পাঠ প্রতিক্রিয়া – সিন্ধুপারের পাখি

পাঠ প্রতিক্রিয়া - প্রফুল্ল রায়ের উপন্যাস

প্রফুল্ল রায়ের বঙ্কিম পুরস্কারপ্রাপ্ত উপন্যাস – সিন্ধুপারের পাখি

বইঃ সিন্ধুপারের পাখি 
লেখকঃ প্রফুল্ল রায়
প্রকাশঃ ১৯৮৫, দে’জ পাবলিশিং  

পূর্বদেশীয় উপকথায় আছে একজন নামহীন স‌ওদাগর তার সাধের সপ্তডিঙা মধুকরটি ভাসিয়ে দিয়েছিলেন দুস্তর পারাবারে। সেই দরিয়ার পানি ঘোর কৃষ্ণবর্ণ।‌ কালোবরণ জল নৌকাকে টেনে নিয়ে গেল আরেক আন্ধারমাণিক্যে‌। আন্ধারমাণিক্য কী? সেই হল ওই নিষ্করুণ, নিদারুণ দ্বীপ যার নাম আন্দামান।

উপকথা আর রূপকথা পিঠোপিঠি ভাইবোন। রূপকথা অনুসারে দু’জন আরব নাবিককে পথ দেখিয়ে নিয়ে যাচ্ছিল এক ঝাঁক সাগর পাখি। তাদের ডানার উপর অগাধ আস্থা রেখে সেই নাবিক দুটো দিক ভুল করে। পৌঁছে যায় নতুন এক দ্বীপে। দ্বীপে পৌঁছানোর পর পাখিগুলো কি মিলিয়ে গিয়েছিল? মায়াপাখি ছিল তারা? সমাপ্তিবিহীন সমুদ্রের মাঝে একটুখানি বিরতির মতো আন্ধারমাণিক্য বা আন্দামান দিকভ্রান্ত নাবিক দুটিকে কী দিয়েছিল? খাদ্য? স্বাদুজল? তারপর কী হয়েছিল? কিসের টানে দূরদূরান্ত থেকে স‌ওদাগররা ছুটে যেতেন এই দ্বীপে? শুধু আরব বা জাপানি স‌ওদাগর‌ তো নয়, বৌদ্ধ ভিক্ষুণী কিংবা শ্রমণরাও এসেছেন এখানে। কেন? 

প্রফুল্ল রায় তাঁর সিন্ধুপারের পাখি উপন্যাসের কথামুখে লিখেছেন, “Life is not a series of gig lumps symmetrically arranged.” সত্যিই তো প্রবাহমান জীবন এবং জলধারা কোনওটাই পারম্পর্য অনুযায়ী সাজানো গোছানো হয় না‌। আন্দামান নামক ভূখণ্ডটি এই উপন্যাসের এক জীবন্ত চরিত্র। সে একসময় ছিল মালয়, চীনা জলদস্যুদের, যারা এর উপকূলে হন্যে হয়ে ঘুরত, রাজদরবারে বিক্রি করত এখানকার আদিবাসী মানুষদের। কখন‌ও ছিল সেইসব নাবিকদের যারা জারোয়াদের বিষ মাখা তীরের ফলায় প্রাণ দিয়েছে। আবার কখনও হয়ে উঠেছে কালাপানি পেরিয়ে আসা সেইসব পাঠান, পাঞ্জাবি, বর্মী, চীনা, বাঙালি কয়েদিদের চারণভূমি, যারা সেলুলার জেলের কয়েদখানায় ছোটো ছোটো খুপরির অন্ধকারে বসে শুনতে পেত সাগর পারে ঢেউ ভাঙার শব্দ। “আন্দামানের মূক মাটিতে অনেক দীর্ঘশ্বাস, অনেক লোহু, অনেক স্বেদ, এবং অভিশাপ গোপন হয়ে আছে।” সিন্ধুপারের পাখি উপন্যাসটি সেই দীর্ঘশ্বাসের কবিতা, সেই লোহুর আল্পনা, সেই স্বেদের নথি, সেই অভিশাপের‌ই পরোয়ানা।

সেলুলার জেল – সম্ভবত ১৯১০/’১১ সালের ছবি। জেল চালু হয়েছিল ১৯০৬ সালে

পোর্ট ব্লেয়ারে বসে এক কয়েদি লেখক প্রফুল্ল রায়কে বলেছিলেন, “বাবুজি, এই আন্দামান সহজ জায়গা নয়। কোতল, রাহাজানি, ডাকাতি, না করলে এখানে আসা যায় না। যেদিকে তাকাবেন, যে মুখটি দেখবেন, হয় সে খুনিয়ারা, নয় লুঠেরা। সেজন্য মনে ঘৃণা রাখবেন না। একটু দরদি হবেন। সকলের বুকে কান রেখে দিলের কথা শুনবেন; তারপর তাদের মুখের দিকে তাকাবেন। দেখবেন, তারা খুব খারাপ নয়। কয়েদিরাও মানুষ।” 

ঠিক তাই করেছেন লেখক। প্রিয়জন, পরিজন বিহীন এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে, স্নেহ, মায়া, মমতাহীন, সেলুলার জেলের অন্দরমহলে কী ভাবে গোপনে বিবর্তিত হয় এইসব দাগি কয়েদিদের আত্মা, কী ভাবে তামাটে রঙের আকাশের দিকে তাকিয়ে মৌসুমী মেঘের ফাঁক দিয়ে উড়ে যাওয়া এক ঝাঁক পাখি দেখতে দেখতে হারিয়ে যায় খুনের আসামির বিকল মন, কী ভাবে গ্লানি নৃশংসতার মাঝেও ফুটে ওঠে মানুষে মানুষের তীব্র প্রেমের চির লীলায়িত আখ্যান, তার নজির এই উপন্যাসের ছত্রে ছত্রে ছড়ানো।

গোটা উপন্যাস জুড়ে এক দমফাটা সামুদ্রিক বাতাস বয়ে যায়। নারকেল বনের জঙ্গলে মাথা কোটে সেই বাতাস, চক্কর কেটে আসে গভীর, গহন, প্রমত্ত বঙ্গোপসাগরে, আবার কখনও ছুটে যায় রস আইল্যান্ডের সিকমেনডেরায়ম যেখানে তার মরদকে খুন করে আসা মারাঠি তরুণী বিশ বছরের ‘খুবসুরতী’ সোনিয়া নিজের পেটের ভিতরে একতাল মাংসপিণ্ডের ওঠানামা টের পেয়ে যন্ত্রণায় কঁকিয়ে ওঠে। তার আর্তনাদ মিশে যায় বাতাসের গর্জনে। দক্ষিণ আন্দামানের আটলান্টা পয়েন্টের মাথায় রেন্ডিবারিক জেলের কয়েদিনীদের দৃষ্টিতে এই বিবেকহীন, স্নেহহীন আন্দামান কি কোনদিন তাদের আদরের ঘর হয়ে উঠতে পারবে? 

সেলুলার জেল – সমসাময়িক সংস্কারের পরে

এই উপন্যাসের সময়কাল ১৯১১। আড়াইশো জন কয়েদি নিয়ে বঙ্গোপসাগর থেকে ঢেউ ফুঁড়ে ফুঁড়ে ছুটছে এস. এস. এলফিনস্টোন জাহাজ। জাহাজে রয়েছে লখাই, তোরাব আলী, মোঙ চো, ভিখন। এরা প্রত্যেকেই খুনের আসামি। ভয়ঙ্কর, নির্দয়, নিষ্ঠুর। কিন্তু অদ্ভুত ক্ষমতা কালো কুটিল জলরাশির। পাষাণ মানব হৃদয়ের কোণে আশ্রিত বিপুল অতলান্তিক ভয়কে টেনে বের করে তার‌ই চোখের সামনে সজোরে আছড়ে ফেলে‌। তোরাব আলী হাঁটুতে মুখ গুঁজে বলে, “জবর তরস লাগে লখাই ভাই– দরিয়া দেখে, কালাপানি দেখে।” লখাই তার স্বভাবসিদ্ধ ভঙ্গিতে বলে ওঠে, “মানুষের খুন দেখে তরাস লাগে না, পানি দেখে তরাস লাগে! চুপ মার কুত্তা; এট্টুন ঘুমুতে দে।” 

লখাই‌ অন্য ধাতুতে গড়া। তার কাছে জীবন মানে নেশা এবং নারীমাংস। পুরুষমানুষ কাঁদে না, ভয় পায় না। সে বরং এই উন্মাদ জলরাশির সঙ্গে নিজের মিল খুঁজে পেয়েছে‌। তাই বেড়ি পরানো পায়ে অল্প অল্প করে হেঁটে ডেকে উঠে এসে লোনা জলের দরিয়ার দিকে তাকিয়ে থাকে। তুফান বাতাস তাকে নাস্তানাবুদ করতে চায়, নাক মুখ ফেটে তাজা রক্তের ফোয়ারা ছোটে তাও লখাই দাঁড়িয়ে থাকে‌। শেষে এক খালাসি তার পা ধরে টেনে লোয়ার ডেকের দরজা খুলে ভরে দেয়, পঞ্চাশটি মেয়ে কয়েদিদের আস্তানায়। 

কয়েদিনীদের মধ্যে একজনকে পেয়েছিল লখাই যাকে সে বলেছিল, “বড় যন্তরনা হচ্ছে। বুকের কাছটা বহুত দরদ; বুকটা চেপে ধর।” লখাইয়ের পাথুরে বুকেও যন্ত্রণা হয় তাহলে? তার‌ও গা ঝমঝম করে? সোনিয়া তার স্পর্শ দিয়ে লখাইয়ের যন্ত্রণার উপশম করেছিল। আর এই ভয়ঙ্কর দিনেই লখাই আর‌ও আরেকটা সত্যি জেনেছিল। “সমস্ত জীবনে নারীর একটি মহিমায় সে জেনেছে। যে নারী তার কামাতুর দেহ নিয়ে পুরুষকে মাতিয়ে তোলে, ছলাকলা দিয়ে বিচিত্র এক নেশায় তাকে বুঁদ করে রাখে, একমাত্র তাকেই সে চেনে, বুঝতে পারে।” কিন্তু যে নারী অপরিচিত এক পুরুষের কাছে অনায়াসে কেঁদে ওঠে, কামবিহীন স্পর্শে শান্তি দেয় তাকে সে বুঝতে পারে না। সেই নারীটি তার কাছে ওই অচেনা দ্বীপের মতো অগম্য।

যে কোন উপন্যাসের প্রধান সম্পদ তার চরিত্ররা। সিন্ধুপারের পাখি তার ব্যতিক্রম নয়। উপন্যাস যত এগিয়েছে তত‌ই নতুন নতুন চরিত্র এসেছে। ঘটনাও ঘটেছে। তবে তা চরিত্রগুলোকে উন্মোচনের খাতিরেই। কী বিচিত্র তাদের রেঞ্জ! সুমাত্রা থেকে মুক্তোর খোঁজে আসা হার্মাদ ডি কুনহা, পাগলের অভিনয় করে চলা কয়েদি পরাঞ্জপে, আওয়াবিল পাখির বাসা ভেঙে বিক্রি করা জগদীপ, বুকের মধ্যে সিপাহি বিদ্রোহের আগুন পুষে রাখা বৃদ্ধ ন‌ওয়াজ খান আর‌ও কত কে, গুনে শেষ করা যাবে না! লেখক বলেছেন সব চরিত্র কাল্পনিক। কিন্তু পড়তে পড়তে কখনও মনে হয় না এরা সত্যিই কল্পনার আশ্রয়ে গড়ে ওঠা মানব মূর্তি। এমনভাবে এদের শিরা এবং ধমনীর ভিতর দিয়ে ঔপন্যাসিক প্রফুল্ল রায় তাঁর জাদু প্রোথিত করেছেন যে এরা প্রত্যেকে হেঁটে চলে বেড়ায়, ঘাড় ঘুরিয়ে দেখে, ফিসফিস করে বলে, “জিন্দেগী মস্ত একটা তামাশা, বঢ়িয়া এক দিল্লাগী। আজ তোর সাথে কথা বলছি, কাল আর আমাকে দেখবি না।”

উপন্যাসের মাঝে কিছু চরিত্র হারিয়েও গেছে। যেমন তোরব আলী।‌ একদিন উন্মাদের মতো সে পালাতে চাইল। লখাই তাকে বুঝিয়েছিল, কালাপানি কি অতো সহজে পার করা যায়? কিন্তু সে বোঝেনি। বিবির পেটে থাকা বাচ্চাটাকে একবার যে তোরব দেখবেই! সেই জন্য ছোট্ট একটা নৌকা নিয়ে সে ঝাঁপিয়ে পড়ল। তোরব কি পৌঁছাতে পেরেছিল? নাকি সমুদ্র তার পাহাড় প্রমাণ ঢেউয়ের মাথায় তুলে তারপর অতলে নিয়ে গিয়ে গিলে ফেলছিল তাকে? এটাই তো সেই দ্বীপ, যেখানে থাকতে থাকতে প্রাণ অতিষ্ঠ হয়। এখানে শান্তির ঈশ্বর, ন্যায়ের ঈশ্বর, সততার ঈশ্বর নেই। এখানে দিকচক্রবাল থেকে ধেয়ে আসে কালো জলরাশি, আকাশে ওড়ে সিন্ধু শকুন।

তাও এখানেই সোনিয়া স্বপ্ন দেখে। আন্দামানের জেলের নিয়ম পাঁচবছর থাকার পর কয়েদিরা বিয়ে করার অনুমতি পায়।‌ সোনিয়ার অবশ্য কয়েকদিন‌ই হয়েছে এই দ্বীপে কিন্তু তাতে কী? ওই যে তলপেটের যন্ত্রণাটা, যার জন্য সিকমেনডেরায় ছুঁচ ফোটাতে যেতে হয়, সেই যন্ত্রণা থেকে মুক্তির একমাত্র উপায় হল পুরুষসঙ্গ। ডাক্তার বলেছে। “রোগ সেরে যাবে‌। বেঁচে ওঠার অন্ধ, উন্মাদ নেশায় বুঁদ হয়ে” থাকে সোনিয়া। 

সিন্ধুপারের পাখি উপন্যাসটি অনেকটা মানুষের মনের মতোই বিচিত্র।‌ কখন কী ঘটবে বলা যায় না। তাই বন্দিনি সোনিয়া পূর্বতন স্বামীকে খুন করার সমস্ত অপরাধবোধ ভুলে গিয়ে হঠা‌ৎ‌ই ভালবেসে ফেলে কালাপানির দ্বীপকে, নিজের জিন্দেগিকে। তবে তার শাদীর প্যারেডে যাওয়ার কথা শুনে কেন আক্রোশে ফেটে পরে জেলের টিণ্ডালান রামপেয়ারী? কেন বলে, “আওরতে আওরতে যে মহব্বত সেটাই খাঁটি?” কেন গলায় মুগ্ধতা জড়িয়ে জিজ্ঞেস করে, “এত খুবসুরতী সেজেছিস কেন? দেখে দেখে দিলের ধরকান বন্ধ হয়ে যায়।” সোনিয়া কি এই লাগামছাড়া বেপরোয়া আকর্ষণকে উপেক্ষা করে সত্যিই চলে যাবে? নাকি টিণ্ডালনি রামপেয়ারীর বুকের ছাতিতে আঁকা দুর্বোধ্য উল্কির আদিমরসের মধ্যে হারিয়ে ফেলবে সহজ সরল জীবনের মায়া – একটি ঘর এবং একটি অনুগত পুরুষের ভালবাসা। আসলে সোনিয়া, রামপেয়ারী, এতোয়ারী, হাবিজা এরা সবাই এই সৃষ্টিছাড়া দ্বীপের মতোই‌। এদের সবার জীবনেই অনেক শূন্যে ডানা স্থির থেকে এক ঝাঁক গোয়েলেথ পাখি বাতাসে সাঁতার কাটে কিন্তু তারা কেউ এখানে বাসা বাঁধে না। 

সোনিয়ার চরিত্রটি মনে দাগ কেটে যায়। মনে হয় সে একটা অভিমানী সাদা পাখি, জাহাজের মাস্তুলে বসে চিরকাল প্রশ্ন করে এসেছে তার সম্ভাব্য প্রেমিক পুরুষটিকে। দৃপ্ত কণ্ঠে জানতে চেয়েছে, “ভেবে বল তো মরদ, আমার জন্য আর কী দিতে পার?” চান্নু সিং ভেবে পায় না সে সোনার গয়না, রুপোর মল, আর রুপিয়া ছাড়া আর কী দেবে? সোনিয়া জিজ্ঞেস করে, “জান দিতে পার মরদ?” 

আন্দামানের বন্দিদের এই আশ্চর্য শাদি প্যারেড, এই স্বয়ম্ভর সভা কি শুধু‌ই কয়েদখানার খাঁজে আটকে থাকা এক চিলতে মুক্তি, নাকি পুরোটাই এক আকাশকুসুম কল্পনাবিলাস? কালাপানির এই বিচ্ছিন্ন দ্বীপে একটি নারী এবং একটি পুরুষের আশ্চর্য সুখের সংসার কি তোরব আলীর ছোট্ট নাও নিয়ে মেনল্যান্ডে পৌঁছে যাওয়ার স্বপ্নটুকুর মতোই মিথ্যে নয়? লেখক প্রফুল্ল রায় তা বলে দেননি। তবে বুঝে নিতে অসুবিধা হয় না।‌

এই আন্দামানে যারা আসে তাদের প্রত্যেকের একটা করে অতীত থাকে। সে অতীত ফিকে হতে থাকে ঢেউয়ের লোনা বাতাসে। কাঞ্জিপানি খেতে খেতে, নারকেলের ছোবড়া ছিলেকুটে বের করতে করতে, সড়ক বানাতে বানাতে, জঙ্গলের গাছ কাটতে কাটতে লখাই‌ও হয়ে যায় জবাবদার লখাই। পিনিকের নেশা করে যে লখাই একদিন শুধুমাত্র সোনিয়াকে দেখার জন্য জীবন বিপন্ন করেছিল, কল্পনার নারীকে আপন করে পাওয়ার তীব্র বাসনায় ঝটফট করত, তার মনেও কেমন উদাসী বাউল বাসা করে। ফুটে ওঠে হাজার হাজার বেদনাফুল। সেন্ট্রাল টাওয়ারের উপর বসে থাকা সাগরপাখির দিকে তাকিয়ে লখাই ভাবে।

লখাই ভাবছিল, ওই পাখিটার মতো মানুষ‌ও কি দেহ মনের সব ভারমুক্ত হয়ে আকাশ পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে না? …লখাই ভাবছে, উত্তেজনা-ভোগ-লালসা শুধু এগুলোর মধ্যেই কি জীবন রয়েছে? এবার‌ও মনের সায় মিলল না। 

লখাইয়ের মনে হল, অসংখ্য মানুষ, অজস্র ঘটনা, কাম লালসা মত্ততা – এ সবের বাইরে আর একটা কী যেন আছে। যেটা না হলে জীবনের স্বাদ পুরোপুরি পাওয়া যায় না।

এই বেদনাবোধ‌ই সাগরপারের পাখি উপন্যাসটির সম্পদ, অথৈ গহন থেকে সেঁচে তোলা টলটলে মুক্তোর দানার মতো দুর্লভ এবং আকাশের বুকে ডানা মেলা উড়ে যাওয়া পাখির মতো শাশ্বত সুন্দর।

———-

ছবিঃ অন্তর্জাল থেকে সংগৃহীত। 

রুমি বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজীর স্নাতক এবং ম্যানেজমেন্টের স্নাতকোত্তর। লেখালেখির শুরু লিটল ম্যাগাজিন দিয়ে। কয়েকটি মুদ্রিত‌ সংকলনে গল্প এবং কবিতা স্থান পেয়েছে। ‘পুরাণকথা পরণকথা’, ‘শেষ চিঠি’, ‘বরফকাঠি জমজমাটি’, ‘কবিতা তোমায় ভালোবেসে’, ‘অণুতে অসীম’, ‘ফ্যান্টাসায়েন্জা’ এমন কয়েকটি সংকলন।

Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *