
অথচ বিশাল বিকাশের সম্ভাবনা নিয়ে আছে এল সালভাডর, গুয়াতেমালা,
পাপুয়া নিউগিনি এবং পোর্তুগাল।
২০১০ খ্রী-তে তিনটি সুবৃহৎ প্ল্যাণ্ট চালু হয়েছিল :
নিউ জিল্যাণ্ড- ০.১ গিগা-ওয়াট (অদ্যাবধি সর্ববৃহত্ একদণ্ডী
(Single Shaft) টারবাইন প্রোজেক্ট), ইতালি- ০.০৪ গিগা-ওয়াট,
কিনিয়া- ০.০৪ এর একটু কম। এছাড়া কিনিয়া তার মোট স্থাপনা
করেছে ০.১ গিগা-ওয়াট (আফ্রিকায় সব থেকে বড়)। ঐ বছর তুরস্ক
এবং মেক্সিকো, দুটি দেশই তাদের ক্যাপাসিটি বাড়িয়েছে।
২০১১ খ্রী-র প্রথমদিকে বিশ্বে ভূতাপীয় শক্তিকেন্দ্রের
সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ২৪টি ; কিন্তু বিশ্ব ক্যাপাসিটির বেশি
অংশটাই স্থাপিত হয়েছে ৮টি দেশে- মাঃ. য়ুক্তরাষ্ট্র (৩.১
গিগা-ওয়াট), ফিলিপিনস (১.৯), ইন্দোনেশিয়া (১.২), মেক্সিকো
(১-এর একটু কম), ইতালি (০.৯), নিউ জিল্যাণ্ড (প্রায়
০.৮), আইসল্যাণ্ড (০.৬) এবং জাপান (০.৫) গিগা-ওয়াট।
জনপ্রতি উত্পাদন ধরলে আইসল্যাণ্ড আছে নেতৃত্বে, মোট
বিদ্যুত্ উত্পাদনের ২৬ শতাংশ ভূতাপীয়-শক্তি নিয়ে।
ভূতাপীয়-শক্তির বাজার বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে গবেষণায় লগ্নী
বৃদ্ধি হচ্ছে ; মাঃ. যুক্তরাষ্ট্রের ১৫টি রাজ্যে এর
বিকাশ বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। আগামী ৫ বছরে ৪৬টি রাজ্য
ভূতাপীয়-শক্তি ব্যবহারে সচেষ্ট হয়েছে। ২০১০ খ্রী-র শেষভাগে
জারমানিতে ১৫০ প্রোজেক্ট বিকাশের বিভিন্ন স্তরে রয়েছে
; সঙ্গে রয়েছে চিলি (০.২), কস্টা রিকা (০.৪), ভারত (প্রায়
০.৩) এবং যুক্তরাজ্য (০.০১) গিগা-ওয়াট।
(ছ) মহাসাগর-শক্তি প্রযুক্তি
ও বাণিজ্যিকরণ
যদিও বাণিজ্যিকরণ প্রক্রিয়া
এখনও হয়নি, ২০১০ খ্রী থেকে কিন্তু যথেষ্ট কার্যকলাপ
শুরু হয়েছে ভবিষ্যত্ বাজারের আশায়। ২০১০ খ্রী-তে ১০০টির
বেশি প্রোজেক্ট- মোট ১ গিগা-ওয়াটের, হাতে নেওয়া হয়েছে
যা' বিকাশের বিভিন্ন স্তরে রয়েছে। সৈকতের অদূরে সমুদ্রগর্ভে
পরীক্ষা- নিনীক্ষার ব্যবস্থা করা হয়েছে যুক্তরাজ্য,
ডেনমার্ক, সুইডেন ও কানাডা-তে। আর নূতন বিকাশের ক্ষেত্র
প্রস্তুত হয়েছে/হচ্ছে পোর্তুগাল, স্পেন, নরওয়ে, আয়ারল্যাণ্ড
এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
বর্তমানে মহাসাগর-শক্তি প্রযুক্তির আপেক্ষিক অপরিণত
অবস্থার জন্য বিস্তৃতভাবে গবেষণা ও বিকাশের কাজ চলছে,
ব্যবসায়িক প্রয়োজন মাথায় রেখে। যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া
ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে 'পয়েণ্ট অ্যাব'সর্বার' (Point
absorber) প্রণালী নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে, যদিও
এটা ছোট ঢেউ-এর জন্য প্রযোজ্য। 'লিনিয়ার অ্যাব'সর্বার
(linear absorber ) , যা' বড় ঢেউ-এর জন্য প্রযোজ্য এবং
ঢেউ-এর সমান্তরাল ভাবে কাজ করে, তাকে নিয়েও সমুদ্রে
পরীক্ষা হয়েছে। গবেষণা হচ্ছে অন্যান্য প্রত্যয় নিয়ে
যথা, 'টারমিনেটার'(terminator) এবং 'অসিলেটিং ওয়াটার
কলাম' (oscillating water column) । প্রথমগুলি আগত ঢেউকে
সামনাসামনি গ্রহণ করে নিঃশেষ করে ; দ্বিতীয়টি আগত ঢেউ
দ্বারা বায়ু পেষিত করে জেনারেটরকে চালায়।
একই ধরণের প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয় জোয়ার-ভাঁটা থেকে বিদ্যুত্
উত্পাদনে। বিগত ৪ বছরে আনুভ্যূমিক অক্ষ টারবাইন ব্যবহার
করেছে বেশ কিছু ইয়োরোপ ও উত্তর আমেরিকার কোম্পানি এবং
একটি 'আন্দোলিত হাইড্রোফয়েল' (oscillating hydrofoil)-এর
প্রোটোটাইপ নিয়ে পরীক্ষা করা হয়েছে ২০০৯ খ্রী-তে। উল্লম্ব-অক্ষ
টারবাইন নিয়ে বর্তমানে পরীক্ষা চলছে।
উপরিউক্ত গবেষণার খাতে অর্থ যোগান দিচ্ছে মোটামুটি বিভিন্ন
রাজ্যের সরকার, যেমন ইয়োরোপ, উত্তর আমেরিকা ও দক্ষিণ
কোরিয়া। হালে এগিয়ে এসেছে বেলজিয়াম, কানাডা, আয়ারল্যাণ্ড,
পোর্তুগাল, দক্ষিণ কোরিয়া এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র।
ঢেউ ও জোয়র-ভাঁটা নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি অন্যান্য প্রযুক্তি-
যথা তাপীয়-নতি @#$* এবং লবণত্ব-নতি থেকে শক্তি আহরণ,
নিয়ে গবেষণা চলছে।
(জ) বায়োমাস
বায়োমাস-এর সবিশেষ
ব্যাবহার দৃষ্ট হয় ২০১০ খ্রী-তে, ইয়োরোপের কিছু দেশে,
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এবং চীন, ভারত ও কিছু উন্নয়নশীল
রাজ্যে। বিশ্বে ২০১০ খ্রী-র শেষে, মোট ক্যাপাসিটি ছিল
৬২ গিগা-ওয়াট।
২০১০-এ শক্তি উত্পাদনের শীর্ষে থাকা মাঃ. য়ুক্তরাষ্ট্র
ঐ বছর উত্পদন করেছে ০.৩ গিগা-ওয়াট (মোট ক্যাপাসিটি হল
১০.৪ গিগ-ওয়াট (মিউনিসিপাল-বর্জ ছাড়া) এবং প্রায় ৪৮
টেরা-ওয়াট-আওয়ার। জ্বালানি হল কাঠ ও কৃষি-বর্জ এবং কালো
মদ। ঐ বছরে জমি-ভরাট-গ্যাস landfill gas থেকে শক্তি
উত্পাদন হয়েছে ৮ টেরা-ওয়াট-আওয়ার।
ইউ.-র বায়োমাস থেকে বিদ্যুত্ উত্পাদন বেড়েছে ১০.২ শতাংশ,
২০০৮ খ্রী-তে ৭৯.৩ টেরা-ওয়াট-আওয়ার থেকে ২০০৯-এ ৮৭.৪
টেরা-ওয়াট-আওয়ার। এর মধ্যে কঠিন বায়োমাস-এর অবদান ৭১
শতাংশ, বাকীটা বায়োগ্যাস।
ইউ.-তে বিদ্যুত্ ও তাপের জন্য বায়োমাসের ব্যবহার বৃদ্ধি
পেয়েছে উত্সাহব্যাঞ্জক নীতির জন্য। মোটামুটি ৮০০টি কঠিন
বায়োমাস প্ল্যাণ্ট (আনুমানিক ৭.১ গিগা-ওয়াট) চালু আছে
ইয়োরোপে (২০১০ খ্রী-তে)
বায়োগ্যাস
: বায়োগ্যাস উৎপন্ন করা যায় ভরাট-জমি থেকে মিথেন বন্দী
করে (landfill gas ) অথবা নগরের বর্জজল ও বহিপ্লাবী
বিশ্লেষ প্ল্যাণ্ট (effluent treatment plant) থেকে,
অথবা কৃষি-বর্জ, গৃহস্থালীর সবুজ-বর্জ, খাদ্য- প্রক্রিয়া
বর্জ থেকে।
২০০৯ খ্রী-তে ইয়োরোপের তিনটি উপরের সারির রাজ্য হল জারমানি,
সুইডেন ও যুক্ত রাজ্য যারা সম্মিলিতভাবে বায়োগ্যাস দিয়ে
অঞ্চলের ৫০ শতাংশ বিদ্যুৎ উৎপাদন করেছে। অন্যান্য উৎসাহী
রাজ্যগুলি হল ফিনল্যাণ্ড, স্পেন, ইতালি এবং নেদারল্যাণ্ড।
জারমানির মোট শক্তি
উৎপাদন, বায়োমাস থেকে, গত দশকে বেড়েছে ২২ শতাংশের বেশি-
২০১০ খ্রী-তে প্রায় ২৮.৭ টেরা-ওয়াট-আওয়ার, মোট ক্যাপাসিটি
৪.৯ গিগা-ওয়াট ঔ যার মধ্যে বায়োগ্যাস প্রধান (২০ শতাংশ
বেড়েছে ২০১০ খ্রী-তে, ৪.৩ মিলিয়ন গৃহকে করেছে পূর্ণ
বিদ্যুতায়িত)। ২০১১-র প্রথমে জারমানির মোট শক্তি ব্যবহারের
৫.৫ শতাংশ হল জৈব-শক্তি।
ব্রাজিলের বায়োমাস
শক্তি ক্যাপাসিটির প্রায় পুরোটাই 'যুক্ত-উৎপাদন' (cogeneration)
; ২০১০খ্রী-র শেষে যা হয়েছিল ৭.৮ গিগা-ওয়াট, বিদ্যুত্
উত্পাদন হয়েছে ২৮ টেরা-ওয়াট-আওয়ার। বেশিরভাগ উৎপাদন
এসেছে চিনিকলের যুক্ত-তাপ ও বিদ্যুত্ (CHP) প্ল্যাণ্ট
থেকে, আঁখের ছিঁবড়েকে (bagasse) ব্যবহার করে। ২০১০ খ্রী-র
শস্যসংগ্রহকালে শুধুমাত্র আঁখের ছিঁবড়ে থেকে ১৮.৫ টেরা-ওয়াট-আওয়ার
বিদ্যুত্ উৎপাদন হয়েছে। বায়োমাস শক্তি উৎপাদনে যথেষ্ট
কৌতুহলি হয়েছে দক্ষিণ আমেরিকার আরও রাজ্য যথা, কস্টারিকা,
উরুগুয়ে এবং মেক্সিকো।
জাপান উৎপাদন করেছে
বায়োমাস থেকে, ১০ টেরা-ওয়াট-আওয়ার, ২০১০ খ্রী-তে, কয়লার
সঙ্গে যুক্ত-জ্বালানী না করে। ২০১০ খ্রী-তে চীন-এর ক্যাপাসিটি
বেড়েছে ২৫ শতাংশের মতো (হয়েছে ৪ গিগা-ওয়াট), আখেঁর ছিঁবরের
সঙ্গে কঠিন বায়োমাস, জৈব বর্জ ও বায়োগ্যাস (পশুধন বর্জসহ)
ব্যবহার করে।
ভারতে শক্তি-উৎপাদনে
বায়োমাস ব্যবহৃত হয় তিনটি সাধারণ প্রয়োগ থেকে- গ্রিড-সংযুক্ত
বায়োমাস বিদ্যুত্কেন্দ্র, গ্রিড-মুক্ত বিভাজিত- বায়োমাস
বিদ্যুত্ প্রয়োগ এবং চিনিকল বা অন্যান্য শিপের মধ্য
দিয়ে যুক্ত-উত্পাদন।ভারত ২০১০ খ্রী-তে যুক্ত করেছে ০.৩
গিগা-ওয়াট, বছরের শেষে ক্যাপাসিটি হল ৩ গিগা-ওয়াট।
থাইল্যাণ্ড যুক্ত
করেছে ০.০০৩ গিগা-ওয়াট (বছরের শেষে ক্যাপাসিটি হল ১.৩
গিগা-ওয়াট)। মালয়েশিয়াতেও দেখা যাচ্ছে বায়োগ্যাস ব্যবহারে
বিশেষরকম প্রসার।
আফ্রিকাতে যথা,
ক্যামেরুন, কিনিয়া, তানজানিয়া ও উগাণ্ডায় হয় বায়োমাস-ক্যাপাসিটি
আছে অথবা প্রস্তাব-স্তরে রয়েছে। বায়োগ্যাস প্রকল্প (বিশেষতঃ
ভরাট-জমির গ্যাস) তৈরি শুরু হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা, ঈজিপ্ট,
তিউনিসিয়া এবং জরডন-এ।
(ক্রমশঃ)
শঙ্কর
সেন