পাখি, প্রকৃতি, প্রযুক্তি

পাখি, প্রকৃতি, প্রযুক্তি

ঘুম ভেঙ্গে সবে বিছানায় শুয়ে আড়মোড়া ভাঙছি, এমন সময় একটা অদ্ভুত শব্দে ধড়মড় করে উঠে বসলাম। আশেপাশে নতুন কোনও বাড়িঘর বানানোর কাজ শুরু হয়েছে নিশ্চয়ই। প্রথমে মনে হল সেই ধরনেরই শব্দ। করাত দিয়ে একটা ধাতুর পাত বা চাদর চেরার আওয়াজ।
পাড়ায় নতুন কোনও প্রকল্প যদি শুরু হয়ে থাকে, তাহলে এমন শব্দ হওয়া স্বাভাবিক। কিন্তু কতদিন ঝঞ্ঝাট সহ্য করতে হবে? আর কোথায়ই বা নতুন বাড়ি-ঘরদোর বানানো হচ্ছে? কোটটা গায়ে গলিয়ে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম শব্দের উৎস-সন্ধানে।
নিউ জার্সিতে শীতের রেশ খানিকটা কমেছে। দিনের আলো ফুটেছে, তবে নাকে মুখে ঠাণ্ডা হাওয়ার ঝাপটা বিরক্তিকর ঠেকছে। বেশিক্ষণ বাইরে থাকা যাবে না। রাস্তায় দু’একটা গাড়ি চলছে, কিন্তু বিরাট যন্ত্রটন্ত্র কিছুই চোখে পড়ল না।
শব্দটা এল কোত্থেকে?
বাড়ি ফিরে চায়ের পেয়ালায় সবে একটা চুমুক বসিয়েছি, আবার সেই শব্দ। বাড়ির কোন নিভৃত কোণ থেকে আসছে না তো? আমার স্ত্রী পৌষালী বলল, “আমাদের বাড়ি বোধহয় ভেঙ্গে পড়ছে।” আচ্ছা মুস্কিল হল তো! কিন্তু ঘুরেফিরে বাড়িটা খুঁটিয়ে দেখেও শব্দের কারণ বোঝা গেল না।
পরদিন আবার সেই শব্দ। এবার ভাবলাম আশেপাশের কোন বাড়িতে বোধহয় ভাঙাচোরার কাজ চলেছে। অথবা হয়তো পাশের পাড়াতে কিছু মেরামতির কাজ। সহ্য করা ছাড়া উপায় কী?
একটা জব্বর ব্যাপার লক্ষ করলাম। শব্দটার মাত্র দশ থেকে পনেরো সেকেন্ড হচ্ছে। কিছুক্ষণ নিস্তব্ধ থেকে আবার পুনরাবৃত্তি মিনিট খানেক ধরে। তারপর আবার চুপ। ভাবলাম কনস্ট্রাকশনের কাজ হলে তো প্রায় সারাদিনই থেকে থেকে শব্দটা শোনা যেতো। কিন্তু তার বদলে কেবল সকালের দিকেই শোনা যায় কেন?
এভাবে কয়েক মাস চলার পর মনে হল এবার রহস্যের সমাধান না করলেই নয়। স্নায়ুর উপর চাপ বাড়িয়ে লাভ কী? রহস্যের সূত্র তো আগেই পেয়েছি। অবশ্য তার ভিত্তিতে অনুসন্ধান করে কোন সমাধান মেলেনি। নজরদারি থেকে কিছু ফসকে গেল কি? ভাবলাম এ অবধি রহস্য সমাধানের চেষ্টা করেছি ঘটনা ঘটার পর – শব্দ চলাকালীন কখনো তদন্তে নামিনি। এবারে ঠিক করলাম শব্দটা চালু থাকতে থাকতে অনুসন্ধান চালাব।

পরের বার আওয়াজটা শুনতেই বাড়ির গায়ের লাগানো বাগানের দিকে ছুটলাম। মনে হল যেন কাছাকাছি কোথাও থেকে শব্দটা পাচ্ছি। ছাদের দিকে চোখ পড়তে দেখলাম একটা ছোট্ট পাখি চিমনির ধাতব ঢাকনার ওপর বসে এদিক ওদিক দেখতে ব্যস্ত। পাখিটির ঠোঁট দেখার মত। অন্য পাখির তুলনায় দৃঢ় এবং অনেকটা ছড়ানো। তার বুকে একটা অর্ধচন্দ্রাকার কালো দাগ, আর তার নীচে টিপের মত গোল গোল কালো বিন্দু। ভাবলাম, এই ছোট্ট পাখিই কি আসল অপরাধী?
হঠাৎ শুরু হল পাখিটার লোক দেখানো ভাবভঙ্গি। একেবারে নাটকীয় ব্যাপার। ঘাড় কাত করে, দর্শনীয় ভাবে দ্রুত গতিতে ঠোঁটটা ঠুকতে লাগলো চিমনির ধাতব ঢাকনাটার গায়ে। যে আওয়াজ বের হল তা আমি আগে বহুবার শুনেছি। একেবারে ঢোলে তাল ঠোকা – ইংরেজিতে যাকে বলে ড্রামিং (drumming)। তাড়াতাড়ি কতগুলো ছবি তুলে নিলাম। ড্রামিংটাও রেকর্ড করলাম।
রহস্যের সমাধান তো হল, এবার পক্ষী-পরিচয়-পালা। আমি প্রকৃতি বিজ্ঞানী নই। কিন্তু আজকাল পাখি চিনতে গেলে বিজ্ঞানী হবার দরকার নেই – কাজটা নিতান্তই মামুলি করে দিয়েছে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা AI (আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স) প্রযুক্তি প্রয়োগের পর থেকে। স্মার্টফোনে AI-সচেতন সফটওয়্যার ব্যবহার করে পাখির বিভিন্ন প্রজাতি খুব সহজেই শনাক্ত করা সম্ভব। এর জন্যে চাই একটা ছবি, অথবা শিস বা ড্রামিং-এর রেকর্ডিং। শুধু পাখি কেন, বিশেষ অ্যাপ-এর সাহায্যে অচেনা গাছ বা পশুও এভাবে শনাক্ত করা যায়। লক্ষ লক্ষ পর্যবেক্ষণের তথ্য দিয়ে AI মডেলগুলো সমৃদ্ধ করে বিজ্ঞানীরা অ্যাপগুলো প্রায় ভ্রান্তিহীন করে তুলেছেন। শুধু অ্যাপ তৈরি করাই নয়, ওগুলি সঠিক পরিচালনা করার দায়িত্বও ওঁদের। তবে বর্তমানে, তথ্য সংগ্রহের দায়িত্ব প্রশিক্ষিত স্বেচ্ছাসেবকদের ওপর ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এমন একটা বিশেষ অ্যাপ স্মার্টফোনে সদ্য ডাউনলোড করেছিলাম। সেটাই প্রয়োগ করে বুঝলাম আমাদের পাখিটা কাঠঠোকরা প্রজতির অন্তর্ভুক্ত, নাম নর্দান ফ্লিকার (Northern flicker)। ড্রামিং এই পাখিরই একটি বিশেষত্ব। এই ড্রামিং-এর উদ্দেশ্য, নিজের অঞ্চল প্রতিরক্ষা আর স্বজাতির সঙ্গে সংযোগ স্থাপন। সব কাঠঠোকরারাও এ কাজে পটু।
প্রকৃতির নানা গূঢ় রহস্য জানার আর বোঝার ইচ্ছা আমার চিরকালই রয়েছে। কিন্তু কোনওদিনই তা ভালো করে হয়ে ওঠেনি। শুধু আমি কেন, বহু মানুষের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য। আমাদের পূর্বপুরুষ যারা গ্রামে-গঞ্জে সারা জীবন কাটিয়েছেন, তাঁরা গাছপালা আর পশুপাখি সম্বন্ধে আমাদের চেয়ে অনেক বেশি ওয়াকিবহাল ছিলেন। তবে সম্ভবত নতুন প্রজাতি চেনার ক্ষমতা স্মার্টফোনের অভাবে ওঁদের ছিল না। তাই এই AI-অ্যাপগুলোর আবির্ভাব মানুষের চিন্তাধারা এবং জ্ঞানের পরিধিকে নিঃসন্দেহে সমৃদ্ধ করছে। শুধু প্রকৃতির সঙ্গে পরিচয় করানোর যন্ত্র এরা নয়। এদের মূল্য আরও অনেক বেশি। এত হাজার বছরে বিশ্বের প্রাণীদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের যেটুকু অবশিষ্ট আছে তা পুনরাবিষ্কার করা আর প্রাণীরক্ষার কাজে সাহায্য করতে এগুলো তৈরি হয়েছিল। তাই যে সুযোগ ছোটবেলায় আমাদের ছিল না, এ প্রজন্মের কিশোর-কিশোরীদের তা আছে। এতে বিশেষ ভাবে উপকৃত হবে গরিব দেশের ছেলেমেয়েরা। এ ধরনের অনেক অ্যাপ বিনামূল্যে তারা পেতে পারে।

মানবজাতি আজকাল প্রকৃতি থেকে প্রায় সম্পূর্ণ ভাবে বিচ্ছিন্ন। শিল্পোন্নত দেশের বেশিরভাগ মানুষ নব্বই শতাংশ সময় ঘরের মধ্যে কাটায়। অনেক বিজ্ঞানী মনে করেন আমাদের মানসিক এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের অবনতির কারণ হল প্রকৃতির সঙ্গে এককালে আমাদের যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল, তা ক্রমশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এই বিচ্ছিন্নতার জন্যে অনেক ক্ষেত্রেই দায়ী প্রযুক্তি। তবে প্রযুক্তির জন্য আমরা যা কিছু হারিয়েছি, প্রযুক্তিই তা আজ অন্তত কিছুটা ফিরিয়ে দিচ্ছে।যে অ্যাপ-এর সাহায্যে যে পাখিটির সঙ্গে পরিচয় হয়েছিল, সে সম্বন্ধে কয়েকটা কথা বলি।

অ্যাপটির নাম: PictureThis
সাবস্ক্রিপশন: বার্ষিক ফি প্রযোজ্য

আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (AI) দিয়ে অ্যাপটি যে কোনও গাছ-লতার ছবি থেকে তার সঠিক পরিচয় দিতে পারে। এই অ্যাপের দ্রুত বিশ্লেষণের ক্ষমতা সত্যিই অবাক করে দেয়। এ ছাড়া অ্যাপটা ব্যবহার করে উদ্ভিদ জগতের একটি বিশাল এবং ক্রমবর্ধমান ডাটাবেস আমরা ব্যবহার করতে পারি। উদ্ভিদ সম্পর্কে যা কিছু জানা দরকার, যেমন, কখন এবং কতবার জল দেওয়া উচিত, কীটপতঙ্গ এবং রোগ নিয়ন্ত্রণের কলা-কৌশল, ইত্যাদি সব তথ্যই এখানে অনায়াসে পাওয়া যায়। এমনকি কোনও বিশেষ গাছ সম্বন্ধে ইংরেজি সাহিত্য থেকে সংগৃহীত নানা মজাদার তথ্যও এতে আছে।
উদ্ভিদ শনাক্ত করার উদ্দেশ্য নিয়ে অ্যাপটা ডাউনলোড করেছিলাম। পরে দেখলাম যে এটা দিয়ে পাখি, জন্তু জানোয়ার, কীটপতঙ্গ, এবং অন্য অনেক কিছু শনাক্ত করা যেতে পারে।

Inset-এর ছবিটা স্মার্টফোন দিয়ে তোলা। অরিজিনাল থেকে এনলার্জ করে PictureThis-এ আপলোড করা হয়েছিলো। লক্ষ্য করুন ছবির কোয়ালিটি খুব ভালো নয়। তবু পাখিটিকে সনাক্ত করতে কোন অসুবিধা হয় নি। বাইরের ছবিটা সনাক্তকরণের পর PictureThis থেকে পাওয়া।
উপরের ছবিটা তুলেছিলাম SLR ক্যামেরার সাহায্যে। মডেল -- Nikonএর D810। লেন্স -- NIKKOR 28-300 mm (1:3.5-5.6 G) AF-S। পাখিটির বুকের অর্ধচন্দ্রাকার কালো ফলকটা আর নিচের গোল কালো বিন্দুগুলো দিয়ে পাখিটিকে চেনা যায়।

পরিশিষ্ট
উপরের অ্যাপটি ছাড়াও প্রচুর অনুরূপ অ্যাপের সন্ধান অ্যাপ-স্টোরে মিলবে। তার মধ্যে অনেকগুলোই বিনামূল্যে ডাউনলোড করা যায়। সম্প্রতি ওয়াশিংটন পোস্ট সংবাদপত্রে এ ধরনের চারটি অ্যাপের বিষয় নিয়ে একটা প্রবন্ধ ছাপা হয়েছিলো। লেখকের নাম মাইকেল জে. কোরেন (প্রকাশনা কাল: এপ্রিল ২৫, ২০২৩)। নিচের অংশটি কোরেন-এর প্রবন্ধ থেকে সংকলন করেছি। অ্যাপগুলো আমি নিজে কখনো ব্যবহার করি নি। পাঠককে অনুপ্রাণিত হোলে আমার এই প্রবন্ধ লেখা সার্থক হবে।
কোরেন-এর মতে সবচেয়ে ব্যবহারযোগ্য, সহজ অ্যাপটি হল Seek। এটি iNaturalist-নামের (নিচে দেখুন) অন্য একটি বড় অ্যাপের প্রশাখা। ক্যালিফোর্নিয়া একাডেমি অফ সায়েন্সেস এবং ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক সোসাইটির যৌথ উদ্যোগে তৈরি। অ্যাপটি লাইভ ভিডিও শুট করার সময় স্বয়ংক্রিয়ভাবে ছবির ফ্রেমগুলো বিশ্লেষণ করতে পারে। মনে হবে যেন একটি বিদেশী ভাষা শেখানো হচ্ছে অ্যাপটির augmented reality-র সাহায্যে। শুটিং চলা কালীন উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের শনাক্ত ও শ্রেণীবিন্যাস করে ফেলে এই সফটওয়্যার। একটি বিশেষ প্রজাতিকে যদি তাৎক্ষণিক ভাবে ঠাহর করা সম্ভব না হয়, তবে সেরা অনুমানটি অবশ্যই বাতলে দেবে। একমাত্র অপূর্ণতা হোল, যে প্রজাতিটিকে শনাক্ত করা হোল তার সম্পর্কে কোন তথ্য-উপাদান এখানে নেই।
পরবর্তী দুটি অ্যাপ, iNaturalist এবং Pl@ntNet, আপলোড করা উদ্ভিদের ফটোগ্রাফ সেকেন্ডের মধ্যে বিশ্লেষণ করে সম্ভাব্য উদ্ভিদ-প্রার্থীদের বিজ্ঞানসম্মত বিবরণ সহ একটি র‌্যাঙ্ক-তালিকা তৈরি করতে পারে। Seek-এর তুলনায় অ্যাপ দুটির user friendliness-এ একটু খামতির দিকে হলেও কমন উদ্ভিদ প্রজাতিগুলোকে মুহূর্তের মধ্যে শনাক্ত করতে সক্ষম। দুরূহ কেস হলে ডাটাবেসের অন্যান্য সাম্ভাব্য প্রার্থীদের সাথে তুলনামূলক পর্যবেক্ষণের কাজটা এখানে সহজে সারা যায়। বিশ্বের বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়গুলো অংশগ্রহণের ফলে অ্যাপগুলোর কার্যকারিতা ইদানীং উল্লেখযোগ্যভাবে ভাবে বেড়েছে। ইউজার-এর পর্যবেক্ষণগুলোকে যাচাই করার দায়িত্ব বহু নাগরিক বিজ্ঞানীদের (citizen scientists) হাতে। এই কাজটার জন্য ওরা যেন সদাই প্রস্তুত৷ আশেপাশের উদ্ভিদ প্রজাতিগুলোকে চিন্তে শেখানো যেমন এই অ্যাপগুলোর কাজ, ইউজার-রাও তাদের নিজস্ব উদ্ভিদ শনাক্ত করার দক্ষতার ক্রমবর্ধমান হার আর র‍্যাঙ্কিং দেখে পুলকিত হয়ে পড়েন। অভিজ্ঞতাটা যে একটা বিমল আনন্দের উৎস তা বলার অপেক্ষা রাখে না৷

আমাদের শেষ অ্যাপটির নাম Merlin Bird ID। এটি কর্নেল ল্যাব অফ অর্নিথোলজির প্রজেক্ট। ম্যাজিকের মতো কাজ করে মার্লিন। স্মার্টফোনের মাইক্রোফোন ব্যবহার করে অ্যাপটি আপনার পার্শ্ববর্তী ল্যান্ডস্কেপে পাখির কণ্ঠস্বর থেকে পাখিটিকে সহজেই শনাক্ত করতে পারবে। অ্যাপটির আঁকা দৃশ্যপটগুলোর উপস্থাপনা সুরেলা সংগীতের মতো হৃদয়গ্রাহী।

পরিশেষে বলি, প্রকৃতির ছোট খাটো বিস্ময়গুলো চোখ মেলে দেখার আর বোঝার সুযোগ করে দিচ্ছে এ প্রজন্মের প্রকৃতিবাদী অ্যাপগুলি। আশেপাশের উদ্ভিদ ও প্রাণী জগতের সাথে সম্পর্ক পুনঃস্থাপন করে প্রকৃতিকে হয়তো একেবারে অন্য ভাবে দেখতে শুরু করবেন আপনি। আর সেটাই তো কাম্য আমাদের এই জল বায়ু পরিবর্তনশীল (climate change) বিশ্বে। লাগাম ছাড়া শিল্পায়ন আমাদের ক্রমশ ধ্বংস পথে ঠেলেছে। দৃষ্টিভঙ্গির আমূল পরিবর্তন না হলে কয়েক দশকের মধ্যে আমাদের প্রিয় তালদিঘি, বৃষ্টি হয়ে-যাওয়া খোয়াই বা ভিজে থাকা শান্ত চরাচর, অধীর পাতা নিয়ে মোরা সুঠাম শিরীষ গাছ, প্রজাপতি, পাহাড়ের শিখরে ঝুঁকে থাকা মেঘ, ইত্যাদি দৃশ্যগুলো আমাদের সামনের থেকে চিরকালের জন্য অপসৃত হয়ে পড়বে। শোনা যাবে না পাখির গান। পৃথিবীতে জন্মেছি বলেই কি পৃথিবীটাকে ধ্বংস করার অধিকার আমাদের আছে?

 

কৌশিক সেনগুপ্ত একজন সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার। কিন্তু প্রশিক্ষণ পদার্থবিজ্ঞানে। প্যাশন হল পপুলার লেভেলে এ বিজ্ঞানভিত্তিক রচনা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের SUNY-বাফেলো এবং লুইসিয়ানা স্টেট ইউনিভার্সিটিতে গবেষক হিসেবে কর্মজীবন শুরু। গবেষণার ফল প্রকাশ করেছেন বহু নামি আন্তর্জাতিক জার্নালে। আর সহযোগিতা করেছেন সর্বদেশীয় এবং NASA বিজ্ঞানীদের সঙ্গে। ক্রমে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন গাণিতিক কম্পিউটিং এবং সফটওয়্যার ডিজাইনে। অবশেষে IBM সংস্থায় যোগদান এবং অবসর গ্রহণের পর ফুল টাইম লেখার কাজে হাত। প্রথম বই, 'Are We Alone? Humankind's search for extraterrestrial civilizations।' মহাবিশ্বে আমরা একা কিনা, অর্থাৎ মানবসদৃশ আর কোনো বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্ব আছে কিনা, সে সব প্রাচীন প্রশ্নের উত্তরের খোঁজে জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের প্রয়াসের কথা এই বইয়ের বিষয়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *