হরিপ্রভা তাকেদার জাপানযাত্রা ও এক অনন্য উপাখ্যান

হরিপ্রভা তাকেদার জাপানযাত্রা ও এক অনন্য উপাখ্যান

হরিপ্রভা ও উয়েমন তাকেদা অন্তর্জাল থেকে নেওয়া ছবি

শুরুর কথা:

সময়টা তখন উনিশ শতক। জাপান থেকে এক সুপুরুষ জীবিকার সন্ধানে ভারতবর্ষে এলেন। জাপান তখনও আজকের জাপান হয়ে ওঠেনি। তার গায়ে লেগে রয়েছে বেকারত্ব, অশিক্ষার যন্ত্রণা। ভাগ্যের অন্বেষণে উয়েমন তাকেদা অর্থাৎ সেই সুপুরুষ ভারতবর্ষে এলেন। অবিভক্ত ভারতের ঢাকায় প্রথম এসে পৌঁছেছিলেন উয়েমন তাকেদা। এক স্বপ্নতাড়িত যুবক। উয়েমন ছিলেন সাবান তৈরির কারিগর। তৎকালীন ঢাকার ‘বুলবুল সোপ ফ্যাক্টরি’তে প্রথমে কাজ করতে শুরু করেন। ঢাকার মেসবাড়ি তাঁর ঠিকানা। গাদাগাদি করে থাকা, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করার যুদ্ধ, তার মধ্যেও জীবনের সঙ্গে ভাব জমাতে শুরু করেছিলেন উয়েমন। ইতিবাচক, উৎসাহী মন ছিল তাঁর। ঢাকার ওই অঞ্চলে তখন আপাত-নিস্তরঙ্গ সমাজ। উয়েমনের মন কোনো একটা বিশেষ কাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য ছটফট করছে। মফসসলের একঘেয়েমি কাটাতেই তিনি যুক্ত হন ব্রাহ্মসমাজের সঙ্গে। এখানে আলাপ হয় নগেন্দ্রবালা মল্লিকের সঙ্গে। নগেন্দ্রবালা মল্লিক ব্রাহ্মসমাজের পরিচালনাধীন ঢাকা উদ্ধার আশ্রমের সেবিকা ছিলেন। নগেন্দ্রবালার মেয়ে হরিপ্রভা মল্লিক। ঢাকা উদ্ধার আশ্রমে মায়ের সঙ্গে নিত্য যাতায়াত করতেন হরিপ্রভা। ব্রাহ্মসমাজে মেয়েদের কাজের জন্য পথ প্রশস্ত ছিল। হরিপ্রভারও আশ্রমে আসতে ভালো লাগত। ব্রাহ্মসমাজের ঔদার্য হরিপ্রভার এই আসার পথ মসৃণ করে। তখন তিনি যাতায়াত শুরু করেছেন আশ্রমে। পানপাতা মুখ, দিঘির মতো চোখ, শান্ত স্বভাবের হরিপ্রভা উয়েমনের মন দখল করেন। তৎকালীন সমাজব্যবস্থার বিচারে ব্রাহ্মসমাজে মেয়েদের স্বাধীনতা অনেকটা বেশি ছিল। উয়েমন আর হরিপ্রভার মন দেওয়া-নেওয়া হয়েছিল অল্প সময়েই। বিয়েতেও কোনো বাধা ছিল না। ঢাকা শহরের নবসংহিতা রীতি মেনে বিয়ে হয় উয়েমন ও হরিপ্রভার। ১৯০৬ সালে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয় এই প্রেমিক-প্রেমিকাযুগল। বিয়ের কিছুদিন পর উয়েমন ‘ঢাকা সোপ ফ্যাক্টরি’ নামে নিজের সাবান তৈরির কারখানাও শুরু করেন।

 হরিপ্রভা তাকেদার জাপান যাত্রা:

কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে বিয়ের অব্যবহিত পরেই জাপান যাওয়া হয়ে ওঠেনি উয়েমন ও হরিপ্রভার। মনে মনে নিজের শ্বশুরবাড়ি দেখার ইচ্ছে লালন করেছেন হরিপ্রভা। সাদামাটা গৃহবধূ জাপানে যাওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ১৯১২ সালে অর্থাৎ বিয়ের ছ’ বছর পরে হরিপ্রভা তাকেদা জাপানযাত্রা করেন। খানিকটা ট্রেনে গিয়ে তারপর স্টিমারে করে পাড়ি দেন এই দম্পতি। নীল সাগরে ভেসে থাকার সময়টুকুতে নিজের সত্তার সঙ্গে পরিচয় ঘটে হরিপ্রভার। যাত্রাপথের খুঁটিনাটি হরিপ্রভা নিজের মনের ভেতরে সঞ্চয় করতে থাকেন। যাত্রাপথ এবং তার পরের প্রাত্যহিক নিস্তরঙ্গ জীবনে অক্ষরকে আশ্রয় হিসেবে গ্রহণ করতে শুরু করেন।

ঢাকা থেকে প্রথমে ট্রেনে নারায়ণগঞ্জ, তারপর স্টিমারে করে জাপান পৌঁছেছিলেন এই দম্পতি। ‌১৯১২ সালের শেষ দিক থেকে ১৯১৩— তাহলে শুরুর দিক পর্যন্ত অর্থাৎ প্রায় চার মাস হরিপ্রভা তাকেদা ছিলেন জাপানে। এই চার মাসের অভিজ্ঞতা নিয়েই তার রচিত ৫৭ পৃষ্ঠার বই ‘বঙ্গনারীর জাপানযাত্রা’। তিনি জাপানের বাইরের প্রথম এশিয়ার নারী, যিনি জাপান সম্পর্কে লেখা বই প্রকাশ করেছেন। বইটি আসলে এক গৃহবধূর কলমে স্বপ্নাতুর জাপান ভ্রমণ। উনিশ শতকের ওই সময়ে নারী কলমের রচনার কথা চিন্তা করাও যথেষ্ট কঠিন ছিল। যেখানে প্রতিনিয়ত নারীরা নিজেদের পড়াশোনার অধিকারের জন্য লড়াই করছিলেন, হরিপ্রভার স্বরচিত এই ভ্রমণগাথা নিঃসন্দেহে ব্যতিক্রমী। ঢাকা থেকে জাপান পর্যন্ত এই যাত্রাপথে হরিপ্রভা বার বার নিজেকে খুঁজেছেন। ১৯০ টাকা জাহাজ ভাড়া ও ৪৮ টাকা খোরাক খরচ দিয়ে জাহাজের টিকিট কেটেছিলেন হরিপ্রভা। যখন প্রথম স্টিমারে ওঠেন সেখানে থাকার জায়গা সুবিধের ছিল না। ছোট ঘর, ছয়শয্যার আঁটসাঁট ব্যবস্থার মধ্যে মানিয়ে নিতে হয়েছিল তাঁদের। যদিও পরবর্তীকালে তাঁদের থাকার ব্যবস্থা পালটে দেওয়া হয়। উয়েমন তাকেদার বিশেষ অনুরোধে এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল। যাত্রাপথে বেশ কয়েকদিন সিঙ্গাপুরগামী ৬০০ ছাগল-ভেড়ার ঘর ও জাহাজের ভাঁড়ার ঘর সংলগ্ন ঘরটিতেই থাকতে হয়েছিল হরিপ্রভাকে। ১৯১২ সালের ১৩ ডিসেম্বর রেঙ্গুন, পেনাং, সিঙ্গাপুর, হংকং, সাংহাই হয়ে জাপানের প্রথম বন্দর মসজিদে এসে পৌঁছেছিলেন হরিপ্রভা।

হরিপ্রভার স্বপ্নাতুর জাপান ভ্রমণ :

‘বঙ্গনারীর জাপানযাত্রা’ বইতে হরিপ্রভা নিজের জাপান ভ্রমণের স্বপ্নের কথা বার বার উল্লেখ করেছেন। উৎসাহ, আগ্রহে বিভোর হরিপ্রভা লিখেছেন, “আজ আমার বড়ই আনন্দ। কারণ জাপান রাজ্যে আসিয়াছি। এখানে ডাক্তার জাহাজের আরোহীদের পরীক্ষা করিলেন। আমরা নৌকো করে নেমে বেড়াতে গেলাম, জাপান দেখে বেশ আনন্দ হইল।”

সহজ, সাবলীল অথচ আন্তরিক বর্ণনা। তাকেদা দম্পতি তাঁদের গন্তব্য কোবি বন্দরে পৌঁছোন ১৫ ডিসেম্বর। জাপানে তখন প্রবল বৃষ্টি। হরিপ্রভার চোখে এই বৃষ্টি রঙিন। নতুন দেশ যেন তাঁর কাছে নানা রঙের সমাহার। তখন জাপান শহরের নিকাশি ব্যবস্থা অনুন্নত। বৃষ্টি হলে দুর্ভোগ সহ্য করতে হত জাপানবাসীদের। হরিপ্রভা লিখেছেন, “রাস্তায় ফুটপাত নাই, এ দেশের লোক বুগুরি নামক কাঠের খড়ম পরিয়া, বৃষ্টি ও বরফপাতের সময়ে চলাচল করে। বুগুরির তলার উচ্চ কাঠের দ্বারা মাটি উঠিয়া রাস্তায় প্রায় হাঁটু পর্যন্ত কাদা হয়। এরা উচ্চ হইতে উচ্চতর বুগুরি ব্যবহার করে, তাহাতে এদের কিছু আসে যায় না, কিন্তু জুতাধারীদের বড় বিপদ।”

জাপানবাসীদের কষ্ট তখন মিশেছে হরিপ্রভার বেদনাতুর কলমে। জাপানের সমাজব্যবস্থার সঙ্গে রীতিমতো একাত্ম হয়ে পড়েছিলেন হরিপ্রভা। নানা অনুভূতির চোরা পথ তৈরি হচ্ছে লেখিকার মনে। যেমন তৎকালীন জাপানিদের ভারতের মানুষ দর্শনের বর্ণনা করেছেন হরিপ্রভা। শুরুতে তা আনন্দদায়ক মনে হলেও পরবর্তীকালে তিনি যথেষ্ট বিরক্ত হয়েছেন। নিজেই লিখেছেন, “বৈকালে স্কুলের ছেলেমেয়েরা খেলিতে আসিত, তাহারা আমার দিকে তাকিয়ে থাকত, ভারতবর্ষীয়দের সঙ্গে সচরাচর তাহাদের দেখা হয় না। তাই রোজই তাহারা আমায় দেখিতে আসিত। প্রতিদিন এই রূপে আসিয়া আমায় অনেক সময় ব্যস্ত করিয়া তুলিত।” ভারতবর্ষের অধিবাসী অর্থাৎ ইন্দোজিন দেখার বিস্ময় লেগে থাকত সেই ছোট-ছোট ছেলে মেয়েদের চোখে-মুখে। হরিপ্রভা ধীরে ধীরে আবিষ্কার করেন নিজেকে ঘিরে অন্যকে এভাবে বিস্মিত করার ভেতর কোনো গর্ব নেই। তাই তা বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। তবে জাপানের খাদ্যাভ্যাস, পোশাক, সামাজিক আচার-আচরণ সবটুকুই নিজে বিস্ময়ের চোখে দেখেছেন হরিপ্রভা। চার মাস জাপানে থাকার সময় তিনি নাগোয়া, ইসে, টোকিও, নিক্কো এবং কিয়েতো ভ্রমণ করেন। প্রতিটি ভ্রমণ বর্ণনাই যথাযথ, আন্তরিক এবং নিবিড়। এক পরিপূর্ণ সমাজচিত্র। তবে এই বর্ণনায় যুক্ত হয়নি রাজনীতির কথা। যদিও ওই সময়টা জাপানের রাজনীতির ক্ষেত্রে তারপর্যপূর্ণ সময় বলে বিবেচিত। তখন সদ্য প্রয়াত হয়েছেন সম্রাট মুৎসুহিতো। শুরু হয়েছে অন্য সম্রাট তাইশোর শাসনব্যবস্থা। হরিপ্রভা তাকেদার রচনায় একমাত্র এই রাজনীতির পরিবর্তনের সময়কালের কোনো বিবরণ পাওয়া যায় না।

 ‘বঙ্গনারীর জাপানযাত্রা’ বইটির অনন্যতা ও শেষ কথা:

চার মাস জাপানে থাকার পর ১৯১৩ সালের ১২ এপ্রিল হরিপ্রভা তাকেদা ও উয়েমন তাকেদা ঢাকার উদ্দেশে কোবে থেকে জাহাজ ধরেন। পুত্রবধূকে বিদায় জানাতে এসে কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন শ্বশুর-শাশুড়ি। স্নেহপরায়ণ মানুষগুলোর সঙ্গে একাত্ম হয়ে থেকেছিলেন হরিপ্রভা। চার মাসের হরিপ্রভা যেন পরিপূর্ণ মানুষ হয়ে উঠেছিলেন। তাঁর রচনায় তিনি তেমন কথাই বলেছেন। পরিণত দৃষ্টিভঙ্গি দিয়ে জাপানের খুঁটিনাটি বিষয়গুলো দেখার চেষ্টা করেছিলেন। জাপানে সেই সময় পুরুষদের যুদ্ধের প্রশিক্ষণ নেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। হরিপ্রভাকে ব্যথিত করেছিল যুদ্ধের সম্ভাবনার সেই কটু গন্ধ। তিনি লিখেছেন, “এদেশে সকল উপযুক্ত অর্থাৎ ২১ বছর বয়স পূর্ণ হইলে শরীর নীরোগ থাকিলে সকল পুরুষকে যুদ্ধ শিখিতে হয়। এই সময় অধ্যয়ন শেষ না হইলে তৎপর ৪০ বছরের মধ্যে কলেজের পড়া শেষ হইলে যুদ্ধ শিখিতে বাধ্য করা হয়।” হরিপ্রভা তাকেদার রচনায় জাপানের প্রতি ভালোবাসা এবং সম্ভ্রমও উঠে এসেছে।

হরিপ্রভা তাকেদার ‘বঙ্গনারীর জাপানযাত্রা’ বইটিকে একটি অনন্যসাধারণ গ্রন্থ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ঐতিহাসিকরা বলেন, প্রথমত উনিশ শতকের নারী হিসেবে একটি গ্রন্থ রচনা করার পরিসর নিজেকে দেওয়ার ক্ষেত্রেই হরিপ্রভা অনেকখানি এগিয়েছিলেন। উনিশ শতকে নারীদের অবস্থান উন্নত ছিল না। নিজেদের অধিকার, পড়াশোনার অধিকার, অস্তিত্বের সঠিক পরিচয় পাওয়ার জন্য নারীরা তখন লড়াই করছে। এমনকী সহজে দেশের বাইরে যাওয়ার কথাও ভাবতে পারত না তারা। সেই দিক থেকে হরিপ্রভা সাহসিনী ছিলেন।

এই গ্রন্থটির অনন্যতার আরেকটি কারণ এটি প্রকাশের সময়কাল। ১৯১৫ সালে ঢাকা থেকে প্রকাশ পেয়েছিল বইটি। সময়ের মাপকাঠিতেও ‘বঙ্গ নারীর জাপানযাত্রা’ বইটিকে নির্দ্বিধায় বাংলা ভাষায় প্রকাশিত জাপান সম্পর্কিত প্রথম বই বলা যেতে পারে। কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর প্রথমবার জাপান ভ্রমণ করেছিলেন ১৯১৬ সালে, তারপর তিনি রচনা করেন তাঁর জাপান ভ্রমণ সম্পর্কিত বই ‘জাপানযাত্রী’। ‘জাপানযাত্রী’ প্রকাশিত হওয়ার চার বছর আগে এই বইটির আত্মপ্রকাশ। এক সাধারণ গৃহবধুর কলমে প্রথম ভারত-জাপানের অক্ষর সম্বন্ধ করে উঠেছিল। তবে এই বইটি ছাড়া আর হরিপ্রভা তাকেদার লেখা আর কোনো বইয়ের খোঁজ পাওয়া যায় না। এমনকী বাংলাদেশের উদ্যমী লেখক মনজুরুল হক এই বইটি উদ্ধার না করলে এই বইয়ের খোঁজ মিলত না। এমনকী জাপান থেকে ফিরে হরিপ্রভার জীবন কেমন ছিল সেই সংক্রান্ত কোনো প্রামাণ্য তথ্যও পাওয়া যায় না। লেখক মনজুরুল হক বলেছেন, গত শতকের নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে লন্ডন থেকে জাপানে চলে এসে তিনি নতুন করে এই বইটি প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করেন। বইটি লেখার প্রায় ৮৪ বছর পর ১৯৯৯ সালে সাহিত্য প্রকাশ থেকে এর দ্বিতীয় সংস্করণ বের করা হয়েছিল। জাপানের বিশিষ্ট বাংলা গবেষক কাজুহিরো ওয়াতানাবেও এই তথ্যকে সত্য বলেই মেনে নিয়েছেন। ঐতিহাসিক ও অধ্যাপক মুনতাসির মামুন হরিপ্রভা তাকেদাকে নিয়ে অনেক তথ্য প্রমাণ খোঁজার চেষ্টা করেছেন। হরিপ্রভার বোনের ছেলে সুরজিৎ দাশগুপ্ত পরবর্তী সময়ে মাসির মৃত্যুর পর তাঁর রেখে যাওয়া কাগজপত্রের সংগ্রহ থেকেও খুঁজে বের করেছেন হরিপ্রভার আরও কিছু অপ্রকাশিত লেখা। তবে কোনো লেখাই বই আকারে প্রকাশিত হয়নি। হরিপ্রভা তাকেদাকে নিয়ে একটি প্রামাণ্যচিত্রও তৈরি করা হয়েছে। এমনটা শোনা যায়, হরিপ্রভা তাকেদা ১৯৪১ সালে জাপানে স্থায়ীভাবে বসবাস শুরু করেছিলেন। এমনকী ১৯৪৪ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত সুভাষচন্দ্র বসুর নেতৃত্বাধীন ভারতীয় ন্যাশনাল আর্মির জন্য কাজ করেছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতীয় জাতীয় সেনাবাহিনী জাপানের সঙ্গে জোটবদ্ধ ছিল। এই সময় যুদ্ধবিধ্বস্ত জাপানে হরিপ্রভা বিপদে পড়েছিলেন। তাঁর স্বামী সে সময় অসুস্থ হয়ে পড়েন। বিপ্লবী রাসবিহারী বসুর সহযোগিতায় টোকিও রেডিওতে আজাদ হিন্দ ফৌজের হয়ে বাংলায় সংবাদ পাঠের চাকরি করতেন হরিপ্রভা। ১৯৪২ সাল থেকে ১৯৪৪ সাল পর্যন্ত হরিপ্রভা এই কাজ করেছিলেন। ঐতিহাসিকদের মতে হরিপ্রভাকে সেভাবে কোথাও-ই স্মরণ করা হয় না।

বিস্মৃতির অতলে তলিয়ে যাওয়া এই সাহসিনী, ব্যতিক্রমী নারীর রচনা মেয়েদের এগিয়ে চলার বার্তা – একথা নিঃসন্দেহে বলা যেতে পারে।

তথ্যসূত্র:-
গ্রন্থাবলী:-
১. হরিপ্রভা তাকেদার জাপান:- মনজুরুল হক
২. ‘বঙ্গনারীর জাপানযাত্রা’- হরিপ্রভা তাকেদা

 
আকাশবাণী কলকাতায় জাতীয় সম্প্রসারক হিসেবে কর্মরত। লেখালিখির সঙ্গে আত্মিক সম্পর্ক। শুরু স্কুল জীবন থেকে। পেশাগত সূত্রেও লেখালিখির সঙ্গে জড়িত। যে ভাবনারা অনবরত ভেতরে দাগ কেটে চলেছে তাকেই অক্ষর দিয়ে সাজানোর চেষ্টা। শখ - বেড়াতে যাওয়া, গিটার বাজানো।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *