হয়ে গেল হাঁসজারু, কেমনে তা জানি না

হয়ে গেল হাঁসজারু, কেমনে তা জানি না

অলংকরণঃ আবোল-তাবোল থেকে

“উপাখ্যান শেষ করিয়া, বেতাল বিক্রমাদিত্যকে জিজ্ঞাসা করিল, ‘মহারাজ! এক্ষণে কোন ব্যক্তি ঐ কন্যার স্বামী হইবেক বল।’ রাজা কহিলেন, ‘শুন বেতাল! যেমন নদীর মধ্যে গঙ্গা উত্তম, পর্বতের মধ্যে সুমেরু উত্তম, বৃক্ষের মধ্যে কল্পতরু উত্তম; সেইরূপ, সমুদয় অঙ্গের মধ্যে মস্তক উত্তম; এই নিমিত্তে, শাস্ত্রকারেরা মস্তকের নাম উত্তমাঙ্গ রাখিয়াছেন। অতএব, যে ব্যক্তির কলেবরে পূর্বস্বামীর উত্তমাঙ্গ যোজিত হইয়াছে, সেই তাহার স্বামী হইবেক।’”  – বেতালপঞ্চবিংশতি, ঈশ্বরচন্দ্র বিদ্যাসাগর (অনুদিত)।

সে এক ভারী জটিল অবস্থা। এক রমণীর স্বামী ও তার বন্ধু দুজনেই নিজের নিজের মস্তক ছেদন করে ফেলেছিল। দেবী কৃপা করে তাদের প্রাণদান করেছিলেন, কিন্তু তার আগে সেই রমণীকে আদেশ করেছিলেন যার যার ধড় ও মাথা এক জায়গায় করতে। রমণী উত্তেজনার বশে এর মাথা ওর শরীরের সাথে লাগিয়ে রেখেছিল। এর ফলে প্রাণদান তো ঘটল, কিন্তু তার সঙ্গে ভীষণ সমস্যাও এসে উপস্থিত হল। বিক্রমাদিত্য সে সমস্যার চমৎকার সমাধান দিয়েছিলেন। সেটা অবশ্য এখানে আলোচ্য বিষয় নয়। ব্যাপার হল, বেতালপঞ্চবিংশতির সমস্ত গল্পই কিন্তু বেশ বাস্তবসম্মত, মানে সেরকম সমস্যা সমাজে উপস্থিত হতেই পারে, আর হলে রাজার সে সমস্যা সমাধানের বিচক্ষণতা আছে কিনা তা দিব্য যাচাই করে নেওয়া চলে। মানে অবাস্তব, কল্পলোকের ব্যাপার-স্যাপার নয়। কিন্তু এই গল্পটা ভারি উদ্ভট। মুন্ডু কাটা হল, জোড়া হল, যেন মাঝেমধ্যেই এমন ঘটে। রাজা বিশেষ অবাকও হলেন না এসব শুনে। 

নাকি তেমন উদ্ভট নয় ব্যাপারটা? বলতে গেলে আমাদের তো বেশ একটা লেগ্যাসিই আছে এই ব্যাপারে।

গণপতির মুণ্ডচ্ছেদন হল, পার্বতী রেগে অস্থির। হাতির মুন্ডু এনে স্রেফ জুড়ে দেওয়া হল তারপর। সে হাতির কী দোষ ছিল, ভারি অন্যায় হয়েছিল কি না, বা গণপতিকে বাকি জীবনটা হাতির মস্তিষ্ক নিয়ে কাটাতে হচ্ছে নাকি মস্তিষ্ক প্রতিস্থাপনও ঘটেছিল সেই সময়ে, সেসব কূট প্রশ্নে যাচ্ছি না, বরং এই মুন্ডু জুড়ে দেওয়ার বিষয়টা খতিয়ে দেখা যাক। শুধু কি গণপতি, দক্ষরাজেরও তো কম ঝক্কি পোয়াতে হয়নি। স্বমুণ্ডপাত হয়ে জুটল ছাগমুণ্ড। অবশ্য রূপক হতে পারে, ছাগলের মত কাজকম্ম করলে লোকে তো বলেই থাকে, দেখ ছাগলের মত বুদ্ধি। কিন্তু মুণ্ডপাত একটা ঘটেছিল তাতে সন্দেহ নেই। বেতালের গল্পে অন্তত মানুষের মুন্ডুই মানুষের শরীরে জোড়া হয়েছিল, কিন্তু এ যে তিন কাঠি উপরে। স্পিসিস টিসিসও মানছে না। 

আজেবাজে পৌরাণিক মিথ বলে উড়িয়ে দেওয়া যেতেই পারে, কিন্তু ওদিকে আবার প্রাচীন ইজিপ্টে সিংহের শরীর, মানুষের মাথা, ঈগলের ডানা নিয়ে স্ফিংস নামে বিখ্যাত এক চরিত্র দাপিয়ে বেড়াত। সে নাকি ভারি জ্ঞানীও ছিল। তারপরে আবার মানুষের শরীর আর কুকুরের মাথা নিয়ে পরলোকের দেবতা আনুবিস, বাজপাখির মাথাওয়ালা আরোগ্যের দেবতা হোরাস, কেউ তো কম যায় না। গ্রীক পুরাণও বাদ নেই, ঘোড়া আর মানুষ জোড়া লাগিয়ে সেন্টর খটাখট করে বেড়াচ্ছে সেখানে।

এই এটা ওটা জোড়া হাঁসজারু ব্যাপার দেখলে কেমন একটা সন্দেহ হয় না, প্রাচীন পৃথিবী কি মস্তক সমেত বিভিন্ন অঙ্গের প্রতিস্থাপনে দক্ষ ছিল, যা আমরা এখনও সফলভাবে করে উঠতে পারিনি? 

স্বভাবতই প্রথম জিজ্ঞাস্য হল, পারিনি কেন? আটকাচ্ছেটা কোথায়? 

বিশদে যাওয়ার আগে একটু প্রতিস্থাপনের বিষয়টা খতিয়ে দেখা যাক। কোনো অঙ্গহানির ফলে যাতে জীবনযাত্রা ব্যাহত না হয় সেটাই মূল উদ্দেশ্য। পৌরাণিক উদাহরণ বাদ দিয়ে মানব সভ্যতার প্রামাণ্য ইতিহাসের দিকে তাকালে অবাক হতে হয় বৈকি। ইজিপ্টের থিবস্ থেকে পাওয়া খ্রিস্টপূর্ব ৯৫০- ৭১০ সময়সীমার একটি মমি ২০০০ সালের গবেষকদের বিস্ময়ের কারণ হয়ে উঠেছিল। মমির একটি পায়ের বুড়ো আঙুল ছিল নকল, কাঠ আর চামড়া দিয়ে তৈরি। গবেষকদের মতে নকল আঙুল লাগিয়ে সেই ব্যক্তি দিব্য স্বাভাবিকভাবে হেঁটে চলে বেড়াত, সে খালি পায়ে হোক বা জুতো পরে। ইরান থেকে পাওয়া আরো অনেক প্রাচীন এক দেহাবশেষে অ্যাসফল্ট দিয়ে তৈরি সোনা দিয়ে বাঁধানো চোখের সন্ধান পাওয়া যায়। কিন্তু সৌন্দর্যবৃদ্ধি ছাড়া সে চোখের আর কোনো কার্যকারিতা না থাকায় তাকে হিসেবের মধ্যে না আনাই যুক্তিসঙ্গত। মমির নকল বুড়ো আঙুল হেঁটে চলে বেড়ানোর বাধা দূর করলেও তার বেশি কিছু, যেমন, আঙুলে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ানো ইত্যাদি করতে পারত কিনা তা জানা যায় না। কিন্তু চীন থেকে পাওয়া খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ সময়কালের কাঠের তৈরি নকল একটা পা সম্পূর্ণ আসল পায়ের পরিপূরক হিসেবে কাজ করতে পারত বলেই গবেষকরা দাবী করেন। 

এছাড়া বিভিন্ন প্রাচীন গ্রন্থে নকল হাত পায়ের উল্লেখ পাওয়া যায়। মধ্যযুগের যুদ্ধ বিগ্রহে হামেশাই হাত পা হারিয়ে অসহায় হয়ে পড়ত যোদ্ধারা। সাধারণ সৈন্যরা হয়ত যুদ্ধ ব্যবসা ছেড়ে অন্য কোন পেশায় নিযুক্ত হত অথবা অনাহারে মরত, কিন্তু উচ্চপদস্থ যোদ্ধাদের কপালে অনেক সময়ে নকল হাত জুটে যেত। যদিও সেসব দিয়ে ঢাল বা বর্শা ধরে রাখতে পারার থেকে বেশি কিছু করা সম্ভব হত না। ধনীরা হয়ত তার থেকে সামান্য বেশি কার্যকরী কিছুর ব্যবস্থা করে উঠতে পারত। পঞ্চদশ শতাব্দী থেকে ধীরে ধীরে এই নকল হাত পায়ের দক্ষতা বাড়তে শুরু করে। স্টিলের ব্যবহার বাড়ার সাথে সাথে কাজটা আগের তুলনায় সহজ হয়ে যায়। আজকাল তো রোবটিক হাত পায়ের সাহায্যে অঙ্গহীন মানুষ প্রায় সমস্ত কাজই আয়ত্ত করে উঠতে পারে। ওলিম্পিকে দৌড়ান হোক কি পাহাড়ে ওঠা, সবেতেই পূর্ণাঙ্গ মানুষের মতই সে সফল। রক্তমাংসের হাত পায়ে যেমন মস্তিষ্ক থেকে সংকেত যায়, এই রোবটিক হাত-পাগুলোতেও তেমনটাই সম্ভব। কিংবদন্তীর জলদস্যুরা অবশ্য পায়ের জায়গায় কাঠের তক্তা, হাতের জায়গায় লোহার হুক নিয়ে, চোখে তাপ্পি মেরে দিগ্বিজয় করে বেড়াত।

এ তো গেল বহিরঙ্গের কথা। একসময়ে শরীরের অভ্যন্তর সম্বন্ধে খুব স্পষ্ট ধারণা না থাকায় সাধারণ সমস্যাও ঘোরতর আকার নিত। পরে সে ধারণা খানিক স্পষ্ট হল বটে, কিন্তু ভিতরের কলকব্জা বিগড়োলে খুব বেশি কিছু করার থাকত না। চিকিৎসকরা মনে করতেন শরীরের রাসায়নিক ভারসাম্য নষ্ট হওয়াই বিভিন্ন রোগের কারণ, আর সেই ভারসাম্য কোনভাবে ফিরিয়ে আনতে পারলেই রোগমুক্তি ঘটবে। সেই চেষ্টায় তাঁরা রোগীকে বমি করিয়ে, রক্ত নিষ্কাশন ইত্যাদি করে, নাজেহাল করে ছাড়তেন। বলা বাহুল্য রোগমুক্তির বদলে রোগীর দ্রুত স্বর্গলাভ ঘটত। চিকিৎসা শাস্ত্রের দ্রুত বিবর্তনের সাথে সাথে অবশ্যম্ভাবী একটা কল্পনা বিজ্ঞানীদের মস্তিষ্কে জায়গা করে নিয়েছিল। ততদিনে পুড়ে যাওয়া ত্বককে শরীরের অন্য অংশের ত্বক দিয়ে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করার আশ্চর্য ঘটনার সাক্ষী হয়েছে মানব সভ্যতা। 

উল্লেখ্য, এই ত্বক অধিরোহণ বা গ্রাফটিং পদ্ধতি প্রাচীন ভারতের এক ধন্বন্তরী খ্রিস্টপূর্ব ৮০০-৭০০ সময়কালে ব্যবহার করেছিলেন, এবং সফলও হয়েছিলেন। তিনি ভারতীয় শল্যবিদ্যার জনক, সুশ্রুত। 

যাইহোক, শরীরের অভ্যন্তরীণ কোন অঙ্গ কার্যক্ষমতা হারালে পুড়ে যাওয়া ত্বকের মতই যে তার প্রতিস্থাপন প্রয়োজন, তাতে বিশেষ সন্দেহ ছিল না। কিন্তু দুঃখের বিষয়, ত্বক রোগীর নিজের শরীরের অংশ থেকে নেওয়া যায়, অঙ্গ তো অন্য কারুর থেকে যোগাড় করতে হবে। ১৯০৬ সালে কিডনি নষ্ট হওয়া দুই রোগীর দেহে প্রথম অঙ্গ প্রতিস্থাপনের চেষ্টা চালান হয়। একজন পেয়েছিল ছাগলের, ও অন্যজনের কপালে জুটেছিল শূকরের কিডনি। বলা বাহুল্য দুজনের কেউই বাঁচেনি। এর তিরিশ বছর পর, এক ইউক্রেনিয়ান শল্যবিদ আবার কিডনি প্রতিস্থাপনের চেষ্টা করেন, এবার অবশ্য ছাগল টাগল নয়, মানুষের কিডনিই ব্যবহার করা হয়। একজন নয়, পর পর ছয়জনের উপর এই পরীক্ষা করেছিলেন তিনি, তাদের মধ্যে এমনিতে কিডনি নষ্ট হওয়া রোগী তো ছিলই, আত্মহত্যা করতে গিয়ে পারদের প্রভাবে কিডনি বিকল হওয়া বুদ্ধিভ্রষ্ট মানুষও ছিল। এবারও কিন্তু কেউ বাঁচল না। উল্লেখ করা প্রয়োজন, কিডনি কিন্তু মৃত মানুষ থেকে সংগ্রহ করা হয়েছিল। ভাগ্যিস বিজ্ঞানীরা হাল ছাড়তে জানেন না। ১৯৫০ থেকে জীবন্ত মানুষের কিডনি ব্যবহার করা শুরু হল। কিন্তু রোগীর আত্মীয়স্বজন ছাড়া কে খামোকা কিডনি দান করতে যাবে, তারাও যে ভয়ানক ইচ্ছুক এমনটা নয়। ডোনার পাওয়া গেলেও কিছু প্রযুক্তিগত ত্রুটির সমাধান তখনও মেলেনি। অবশেষে ১৯৫৪ সালে রিচার্ড হেরিকের শরীরে সফলভাবে প্রতিস্থাপিত করা হল তার যমজ ভাই রোনাল্ড হেরিকের কিডনি। তবে তার দুই বছর বাদেই কানাডিয়ান শল্যবিদ গর্ডন মুরে মৃত ব্যক্তির কিডনি রোগীর দেহে সফলভাবে প্রতিস্থাপন করতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেটা নিঃসন্দেহে একটা বড় ধাপ, কারণ মৃত ডোনার পাওয়াই কঠিন, তায় জীবন্ত। এখন মানসিকতার কিছুটা পরিবর্তন হলেও সমস্যাটা থেকেই গেছে।

শুরু হয়ে যায় চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক নতুন অধ্যায়। তবে লিভার প্রতিস্থাপনের কাজটা বোধহয় সবচেয়ে কঠিন ছিল। তার মূল কারণ হল এক্ষেত্রে রোগীর অসুস্থতার মাত্রা বড় বেশি থাকে। পরবর্তী ষাট বছর ধরে চলল এক নিরলস যুদ্ধ। একপক্ষে সীমাহীন সম্ভাবনা, অপর পক্ষে সীমিত জ্ঞান, দুরূহ অজানা সব পরিস্থিতি। আজও সব প্রতিস্থাপন যে সফল হয়, এমনটা নয়। 

যদিও কিডনি প্রতিস্থাপনের সংখ্যা বা জনপ্রিয়তা সবচেয়ে বেশি, তবে হার্ট, ফুসফুস, লিভার, যকৃত, অন্ত্র, জরায়ু প্রতিস্থাপনের সংখ্যাও বড় কম নয়। পরবর্তী জটিলতা কাটিয়ে এঁদের অনেকেই সুস্থ জীবন যাপন করছেন।

এর পাশাপাশি ১৯৬৪ সালে ঘটে আর এক অদ্ভুত ঘটনা। ইকুয়েডরের এক সৈনিক বিস্ফোরণে তার সক্রিয় হাতের অর্ধেকটা হারায়। মনে রাখতে হবে, ততদিনে শুধু কিডনি নয়, ফুসফুসের প্রতিস্থাপনও সফলতা পেয়েছে। লিভার আর হার্ট প্রতিস্থাপন ১৯৬৪তে সফলভাবে করা না গেলেও কাজ এগিয়েছে, হয়ত আর কিছুদিনের মধ্যেই সফলতা আসবে। স্বাভাবিকভাবেই শল্যবিদদের মাথায় খেলে গেল এক অভূতপূর্ব মতলব। নিকটবর্তী আর এক হাসপাতালে ঠিক সেই সময়েই এসে উপস্থিত হয়েছিল আহত ছেলেটির কাছাকাছি বয়সের এক মৃতদেহ। মৃত হলেও তার হাত একেবারে অক্ষত। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন শল্যবিদরা, এই মৃতের হাত তাঁরা প্রতিস্থাপন করবেন সৈনিক ছেলেটির দেহে। যে ভাবা সেই কাজ। কিন্তু এখানে একটা বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সেই সময়ে। এমনিতে শরীরে কোন সংক্রমণ হলে, বা শরীর কোনো বস্তুকে অচেনা শত্রু বলে মনে করলে শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ করার ক্ষমতা বা ইমিউনিটি তাকে আক্রমণ করে নষ্ট করে ফেলতে চায়। তৈরি হয় অ্যান্টিবডি। তাই কোনরকম প্রতিস্থাপনের আগে এই স্বাভাবিক প্রতিক্রিয়াকে আটকানো প্রয়োজন। তার জন্য ইমিউনোসাপ্রেসিভ গোত্রের বিশেষ ওষুধ ব্যবহার করাই বিধি। কিন্তু সেই সময়ে উপযুক্ত ইমিউনোসাপ্রেসান্টের অভাব ছিল। ফলে একুশ দিন পর, সেই প্রতিস্থাপন করা হাত আবার কেটে বাদ দিতে হয়েছিল তাঁদের, না হলে ছেলেটির মৃত্যু ছিল অবধারিত। তবে মূল প্রতিস্থাপনটা সফল হওয়াতে অদূর ভবিষ্যতে এমনটা যে হওয়া সম্ভবপর, তাতে কিন্তু চিকিৎসকদের সন্দেহ ছিল না। 

পরবর্তী বেশ কিছু বছরে তেমন কোন প্রচেষ্টা আর হয়নি, হয়ত অভ্যন্তরীণ অঙ্গ প্রতিস্থাপনের বিষয়টা প্রাধান্য পেয়েছিল, অথবা কিছু অসফল প্রচেষ্টার রেকর্ড রাখা হয়নি। ১৯৯৮ সালে নিউজিল্যান্ডের এক কয়েদি জেলের ভিতরেই কোনো দুর্ঘটনায় তার হাতটি হারায়। একদল শল্যবিদ সেখানেই অন্য এক মৃতদেহের অক্ষত হাত দিয়ে ক্লিন্ট হারালাম নামের ওই কয়েদির কাটা হাত প্রতিস্থাপন করে। সে দলে ফরাসি, ব্রিটিশ ও অস্ট্রেলিয়ান চিকিৎসকরা ছিলেন। হয়ত কয়েদির উপর পরীক্ষা চালান হচ্ছে বলে, বা অন্য কোন কারণে এই ঘটনার সম্পূর্ণ বিবরণ জনসমক্ষে আসেনি কখনো। তবে ততদিনে যথাযথ ইমিউনোসাপ্রেসান্ট তৈরি হয়ে যাওয়াতে প্রতিস্থাপন সফল হয়। গোলমাল হয় অন্য জায়গায়। ক্লিন্ট নিজের শরীরে অন্যের হাত জুড়ে দেওয়াটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছিল না। মনোবিদদের সাহায্য নিয়েও খুব একটা সুবিধা হয় না, সে ওষুধ খাওয়া, ফিজিওথেরাপি নেওয়া, একেবারেই বন্ধ করে দেয়। অতঃপর ২০০১ সালে সে হাত গব্বর সিং থুড়ি, শল্যবিদরা ফেরত নিতে বাধ্য হন। 

এটা সফল না বিফল প্রতিস্থাপন তা বলা খুব মুশকিল হলেও ক্লিন্টের ঘটনা খুব প্রয়োজনীয় একটি বার্তা পৌঁছে দেয় চিকিৎসকদের কাছে। অন্য কারুর অঙ্গ নিজের দেহে গ্রহণ করার আগে, রোগীর শুধু শারীরিক নয়, মানসিক প্রস্তুতিরও প্রয়োজন আছে রীতিমত। দুই ক্ষেত্রে পূর্ণ সম্মতি থাকলে তবেই সফল হবে প্রক্রিয়া। সেই ভাবেই এগোনো হয় এখন। হার্ট বা কিডনির তুলনায় হাতের মত অঙ্গ প্রতিস্থাপন অনেক বেশি জটিল ও সময়সাপেক্ষ। যেমন, হার্টের ক্ষেত্রে ছয় থেকে আট ঘণ্টা লাগে, সেখানে হাত প্রতিস্থাপন করতে লেগে যায় আট থেকে বারো ঘণ্টা। প্রথমে জুড়তে হয় হাড়, তারপর কন্ডরা বা টেন্ডন, তারপর ধমনী, শিরা ও সবশেষে ত্বক।

প্রসথেটিক বা রোবটিক হাত লাগিয়ে নেওয়াটা তুলনামূলক সহজ হলেও অনেকেই চান সত্যিকার অঙ্গ দিয়ে প্রতিস্থাপন করতে। নিজেকে আংশিক যন্ত্র হিসেবে দেখতে কারই বা ভালো লাগে। তবে সত্যিকার অঙ্গ পেতে গেলে বেশ কিছু জটিলতা উপস্থিত হয়। এক তো সঠিক সময়ে মৃতদেহ থেকে সংগ্রহ করে অঙ্গটি সংরক্ষিত করে রাখা, শুধু তাই নয়, অঙ্গটি সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়া প্রয়োজন। একেবারে নিখুঁত ভাবে না মিললেও গায়ের রঙ, আকার ইত্যাদি একেবারে অন্যরকম হলে ভীষণ খাপছাড়া দেখাবে। এ তো আর জোড়াতালি দিয়ে ডক্টর ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইনের দানব বানানো নয়। অঙ্গটি লাগানোর পর তাকে কার্যকরী করে তুলতেও অনেক বেশি বেগ পেতে হয়। তবুও গত কুড়ি বছরে বেশ কিছু হাত প্রতিস্থাপন অত্যন্ত সফল হয়েছে। ২০১৫ সালে ডাক্তাররা প্রতিস্থাপনের কথা মাথায় রেখে মার্কিনি জনাথন কোচের নষ্ট হয়ে যাওয়া হাত কেটে বাদ দেন। সাধারণ অঙ্গচ্ছেদ থেকে এই অপারেশন বেশ আলাদা ছিল। প্রতিস্থাপন হয় এই অঙ্গচ্ছেদের প্রায় আট মাসের মাথায়। কিন্তু হাত বাদ দেওয়ার সময়েই প্রতিস্থাপনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছিল বলে জ্ঞান ফেরার দুই ঘণ্টার মধ্যে জনাথন নাড়াতে পেরেছিল নিজের বৃদ্ধাঙ্গুষ্ঠ, আর দুইদিন পর গোটা হাত।

মূলত ইওরোপ আর যুক্তরাষ্ট্রে এহেন চিকিৎসার সুব্যবস্থা থাকলেও ভারতবর্ষ কিন্তু পিছিয়ে নেই। ২০১৭ সালে কোচির অমৃতা ইনস্টিটিউট অফ মেডিক্যাল সায়েন্সেস-এ সফলভাবে হাত প্রতিস্থাপন করা হয়। ট্রেন দুর্ঘটনায় আহত এক তিরিশ বছরের যুবক দুটো হাতই ফিরে পায় অন্য এক দুর্ঘটনায় মৃত অপর এক যুবকের কাছ থেকে। কুড়ি জন শল্যচিকিৎসক ষোল ঘণ্টার নিরন্তর চেষ্টায় জোড়া দেন দুটি হাড়, দুটি ধমনী, চারটি শিরা এবং চৌদ্দটি কন্ডরা।

পায়ের ক্ষেত্রে কিন্তু বিশেষ সফলতা এখনও পাওয়া যায়নি। 

হাত পা ইত্যাদি তো হল। প্রতিস্থাপন হোক বা কৃত্রিম অঙ্গ, জীবন আটকে থাকে না। কিন্তু কোনও কোনও সময়ে তুখোড় চিকিৎসকরাও অসহায় হয়ে পড়েন। হয়ত বীভৎস দুর্ঘটনায় হাত পা বাকি শরীর ছিন্ন ভিন্ন হয়ে গেছে, কিন্তু মস্তিষ্কটি তার দিব্য সচল। অন্য একজনের হয়ত মস্তিষ্কের আঘাত গুরুতর, বাকি শরীরে আঘাতের চিহ্নটুকু নেই। তখন কি ইচ্ছা হয় না, আহা ওই সচল মাথাটিকে যদি সুস্থ শরীরে জুড়ে দেওয়া যেত?

সেই ১৯০৮ থেকে বিজ্ঞানীরা কখনও কুকুর, কখনও বাঁদর নিয়ে সে চেষ্টার কমতি রাখেননি। ১৯৭০ সালে এমন এক বাঁদরকে দিন আষ্টেক বাঁচিয়েও রাখা গিয়েছিল।  ঘ্রাণ ও শ্রবণশক্তি নাকি বজায় ছিল তার, ছিল স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতাও। কিন্তু ওই পর্যন্তই, বাঁচানো যায়নি তাকে। 

দুটো প্রধান প্রশ্ন পাহাড়ের মত রাস্তা আটকে দাঁড়িয়ে – এক, দুটো ভিন্ন সুষুম্নাকাণ্ড জোড়ার পর ক্ষতিগ্রস্ত স্নায়ুকোষ বা নিউরোনগুলোর ভবিষ্যৎ কী? দুই, প্রক্রিয়া চলাকালীন সুস্থ মস্তিষ্কে রক্তের সরবরাহ বজায় রাখা হবে কীভাবে?

হাতে কলমে না হলেও তাত্ত্বিক সমাধান পেয়েছেন গবেষকরা। মাত্র এক পরমাণু পুরু ন্যানোপদার্থ গ্রাফিনের ব্যবহার হয়ত নিউরোনজনিত সমস্যার উত্তর হতে পারে। উপাদানগতভাবে কার্বন হওয়ার দরুন শরীরের পক্ষে গ্রাফিন ক্ষতিকারক নয়। এর বিদ্যুৎ পরিবহন ক্ষমতা অসাধারণ, তাই ছিন্ন বা ক্ষতিগ্রস্থ স্নায়ুকোষের মধ্যবর্তী ফাঁকে সংকেত পরিবহনের কাজও গ্রাফিন দিয়ে চলতে পারে। আর সার্জারি চলাকালীন মস্তিষ্কে রক্ত সংবহন? বিশেষ ভাবে তৈরি পাম্প আর সিলিকন টিউবের সাহায্য নিয়ে সেটা করাই যেতে পারে। 

ইতিমধ্যে স্পাইনাল কর্ডের আঘাত সারাতে গ্রাফিনের ব্যবহার শুরু হয়েও গিয়েছিল। 

২০১৭ সালে ইতালিয়ান স্নায়ুবিশেষজ্ঞ সার্জিও ক্যানাভারো ও চীনা শল্যচিকিৎসক জিয়াওপিং রেন দুই মৃতদেহের মধ্যে মস্তক আদল বদল করলেন। তাঁদের মতে প্রতিস্থাপন সফল, কিন্তু তা যাচাই করার কোনো উপায় ছিল না, কারণ দুজনেই ছিল মৃত। মাঝের থেকে লোকজন আড়ালে তাদের ডক্টর ফ্র্যাঙ্কেনস্টাইন বলে ডাকতে শুরু করে দিয়েছিল। 

তবে, ডক্টর ক্যানাভারোর কিন্তু মৃতদেহ জোড়া দেওয়ার অদ্ভুত ইচ্ছার পিছনে স্পষ্ট একটা উদ্দেশ্য ছিল। এর দুই বছর আগে তিনি গোটা শরীর প্রতিস্থাপন করতে দিতে ইচ্ছুক এক মানুষকে খুঁজে পেয়েছিলেন। একত্রিশ বছরের রাশিয়ান গ্রাফিক শিল্পী ভ্যালেরি স্পিরিডোনভের ছিল এক বিচিত্র কঠিন অসুখ। তার স্পাইনাল কর্ড, স্নায়ু, সব ধীরে ধীরে নষ্ট হয়ে যাচ্ছিল, শরীরে পেশি বলতে কিছুই ছিল না প্রায়। সে অসুখ সরানোর কোন উপায়ও নেই। তা সেই ভ্যালেরি উপায়ন্তর না দেখে নিজের মাথা অন্যের শরীরে জুড়ে দিতে রাজি ছিল। তাকে দিয়ে ২০১৫ সালে ‘আমি স্বেচ্ছায় রাজি হয়েছি’ ইত্যাদি মর্মে সই সাবুদও করিয়ে নিয়েছিলেন ক্যানাভারো। মৃতদেহের উপরে পরীক্ষাটা তারই মুখবন্ধ বলা যেতে পারে। ন্যানোপদার্থ গ্রাফিন, বিশেষ পাম্প সব তৈরি। ক্যানাভারো প্রস্তুতিপর্বে আরো সময় নিচ্ছিলেন, হয়ত ঠিক সাহস পাচ্ছিলেন না। ২০১৯ সালে অবশেষে তিনি সম্পুর্ণভাবে তৈরি হলেন। তীব্র সমালোচনা হচ্ছিল পৃথিবী জুড়ে, সেসব অবশ্য তাঁকে দমিয়ে রাখতে পারেনি। আসলে সমালোচনা যেমন ছিল, অপেক্ষাও তেমন ছিল গোটা দুনিয়ার। কিন্তু আঘাত এল সম্পূর্ণ অপ্রত্যাশিত দিক থেকে। মত পাল্টাল ভ্যালেরি নিজে, সরে এল নিজের সিদ্ধান্ত থেকে। কে জানে, কী হ’ত সেই প্রতিস্থাপনটা ঘটলে। হয়ত নিজের মাথা সুস্থ একটা শরীরে বসিয়ে দাপিয়ে বেড়াত ভ্যালেরি।

উল্লেখ্য, সে বিয়ে করে ঘর সংসার করেছিল তারপর। রোগ সারার নয়, সারেওনি। তবে সুস্থ একটি সন্তান হয়েছে তার। 

১৯৯৭ সালে হলিউড বানিয়েছিল ফেস/অফ। আপাতদৃষ্টিতে থ্রিলার জঁরের এই চলচ্চিত্রে ছিল সাংঘাতিক এক চিন্তাধারা। নায়ক এখানে নিজের মুখ পাল্টে ফেলেছিল। প্ল্যাস্টিক বা কসমেটিক সার্জারি নয়, স্রেফ নিজের মুখের উপরিভাগ খুলে রেখে ভিলেইনের মত দেখতে একটা মুখ পরে নিয়েছিল সে। সেই সময়ে এটা অবশ্যই ফ্যান্টাসি ছিল, কিন্তু আজ বোধহয় তা আর নয়।

আঠার বছরের কেটি স্টাবলফিল্ড আত্মহত্যা করতে গিয়ে নিজের মুখের দিকে তাক করে গুলি চালিয়েছিল। না, মারা সে যায়নি, শুধু ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল তার সুন্দর মুখটা। মানুষ বলে আর চেনার উপায় ছিল না। তিন বছর পর, ২০১৭ সালে, ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের শল্যবিদরা তার গোটা মুখটা প্রতিস্থাপন করেন। এক এক করে তৈরি করেন তার খুলির অংশ, কপাল, গাল, নাক, চিবুক, চোখ, চোয়াল, এক কথায় সব কিছু। হয়ত আগের সুন্দর মুখটা ফিরে পায়নি কেটি, কিন্তু যা পেল তাও নেহাত মন্দ নয়। আশ্চর্যভাবে গুলি তার মস্তিষ্কের কোন ক্ষতি করেনি। তবে কেটির দৃষ্টিশক্তি ফেরেনি, কথাও জড়ানো। তা হোক, ভুল সিদ্ধান্ত নেওয়া এক মানুষকে আবার মূলস্রোতে ফিরিয়ে তো আনা গেছে। কেটির নতুন মুখের সব অংশ কিন্তু এসেছে এক মৃত ডোনারের কাছ থেকে।  

বিজ্ঞান এগিয়ে চলে নিজস্ব গতিতে, কিন্তু প্রশ্ন ওঠে অনেক। এই প্রক্রিয়া প্রশ্নাতীতভাবে খরচসাপেক্ষ। তাই আর্থসামাজিক বৈষম্য থেকেই যায়। তবে কি একজন আর্থিক ক্ষমতাসম্পন্ন মানুষের চিকিৎসা পাওয়ার অধিকারের কোন সীমাই আসলে নেই। প্রকৃতির দেওয়া খোলনলচে বদলে একজন মানুষ বাঁচতেই থাকবে অনন্তকাল ধরে? কোন সীমায় পৌঁছে তাকে বলা যাবে – আর নয়, এবার মৃত্যুর প্রস্তুতি নাও? কোনো কোনো সমাজে মেয়েদের পণ্যবস্তু বলে মনে করা হত, মানব সভ্যতার সে অন্ধকার দিক আমরা দেখেছি। সেখান থেকে বেরিয়ে আসার তাগিদে বার বার লড়তে হয়েছে, কোথাও আমরা পেরেছি, কোথাও আজও পারিনি। যে সমস্ত দেশে দাসপ্রথার প্রচলন ছিল, সেখানেও নারী পুরুষ নির্বিশেষে ক্রীতদাসদের একটাই পরিচয় ছিল, তারা পণ্যবস্তু। 

প্রতিস্থাপনের এই নব দিগন্ত আবার নতুন করে সেই ঘৃণ্য মনোভাব ফিরিয়ে আনবে না তো? পড়শিকে দেখে মানুষ হয়ত ভাববে, আমার হার্টটা খারাপ – ওরটা পেলে বেশ হয়! একে অন্যের কাছে আমরা স্রেফ পণ্য হয়ে যাই যদি? বেআইনি অঙ্গ পাচার চক্রের কিন্তু কোন কমতি নেই দুনিয়ায়। এখনো পর্যন্ত লিখিত অনুমতি ছাড়া মৃতদেহ থেকে অঙ্গ সংগ্রহ করা যায় না। মৃত ব্যক্তি নিজে অনুমতি দিয়ে না গেলে তাঁর আত্মীয় স্বজনের অনুমতি বা আপত্তির মর্যাদা রক্ষা করা হয়। বেআইনি রাস্তায় গেলে অবশ্য আলাদা ব্যাপার। 

এর পরে থাকে মানিয়ে নেওয়ার প্রশ্ন। অন্য কারুর অঙ্গ নিয়ে বেঁচে ওঠার স্বাভাবিক কৃতজ্ঞতাবোধকে ছাপিয়ে অপরাধবোধ, অস্বস্তি সততই উঁকি দিয়ে যায়। অভ্যন্তরীণ অঙ্গ হলে তেমন সমস্যা নেই, কিন্তু হাত, বা হালের ফেস ট্রান্সপ্লান্টের ক্ষেত্রে? আয়নার সামনে দাঁড়ালে কাকে দেখতে পায় কেটি? নাকি অবশেষে আমরা নাক মুখ চোখের বেড়া ভেদ করে অন্তরতম মানুষটিকে দেখতে শিখছি? 

প্রকৃতি নির্লিপ্ত, হয়ত বা নিষ্ঠুরও। জীবনকে দ্বিতীয় সুযোগ সে অনেক সময়েই দেয় না। বিজ্ঞান দেয়, অন্তত দেওয়ার চেষ্টা করে। তা নিয়ে প্রশ্ন নেই, প্রশ্নটা সুযোগের সীমারেখা নিয়ে।  

হাঁস আর সজারু বেমালুম জুড়ে ফেলার দিন আগতপ্রায়। তবে শরীর যারই হোক না কেন, প্রাজ্ঞ সেই রাজার বিধান অনুযায়ী উত্তমাঙ্গটি যার, পরিচয় পাবার অধিকারও কিন্তু একমাত্র তারই। অন্তত যতদিন না কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা দিয়ে তার মস্তিষ্কটাও বদলে ফেলার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। আমিত্ব লোপ পাওয়া সেই প্রাণীটি আয়নার দিকে তাকিয়ে কী ভাববে তা একমাত্র ভবিষ্যৎই বলতে পারবে।

তথ্যঋণ
*******************************
https://pmc.ncbi.nlm.nih.gov/articles/PMC6511668/ 
 
https://nationalpost.com/health/worlds-first-human-head-transplant-successfully-performed-on-a-corpse-scientists-say 
 
https://westernsurgerycentre.com/indias-first-double-hand-transplant-a-success/ 
 
https://pubmed.ncbi.nlm.nih.gov/30170326/ 
 
 https://www.sciencedirect.com/science/article/pii/S0007091217321645 
 
https://www.cbc.ca/radio/quirks/head-transplants-weed-research-flaws-fake-news-1.3897675/canadian-creates-nanotech-to-make-head-transplants-less-risky-1.3897759 
 
https://www.drnileshsatbhai.com/blogs/hand-transplant-vs-prosthetics/
********************************
বুমা ব্যানার্জীর জন্ম, শিক্ষা ও কর্মক্ষেত্র কলকাতা হলেও বর্তমানে কানাডাবাসী। পদার্থ বিজ্ঞান নিয়ে পড়াশোনা করেছেন, তথ্যপ্রযুক্তি বিভাগে চাকরি করেছেন। লেখালেখির শুরু বিভিন্ন ওয়েব ম্যাগাজিনে। জয়ঢাক, একপর্ণিকা, ম্যাজিক ল্যাম্প, নিউ জার্সি থেকে প্রকাশিত অভিব্যক্তি ও অবসর পত্রিকায় নিয়মিত লেখেন। কিশোর ভারতী পত্রিকায় লেখা প্রকাশিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। কল্পবিশ্ব ও জলফড়িং পত্রিকায় প্রকাশ পেয়েছে ছোটগল্প। সম্প্রতি অন্তরীপ পত্রিকার বিশেষ সংখ্যায় লেখা প্রকাশিত ও পুরস্কৃত হয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন সংকলনে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে কিছু ছোটগল্প ও অণুগল্প। ভেল অফ টেলস্ অডিও স্টোরি চ্যানেলে উপস্থাপিত হয়েছে একটি উপন্যাসিকা। একক গ্রন্থ প্রকাশ করা সামনের লক্ষ্য।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *