উইলিয়াম গিলবার্ট গ্রেস যদি আধুনিক যুগে খেলতেন!

উইলিয়াম গিলবার্ট গ্রেস যদি আধুনিক যুগে খেলতেন!

২০১৪ সালের নভেম্বরে, উইলিয়াম গ্রেস-এর (WG) মৃত্যুর (২৩শে অক্টোবর, ১৯১৫) প্রায় একশো বছর পরে প্রকাশিত একটা লেখা পড়ছিলাম – ‘fantasy cricket।’ জাতীয় খেলা নিয়ে চর্চা করেন এমন একজনের লেখা, ESPN Cric Info-র তথ্যাদি ব্যবহার করে। অতএব “তবে কেমন হ’ত তুমি বলো তো” ধাঁচের রচনাটি – বেশ আগ্রহ-জাগানো!

এই প্রসঙ্গে আমরা ১৮৪৮ সালের ১৮ই জুলাই তারিখে ইংল্যান্ডের ব্রিস্টল শহরে জন্মানো WG-র কিছু ক্রিকেটীয় পরিসংখ্যান ফিরে দেখব এবং সঙ্গে আধুনিক ক্রিকেটের (বিগত তিন-চার দশকের, বিশেষত আশি-নব্বইয়ের দশক থেকে শুরু ক’রে) কয়েকজন ‘দীর্ঘজীবী’ বিখ্যাত ইংরেজ ক্রিকেটারের কথাও উল্লেখ করব।

ক্রিকেট-জীবনের দৈর্ঘ্য ও ম্যাচ-সংখ্যা

WG প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট খেলতে শুরু করেন ১৭ বছর বয়সে (১৮৬৫ সাল) এবং শেষ করেন ৬০ বছর বয়সে (১৯০৮ সাল)। আজকের দিনে ৪৪ বছর ধরে এই পর্যায়ে খেলে-যাওয়া অকল্পনীয়। অবশ্যই ভারতের সি.কে. নাইডু খেলেছেন ১৯১৬-১৭ (২১ বছর বয়স) থেকে ১৯৬৩-৬৪ (৬৮ বছর বয়স) মরশুম পর্যন্ত। অর্থাৎ ৪৮ বছর ধ’রে – এটাও মনে রাখা যাক!

WG-র সময়ে টেস্ট-ক্রিকেট তুলনায় অনেক কম গুরুত্ব পেত। তার শুরুই তো হয় তাঁর ক্রিকেট-জীবন আরম্ভ করবার বছর-বারো পরে, ১৮৭৭ সালের মার্চ মাসে। যখন তাঁর টেস্ট-অভিষেক হয় – ১৮৮০ সালে ওভাল মাঠে অজিদের বিরুদ্ধে – ততদিনে তাঁর বয়স ৩২ বছর। তাঁর সুদীর্ঘ ক্রিকেট-জীবনের কথা বিবেচনা করলে মনে হয় বর্তমান সময়ে খেললে তিনি বোধহয় একশো তো বটেই, হয়ত সোয়াশো টেস্ট-ম্যাচ খেলতেন। বাস্তবে খেলছিলেন মাত্র ২২টা ম্যাচ, ১৮৯৯ সাল পর্যন্ত। একবার নজর দিই এই শতকের দু’জন ‘দীর্ঘজীবী’ বিখ্যাত ক্রিকেটারের প্রতি – একজন ইংরেজ, অপরজন ভারতীয়।

১৯৬৩ সালে জন্মানো অ্যালেক স্ট্যুয়ার্ট-এর ২২ বছরব্যাপী (১৯৮১ থেকে ২০০৩) প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট-জীবন। ২৭ বছর বয়সে টেস্ট-অভিষেক করেন এবং ৪০ বছর বয়স অবধি টেস্ট-ক্রিকেট খেলেন – মোট ১৩৩টা টেস্ট-ম্যাচ। ব্যাটার-উইকেটরক্ষক হিসেবে শারীরিক সক্ষমতা তিনি শেষ অবধি বজায় রেখেছিলেন। তাঁর একমাত্র তুলনীয় হয়ত তেন্ডুলকর, ১৯৮৮ সালে যাঁর ১৫ বছর বয়সে শুরু প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেট-জীবন (১৬ বছর বয়সে ১৯৮৯ সালে শুরু-হওয়া টেস্ট-ক্রিকেট-জীবন) শেষ হয় ২০১৩ সালে, যখন তিনি সাড়ে-৪০ বছরের, আর ২০০টা টেস্ট-ম্যাচ খেলে বিশ্বরেকর্ড গড়েছেন।

আধুনিক-ক্রিকেটের শারীরিক সক্ষমতার চাহিদার সঙ্গে WG কতটা তাল রাখতে পারতেন তা আন্দাজ করা কঠিন – সুখাদ্য ও পানীয়ের প্রতি তাঁর বেশ ভালই আকর্ষণ ছিল, যদিও ধূমপান তিনি সচরাচর করতেন না। অবশ্য খেলার প্রতি তাঁর দুর্নিবার আকর্ষণ এবং আন্তর্জাতিক মঞ্চের সর্বোচ্চ-স্তরে নিজের দক্ষতা প্রদর্শনের সুযোগ তিনি নিশ্চয়ই নিছক ‘উত্তম খানাপিনা’-র জন্য হাতছাড়া করতে চাইতেন না!

রানসংখ্যা, সর্বোচ্চ ইনিংস ও টেস্ট-শতরানের সংখ্যা

রানসংগ্রহের ব্যাপারে WG-র যে এক অপরিসীম ক্ষুধা ছিল, এ নিয়ে সন্দেহের কোনও অবকাশই নেই – প্রায়শই তাঁর সমসাময়িকদের তিনি ছাড়িয়ে গেছেন। ১৮৭১ মরশুমে প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচে তিনি করেছিলেন ২,৭৩৯ রান গড় ৭৮.২৫ ১০টা শতরান সমেত। দ্বিতীয় স্থানাধিকারীর গড় ছিল ৩৭.৬৬, অর্থাৎ অর্ধেকেরও কম।

১৮৭৬ মরশুমে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটের সর্বপ্রথম ত্রিশতরানটি তিনিই করেন – আট দিনের মধ্যে দু’বার ত্রিশতাধিক রানের ইনিংস খেলেন। ঐ আট দিনে তিনি করেছিলেন ৮৩৯ রান – ৩৪৪ (এমসিসি বনাম কেন্ট), ১৭৭ (গ্লস্টারশায়ার বনাম নটিংহ্যামশায়ার) ও ৩১৮ (গ্লস্টারশায়ার বনাম ইয়র্কশায়ার)। অবিশ্বাস্য! সেই মরশুমে মাত্র আর একজন ক্রিকেটার এক-হাজার রান করেছিলেন।

১৮৭১ (২৩ বছর বয়স) থেকে ১৮৮০ (৩২ বছর বয়স) এই এক দশকে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তাঁর ব্যাটিং-গড় ছিল ৪৯ যেখানে বাকি আর কেউ ২৬-এর ওপরে যেতে পারেননি। অথচ এমন সময়কালে তিনি টেস্ট খেলেননি। 

আধুনিক কালে যে কোনও ক্রিকেটারের প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে এমন প্রদর্শন থাকলে তাঁকে অবশ্যই টেস্টে স্থান দেওয়া হত!

টেস্ট-ক্রিকেট থেকে অবসর-নেওয়া সেকালের ‘এক-হাজারী মনসবদার’-দের ছ’জনের মধ্যে WG একজন। টেস্ট-অভিষেকে শতরানকারী দ্বিতীয় ব্যাটারও তিনিই (চার্লস ব্যানারম্যান-এর পরেই) – মনে করিয়ে দিই। লর্ডস-এর এমসিসি-সংগ্রহশালার দেওয়ালে ওঁর এই প্রতিকৃতি কী আর এমনি এমনি রাখা হয়েছে!

প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে রানের এমন ক্ষুধা ও দ্বিশতাধিক/ত্রিশতাধিক রানের ইনিংস খেলার প্রবণতা আধুনিক সময়ের কয়েকজন ইংরেজ ব্যাটারের মধ্যে দেখা গেছে – গ্রাহাম গুচ, মার্ক রামপ্রকাশ (১৭টা দ্বিশতাধিক রানের ইনিংস), গ্রেম হিক (১৬টা দ্বিশতাধিক রানের ইনিংস)। তবে গুচ-ই টেস্ট-ম্যাচে তাঁর প্রদর্শনের ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছেন। আশা করা যায় যে গুচ-এর মতন না করলেও WG অন্তত রামপ্রকাশ বা হিক এই দু’জনের থেকে খারাপ করতেন না! গুচ ও WG দুজনেরই প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১৩টা ক’রে দ্বিশতাধিক রানের ইনিংস আছে, গুচ-এর প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে ১২৮টা শতরান, WG-র ১২৪টা। গুচ ১১৮টা টেস্টে ২০টা শতরান করেছেন – ৮ বার ১৫০-র বেশি, ১টা ক’রে দ্বিশতরান ও ত্রিশতরান। WG কি পারতেন তাঁর ১৮৭০-এর দশকের ফর্ম দিয়ে গুচ-এর মতন টেস্ট-প্রদর্শন করতে? আমরা কোনদিনই তা জানতে পারব না!

আধুনিক কালে কেভিন পিটারসন (৩টে দ্বিশতরান), অ্যালাস্টেয়ার কুক (৫টা দ্বিশতরান), জো রুট (৫টা দ্বিশতরান) এমন কয়েকজন ইংরেজ ব্যাটার বড় টেস্ট-ইনিংস খেলবার জন্য সুবিদিত। বড় টেস্ট-ইনিংস খেলবার এই দক্ষতা ও ধৈর্য WG বহুবার দেখিয়েছেন প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে – টেস্টেও পারতেন বলে মনে হয়।

পিটারসন-এর মতনই দর্শক-আকর্ষণী ক্ষমতায় WG ছিলেন অগ্রণী। একবার The Irish Times পত্রিকায় বেরিয়েছিল:

Standing at six foot two and with a flowing black beard, he revolutionised batting, brought cricket to the masses and made it the most popular spectator sport of the summer in England. Such was his popularity that in cricket grounds notices were displayed: “Admission threepence. If Dr. WG Grace plays, admission sixpence.

গুচ ১১৮ ম্যাচে ৮,৯০০ রান নিয়ে টেস্ট-জীবন শেষ করেন, পিটারসেন ১০৪ ম্যাচে ৮,১৮১ রান (২৩টা শতরান)। WG হয়ত মোটামুটি এমনই কোথাও শেষ করতেন – ২২ ম্যাচে ১,০৯৮ রান ২টো শতরানের পরিবর্তে!

ব্যাটিং-গড়
আধুনিক ক্রিকেটের পরিপ্রেক্ষিতে WG-র ব্যাটিং-গড় – প্রথম-শ্রেণীর ম্যাচে ৩৯.৪৫ ও টেস্ট ম্যাচে ৩২.২৯ – উল্লেখযোগ্য নয়। কিন্তু খেয়াল রাখা যাক তাঁর সেরা সময়ে প্রথম-শ্রেণীর ক্রিকেটে তিনি তাঁর সমকালীন ব্যাটারদের দ্বিগুণ গড় প্রায়শই রাখতেন। আধুনিক কালের পিচ ও পেশাদারি অনুশীলনের যুগে তাঁর এই পরিসংখ্যান যে অনেকটাই উন্নত হ’ত, এটা আশা করাই যায়। মনে করিয়ে দিই:

If his overall batting average doesn’t seem as impressive as some of the more recent batsmen, remember that he played his entire cricket on pitches that were hardly as well laid out as the tracks we’re used to.

১৯১৫ সালে The Guardian পত্রিকায় WG-র মৃত্যুবার্তায় উল্লেখ করা হয়েছিল: “…[T]he length of years during which he stood far above all rivals”, এবং কেমনভাবে “his stupendous total output hopelessly outdistanced all rivals,” ১৯৮৮-র Wisden Almanack-এ ইংরেজ সাংবাদিক জিওফ্রে মুরহাউস জানান: “[T]he cricketing Grace totally dominated his own era.” – এগুলো কী শুধুই কথার কথা!

সব মিলিয়ে এটা কতখানি কষ্টকল্পনা হবে যে, WG-র প্রতিভা-দক্ষতা-মানসিকতা এগুলোকে যদি (কোনও জাদুবলে) আধুনিক যুগের পেশাদারিত্ব এবং অনেক-বেশি ব্যাটার-সহায়ক পিচে নিয়ে আসা যায়, তাহলে গুচ বা পিটারসন যতখানি পারেননি WG কি তাঁর ইংরেজ সহ-ব্যাটারদের ততখানি ছাপিয়ে যাবেন? উত্তরটা কেমন হবে, আন্দাজ করবার খানিক চেষ্টা করা যাক!

গুচ-এর টেস্ট-ব্যাটিং-গড় ৪২.৫৮ – মার্শাল-অ্যামব্রোজ-ওয়াকার-ওয়াসিম এঁদের শাসনকালে – কিন্তু সমসাময়িক সহ-ব্যাটার রবিন স্মিথ (৪৩.৬৭) ও ডেভিড গাওয়ার (৪৪.২৫) এঁদের থেকে কম।
তেমনভাবে, পিটারসন হয়ত তাঁর সহ-ব্যাটারদের থেকে বেশিসংখ্যক টেস্ট-দ্বিশতরান করেছেন, কিন্তু তাঁর টেস্ট-ব্যাটিং-গড় ৪৭.২৮ সহ-ব্যাটার জোনাথন ট্রট (৪৪.০৮) ও ইয়ান বেল (৪২.৬৯) এঁদের থেকে খুব বেশি নয়।

আধুনিক যুগের প্রেক্ষিতে তাঁর সমসাময়িকদের তুলনায় WG-র অসাধারণ ব্যাটিং-প্রতাপ বোঝাতে গেলে তাঁর ‘ভবিষ্যদ্বাণী-করা’ টেস্ট-ব্যাটিং-গড় এইসবের থেকে বেশি হওয়া উচিত।

বিপক্ষেও যুক্তি আছে। আধুনিক যুগের প্রেক্ষিতে WG-র দুনিয়া-জেতা টেস্ট-ব্যাটিং-গড় আন্দাজ করবার পথকে দুর্গম করতে কয়েকটা অজানা বাধা আছে। পিচের ধরণের উন্নতি যদি সেই গড়কে ঠেলে তোলে, অন্য কয়েকটা ব্যাপার বিষয়টিকে আবার জটিল করে দেয়।

প্রথমত, আধুনিক যুগের ব্যাটারদের পরিবেশের যতরকম বৈচিত্র্য সামলাতে হয় – দ্রুতগতির বাউন্সি পিচ (পার্থ, ব্রিসবেন, ডারবান, জো’বার্গ) থেকে উপমহাদেশের ধীরগতির ধূলোটে পিচ। WG তো কেবল অজিদের বিরুদ্ধেই টেস্ট খেলেছেন, তাও তিনটে বাদে বাকিগুলো সবই স্বদেশের মাঠে। বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন পরিবেশে (গরম, আর্দ্রতা, ধুলো) তিনি কেমন মানিয়ে নিতেন, এই প্রশ্নের সদুত্তর নেই।

দ্বিতীয়ত, তাঁর সময়ে দ্রুত শর্টপিচ-বোলিংয়ের চল প্রায় ছিলই না, তাই তেমনধারা পেস-বোলিং আর আধুনিক সময়ের বৈচিত্র্যময় স্পিন-ওস্তাদ (কুম্বলে, ওয়ার্ন, মুরলী, সাকলাইন, অশ্বিন) উইকেট-শিকারিদের তিনি কেমনভাবে সামলাতেন, তাও এক কঠিন প্রশ্ন।

WG ও তাঁর ব্যাটিং-ভঙ্গি সম্বন্ধে যা জানা যায় তা হল তিনি প্রথাসম্মত কায়দায় সোজা-ব্যাটে খেলতেন: “it was with a remarkably straight bat that the ball was played (by him).”

ক্রিকেটে তাঁর এক অন্যতম অবদান:

Grace is widely held to have invented the modern art of batting, with cricket historians noting that he played shots off both front and back foot, playing only the shot he deemed appropriate to the ball delivered. If this now describes a prerequisite for batsmen, remember they previously played either forward or back and made a specialty of a certain stroke; the batsman who scored to all parts of the ground was previously only the figment of a fertile imagination.

ব্যাটিং-পদ্ধতিতে এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন তিনি এনেছিলেন প্রায় দেড়-শতাব্দী আগে – সাধে কী উনি ‘আধুনিক ব্যাটিংয়ের জনক’ নাম পেয়েছেন! ওঁর লেখা ক্রিকেট-প্রশিক্ষণের একটা বইয়ের দুয়েকটা ছবি এখানে দিলাম, আমার ব্যক্তিগত সংগ্রহ থেকে, বইটা প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল ১৮৯১ সালে।

যদিও তাঁর ব্যাটিং-কৌশল আধুনিক যুগোপযোগী অভিযোজ্যতার (adaptability) পরিচায়ক, রীতিমত দ্রুতগতির শর্টপিচ-বোলিং ও উচ্চমানের বৈচিত্র্যময় স্পিন-বোলিং তিনি কতটা ভালভাবে সামলাতে পারতেন বলা অসম্ভব।

এই কারণে, আধুনিক-যুগের WG-র ‘ভবিষ্যদ্বাণী-করা’ টেস্ট-ব্যাটিং-গড়, বর্তমান যুগের দুনিয়ার মহান ব্যাটারদের সেরা টেস্ট-ব্যাটিং-গড়ের থেকে কমই থাকা উচিত, যদিও প্রায় এক শতাব্দী পরের পরিবেশে/পরিস্থিতিতে বেড়ে-ওঠা অন্য ইংরেজ ব্যাটারদের থেকে সেটি বেশি থাকা উচিত।

ফলে WG-র এই ‘ভবিষ্যদ্বাণী-করা’ টেস্ট-ব্যাটিং-গড় থাকবে পিটারসন-এর ৪৭.২৮ থেকে বেশি কিন্তু সাঙ্গাকারা (৫৭.৪০), ক্যালিস (৫৫.৩৭), তেন্ডুলকর (৫৩.৭৮), লারা (৫২.৮৮), পন্টিং (৫১.৮৫) এঁদের থেকে কম। ওঁর এই ‘কাল্পনিক’ টেস্ট-ব্যাটিং-পরিসংখ্যান হয়ত হবে: ১২২ ম্যাচে ৯,১৫০ রান (সর্বোচ্চ ৩২৪) গড় ৪৯.৫০ (২৬টা শতরান সমেত), যদিও এটা সম্পূর্ণভাবেই জল্পনা!

প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করি যে WG-র এই কাল্পনিক টেস্ট-ব্যাটিং-পরিসংখ্যান’-এর সঙ্গে বেশ মিল আছে আধুনিক যুগের এক বিখ্যাত পাক ব্যাটারের বাস্তব টেস্ট-ব্যাটিং-পরিসংখ্যানের – ১২০ ম্যাচে ৮,৮৩০ রান (সর্বোচ্চ ৩২৯) গড় ৪৯.৬০ (২৫টা শতরান সমেত), যিনি ইনজামাম-উল-হক।

দু’জনের চেহারার সাদৃশ্যও নেহাৎ মন্দ নয়!

তবে যে ব্যাপারে কোনও সন্দেহই থাকতে পারেনা সেটা এই – WG ক্রিকেটের এক প্রবাদপ্রতিম চরিত্র যিনি ‘কাল্পনিক’ পরিসংখ্যানের মতন/কাছাকাছি পরিসংখ্যানই অর্জন করতে পারতেন, এবং আধুনিক-যুগেও ইংল্যান্ডের সেরা ব্যাটারদের একজন হতেন।

———-

তথ্যসূত্র: https://bleacherreport.com/articles/2267148-predicting-wg-graces-record-if-he-played-in-the-modern-era

ছবি: ব্যক্তিগত সংগ্রহ ও অন্তর্জাল থেকে সংগৃহীত।

কলরব রায়ের জন্ম কলকাতায়, ১৯৫৯ সালে, কর্মজীবনের বেশির ভাগও সেখানেই অতিবাহিত। স্কুল-জীবন কাটে দক্ষিণ কলকাতার দেশপ্রিয় পার্ক অঞ্চলের তীর্থপতি ইনস্টিটিউশনে। পাড়ার ক্লাবে ও স্কুলের ক্রিকেট দলে নিয়মিত খেলবার অভ্যাসটা ছিল। কলেজ-জীবনে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের ছাত্র – ইলেক্ট্রনিক্স নিয়ে স্নাতক, কম্প্যুটার সায়েন্স নিয়ে স্নাতকোত্তর। তিন দশক তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে কর্মসূত্রে দেশে-বিদেশে প্রচুর ঝাঁকিদর্শন করে, তারপর সপ্তবর্ষব্যাপী ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে অধ্যাপনা অন্তে ২০১৯ সালে স্বেচ্ছাবসর গ্রহণ। পাঁচ বছর বয়স থেকেই ‘ক্রিকেট-প্রেমিক’। বর্তমানে ‘নন-ফিকশন’ বইয়ের প্রতিই বেশি আকর্ষণ, যদিও সবচেয়ে প্রিয় তিন বাংলা কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মুজতবা আলী, শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় এবং শিবরাম চক্রবর্তী। ক্রিকেট-বিষয়ক বইয়ের একনিষ্ঠ পাঠক, সংগ্রাহকও বটে। প্রিয় ক্রিকেট-লেখকদের মধ্যে আছেন শঙ্করীপ্রসাদ বসু, রে রবিনসন, টনি কোজিয়ার, ডেভিড ফ্রিথ, প্রমুখ। গত বছর প্রকাশিত হয়েছে লেখকের প্রথম বই "ক্রিকেটের খেরোর খাতা", এই বছর এল “ক্রিকেটের খেরোর খাতা: ফলো-অন”, আর লিখেছেন “Our Cricketing Odyssey with Kapil”, ভাস্কর বসু-র সঙ্গে যুগ্মভাবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *