প্রথম পাতা

বিনোদন

খবর

আইন/প্রশাসন

বিজ্ঞান/প্রযুক্তি

শিল্প/সাহিত্য

সমাজ/সংস্কৃতি

স্বাস্থ্য

নারী

পরিবেশ

অবসর

 

ভ্রমণ কাহিনী

মার্চ ১, ২০১৬

 

পুরনো অ্যালবাম

কেয়া মুখোপাধ্যায়


(১৫)

(আগের অংশ)

"I need a starry night with cypresses or maybe above a field of ripe wheat."

নিশুত রাতের আকাশের গায়ে ফুটে থাকা তারার ফুল। অনেক। পাকা গমের ক্ষেতের ওপর বিছিয়ে থাকবে সেই তারাভরা আকাশ।

১৮৮৮ র এপ্রিল মাসে ভাই থিও-কে এই ইচ্ছের কথা লিখেছিলেন ভিনসেন্ট ভ্যান গখ। দিনে দিনে আরও প্রগাঢ় হয়ে উঠছিল সেই ইচ্ছে। সেপ্টেম্বর মাসে বোনকে লিখলেন,

"Often it seems to me night is even more richly coloured than day".

১৮৮৮র ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখে ফ্রান্সের দক্ষিণে, আর্ল-এ এসে পৌঁছলেন ভ্যান গখ। আর্ল-এ পৌঁছনো থেকেই তাঁর মন জুড়ে শুধু রাতের সৌন্দর্য। রাতের অন্ধকারকে ক্যানভাসে ফুটিয়ে তোলার ভাবনা।
নিকষ কালো অন্ধকার জুড়ে ঝিলমিল করা তারা। অন্ধকারেরও আলো আছে। আছে রঙ। সে আলোর দীপ্তি, রঙের বিভা যেন দিনের চেয়েও বেশি। ক্যানভাস জুড়ে গাঢ় নীল, নীলচে কালো রঙ আকাশ। লেবুরঙা হলুদ তারা। রাত্রি যেন জড়িয়ে আছে হলুদ তারার ফুল ভরা নীলচে কালো রেশমি আঁচল। আলো, অন্ধকার আর রঙের আশ্চর্য খেলা।

ম্যুজে ডি’অরসে-র গ্যালারিতে সেইরকম এক ক্যানভাসের সামনে দাঁড়িয়ে আছি। রোন (Rhône)-এর দৃশ্য। অন্ধকারের রঙ। নীলের নানা শেডস্ চোখে পড়ে সবচেয়ে আগে। প্রাশিয়ান ব্লু, আল্ট্রামেরিন ব্লু, কোবাল্ট ব্লু। শহরের গ্যাসের আলোর বিচ্ছুরণে চিকচিক করছে জল। কমলা-ঘেঁষা হলুদের উজ্জ্বলতা। আকাশভরা তারা। ঝিকমিক করছে অমূল্য রত্নের মত। ক্যানভাসের নিচের দিকে প্রেমিক-প্রেমিকা। শান্ত রাত্রির নৈঃশব্দ্য ধরা ছবিতে।



La nuit étoilée, Starry Night। অয়েল অন ক্যানভাস। শিল্পী ভিনসেন্ট ভ্যান গখ।

এই ছবির আগে, রাতের সৌন্দর্য প্রথম ধরা দিয়েছিল Café Terrace on the Place du Forum at Night ছবিতে। তারপর এই তারাখচিত রাত। ১৮৮৮ র ছবি। আরো কয়েকমাস পরে এই তারকাখচিত রাত-ই আবার ফিরে এসেছিল অন্য একটি ছবিতে। সে ছবির নামও Starry night (১৮৮৯)। কিন্তু সে ছবিটি একেবারে আলাদা। মনের অস্থিরতা ফুটে উঠেছে পূর্ণমাত্রায়। গাছগুলো যেন আগুনের লেলিহান শিখা। আকাশের তারায় এক অদ্ভুত ঘূর্ণি। যেন ছুটে চলেছে মহাশূন্যের পথে। জানলা দিয়ে দেখা ভোররাতের আকাশ সে ছবির অনুপ্রেরণা। ভাই থিওকে লিখেছিলেন,

“This morning I saw the countryside from my window a long time before sunrise, with nothing but the morning star, which looked very big.”

এই টুকরো আকাশ ধরা দিয়েছিল দক্ষিণ ফ্রান্সের সেন্ট রেমি-র সেন্ট পল অ্যাসাইলামের এক জানলায়। ছবি আঁকার যে আবেগ আর অস্থিরতা, তাতে দীর্ণ, বিপর্যস্ত ভিনসেন্ট এর আশ্রয় তখন ওই অ্যাসাইলাম। মানসিক অবস্থার প্রতিফলন ছবিতেও।

মাত্র সাঁইত্রিশ বছরের পরিসর তাঁর জীবনের। ছবি আঁকার শুরু বাইশ বছরে। বেশিরভাগ ছবিই জীবনের শেষ দু’বছরে আঁকা। ধর্মযাজক পিতার সন্তান। ছোট থেকেই আবেগপ্রবণ, অন্তর্মুখী। সুদর্শন নন। কিন্তু নীলচে-সবুজ চোখদুটি ভারি গভীর। সেই চোখ দিয়ে পৃথিবীর দিকে তাকাতেন শিশুর বিস্ময়ে। অনিশ্চয়তা ভরা অস্থিরতা সঙ্গী ছিল আজীবন। স্কুলের পর সংক্ষিপ্ত চাকরি-জীবন প্যারিস আর লন্ডনে। কিছুদিন বোর্ডিং স্কুলে শিক্ষকতা। তারপর যাজক-বৃত্তি শিখে গেলেন বেলজিয়ামের কয়লাখনি অঞ্চল বরিনেজ-এ। সে এক অচেনা জীবন। ভোরের আলো ফোটার আগেই কয়লাখনির শ্রমিকরা প্রাণ হাতে নিয়ে নেমে যায় গভীর থেকে আরো গভীরে। ছোট ছেলেরাও বাদ নেই। কিন্তু সারাদিনের কঠিন পরিশ্রমের পর পেট ভরা খাবারও জোটে না তাদের। শ্রমিকদের এই জীবন এক অদ্ভুত আবেগ সৃষ্টি করছিল মনে। সেই আবেগ ফুটে উঠল ক্যানভাসে। শুরু হল কয়লাখনির মজুরদের স্কেচ করা। ছবি এর আগেও কিছু এঁকেছেন। লন্ডনের বস্তিবাসীদের জীবনের ছবি। সে নেহাতই শখের বশে। কিন্তু কয়লাখনির মজুরদের ছবি আঁকতে গিয়ে মনে বিদ্যুৎ-ঝলকের মতো জেগে উঠল এক আশ্চর্য উপলব্ধি। তিনি শিল্পী। শেষ পর্যন্ত শিল্পের সাধনাতেই তাঁর মুক্তি। ভাই থিও-কে একটি চিঠিতে লিখলেন,

“I want to paint humanity, humanity and again humanity. I love nothing better than this series of bipeds, from the smallest baby in long clothes to Socrates, from the woman with the black hair with white skin to the one with golden hair and a  brick-re sun-burnt face. Yet, how do I paint humanity? How do I depict the eternal Monet depicted in his landscapes? I will be forever straining into vagueness. For humanity changes. It dramatically, constantly evolves, and gives me no time to even begin.”

চার্লস গ্লেয়ারের আর্ট স্কুলের ক'জন ক্ষ্যাপাটে তরুণের তুলির আঁচড়ে, রঙের ব্যবহারের ভিন্নতায়, ফর্ম আর টেকনিকের নতুনত্বে অন্য মাত্রায় উত্তরণ হয়েছিল ছবির। সারা পৃথিবীকে তারা চিনিয়েছিল এক অভিনব ধারা। 'ইম্প্রেশনিজম'। ইম্প্রেশনিজম নতুন চোখে চেনাল প্রকৃতিকে। স্বতঃস্ফূর্ত আলো আর রঙের বিন্যাস, ছোট ছোট ব্রাশ-স্ট্রোক, অকৃপণ রঙের ব্যবহার। ১৮৮৬-তে প্যারিসে গিয়ে ভ্যান গখের পরিচয় হল ইম্প্রেশনিস্ট আর নিও-ইম্প্রেশনিস্ট ছবির ধারার সঙ্গে। দেখলেন জর্জ সিউরার পয়েন্টিলিস্ট কম্পোজিশন। মুগ্ধ ভ্যান গখ। তাঁর প্যালেটও ভরে উঠল উজ্জ্বল রঙে।

তীব্রতর রঙের ব্যবহার। রঙের প্রলেপ অনেক ঘন। চেনা পৃথিবীর প্রতি সুগভীর আবেগ আর অভিনিবেশের প্রকাশ শক্তিশালী ব্রাশওয়ার্ক আর অত্যুজ্জ্বল রঙের ব্যবহারে, আলোআঁধারির অন্যতর খেলায়। স্বাভাবিক জীবনযাত্রার আবহ এমনভাবে ফুটে উঠল ক্যানভাসে, ছবি যেন কথা বলছে। প্যারিসে আসার পর থেকে হঠাত থেমে যাওয়া জীবনের শেষ পর্যন্ত ভ্যান গখের ছবিতে ধরা দিল ‘পোস্ট - ইম্প্রেশনিজম’। রঙকে ফর্ম আর কম্পোজিশন থেকে মুক্ত করে একটা স্বাধীন রূপ দিলেন ভ্যান গখ ও অন্য পোস্ট-ইম্প্রেশনিস্টরা।

স্টারি নাইট এর পর এগিয়ে চলি। পরের ছবি La méridienne, The siesta। এটিও ভিনসেন্ট ভ্যান গখের হঠাৎ ফুরিয়ে যাওয়া জীবনের শেষভাগে এসে আঁকা। অ্যাসাইলামে। এ ছবির কম্পোজিশন জাঁ ফ্রাঁকোয়ে মিলে-র Four Moments in the Day থেকে অনুপ্রাণিত। প্রায়ই মিলের ছবি কপি করতেন ভিনসেন্ট। শেখার জন্যে। ভ্যান গখ মনে করতেন মানে-র থেকে মিলে অনেক বেশি আধুনিক। থিও-কে লিখেছিলেন,

"I am using another language, that of colours, to translate the impressions of light and dark into black and white"

ভরদুপুরে খড়ের গাদায় ঘুমন্ত এক যুগল।

‘এচিং’ আদলে আঁকা ভ্যান গঘের এ ছবিতে ভরদুপুরে খড়ের গাদায় ঘুমন্ত এক যুগল। তুলির আঁচড়গুলো ক্যানভাস ছুঁয়েছে ভারি আলতো করে। তরুণ বয়সের ভালোবাসা ধরা দিয়েছে ক্যানভাসে। ১৮৬০-এর ফ্রান্স, তার গ্রামীণ জীবন আর অকৃত্রিম ভালোবাসা। ছবিটায় সবকিছু কেমন আশ্চর্য শান্ত। হলুদ-কমলা, নীল-বেগুনি। আর কোনও মানুষ নেই। গাছগাছালি নেই। পাখিরাও এমনকি উড়ে চলে গেছে দূরে। দূর দিগন্তে নীল আকাশ ছুঁয়েছে হলুদ মাঠ।

Portrait de l'artiste, Self-Portrait

থমকে দাঁড়াই আর একটা ছবির সামনে। Portrait de l'artiste, Self-Portrait। ১৮৮৯ এর সেপ্টেম্বরে। আমার মিউজিয়ামে ঢোকার টিকিটেও এই ছবি। সম্ভবত ভ্যান গখের শেষ আত্ম-প্রতিকৃতি এটি। পরের বছর এক শান্ত গম খেতে নিজের বুকে গুলি চালিয়ে জীবনের ইতি টেনে দিয়েছিলেন নিজেই। ১৮৯০ এর ২৯ শে জুলাই।

আত্ম-প্রতিকৃতিতে ধরা মাথা থেকে কাঁধ। পরনে স্যুট। শীর্ণ মুখে কাঠিন্য। সবুজাভ চোখের দৃষ্টিতে কীসের যেন আশঙ্কা! অ্যাবসিন্থ গ্রীন, হাল্কা টারকোয়েজ রঙের প্রাধান্য। আর তার পরিপূরক আগুনরঙা-কমলার ছোঁয়া চুলে, দাড়িতে। ব্যাকগ্রাউন্ডের রঙে, রেখায় হ্যালুসিনেশনের আয়োজন যেন!

রেমব্রাঁর মতই ভ্যান গখও নিজেকেই মডেল হিসেবে এঁকেছেন বার বার। ৪৩টারও বেশি আত্ম-প্রতিকৃতি এঁকেছেন শেষ দশ বছরে।  বার বার নিজেকে খুঁটিয়ে দেখতেন আয়নায়। একজন ফটোগ্রাফারের চোখে বা ছবিতে যা ধরা দেয় না, সেই ‘আমি’-কে খুঁজে বেড়াতেন। আয়নায়, ক্যানভাসে, নিজের মনে। থিও-কে লিখেছেন,

"People say, and I am willing to believe it, that it is hard to know yourself. But it is not easy to paint yourself, either. The portraits painted by Rembrandt are more than a view of nature, they are more like a revelation".

এর আগে তাঁর ছবির সঙ্গে পরিচয় শুধু বইয়ের পাতায়, কম্প্যুটারের স্ক্রীনে। সেইসব মাস্টারপীস চোখের সামনে! সে এক আশ্চর্য অনুভব!

কৃষাণ-কৃষাণীর কর্মমুখর দিনলিপি। গম ক্ষেত। ছড়িয়ে থাকা খড়কুটোয় মুছে যাওয়া শস্যের গন্ধ। মাঠের কোণে আলগোছে পড়ে থাকা নিস্তেজ রোদ্দুর।  গ্রামের মানুষের সাদামাটা অথচ কর্মমুখর প্রাত্যহিকতা। তীব্র বাস্তবকে, জীবনকে যেভাবে চোখে দেখেছেন সেভাবেই রঙে-রেখায় তুলে এনেছেন ভ্যান গখ৷ গমক্ষেতে দাঁড়িয়ে পাকা গমের সুঘ্রাণ মিশিয়ে দিয়েছেন ছবিতে৷ আপন মনের মাধুরী নয়। কল্পনা নয়। চরিত্রদের যে চোখ-মুখ-অভিব্যক্তি, যে অসামান্য  ডিটেল-এ আঁকতেন তিনি তা নয়। তবু এক একটা  গতিশীল মুহূর্ত যেন আটকে গেছে ছবিতে৷ থমকে দাঁড়িয়েছে বাস্তব। অন্যতর কোনও ঘরানা, নতুন কোনও তত্ত্ব সৃষ্টির জন্যে ছবি আঁকেননি সূর্যমুখীর শিল্পী। তাঁর ছবি থেকে জন্ম নিয়েছে তত্ত্ব।

‘স্টিল লাইফ, ভেস উইথ ডেজিজ অ্যান্ড পপিজ’

সাঁইত্রিশ বছরের জীবনে মাত্র একটা ছবি বিক্রি হয়েছিল ভ্যান গখের। এখন তাঁর প্রতিটি ছবিই অমূল্য। হাল্কা সবুজ ক্যানভাস, সাদা মার্বেল টেবিলের উপর ফুলদানিতে সাজানো লাল, নীল, সাদা এক ঝাঁক রকমারি ফুলের তোড়া। দেখলেই যেন টাটকা সুবাসে টেনে নিতে নিতে চোখ বন্ধ হয়ে আসে।ভ্যানগখ ছবিটার নাম রেখেছিলেন ‘স্টিল লাইফ, ভেস উইথ ডেজিজ অ্যান্ড পপিজ’। মৃত্যুর মাস তিনেক আগে ফরাসি চিকিৎসক পল গ্যাচে-র বাড়িতে বসে ভ্যান গখ এঁকেছিলেন এই ‘স্টিল লাইফ।’ নিউ ইয়র্কের মিউজিয়াম অব মর্ডান আর্টের প্রতিষ্ঠাতা এ. কনগার গুডইয়ার ১৯২৮ সালে কিনেছিলেন ছবিটি। সেখান থেকে আর একজনের হাত ঘুরে ছবিটি এসেছিল সোদবির নিলামে। মাত্র কিছুদিন আগে। প্রত্যাশা ছিল দাম উঠবে ১৮৪ কোটি থেকে ৩০০ কোটি টাকার মধ্যে। শেষমেশ ৩৭৫ কোটিরও বেশি দামে ছবিটি জিতে নিলেন এক এশীয়। সারা বিশ্বের শিল্পীদের কাছে অনুপ্রেরণার উৎস ভ্যান গখ।

Van Gogh's Bedroom in Arles

ভ্যান গখের ছবি মানেই আবেগ আর হৃদয়। সূর্যের উজ্জ্বল আলোয় ধোয়া আর্ল-এর প্রিয় হলুদ বাড়িতে সেই হৃদয়ের স্পন্দন চুপি চুপি তাঁকে বলে যেত, তুমি ছবি আঁকছ, তাই তো তুমি বেঁচে আছ! ছবিতেই নিজেকে খুঁজে চলা। আজীবন। দাঁড়িয়ে পড়ি La chambre de Van Gogh à Arles, Van Gogh's Bedroom in Arles-এর সামনে। ১৮৮৯ এ আঁকা। হালকা বেগুনিরঙা দেয়াল, উঁচুনিচু লালচে মেঝে, উজ্জ্বল হলুদ চেয়ার আর বিছানা, লেবু-সবুজরঙা বালিশ-চাদর, রক্তাভ কম্বল, কমলা ওয়াশস্ট্যান্ড, নীল বেসিন। সূর্য, আকাশ, গাছপালা- সবাই যেন ছবিতে অকৃপণ হাতে উজাড় করে দিয়েছে তাদের রঙ। বিষয়বস্তু খুব সাধারণ। প্রাত্যহিকতা থেকে খুঁজে নেওয়া। কিন্তু ক্যানভাস জুড়ে প্রকৃতি ছেনে খুঁজে আনা রঙের হোরিখেলায় অন্যতর মাত্রা পেয়ে যায় সে ছবি। আর্ল-এ নিজের শোবার ঘরের তিনটি ছবি এঁকেছিলেন ভ্যান গখ। তাঁর অ্যাসাইলামে থাকার সময় বাড়িতে রাখা প্রথম ছবিটি নষ্ট হয়ে গিয়েছিল বন্যায়। আরও দুটি আঁকেন পরে। একটি এখানে, অন্যটি আছে শিকাগোর আর্ট ইন্সটিটিউটে।

ভাই থিওকে লিখেছিলেন,

‘সব অস্থিরতা সরিয়ে রেখে, ঘরজোড়া এই রঙের ধারায় স্নান করে বিশ্রাম নিতে চাই আমি। অপার শান্তিতে’।

ম্যুজে ডি’অরসের গ্যালারিতে আছে ভ্যান গখের ২৫টি কাজ। পল গগ্যাঁর ৫৮টি। যাঁর ‘ইম্প্রেশন সানরাইজ’ থেকে সূচনা ইম্প্রেশনিজমের, সেই ক্লদ মনে-র ৮৬টি ছবি আছে এখানে, রেনোয়াঁর ৮১টি এবং পল সেজানের ৫৬টি। যে শিল্পীর সর্বাধিক ছবি আছে এখানে তিনি রেদেঁ, ১৮৪০ টি ছবি গ্যালারি জুড়ে।  ইম্প্রেশনিজম আর পোস্ট ইম্প্রেশনিজমের সেতুবন্ধন করেছিলেন এদুয়ার মানে। তাঁর ৩৪ টি ছবি আছে ম্যুজে ডি’অরসের গ্যালারিতে।

মন জুড়ে ভ্যান গখ। অথচ আরো কত ছবি যে দেখার আছে! ক্যানভাস-জোড়া উজ্জ্বল রঙ আর বলিষ্ঠ রেখায় ধরা এক অন্যতর শরীরী ভাষা। ক্যানভাসে ধরা অপার রহস্যময়তা নিয়ে হাতছানি দিয়ে ডাকছিল পল গঁগ্যার ছবি। এগিয়ে গেলাম। কানে কানে তখনও কে যেন আলতো সুরে বলছিল,

‘Starry, starry night
Paint your palette blue and gray
Look out on a summer's day
With eyes that know the darkness in my soul...’

(পরের অংশ)


লেখক পরিচিতি - কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী। এখন আমেরিকার স্যান অ্যান্টোনিওতে প্রবাস-জীবন। ইউনিভার্সিটি অফ টেক্সাসে বিজ্ঞানী হিসেবে কর্মরত। লেখালেখি শুরু স্কুল ম্যাগাজিন থেকে। কলেজ জীবন থেকে রেডিওর প্রতি ভালোবাসা। আকাশবাণী কলকাতাতে রেডিও জকি প্রায় এক দশক। বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় নিয়মিত লেখার পাশাপাশি বেড়ানো আর গান শোনায় কাটে ছুটির অবকাশ। মনের আনাচ-কানাচ থেকে কুড়িয়ে নেওয়া খেয়ালখুশির রঙচঙে টুকরো কাচের বর্ণময়তাকে অক্ষরে অক্ষরে ধরে রেখেছেন প্রথম বই ‘ঠিক যেন ক্যালেইডোস্কোপ’-এর পাতায়।

 

(আপনার মন্তব্য জানানোর জন্যে ক্লিক করুন)

অবসর-এর লেখাগুলোর ওপর পাঠকদের মন্তব্য অবসর নেট ব্লগ-এ প্রকাশিত হয়।

Copyright © 2014 Abasar.net. All rights reserved.



অবসর-এ প্রকাশিত পুরনো লেখাগুলি 'হরফ' সংস্করণে পাওয়া যাবে।