প্রথম পাতা

শহরের তথ্য

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

বিবিধ প্রসঙ্গ

ডিসেম্বর ১৫, ২০১৫

 

যাঁদের আমি ছাত্র

ভাস্কর বসু

ছাত্র-শিক্ষকের অনবদ্য সমন্বয়

--৫--


অন্যান্য অংশ - (১) (২) (৩) (৪) (৫) (৬) (৭) (৮)

আমার ষোল-সাড়ে বছর ছাত্র জীবনের সবচেয়ে বেশী সময় কাটিয়েছি আমি হরিণাভি স্কুলে, ১৯৭১ – ৭৭, ক্লাস ফাইভ থেকে টেন। ঐ সময়টাই ভিত গড়ার। আজ এত বছর পরে পিছনে তাকিয়ে দেখছি যে ঐ সময় ওখানকার শিক্ষকরা এবং যতীনবাবু যে ভিত গড়ে দিয়েছিলেন, পরবর্তীকালে তাই সবচেয়ে বেশী কাজে লেগেছে। এই শিক্ষকমন্ডলী সম্পর্কে একটা কথাই আমার মনে হয়। পরবর্তীকালেও আমি আরো দুটি বিখ্যাত প্রতিষ্ঠানের ছাত্র হয়েছি। কিন্তু তা সত্বেও মুক্তকন্ঠে স্বীকার করব, হরিণাভির শিক্ষকমন্ডলীর মান ছিল একেবারে আলাদা। অসাধারণ এবং ভালো শিক্ষকের সংখ্যা ছিল খুব বেশী, মাঝারি রকমের শিক্ষক ছিলেন হয়তো কিছু কিন্তু খারাপ শিক্ষকের সংখ্যা একেবারে নগণ্য। পরবর্তীকালে কোন জায়গাতে এই অনুপাতে ভালো শিক্ষক পেয়েছি বলে মনে হয়না। আর ছাত্রদের নমুনা ও ছিল সাংঘাতিক। দারুণ দারুণ ছাত্র ও ছিল যেমন, তেমনি বিচ্ছুমার্কা ছাত্রদের সংখ্যাও ছিল অগুন্তি। এক বিচ্ছু ছিল, তার দাদু ছিল সেই স্কুলের সিনিয়র টীচার। কাজেই তার একটু বেশী অধিকার বোধ ছিল। ক্লাস ফাইভে নতুন ক্লাস শুরু হওয়ার পর একজন বড়সড় দেখতে কিন্তু নিরীহ গোছের ছেলে মনিটর হয়েছিল। ক্লাসে গন্ডগোলের সময় দোষের মধ্যে সেই মনিটর ঐ বিচ্ছুর নাম টুকে ক্লাস টীচারকে দিয়েছিল। বিচ্ছু তখন সাঙ্গোপাঙ্গ নিয়ে ভয় দেখিয়েছিল, ওর এখানে খুব জানাশোনা- মনিটরকে হরিণাভি স্কুল থেকে ছাড়িয়ে পাশের মেয়েদের স্কুল সুভাষিণীতে ভর্তি করিয়ে দিয়ে আসবে। মনিটরের প্রায় কাঁদো কাঁদো অবস্থা!!
সবে তখন ক্লাস ফাইভে ভর্তি হয়েছি। স্কুলের বড় ছেলেদের সঙ্গে পরিচিত হচ্ছি। স্কুলটি আমাদের বাড়ী থেকে বেশ দূর ছিল বলে আমরা ছেলের দল হাঁটতে হাঁটতে যেতাম। সেই দলে আমাদের সিনিয়রদের কাছ থেকে বিভিন্ন শিক্ষকের গল্প শুনতাম। একজন আমাদের জিজ্ঞেস করল- “তোদের কে বাংলা ব্যাকরণ পড়ায় রে?” – আমরা জানালাম – “ধরণীবাবু” – সঙ্গে সঙ্গে সে খিকখিক করে হেসে বলল- “ওহো, NBDN” !! আমরা অবাক- “মানে?” – “ওর নাকটা দেখিসনি” – “দেখেছি-কিন্তু” – “লক্ষ করিসনি, ডিফেক্টিভ। ওইজন্য আমরা বলি ‘নাক-ব্যাঁকা-ধরণী-নাথ’ – NBDN- বুঝলি” ! আমার এই জ্ঞানলাভ অবশ্য খুব সুখকর হয়নি, পরে ক্লাসে গিয়ে জানলাম সবাইই প্রায় জানে কিন্তু বলে নি। আমাদের ক্লাসে একটি অত্যন্ত পাজী ছেলে ছিল, - পরদিন ধরণীবাবুর ক্লাসে কি কারণে সে আমার পাশে এসে বসেছিল। ধরণীবাবু যখন পড়াতে পড়াতে কারুকে কিছু প্রশ্ন করছিলেন, সে আমার পাশে বসে অস্ফুটে দুবার “NBDN, NBDN” মন্ত্রোচ্চারনের মত বলে গেল। আমি শুনে আর হাসি চাপতে পারিনি। ব্যস, ধরণীবাবুর কানে গেল! তিনি এসে জিজ্ঞেস করলেন, ‘কি বললে?’ সে বিচ্চু নিরীহ মুখে বলল – ‘কিছু বলিনি তো, স্যর – ভাস্করকে জিজ্ঞেস করুন!” ধীরেনবাবু কটমট করে আমার দিকে তাকালেন – ‘কিচ্ছু বলেনি, না! তুমি তাহলে হাসলে কেন?’ আমার তখন সাংঘাতিক অবস্থা, যাকে বলে ‘ধরণী’ দ্বিধা হও – বললাম – ‘না স্যর, হাসি নি তো!” ব্যস, রেগে আগুন হয়ে তিনি বললেন – “আমি চল্লুম, আর ক্লাস নেবোনা”। সর্বনাশ, আমার তো মাথায় হাত! সেই পাজী কিন্তু নির্বিকার – ‘ধুস, NBDN এর এই রোগ আছে! প্রত্যেক বছরই রেগে এরকম করে। ঠিক ক্লাস নেবে”! অবশ্য হলও তাই। পরের দিন আবার ক্লাস হল, আমিও হাঁফ ছেড়ে বাঁচলাম।

তবে পরে বড়দের কাছে ধরণীবাবুর ক্লাস নিয়ে অন্য গল্প শুনেছি। নিরীহ, ভালোমানুষটির একটি অদ্ভুত অভ্যেস ছিল। চেয়ারে বসে সামনের টেবিলের ওপর হাতে ভর দিয়ে ঝুঁকে বসে পড়াতেন। তখনো পুরনো এগারো ক্লাস ছিল। আর সবচেয়ে সিনিয়র এগারো ক্লাসের কমার্সের ছেলেরা ছিল একেবারে হাড়-বজ্জাত। একবার তারা ধরণীবাবুর সঙ্গে খুব বেশীমাত্রায় বজ্জাতি করে সাসপেন্ড হয়েছিল। আমাদের স্কুলে কুলের আচার পাওয়া যেত, সেই কুলের বিচি হিসেব করে চেয়ারের তলায় দিয়ে সুন্দর করে ভারসাম্য রাখা হয়েছিল। ধরণীবাবু এসে চেয়ারে বসতে গিয়েই – সড়াৎ! সঙ্গে সঙ্গে ছেলেরা গিয়ে তাঁকে ধরে ফেলল! তিনি উষ্মাভরে কিছু বলার আগেই বোঝাল যে তারা করেনি, অন্য ক্লাসের ছেলেদের চক্রান্ত। উনি মেনে নিয়ে চেয়ারে বসলেন, অভ্যেস অনুযায়ী টেবিলে হাত দিয়ে ঝুঁকতে গেলেন। কিন্তু সেই অভাগা যেদিকে যায়, - টেবিল ও দাঁড়িয়েছিল চেয়ারের মতই, হুড়হুড় করে এগিয়ে গেল আর উনি হুড়মুড় করে পড়লেন একেবারে মুখ থুবড়ে। - এবার সটান একেবারে হেডস্যারের ঘরে গিয়ে কমপ্লেন। ব্যস, ইলেভেন কমার্স এক সপ্তাহের জন্য সাসপেন্ড।

স্কুলে দুজন অমিয়বাবু ছিলেন, একজন অপেক্ষাকৃত বয়স্ক – তাঁর নাম ‘বুড়ো অমিয়’, অন্যজন একটু রাগী আর চোখে একটু সমস্যা – তিনি ‘ট্যারা অমিয়’। একজন শিক্ষক তাঁর নিজের নামের চেয়ে ছাত্রদের দেওয়া নামে বেশী পরিচিত ছিলেন, -“ময়রা”!! কারণ তাঁর শরীরের গড়ন দেখে নাকি কিছু ছাত্রদের মিঠাই গড়ার কারিগরদের কথা বেশী মনে পড়ত। দুজন মিহির চক্রবর্তী ছিলেন, একজন লম্বা, ফর্সা, রীতিমত সুদর্শন – আর একজন খর্বকায়, অপেক্ষাকৃত স্থূলকায় – তাঁদের যথাক্রমে লম্বা মিহির আর বেঁটে মিহির নামেই ডেকেই কাজ সারা হত। এই প্রসঙ্গে একটা মজার ঘটনা মনে পরে গেল- একবার দ্বিতীয় মিহিরবাবুর ক্লাস ছিল, কিন্তু তিনি অনুপস্থিত বলে আমরা হৈচৈ করছিলাম। একটু হয়তো বেশীই আওয়াজ করে থাকব, আমাদের এসিস্ট্যান্ট হেড মাস্টার আনন্দবাবুর প্রবেশ। ইনি ছিলেন টকটকে ফর্সা আর বেশ রাগী, রেগে গেলে মুখচোখ লাল হয়ে যেত। আমরা রীতিমত ভয় পেতাম। তিনি এসেই জিজ্ঞেস করলেন, -“কার ক্লাস?” একজন উত্তর দিল – “মিহির চক্রবর্তীর” – আনন্দবাবুর জিজ্ঞাসু চোখ দেখে সে আরো ব্যাখ্যা করে প্রায় “বেঁটে” বলতে গিয়ে নিজেকে সামলে নিল। কিন্তু বোঝাতে তো হবে, - ডান হাত বাড়িয়ে খর্বতা আর দুহাতের ঘের দিয়ে স্থূলতা বোঝাল! আমাদের কি অবস্থা!! বুঝতে পারছিনা আনন্দবাবুর কি প্রতিক্রিয়া হবে! কিন্তু নাহ! উনিও মনে হল ভঙ্গিমা দেখে হাসি চাপলেন। যাক, আমাদের ধড়ে প্রাণ এল।

তবে সমস্ত শিক্ষকদের মধ্যে সবচেয়ে সুরসিক ছিলেন যিনি তাঁর নাম সুনীল বসু। তিনি ইংরেজী পড়াতেন। Prize Poem এ ‘Coming round’ মানে যে ‘সেরে উঠছে’ বোঝাতে বলেছিলেন, সেরে উঠলেই নাকি আবার খাওয়া দাওয়া করে শরীরটা বেশ গোলগাল হয়ে যায় ----!! একবার এক ছাত্রের ওপর রেগে গিয়ে বলেছিলেন, “ধুস, তোর মাথায় কিস্যু নেই। তুই এক কাজ কর। বাজারে গিয়ে তোর মুন্ডুটা নিয়ে বেচার চেষ্টা কর, “মুন্ডু চাই, মুন্ডু চাই” বলে! দেখবি কেউ কিনবে না।” কোন ছাত্র হাতে নিজের মুন্ডু নিয়ে বাজারে বাজারে ঘুরছে, এই দৃশ্যকল্পই কি অদ্ভুত হাসির উদ্রেক করেছিল। সুনীলবাবু সলিল চৌধুরীর সঙ্গে বিশেষ পরিচিত ছিলেন। মনে আছে ১৯৭২ সালে স্বাধীনতার ২৫ বছর উপলক্ষে সলিল চৌধুরীর রচিত “এই দেশ, এই দেশ, আমার এই দেশ” আমাদের স্কুলে ছাত্রদের শিখিয়েছিলেন। পরে গানটি রেডিওতে শুনে অবাক হয়েছিলাম!
এবার একটু বিস্তারিত ভাবে লিখতে চাই লম্বা মিহির বাবুর কথা!

মিহিরবাবু

--৬--

আমরা ছিলাম মাধ্যমিকের দ্বিতীয় ব্যাচ। তখন নতুন পাঠক্রম বলে আমাদের অভিভাবকদের মনে হল অঙ্ক এবং অন্যান্য বিজ্ঞান বিষয়গুলির জন্য আমাদের একটু সাহায্য দরকার। তখন আমরা লম্বা মিহিরবাবুর কাছে বাড়ীতে পড়তে শুরু করলাম।

মিহিরবাবু ছিলেন সত্যিকারের সুপুরুষ বলতে যা বোঝায় একেবারে তাই। লম্বা, ফর্সা, উজ্জ্বল চোখমুখ আর মুখে সবসময় খুশী খুশী ভাব। আমাদের ছেলেদের স্কুল ছিল, কো-এড হলে অনেক মেয়েই তাঁর প্রেমে হাবুডুবু খেত একথা হলফ করে বলতে পারি। আমরা তাঁর কাছে স্কুলে আর তাঁর বাড়ীতে, দুভাবেই পড়ার সৌভাগ্য লাভ করেছি।

মিহিরবাবুর একটাই নেশা ছিল – নস্যি। আমাদের পড়াতে পড়াতে কখনো উঠে গেলে সেই নস্যির ডিবে তো পড়ে থাকত- ব্যস! ছোঁক ছোঁক শুরু হত। একদিন একজন বোধহয় একটু শুঁকেই থাকবে, - বেশ হাঁচির উপক্রম হয়েছিল। হঠাৎ স্যরের আসার শব্দ পেয়ে নাক টাক মুছে ভালমানুষ সেজে বসে গেল। মিহিরবাবু ঠিক টের পেয়ে গেলেন, - ‘নস্যি চেখেছিলি?” এর পরই তিনি যে গল্প বলেছিলেন সেটা আজ ও মনে পড়লে হাসি চাপতে পারিনা- ওঁর নিজের মুখেই –

“তখন সবে কলেজে ঢুকেছি আর নস্যিও ধরেছি,- বন্ধুরা একটা পার্কের মধ্যে দিয়ে যাতায়াত করি। একদিন কলেজ থেকে একা ফিরছি, দেখি একজন মজুর পার্কের বেঞ্চে ঘুমোচ্ছে। আর তার নাকটা জোরে জোরে নিশ্বাস নিচ্ছে। আমি দেখে কি এক অমোঘ আকর্ষণ অনুভব করলাম, আস্তে করে তার সামনে দাঁড়িয়ে নস্যির ডিবেটা তার নাকের সামনে খুলে ধরলাম। তোরা ফিজিক্স এর পরীক্ষায় দেখেছিস তো, চুম্বক যেমন লৌহ শলাকা টেনে নেয় সেভাবে তার নাক টেনে নিল নস্যিকে। আর তারপর – লোকটা উঠে আমার ওপর কি রাগ! কিন্তু যেই গাল দেওয়ার চেষ্টা করছে অমনি হেঁচে ফেলছে!”

মিহিরবাবুর অঙ্ক করানোর পদ্ধতিটিও ছিল খুব সুন্দর। খুব সহজ সরল পদ্ধতিতে শিখিয়েছিলেন ত্রিকোণমিতির “Angle of Elevation” আর “Angle of Depression” ফারাক। একজনকে তুলে দাঁড় করিয়ে ওপর দিকে তাকিয়ে আর নীচের দিকে তাকিয়ে বেশ জলের মত সহজ করে বুঝিয়েছিলেন। আবার আমাদের সময় ক্যালকুলাসের ‘লিমিট’ এর ভাবনা পরিস্কার করার জন্য চমৎকার উদাহরণ দিয়েছিলেন।

- “ট্রেন যখন শেষ স্টেশনে আসে তখন যে প্ল্যাটফর্মে ঢোকে সেখানে দেখেছিস কি – দুটো চাকার মত জিনিস লাগানো থাকে। ঐটাই হল ট্রেনের লিমিট, যত খুশী কাছে এস, কিন্তু টাচ করতে পারবে না। a (→) 0 – মানে হল তাই! a, 0 র যত ইচ্ছে কাছে যেতেই পারে কিন্তু কোনমতেই 0 হবেনা!” - কি চমৎকার!

একদমই রাগতেন না, কিন্তু একদিন আমাকে খুব বকেছিলেন। ছাত্র হিসেবে খুব প্রিয় ছিলাম। টেন এর টেস্ট পরীক্ষার সময় আমাদের খাতা দেখেছিলেন দিলীপ ঘটক। আমি বোধহয় কিছু ভুল করে থাকবো, দিলীপবাবু সম্ভবত দেখিয়েছিলেন। খুব বকেছিলেন আমাকে এইরকম তুচ্ছ ভুল করার জন্য, তাও আবার সব ছাত্রদের সামনে। আরো বলেছিলেন, ‘এত রাগ হচ্ছিল, হাতের কাছে থাকলে চড়িয়েই দিতাম!” কেউ জিজ্ঞেস করল – স্যর, আপনি কোনদিন কারুকে মেরেছেন! মিহিরবাবু বললেন যে একবারই নিজেকে সামলাতে পারেননি। আমরা খুবই কৌতূহলী, - “আরে দেখনা, ধেড়ে ছেলে ১১১ থেকে ১১ বিয়োগ করে ১ করেছে। জিজ্ঞেস করাতে বলল – তিনটে ১ থেকে দুটো ১ বাদ গেল, একটা ১ তো থাকবে! ব্যস, সেই প্রথম আর সেই শেষ!”

মাঝে মাঝে নিজের ছাত্র জীবনের গল্প বলতেন। উনি নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের বাংলার ক্লাস করেছেন – সেই সময় নাকি অন্য কলেজ থেকেও ছাত্ররা আসত সেই ক্লাস করতে। বেঞ্চ তো বটেই, মাটিতে কাগজ পেতে, জানলার বাইরে দাঁড়িয়েও নাকি লোকে নারায়ণবাবুর বাংলার ক্লাস শুনত- ! উফফ - অকল্পনীয়, আমাদের ভাবতেই কিরকম গায়ে কাঁটা দিত! টেনিদার স্রষ্টা, সুনন্দ – সেই নারায়ণ গঙ্গোপাধ্যায়ের ক্লাস।

পাজী ছেলে নাকি তখনও ছিল। একবার বৃষ্টির সময় নাকি ছেলেদের ইচ্ছে হল ক্লাস করব না- তারা নাকি জোর করে একটা ছেলেকে মেলা থেকে কেনা প্লাস্টিকের গোঁফদাড়ি পরিয়ে সামনের বেঞ্চে বসিয়ে দিল। স্যর এসে ছেলেটাকে বকতে সে বলল – অন্যরা নাকি জোর করেছে। তাদের স্যর ক্লাস থেকে বার করে দিতে পেছন থেকে আরো দু-চারজন বলল তারাও দলে ছিল, হৈচৈ করে বেরিয়ে গেল! ক্লাস আদ্ধেক ফাঁকা। মতিগতি বুঝে স্যর ও চলে গেলেন।

তবে মিহিরবাবুকে তাঁর এক শিক্ষক বলেছিলেন, - “জানতো এখনকার ছেলেরাও প্রশংসা করে, ভাষাটা একটু অন্যরকম, এই যা। এই সেদিনই তো শুনলাম, নিজের কানে, একজন দাদা আমার সম্পর্কে জুনিয়ার একটি ছেলেকে বলছে – ‘এই যে শালা BND যাচ্ছে! উফফ, যা বেড়ে পড়ায় না মাইরী’!”

আমাদের সেই গল্প বলে বলেছিলেন – “জানিনা তোরা আমার সম্পর্কে কি বলিস – ভাষাটা আর কত পাল্টালো।”


লেখক পরিচিতিঃ জন্ম কলকাতায়, বেড়ে ওঠা দক্ষিণ চব্বিশ-পরগনার রাজপুর-সোনারপুর অঞ্চলে। ১৯৮৩ সালে যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইলেক্ট্রনিক্স ও টেলিকম্যুনিকেশন ইঞ্জিনীয়ারিং পাস করে কর্মসূত্রে ব্যাঙ্গালোরে। শখের মধ্যে অল্প-বিস্তর বাংলাতে লেখা - অল্প কিছু লেখা রবিবাসরীয় আনন্দবাজার, উনিশ-কুড়ি, নির্ণয়, দেশ, ইত্যাদি পত্রিকায় এবং বিভিন্ন ওয়েব ম্যাগাজিন (সৃষ্টি, অবসর, ইত্যাদিতে) প্রকাশিত।

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.



অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।