অতএব বরাবরই একটা ইচ্ছে ছিল একবার স্বচক্ষে লর্ডস-টা দেখবার। কিন্তু ছাত্রজীবনে তো বটেই, এমনকি কর্মজীবনেও কখনও লন্ডন যাওয়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। বিদেশযাত্রা বলতে গেলে তো সবই অ-ক্রিকেটীয় দেশ – জাপান, জার্মানি, থাইল্যান্ড, সিঙ্গাপুর, মালয়েশিয়া, অ্যামেরিকা – ঐ বাবদে তারা ধর্তব্যের মধ্যেই নয়, গণ্য ছিল না নব্বই দশকের শেষলগ্নের নেপাল-ও। একমাত্র ১৯৯৮ সালের গোড়ার দিককার বাংলাদেশ-কে কিঞ্চিৎ জোর ক’রে ধরলেও ধরা যেতে পারে। তাই সে সাধ অপূর্ণই থেকে যাচ্ছিল।
কিন্তু গত জুলাই মাসে জামশেদপুরের ম্রিয়মাণ কিনান স্টেডিয়ামের ভেতরে ঢুকে সেখানকার সবুজরঙা ঘাসের গালচের ওপর দাঁড়িয়ে কেন জানি না আমার সেই লর্ডস-বাসনা যেন পুরনো গেঁটে-বাতের ব্যথার মতন চাগিয়ে উঠল। সঙ্গে হয়ত পোঁ ধরলেন ডয়েল-ডাক্তার-এর সৃষ্টি গোয়েন্দাপ্রবর হোমস। আর মক্কেলহীন উকিল সিডনি কার্টন-এর স্রষ্টা ডিকেন্স-সাহেব যেন বলে উঠলেন: it is the age of wisdom, it is the age of foolishness,” সুতরাং “আমারে ডাক দিল কে লর্ডস-পানে!”
লন্ডন-এর লর্ডস নাকি লর্ডস-এর লন্ডন
লন্ডন যাওয়ার প্রস্তুতি শুরু হ’ল। আমার ব্যক্তিগত পছন্দের “লন্ডনের অবশ্য-দ্রষ্টব্য স্থানসমূহ”-এর তালিকায় ছিল না বাকিংহাম প্যালেস, টাওয়ার ব্রিজ, ওয়েস্টমিনিস্টার অ্যাবে, মাদাম তুসোঁ প্রদর্শনশালা বা লন্ডন আই। বদলে সেখানে ছিল লর্ডসের মাঠ, হোমস প্রদর্শনশালা, জাতীয় চিত্র সংগ্রহশালা, গ্রিনিচ মানমন্দির ও ডিকেন্স প্রদর্শনশালা – তালিকার প্রথম নামটাই আমার কাছে এক ছ’দশকব্যাপী আকাঙ্ক্ষাপূরণের ইঙ্গিত। হোমস ও ডিকেন্স এঁদের প্রতি মনের টানের আরম্ভ আরো বছর সাত-আট পরে, কিশোর বয়সে।
4 Comments