কুমার সাহনির সিনেভাষা: অভিব্যক্তির দ্বন্দ্ব সমাস
জীবনযুদ্ধে দীর্ণ একজন তরুণী আত্মহত্যা করছে, তাঁর বন্ধকী কারবারি স্বামী (শব্দটা আধুনিক লিঙ্গসাম্য রাজনৈতিক প্রতিভাষ্যে ভুল) তাঁদের অসুখী দাম্পত্যের বেহিসেবি ট্রায়াল ব্যালেন্স সিট মন্থন করছেন, শোকের তীব্রতা যেখানে সিনেমা ন্যারেটিভের ভাষ্য গড়ে নিচ্ছে। ফিওদর দস্তয়েভস্কির ‘দ্য মিক ওয়ান’ (দ্য জেন্টল ক্রিচার) গল্প অবলম্বনে প্রথিতযশা চলচ্চিত্রবিদ হোব্যেখ্ (রবার্ট) ব্রেসঁ তাঁর প্রথম রঙিন চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন ‘আ জেন্টল ওম্যান’ নামে। বিষাদের এমনতর বর্ণালীবিশ্লেষণে ব্রেসঁ কেন যে কালার ফিল্ম ব্যবহার করেছিলেন সেটা একটা অ্যাকাডেমিক ফিল্ম পলেমিক্সের বিষয় হতে পারে। তবে ভারতীয় ছবির ইতিহাসে এই ছায়াছবির একটা অন্য গুরুত্ব আছে। এই ছবি নির্মাণের সময় পরিচালক ব্রেসঁ মাঝে মাঝেই বিভিন্ন দৃশ্যের অভিঘাত নিয়ে আলোচনা করতেন এক ভারতীয় যুবকের সঙ্গে যিনি তখন ফরাসি সরকার প্রদত্ত একটা স্কলারশিপ সূত্রে প্যারিসের ইন্সটিটিউট ফর অ্যাডভান্সড সিনেমাটোগ্রাফিক স্টাডিজ এর ছাত্র। মে ১৯৬৮ প্যারিস, ফ্রান্সের যৌবরাজ্যে তখন এক দিকনির্ণয় ঘটে গেছে। সাম্রাজ্যবাদ, ভোগবাদী সমাজের বিরুদ্ধে সুস্পষ্ট অবস্থান নিয়েছে ফরাসী সাংস্কৃতিক ভ্যানগার্ড। কান চলচ্চিত্র উৎসব বাতিল হয়েছে। ভিয়েতনামে মার্কিন ঔপনিবেশিক আগ্রাসনের বিরুদ্ধে ছাত্রসমাজ ব্যারিকেড গড়ে তুলেছে সাংস্কৃতিক প্রতিরোধের।
ব্রেসঁ’র এই ছবির নির্মাণকালও ওই প্রস্তরস্বাক্ষর মুহূর্তে। মাঝেমাঝেই শ্যুটিং এর পর গাড়ি করে আলোচ্য সেই যুবককে তাঁকে ছবির রাসপ্রিন্ট দেখাতে নিয়ে আসতেন ব্রেসঁ। নানা শটের মধ্যে ছবির ন্যারেটিভ যে অবয়ব খুঁজে পাচ্ছে তা নিয়ে এই যুবকের মন্তব্য গভীরভাবে শুনতেন তিনি। নিজেও বলতেন ওঁর অট্যুর (Auteur) বীক্ষার কথা, যে বীক্ষার সিনেমা অন্টোলজিতে দস্তইয়েভ্স্কির উপন্যাস এক নতুন জন্মদাগ পেয়ে যাচ্ছে এক অন্য দেশকালের আবর্তে। এই সখ্য ওই যুবকের কাছে এক গভীর অর্থবহ হয়ে দেখা দিয়েছিল। ব্রেসঁ এবং তাঁর স্ত্রী মাইলিন নিজেরাই ড্রাইভ করে তাঁকে আবার পৌঁছে দিয়ে আসতেন তাঁর বাড়িতে। ঘটনাচক্রে সেই যুবকের ইন্টার্নশিপ চলছে তখন। ভারতীয় ছবির নবতরঙ্গের এক অন্যতম দিশারী সেই স্বপ্নালু স্রষ্টা যুবকটি ছিলেন কুমার সাহনি।
এর তিনবছর পর ওঁর প্রথম ফিচার মায়াদর্পণ ছায়াছবির কয়েকটা প্রদর্শনের আয়োজন করা গেছিল প্যারিস শহরে। কুমার এই ছবি দেখাতে পেরেছিলেন ব্রেসঁ এবং তাঁর স্ত্রী মাইলিনকে। এই ছবি তাঁদের প্রশংসা কুড়িয়েছিল সিনেভাষার এক অনন্য অবয়বে যুগান্তরের পুরুষতান্ত্রিক ব্যবস্থার একটা অ্যান্টি-থিসিস নির্মাণের জন্য। কুমার সাহনি তাঁর সৃষ্টির প্রেরণা হিসেবে অন্ততঃ তিনজন শিক্ষকের অবদান অকুন্ঠচিত্তে স্বীকার করেছেন। সিনেমার ব্যাকরণে কার্ল ইয়ুং এর আর্কিটাইপ এবং সমষ্টিগত অবচেতন কীভাবে আইজেনস্টাইন মন্তাজের সঙ্গে সিন্থেসিস হয় তাঁর অন্যতম পুরোধা হিসেবে ওঁর পুনে ফিল্ম ইনস্টিটিউটের গুরু ঋত্বিক ঘটক ওঁকে প্রেরিত করেছিলেন এই ভাষার অবয়ব লেখার ক্ষেত্রে, ভারতীয় উপমহাদেশের সামাজিক চালচিত্রে মার্ক্সবাদ কীভাবে আত্তীকৃত করা যায় বহমান জীবনপ্রবাহে তার দিশা ওঁকে দেন দামোদর ধর্মানন্দ কৌশাম্বি এবং ব্রেসঁ তাঁকে দেখিয়েছিলেন নির্ভার, নৈর্ব্যক্তিক, মিনিমালিস্টিক সিনে অন্টোলজির বয়ানে কীভাবে গভীর স্বপ্ন বোনা যায়। তবে এই যাবতীয় অনুপ্রেরণা এবং দিকনির্দেশ সত্ত্বেও ওঁর প্রথম ছবি ‘মায়াদর্পণ’ দেখতে গিয়ে সিনেভাষার যে আখরমালা মথিত করে আমাদের তা কুমারের একান্ত নিজস্ব যাপনঋদ্ধ বয়ান। ওঁর গুরুদের দর্শনের সঙ্গে এই দেশের প্রাণ প্রবাহের এক জঙ্গম স্বর এবং সাতরঙা সাংস্কৃতিক কল্কাপাড় আত্তীকৃত হয়েছিল কুমারের নিজস্ব ভাষার চর্যাপদে।
বিভিন্ন সাক্ষাতকারে তিনি জানিয়েছিলেন যে ফ্রান্স থেকে ফেরার পর তিনি বেশ কয়েকটা চিত্রনাট্যের মকশো করছিলেন। যদিও ইউরোপীয় ছবির কাঠামো থেকে বেরিয়ে আসার প্রচেষ্টা, নিজের একটা স্বতন্ত্র স্বর খুঁজে পাবার তাগিদও ছিল ভেতর থেকেই।
‘মায়াদর্পণ’ নির্মিত হয়েছিল হিন্দি সাহিত্যে ‘নই কহানি’ ধারার অন্যতম সাহিত্যিক নির্মল ভার্মার গল্প অবলম্বনে। প্রবল পুরুষতান্ত্রিকতার ঘেরাটোপে সামন্ত বুর্জোয়াজি প্রেক্ষিতে তরণ নামে এক তরুণীর নিঃসঙ্গতার আখ্যানকে ধরেছিলেন কুমার। এই ছবির অবয়ব সম্পূর্ণ ওঁর নিজের অট্যুর (Auteur) সাক্ষর। তাতে গুরু ঋত্বিকের মহাকাব্যিক ব্যঞ্জনা তথা আর্কিটাইপ অথবা ব্রেসঁর মিনিমালিস্ট নন্দনতত্ত্ব আছে কিন্তু তার রূপটান একান্তই কুমারের নিজস্ব অনুভূতিজাত।
ভাস্কর চন্দভারকরের সুরে বাণী জয়রামের লোরি আর কে কে মহাজনের ক্যামেরার বর্ণিকাভঙ্গ কুমারের সৃষ্টির প্যালেটের নানা রঙ।
ফিল্মফেয়ার এবং ক্রিটিকস চয়েস পুরস্কার পাওয়া সত্ত্বেও রিলিজের সময় সমকালীন সিনেমাবেত্তারা এক ছবিকে গ্রহণ করেননি। এই প্রসঙ্গে একটা কথা উত্থাপন করা হয়ত অপ্রয়োজনীয় হবে না যে এই প্রতিবেদক একেবারেই সাম্প্রতিক সময় পুনের ন্যাশনাল ফিল্ম আর্কাইভ দ্বারা ডিজিটাল সংরক্ষিত ‘মায়াদর্পণ’ ছবির প্রিন্ট দেখে মুগ্ধ হয়েছে সেই ছায়াচিত্রের আঙ্গিকে কুমার সাহনির মননের সিনেভাষ্যের পরশ পেয়ে।
অবশ্য হলিউডি মিসঁ সিন অথবা ইউরোপীয় শৈলীতে দীক্ষিত ভারতীয় সিনেফাইল, বোদ্ধা অথবা সিনেমা নির্মাণের সঙ্গে সম্পৃক্ত মানুষজনেরা অধিকাংশেই এই ছবির বিলম্বিত চলনে ফুটে ওঠা ফর্মালিস্ট অবয়বকে নাকচ করেছিলেন সমকালে। এইসূত্রে সত্যজিৎ রায়ের প্রসঙ্গ এসে যায়। তিনি এই ছায়াছবির সমালোচনা করতে গিয়ে ‘replete with clichés..’ গোত্রের বিশেষণ ব্যবহার করেছিলেন। আমরা অবশ্য মনে করি সংস্কৃতি সমালোচনার ক্ষেত্রে এই প্রত্যেকটা বীক্ষাই কোনও না কোনও দর্শন সঞ্জাত এবং তাতে কিছুটা ব্যক্তিগত দ্বান্দ্বিক আপেক্ষিক অবস্থান কাজ করে। যাইহোক, সমকালের এই বিরূপতা সত্ত্বেও কিন্তু একসংখ্যক কাল্ট সিনেমা অনুরাগীদের মধ্যে এই ছবির গুরুত্ব বাড়তে থাকে গত কয়েক দশক ধরে। ভারতীয় সংস্কৃতির প্রকট দৈন্য যে, ১৯৭২ সালে এই ছবি মুক্তি পাওয়ার পরে পরবর্তী ছবি নির্মাণের জন্য প্রয়োজনীয় প্রযোজনা সহায়তা পেতে পেতে প্রায় এক দশক কেটে গেছিল। ওঁর দ্বিতীয় ছবি তরঙ্গ এক আধা-বুর্জোয়া অধ্যায়ে ভারতীয় সমাজের একটা ভঙ্গুর চেহারার ঝরোখা দর্শন ঘটায়। পারিবারিক আবহে পারস্পরিক সম্পর্কের মিথোস্ক্রিয়তা এই ছবির ন্যারেটিভে শেষমেশ আবর্তিত হয় বাড়ির গৃহ সহায়কের চরিত্রকে কেন্দ্র করে, সমাজের রিগ্রেসিভ জলছবির ছাপ ধরা পড়ে তাতে। মেজাজে ‘মায়াদর্পণের’ থেকে একেবারে ভিন্ন এই ছবির অবয়ব। এটা হয়ত কুমারের নির্মাণ স্বাক্ষরের এক অনন্য বৈশিষ্ট্য যে ওঁর ফিল্ম রেপার্টোয়ার সবকটি উদাহরণ এক স্বতন্ত্র অবয়ব নিয়েছিল।
১৯৮৯ সালে নির্মিত ‘খ্যয়ালগাথা’ আবার একেবারে অনন্য একটা কাজ ওঁর সবক’টা সৃষ্টির চেয়ে। ভারতীয় মৌসিকীর শ্রুতির পথচলা কীভাবে মধ্যযুগের ইতিহাসের বহমানতাকে প্রকাশ করে চলেছে, খেয়াল গায়নের ঐতিহাসিক প্রেক্ষিতের মর্মবাণী কীভাবে সাম্রাজ্য ভাঙাগড়ার অলিন্দে তার অব্যক্ত সুরের পরশ ছুঁয়ে গেছে তারই এক অব্যক্ত ন্যারেটিভ এই ছবি। যেখানে সিনেমা, সঙ্গীত, রঙ এবং কুমারের নিজস্ব বোধের স্তর একাকার হয়ে গেছে।
১৯৯১ সালে মুক্তি পাওয়া এর পরবর্তী ছায়াছবি কসবা। এই ছবিতে হয়ত ওঁর গুরু কোসাম্বীর মার্ক্সিয় দর্শনের প্রতিচ্ছবি সবচেয়ে স্পষ্টভাবে ধরা পড়েছে। মূল রচনা আন্তন চেখভের হলেও ভারতের জল-মাটির উপাদানেই তার কাঠামো গড়ে তুলেছিলেন কুমার। গ্রামীণ পরিবেশে ভারতীয় পুঁজিপতি আবহ, উৎপাদনের দ্বন্দ্ব এবং পারিবারিক কাঠামোতে তার ছাপ এই ছায়াছবির আখ্যানের রূপরেখা।
কুমারের সৃষ্টির ভাণ্ডারে রবীন্দ্রনাথের রচনাও এসে ধরা দিয়েছিল। সেই বয়ান যেন আধুনিক ভারতের রাষ্ট্রিক কাঠামোর এক মিনিয়েচার মডেল। জাতীয়তাবাদের ভাষ্য নিয়ে রবীন্দ্রনাথের নিজের যে দ্বন্দ্ব উঠে এসেছে তাঁর অবিস্মরণীয় ‘চার অধ্যায়’ উপন্যাসে সেই অন্তর্বস্তুই তাঁর নিজস্ব সিনেমা আঙ্গিকের প্রকরণে ফুটিয়ে তুলেছিলেন কুমার। অন্তু এবং এলার পারস্পরিক সংলাপে ন্যাশনালিজমের যেন এক ফ্যাসিস্ট অবয়বের প্রতিই তিনি তাঁর বক্তব্য রেখেছেন, যেটা ওঁর মার্কিস্ট বীক্ষা সঞ্জাত। খুব গুরুত্বপূর্ণ যে এই ছবিতে রবীন্দ্রনাথ ছাড়াও জীবনানন্দের কবিতা ব্যবহার করেছিলেন কুমার। দৃশ্যগত অভিক্ষেপে তা এক অনন্য মাত্রা যোগ করেছিল। মেজাজে সত্যজিতের ‘ঘরে-বাইরে’ ছবির থেকে অনেকটাই আলাদা ছিল কুমার সাহনি নির্মিত ‘চারঅধ্যায়’ যদিও এই দুই রচনাতেই রবীন্দ্রনাথ প্রবল জাতীয়তাবাদের মানবতাবিরোধী কিছু অবস্থানকে তুলে ধরেছিলেন।
ফিচার ছাড়াও কয়েকটা স্বল্প দৈর্ঘ্যের ছবি এবং তথ্যচিত্র নির্মাণ করেছিলেন কুমার। এর মধ্যে ১৯৯১ সালে প্রখ্যাত ওড়িশি নৃত্যশিল্পী এবং গুরু কেলুচরণ মহাপাত্রকে নিয়ে নির্মিত ‘ভবনতারণ’ নামে তথ্যচিত্র খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এর মধ্যে খ্যয়ালগাথার বেশ কিছু বর্ণালী যেন আবার ছুঁয়ে যায় ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য এবং সঙ্গীতের পরকলায়।
রং এবং অভিনয়ের নির্লিপ্তি ছাড়াও কুমারের ছবিতে আবহসঙ্গীত এবং সাউন্ডস্কেপ একটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। ‘মায়াদর্পণ’ চলচ্চিত্রের শুরুতে যেমন পরিচয়লিপির নেপথ্যে কলকারখানার নানা মেশিনের ঘর্ঘরের শব্দ কেবল শোনা যায় যা এমনকি বাস্তবতাধর্মী সমসাময়িক ভারতীয় চলচ্চিত্রের নিরিখেও বেশ অনন্য। আসলে জীবনের উত্তল, অবতল নানা প্রতিচ্ছবিকে এক গূঢ় প্রক্ষেপণে ধরতে চেয়েছেন কুমার। ফলে, সিনেমার ভাষা এবং আঙ্গিকের নানা স্তরকে জীবনবোধের জায়মান ক্যানভাসে আত্তীকরণ করেছিলেন তিনি। ওঁর সমাজবীক্ষায় মার্ক্স – হেগেলিয় দ্বন্দ্ব সমাস লুকিয়ে থাকলেও তার মূলে ছিল এই বিরাট দেশের আবহমান জনচেতনার আত্মিক কাঠামো। ফলে ঋত্বিক বা ব্রেসঁ অথবা কোসাম্বীর ডায়ালেক্টিক্সের স্থিত কোন কাঠামোকে ধরে আমরা সেখানে পৌঁছতে পারবো না। ওঁর সতীর্থ মণি কাউল অথবা জন আব্রাহামের চলচ্চিত্রবোধের চেয়েও যেন আঙ্গিকের ক্ষেত্রে আরও স্বপ্নালু এক বয়ান রচনা করেছেন। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ব্রেসঁ’র যে ছবি অর্থাৎ ‘আ জেন্টল ওম্যান’ এর সূত্র ধরে এই প্রবন্ধে প্রবেশ করেছিলাম আমরা ফিওদর দস্তইয়েভ্স্কির সেই গল্প থেকেই কিন্তু মণি কাউল
১৯৯১ সালে নির্মাণ করেছিলেন তাঁর ‘নজর’ ছায়াছবি, যেখানে আবার পরিচালকের একান্ত নিজস্ব এক বয়ান লুকিয়ে আছে।
একটা ঘটনা আমাকে অবাক করা কষ্ট দেয় যে শেষ বেশ কয়েক বছর তিনি এই এই রাজ্যেই ছিলেন, যা তাঁর একজন অন্যতম মেন্টরের সৃষ্টিভূমিও বটে। কিন্তু বিশ্ব চলচ্চিত্র নিয়ে তথাকথিত বহুল পরিমাণে চর্চা করা বাঙালি সিনেফাইলরা তা যেন খুব একটা আমল দিইনি।
তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন মাত্র কিছুদিন আগে। সেলুলয়েডের প্যালেটে রয়ে গেছে ওঁর সৃষ্টির রঙ, রূপ, ধ্বনির অবয়ব। আর যার মধ্যে প্রোথিত হয়ে আছে ওঁর মননের স্বাক্ষর, যা একেবারে নিজস্ব। চলচ্চিত্র মাধ্যমের একজন অনুরাগী দর্শক হিসেবে কুমার সাহনি আমার কাছে ভারতীয় ছায়াছবির রেপার্টোয়াতে এক প্রতিভাষ্যের রচনাকার। সমান্তরাল অথবা মূলস্রোত এই তৈলাধার পাত্রের দ্বন্দ্বে না গিয়ে তিনি যেন এক প্রদীপ নিয়ে এগিয়ে চলেন আমাদের সামনে দিয়ে। আবহমান মানবাত্মার জঙ্গম এক পথচলার ম্যুরাল ভেসে ওঠে সেই পথের দু’প্রান্তে। আমাদের ভেতরঘরের মর্মচিত্র ভেসে ওঠে সেই ছায়া-ছবির বর্ণিকাভঙ্গে।
তথ্যঋণ:
- https://www.just-cinema.com/post/kumar-shahani-on-days-of-bresson-cinema-of-grace-and-the-unknown-interviewed-by-khalid-mohamed
- https://projectorhead.in/archives/four/interview-with-kumar-shahani/
- https://www.thehindu.com/entertainment/movies/renowned-filmmaker-kumar-shahani-dies-at-83/article67884529.ece
- https://thewire.in/film/satyajit-ray-film-writing