প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

লাদাখ – ৫ ( )

প্যাঙ্গঙ সো

লাদাখ দর্শনের পরবর্তী পর্যায়ে আমরা প্যাঙ্গঙ সো দেখতে যাব। এখানে যেতে গিয়ে আমাদের বেশ কিছু বাধা অতিক্রম করতে হয়। অবশ্য বাধা বলতে মানুষের দ্বারা করা বাধার কথা বলছি না, বাধা ছিল কিছু প্রাকৃতিক ঘটনা। তবে তা অতিক্রম সহজেই আমরা করতে পেরেছিলাম যে শুধু তাই নয়, আমাদের যাত্রা আরও চিত্তাকর্ষক হয়ে ওঠে।
লেহ্‌ থেকে এই সরোবরে যাবার পথে চাঙ লা পার হতে হয়। এই গিরি-পথ বা গিরিবর্তের উচ্চতা মি. (১৭৮০০ ফিট)এবং এই পথ পৃথিবীর তৃতীয় উচ্চতম গিরি-পথ । এই পথ পার করে আমরা সরোবরে পৌঁছতে পারতাম একই দিনে কিন্তু পথে এক ঝোরা পার করতে হয়, যার ওপরে সেতু আগের বছরে (২০০৭) জলের স্রোতে ভেঙ্গে যাবার পর নতুন করে তৈরি হয়নি। ঝোরার জলের ওপর দিয়েই ওপারে যেতে হয়। এই ঝোরার উৎস এক গ্লেসিয়ার। সেই গ্লেসিয়ারের বরফ বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে গলে গিয়ে জলের স্রোত অনেক সময় বেশি হয়ে পথ অগম্য করে দেয়। আমাদের ওখানে পৌঁছানোর দিনে তাই ঘটেছিল। তাই আমরা ‘তাঙ সে’ নামে এক স্থানে থাকতে বাধ্য হই। অবশ্য ওই স্থানে আমাদের রাত্রি-বাস করতেই হতো, কেননা এক দিনে লেহ্‌ থেকে প্যাঙ্গঙ সো দেখে ফিরে যাওয়া বেশ কষ্টকর। আমরা ফেরার পথে না থেকে যাবার পথেই সেখানে থাকতে বাধ্য হলাম। এর সঙ্গে চিন্তা রয়ে গেল পরের দিনে কি হবে, ঝোরার জল আবার আমাদের আটকে দেবে না তো ?
তাঙ সে-তে এক গেষ্ট হাউসে জায়গা পেলাম। আশ-পাশটা একটু ঘুরে দেখলাম। গেস্ট হাউসের বারান্দা থেকে সামনের দৃশ্যের ভিডিও নিলাম। এই দৃশ্যের সম্পর্কে কিছু বক্তব্য ভিডিওতেই আপনারা শুনতে পাবেন ।

পরের দিন ভোরে আমাদের মূল গন্তব্যের দিকে যাবার জন্যে আবার যাত্রা শুরু করলাম। এই পথেই আমরা ‘মারমোট’ নামে খরগোশ আর বড় গেছো ইঁদুরের মাঝামাঝি এক প্রকার স্তন্যপায়ী প্রাণী দেখতে পেলাম। আলো তখনও ঠিক মত না ফোটার জন্যে ছবি পরিষ্কার হলো না। কিছুটা এগোবার পর সেই ঝোরার কাছে এসে প্রাকৃতিক বাধা পেলাম এবং মনে হলো যে প্যাঙ্গঙ সো দেখা আমাদের আর হলো না।

যাই হোক বেশ কিছুক্ষণ নানাপ্রকারে চেষ্টা করে শেষ পর্যন্ত পায়ে পায়েই ওই নালা পার হয়ে গেলাম।

িন্তু ওপারে গিয়ে তখনও ৪কিমি. বাকি সো-এর ধারে পৌঁছাতে আর এদিকে আমাদের গাড়ি এপারে আসতে পারলো না তখনও। অগত্যা আমরা হাঁটা আরম্ভ করলাম। কিছুটা হাঁটার পর ঈশ্বরের কৃপায় ফাঁকা এক ট্রাক আমাদের সো-এর ধারে পৌঁছে দেবার জন্যে দাঁড়ালো, কোথা থেকে যে এলো কে জানে। তবে সেই ট্রাকের মাল রাখার জায়গা মোল্ডেড অর্থাৎ তার গা দিয়ে অনেকটা উঁচুতে উঠতে হবে, শাড়ী পরিহিতা মহিলারা কি করে ট্রাকে উঠবেন? প্রয়োযনের সময় তাঁরা কি পেছিয়ে যেতে পারেন? কোনও রকমে তাঁরা উঠে পড়লেন আর আমরা সেই স্বর্গীয় স্থানে পৌঁছে গেলাম । ওখানে গিয়ে কি দেখলাম আর কি করলাম? পরপর দুটো ভিডিওতে আছে।

লেহ্‌ ফেরার পথে আমরা চাঙ লাতে অল্প সময়ের জন্যে গাড়ি থেকে নামলাম, কারণ পাঙ্গঙ সো যাবার সময় তা করা হয়নি। আশপাশে বেশ বরফ রয়েছে দেখলাম, যা খারদুঙ্গ লাতেও পাইনি। আর বিশেষ করে কিছু দূরে এক শুভ্র-শিখর দারুন লাগছিলো ।

কেমন লাগলো, জানাবেন তো?

ড. শুভেন্দু প্রকাশ চক্রবর্তী

 

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.


অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।